মোহাম্মাদ জাকারিয়া

শ্রাবণ মাসেতে যেন কালো মেঘ সাজে
দাগল-দীঘল কেশ বায়েতে বিরাজে।।
কখন খোঁপা বান্ধে কন্যা কখন বান্ধে বেনি
কূপে রঙ্গে সাজে কন্যা মদনমোহিনী।।
(কমলা—দ্বিজ ঈশান)
১
অ্যাঁই, নাহার?—বলে রাগাশ্রিত ডাক দেয় আশরাফুল। এমন ডাকে কাছে আসার সম্ভাবনা কম দেখে পরবর্তী সময়ে সে মুখটা দরজার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলে, একটা ভালো কথা, এই দিক আইসো। ভেজা চুল গামছা দিয়ে মুছতে মুছতে ব্যালকনি থেকে নাহার জবাব দেয়, ভালো কথার কাল এখন আছেনি? বুঝলাম না কিছু। পুরুষ মানুষের খালি ডাকাডাকি। আশরাফুল মধুমাখা কণ্ঠে জবাব দেয়, একটা খুব ভালো কথা মনে পইড়ছে, এই দিক আইসো। নিজের অনিচ্ছায়, স্বামীর ইচ্ছায় কাছে যায়। আশরাফুল ভাত খাওয়া বন্ধ করে স্ত্রীকে দেখে আগে থেকে ঠিক করা হাসি হাসে। এই হাসি ডাবল মিনিংয়ের হাসি। এই হাসির দুটো অর্থ আছে। ইন্টারমিডিয়েট ফেল স্ত্রী তা বুঝতে পেরে থমকে যায়। বিএ ফেল স্বামীর মুখের দিকে তবু তাকিয়ে থাকে। আশরাফুল রোমান্টিক সিনেমার কাহিনি বলার ভঙ্গিতে স্ত্রীর দিকে তাকায়। চোখে চোখ। কী আর বলবে মুখে? এমন করে তাকিয়ে থাকার সময় এবং বয়স দুটোই পেরিয়ে গেছে। বিয়ের বয়স তিনে পড়ল। নাহার বলে, কী কইবা কও। অমন কইরা ভ্যাদা মাছের মতো তাকাইয়া থাইকো না তো!
আশরাফুল এইবার মুখে জবাব না দিয়ে, ভাতের প্লেট থেকে লম্বা একটা চুল বের করে নাহারের চোখের সামনে ধরে। নাহার মস্তক অবনত করে ফেলে। আশরাফুল বলে, যাও এইবার। নাহার হেঁটে যাওয়ার কালে পেছন থেকে আশরাফুল বলে ওঠে, ভাবতাছি একখান ফ্রিজ কিনমু। নাহারের জবাবের আগেই সে আবার বলে, ক্যা, ফ্রিজে কি খালি মাংস-টাংস, ফল-ফ্রুটস আপেল, কমলাই রাইখতে অয়? আর কিছু রাখা যায় না? শেষমেশ নাহার কিছুটা আদুরে, কিছুটা শাসনের স্বরে বলে, অভাবের সময়ে কি ট্যাকায় কামড়ায়?
‘আহ!’ শব্দ উচ্চারিত হলে নাহার পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখে আশরাফুল গাল ধরে বসে আছে। গালে অথবা জিহ্বায় কামড় লেগেছে।
২
ফ্রিজের সামনে দাঁড়িয়ে আছে শিরিন। কিছুক্ষণ আগে ফ্রিজটা খোলা ছিল। ফ্রিজের ঠান্ডা হাওয়ার স্পর্শ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মধ্যরাতে বরকত ফিরলে শিরিনের ভাষায় ‘একলা থাকার অবসান হয়’। এই দুনিয়ায় স্বামী ছাড়া আর কেউ না থাকা শিরিনের এমন মনে হওয়াটা স্বাভাবিক। মানুষ সবচেয়ে বেশি কথা বলে যখন একা থাকে। হাজার মানুষের ভিড়ে বেশি কথা বলা যায় না। শিরিন তো একাই। তার কথা আছে কিন্তু এই শহরে তার কথা শোনার মানুষ নেই। না সে পয়সাওয়ালা মানুষের বউ, না সে ক্ষমতাওয়ালা মানুষের বউ। সে সামান্য একজন গ্রাফিক ডিজাইনারের বউ। শিরিন নিজেও চিত্রশিল্পী। এখন কোনো ছবি সে আঁকে না। আঁকতে পারে না। এখন কথা জমিয়ে রাখাই তার কাজ। ভালো কথা, মন্দ কথা। মনের কথা, বনের কথা। এর কথা, ওর কথা। এ কথা-সে কথা। বরকতের বুকে মাথা গুঁজে শিরিন বলে, শোন, মন দিয়ে শোন একটা কথা। জানি, তুমি মন থেকে এ কাজ করছ না, বাধ্য হয়েই করছ। তবুও বলি, ফ্রিজটা কি না বেচলেই নয়? বরকত স্ত্রীর মুখের দিকে না তাকিয়ে পাশ ফিরে শুয়ে বলে, ওই ফ্রিজ কী কাজে লাগছে শুনি? খাচ্ছি তো কেবল আলু, ডিম আর ডাল। মাছ-মাংস কি জুটছে? আপেল-কমলা? বলো? শুধু শুধু ফ্রিজটা রেখে লাভ কী? দুহাতে পাশ ফিরিয়ে স্বামীর বুকে গলার চেইনটা ছুঁইয়ে শিরিন বলে, তবুও, প্রয়োজনে আমার গলার চেইনটা তুমি বিক্রি করো।
না, এটা সম্ভব নয়, আমি তা পারব না—বলে বালিশে মুখ গুঁজে বরকত।
শিরিন শক্ত করে বরকতকে জড়িয়ে ধরলে টের পায়, শিরিনের গা প্রচণ্ড গরম।
৩
অ্যাঁই নাহার—বলে রাগাশ্রিত ডাক আজকেও দেয় আশরাফুল। দৌড়ে আসে নাহার। স্বামীর মুখের দিকে না তাকিয়ে প্লেটের দিকে তাকায়। আশরাফুল বলে, তোমার যে মাথাভর্তি চুল তা তো আমিও জানি, পাড়া-প্রতিবেশী সবাই জানে। প্রতিটি দিন ভাতের মইধ্যে চুল দিয়া নতুন কইরা প্রমাণ করার কী আছে? অ্যাঁ?
ক্যামনে যে মনের অজান্তে ভাতের মইধ্যে চুল যায়—তা ভাবতে ভাবতে নাহার দ্রুত পা বাড়ায়।
অসুবিধা নাই, নতুন না হইলেও ছেকেন্যান [সেকেন্ড হ্যান্ড] ফ্রিজ তো কিনতেই পারি। তুমি কী কও নাহার?
ডিম, আলু, ডাল রাখার জন্য ফ্রিজ না হইলেও চলে। নতুন ফ্রিজই কী, আর ছেকেন্যান ফ্রিজই কী—নাহার ভেজা চুল মুছতে মুছতে স্বামীর কথার জবাব দেয়।
৪
শিরিনের অনিচ্ছায় বরকত ফ্রিজটা বিক্রি করে দিল। আর নাহারের অনিচ্ছায় আশরাফুল ফ্রিজটা কিনে নিল।
৫
বাসায় ফ্রিজ না থাকায় শিরিন মনের কথাগুলো জমা করে আর রাখতে না পেরে এক সময় বোবাই হয়ে গেল। এখন তার মুখ থেকে কেবল গোঁ-গোঁ আওয়াজ ভেসে আসে। শিরিন সারা দিনের কথাগুলো ফ্রিজে জমা রাখত, মধ্যরাতে স্বামী ফিরলে জমা করা কথা থেকে কিছু কথা স্বামীকে শোনাত। মধ্যরাতে ঘুমন্ত শিরিনকে দেখে বরকতের মায়া হলে বুকের মধ্যে জড়িয়ে ধরে। শিরিনের গা যেন হিমশীতল—ডিপ ফ্রিজ।
৬
সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা। এই অবস্থায় তোমার ফ্রিজ কিনা আনাই লাইগব ক্যান? ফুটানি মারার আর...
চুপ থাক কইলাম।
ক্যান চুপ করমু?—নাহারকে থামিয়ে দিয়ে বাহুবন্ধনে জড়িয়ে ধরে কাঁদো কাঁদো গলায় আশরাফুল বলে,
নাহার, বউ রে, এই শহরে সবাই খেলে। সবাই ছড়ি ঘোরায়। রাস্তা কও, অফিস কও, পাড়া কও, মহল্লা কও, মুদির দোকান কও—কোথাও ভালোবাসা নাই। তোমার-আমার এই জীবনে ভালোবাসার পরিমাণ খুব কম। খেয়াল কইরা দেখ, তোমার মাথা থেইকা ঝইরা যাওয়া একটা চুলের মতো এতই কম। আমি তো ওই ভালোবাসাটারেই ফ্রিজে রাখবার চাই।
ভাতের মইধ্যে যে চুল পাও আর পাইয়া যে তুমি আমারে ডাক দিয়া হাসো, ওই হাসি রাগ কইরা না তাইলে?—বাচ্চা মেয়ের মতো ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে বলে নাহার।
নবীন ছেলের মতো ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে আশরাফুল বলে, না। ভাতের মইধ্যে যে চুল পাই তা আমার কাছে ভালোবাসার গোলাপ ফুল। আমি তোমার মাথা থেইকা পইড়া যাওয়া চুলগুলাই ফ্রিজে রাখতে চাই। বিশ্বাস করো, আমার আপেল-কমলা, মাছ, গোস্ত ফ্রিজে রাখা লাইগব না। জীবনের এই চুল পরিমাণ ভালোবাসাটাও যদি জমাইয়া না রাখতে পারি, তাইলে বাঁচমু ক্যামনে ভালোবাসার এই আকালে? নাহার তুমি কও, কও তুমি নাহার!
এর পর থেকে আশরাফুল-নাহার দম্পতির ফ্রিজে রাখা চুলগুলো রোজ সকালে গোলাপ ফুল হয়ে যায়।

শ্রাবণ মাসেতে যেন কালো মেঘ সাজে
দাগল-দীঘল কেশ বায়েতে বিরাজে।।
কখন খোঁপা বান্ধে কন্যা কখন বান্ধে বেনি
কূপে রঙ্গে সাজে কন্যা মদনমোহিনী।।
(কমলা—দ্বিজ ঈশান)
১
অ্যাঁই, নাহার?—বলে রাগাশ্রিত ডাক দেয় আশরাফুল। এমন ডাকে কাছে আসার সম্ভাবনা কম দেখে পরবর্তী সময়ে সে মুখটা দরজার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলে, একটা ভালো কথা, এই দিক আইসো। ভেজা চুল গামছা দিয়ে মুছতে মুছতে ব্যালকনি থেকে নাহার জবাব দেয়, ভালো কথার কাল এখন আছেনি? বুঝলাম না কিছু। পুরুষ মানুষের খালি ডাকাডাকি। আশরাফুল মধুমাখা কণ্ঠে জবাব দেয়, একটা খুব ভালো কথা মনে পইড়ছে, এই দিক আইসো। নিজের অনিচ্ছায়, স্বামীর ইচ্ছায় কাছে যায়। আশরাফুল ভাত খাওয়া বন্ধ করে স্ত্রীকে দেখে আগে থেকে ঠিক করা হাসি হাসে। এই হাসি ডাবল মিনিংয়ের হাসি। এই হাসির দুটো অর্থ আছে। ইন্টারমিডিয়েট ফেল স্ত্রী তা বুঝতে পেরে থমকে যায়। বিএ ফেল স্বামীর মুখের দিকে তবু তাকিয়ে থাকে। আশরাফুল রোমান্টিক সিনেমার কাহিনি বলার ভঙ্গিতে স্ত্রীর দিকে তাকায়। চোখে চোখ। কী আর বলবে মুখে? এমন করে তাকিয়ে থাকার সময় এবং বয়স দুটোই পেরিয়ে গেছে। বিয়ের বয়স তিনে পড়ল। নাহার বলে, কী কইবা কও। অমন কইরা ভ্যাদা মাছের মতো তাকাইয়া থাইকো না তো!
আশরাফুল এইবার মুখে জবাব না দিয়ে, ভাতের প্লেট থেকে লম্বা একটা চুল বের করে নাহারের চোখের সামনে ধরে। নাহার মস্তক অবনত করে ফেলে। আশরাফুল বলে, যাও এইবার। নাহার হেঁটে যাওয়ার কালে পেছন থেকে আশরাফুল বলে ওঠে, ভাবতাছি একখান ফ্রিজ কিনমু। নাহারের জবাবের আগেই সে আবার বলে, ক্যা, ফ্রিজে কি খালি মাংস-টাংস, ফল-ফ্রুটস আপেল, কমলাই রাইখতে অয়? আর কিছু রাখা যায় না? শেষমেশ নাহার কিছুটা আদুরে, কিছুটা শাসনের স্বরে বলে, অভাবের সময়ে কি ট্যাকায় কামড়ায়?
‘আহ!’ শব্দ উচ্চারিত হলে নাহার পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখে আশরাফুল গাল ধরে বসে আছে। গালে অথবা জিহ্বায় কামড় লেগেছে।
২
ফ্রিজের সামনে দাঁড়িয়ে আছে শিরিন। কিছুক্ষণ আগে ফ্রিজটা খোলা ছিল। ফ্রিজের ঠান্ডা হাওয়ার স্পর্শ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মধ্যরাতে বরকত ফিরলে শিরিনের ভাষায় ‘একলা থাকার অবসান হয়’। এই দুনিয়ায় স্বামী ছাড়া আর কেউ না থাকা শিরিনের এমন মনে হওয়াটা স্বাভাবিক। মানুষ সবচেয়ে বেশি কথা বলে যখন একা থাকে। হাজার মানুষের ভিড়ে বেশি কথা বলা যায় না। শিরিন তো একাই। তার কথা আছে কিন্তু এই শহরে তার কথা শোনার মানুষ নেই। না সে পয়সাওয়ালা মানুষের বউ, না সে ক্ষমতাওয়ালা মানুষের বউ। সে সামান্য একজন গ্রাফিক ডিজাইনারের বউ। শিরিন নিজেও চিত্রশিল্পী। এখন কোনো ছবি সে আঁকে না। আঁকতে পারে না। এখন কথা জমিয়ে রাখাই তার কাজ। ভালো কথা, মন্দ কথা। মনের কথা, বনের কথা। এর কথা, ওর কথা। এ কথা-সে কথা। বরকতের বুকে মাথা গুঁজে শিরিন বলে, শোন, মন দিয়ে শোন একটা কথা। জানি, তুমি মন থেকে এ কাজ করছ না, বাধ্য হয়েই করছ। তবুও বলি, ফ্রিজটা কি না বেচলেই নয়? বরকত স্ত্রীর মুখের দিকে না তাকিয়ে পাশ ফিরে শুয়ে বলে, ওই ফ্রিজ কী কাজে লাগছে শুনি? খাচ্ছি তো কেবল আলু, ডিম আর ডাল। মাছ-মাংস কি জুটছে? আপেল-কমলা? বলো? শুধু শুধু ফ্রিজটা রেখে লাভ কী? দুহাতে পাশ ফিরিয়ে স্বামীর বুকে গলার চেইনটা ছুঁইয়ে শিরিন বলে, তবুও, প্রয়োজনে আমার গলার চেইনটা তুমি বিক্রি করো।
না, এটা সম্ভব নয়, আমি তা পারব না—বলে বালিশে মুখ গুঁজে বরকত।
শিরিন শক্ত করে বরকতকে জড়িয়ে ধরলে টের পায়, শিরিনের গা প্রচণ্ড গরম।
৩
অ্যাঁই নাহার—বলে রাগাশ্রিত ডাক আজকেও দেয় আশরাফুল। দৌড়ে আসে নাহার। স্বামীর মুখের দিকে না তাকিয়ে প্লেটের দিকে তাকায়। আশরাফুল বলে, তোমার যে মাথাভর্তি চুল তা তো আমিও জানি, পাড়া-প্রতিবেশী সবাই জানে। প্রতিটি দিন ভাতের মইধ্যে চুল দিয়া নতুন কইরা প্রমাণ করার কী আছে? অ্যাঁ?
ক্যামনে যে মনের অজান্তে ভাতের মইধ্যে চুল যায়—তা ভাবতে ভাবতে নাহার দ্রুত পা বাড়ায়।
অসুবিধা নাই, নতুন না হইলেও ছেকেন্যান [সেকেন্ড হ্যান্ড] ফ্রিজ তো কিনতেই পারি। তুমি কী কও নাহার?
ডিম, আলু, ডাল রাখার জন্য ফ্রিজ না হইলেও চলে। নতুন ফ্রিজই কী, আর ছেকেন্যান ফ্রিজই কী—নাহার ভেজা চুল মুছতে মুছতে স্বামীর কথার জবাব দেয়।
৪
শিরিনের অনিচ্ছায় বরকত ফ্রিজটা বিক্রি করে দিল। আর নাহারের অনিচ্ছায় আশরাফুল ফ্রিজটা কিনে নিল।
৫
বাসায় ফ্রিজ না থাকায় শিরিন মনের কথাগুলো জমা করে আর রাখতে না পেরে এক সময় বোবাই হয়ে গেল। এখন তার মুখ থেকে কেবল গোঁ-গোঁ আওয়াজ ভেসে আসে। শিরিন সারা দিনের কথাগুলো ফ্রিজে জমা রাখত, মধ্যরাতে স্বামী ফিরলে জমা করা কথা থেকে কিছু কথা স্বামীকে শোনাত। মধ্যরাতে ঘুমন্ত শিরিনকে দেখে বরকতের মায়া হলে বুকের মধ্যে জড়িয়ে ধরে। শিরিনের গা যেন হিমশীতল—ডিপ ফ্রিজ।
৬
সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা। এই অবস্থায় তোমার ফ্রিজ কিনা আনাই লাইগব ক্যান? ফুটানি মারার আর...
চুপ থাক কইলাম।
ক্যান চুপ করমু?—নাহারকে থামিয়ে দিয়ে বাহুবন্ধনে জড়িয়ে ধরে কাঁদো কাঁদো গলায় আশরাফুল বলে,
নাহার, বউ রে, এই শহরে সবাই খেলে। সবাই ছড়ি ঘোরায়। রাস্তা কও, অফিস কও, পাড়া কও, মহল্লা কও, মুদির দোকান কও—কোথাও ভালোবাসা নাই। তোমার-আমার এই জীবনে ভালোবাসার পরিমাণ খুব কম। খেয়াল কইরা দেখ, তোমার মাথা থেইকা ঝইরা যাওয়া একটা চুলের মতো এতই কম। আমি তো ওই ভালোবাসাটারেই ফ্রিজে রাখবার চাই।
ভাতের মইধ্যে যে চুল পাও আর পাইয়া যে তুমি আমারে ডাক দিয়া হাসো, ওই হাসি রাগ কইরা না তাইলে?—বাচ্চা মেয়ের মতো ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে বলে নাহার।
নবীন ছেলের মতো ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে আশরাফুল বলে, না। ভাতের মইধ্যে যে চুল পাই তা আমার কাছে ভালোবাসার গোলাপ ফুল। আমি তোমার মাথা থেইকা পইড়া যাওয়া চুলগুলাই ফ্রিজে রাখতে চাই। বিশ্বাস করো, আমার আপেল-কমলা, মাছ, গোস্ত ফ্রিজে রাখা লাইগব না। জীবনের এই চুল পরিমাণ ভালোবাসাটাও যদি জমাইয়া না রাখতে পারি, তাইলে বাঁচমু ক্যামনে ভালোবাসার এই আকালে? নাহার তুমি কও, কও তুমি নাহার!
এর পর থেকে আশরাফুল-নাহার দম্পতির ফ্রিজে রাখা চুলগুলো রোজ সকালে গোলাপ ফুল হয়ে যায়।
মোহাম্মাদ জাকারিয়া

শ্রাবণ মাসেতে যেন কালো মেঘ সাজে
দাগল-দীঘল কেশ বায়েতে বিরাজে।।
কখন খোঁপা বান্ধে কন্যা কখন বান্ধে বেনি
কূপে রঙ্গে সাজে কন্যা মদনমোহিনী।।
(কমলা—দ্বিজ ঈশান)
১
অ্যাঁই, নাহার?—বলে রাগাশ্রিত ডাক দেয় আশরাফুল। এমন ডাকে কাছে আসার সম্ভাবনা কম দেখে পরবর্তী সময়ে সে মুখটা দরজার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলে, একটা ভালো কথা, এই দিক আইসো। ভেজা চুল গামছা দিয়ে মুছতে মুছতে ব্যালকনি থেকে নাহার জবাব দেয়, ভালো কথার কাল এখন আছেনি? বুঝলাম না কিছু। পুরুষ মানুষের খালি ডাকাডাকি। আশরাফুল মধুমাখা কণ্ঠে জবাব দেয়, একটা খুব ভালো কথা মনে পইড়ছে, এই দিক আইসো। নিজের অনিচ্ছায়, স্বামীর ইচ্ছায় কাছে যায়। আশরাফুল ভাত খাওয়া বন্ধ করে স্ত্রীকে দেখে আগে থেকে ঠিক করা হাসি হাসে। এই হাসি ডাবল মিনিংয়ের হাসি। এই হাসির দুটো অর্থ আছে। ইন্টারমিডিয়েট ফেল স্ত্রী তা বুঝতে পেরে থমকে যায়। বিএ ফেল স্বামীর মুখের দিকে তবু তাকিয়ে থাকে। আশরাফুল রোমান্টিক সিনেমার কাহিনি বলার ভঙ্গিতে স্ত্রীর দিকে তাকায়। চোখে চোখ। কী আর বলবে মুখে? এমন করে তাকিয়ে থাকার সময় এবং বয়স দুটোই পেরিয়ে গেছে। বিয়ের বয়স তিনে পড়ল। নাহার বলে, কী কইবা কও। অমন কইরা ভ্যাদা মাছের মতো তাকাইয়া থাইকো না তো!
আশরাফুল এইবার মুখে জবাব না দিয়ে, ভাতের প্লেট থেকে লম্বা একটা চুল বের করে নাহারের চোখের সামনে ধরে। নাহার মস্তক অবনত করে ফেলে। আশরাফুল বলে, যাও এইবার। নাহার হেঁটে যাওয়ার কালে পেছন থেকে আশরাফুল বলে ওঠে, ভাবতাছি একখান ফ্রিজ কিনমু। নাহারের জবাবের আগেই সে আবার বলে, ক্যা, ফ্রিজে কি খালি মাংস-টাংস, ফল-ফ্রুটস আপেল, কমলাই রাইখতে অয়? আর কিছু রাখা যায় না? শেষমেশ নাহার কিছুটা আদুরে, কিছুটা শাসনের স্বরে বলে, অভাবের সময়ে কি ট্যাকায় কামড়ায়?
‘আহ!’ শব্দ উচ্চারিত হলে নাহার পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখে আশরাফুল গাল ধরে বসে আছে। গালে অথবা জিহ্বায় কামড় লেগেছে।
২
ফ্রিজের সামনে দাঁড়িয়ে আছে শিরিন। কিছুক্ষণ আগে ফ্রিজটা খোলা ছিল। ফ্রিজের ঠান্ডা হাওয়ার স্পর্শ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মধ্যরাতে বরকত ফিরলে শিরিনের ভাষায় ‘একলা থাকার অবসান হয়’। এই দুনিয়ায় স্বামী ছাড়া আর কেউ না থাকা শিরিনের এমন মনে হওয়াটা স্বাভাবিক। মানুষ সবচেয়ে বেশি কথা বলে যখন একা থাকে। হাজার মানুষের ভিড়ে বেশি কথা বলা যায় না। শিরিন তো একাই। তার কথা আছে কিন্তু এই শহরে তার কথা শোনার মানুষ নেই। না সে পয়সাওয়ালা মানুষের বউ, না সে ক্ষমতাওয়ালা মানুষের বউ। সে সামান্য একজন গ্রাফিক ডিজাইনারের বউ। শিরিন নিজেও চিত্রশিল্পী। এখন কোনো ছবি সে আঁকে না। আঁকতে পারে না। এখন কথা জমিয়ে রাখাই তার কাজ। ভালো কথা, মন্দ কথা। মনের কথা, বনের কথা। এর কথা, ওর কথা। এ কথা-সে কথা। বরকতের বুকে মাথা গুঁজে শিরিন বলে, শোন, মন দিয়ে শোন একটা কথা। জানি, তুমি মন থেকে এ কাজ করছ না, বাধ্য হয়েই করছ। তবুও বলি, ফ্রিজটা কি না বেচলেই নয়? বরকত স্ত্রীর মুখের দিকে না তাকিয়ে পাশ ফিরে শুয়ে বলে, ওই ফ্রিজ কী কাজে লাগছে শুনি? খাচ্ছি তো কেবল আলু, ডিম আর ডাল। মাছ-মাংস কি জুটছে? আপেল-কমলা? বলো? শুধু শুধু ফ্রিজটা রেখে লাভ কী? দুহাতে পাশ ফিরিয়ে স্বামীর বুকে গলার চেইনটা ছুঁইয়ে শিরিন বলে, তবুও, প্রয়োজনে আমার গলার চেইনটা তুমি বিক্রি করো।
না, এটা সম্ভব নয়, আমি তা পারব না—বলে বালিশে মুখ গুঁজে বরকত।
শিরিন শক্ত করে বরকতকে জড়িয়ে ধরলে টের পায়, শিরিনের গা প্রচণ্ড গরম।
৩
অ্যাঁই নাহার—বলে রাগাশ্রিত ডাক আজকেও দেয় আশরাফুল। দৌড়ে আসে নাহার। স্বামীর মুখের দিকে না তাকিয়ে প্লেটের দিকে তাকায়। আশরাফুল বলে, তোমার যে মাথাভর্তি চুল তা তো আমিও জানি, পাড়া-প্রতিবেশী সবাই জানে। প্রতিটি দিন ভাতের মইধ্যে চুল দিয়া নতুন কইরা প্রমাণ করার কী আছে? অ্যাঁ?
ক্যামনে যে মনের অজান্তে ভাতের মইধ্যে চুল যায়—তা ভাবতে ভাবতে নাহার দ্রুত পা বাড়ায়।
অসুবিধা নাই, নতুন না হইলেও ছেকেন্যান [সেকেন্ড হ্যান্ড] ফ্রিজ তো কিনতেই পারি। তুমি কী কও নাহার?
ডিম, আলু, ডাল রাখার জন্য ফ্রিজ না হইলেও চলে। নতুন ফ্রিজই কী, আর ছেকেন্যান ফ্রিজই কী—নাহার ভেজা চুল মুছতে মুছতে স্বামীর কথার জবাব দেয়।
৪
শিরিনের অনিচ্ছায় বরকত ফ্রিজটা বিক্রি করে দিল। আর নাহারের অনিচ্ছায় আশরাফুল ফ্রিজটা কিনে নিল।
৫
বাসায় ফ্রিজ না থাকায় শিরিন মনের কথাগুলো জমা করে আর রাখতে না পেরে এক সময় বোবাই হয়ে গেল। এখন তার মুখ থেকে কেবল গোঁ-গোঁ আওয়াজ ভেসে আসে। শিরিন সারা দিনের কথাগুলো ফ্রিজে জমা রাখত, মধ্যরাতে স্বামী ফিরলে জমা করা কথা থেকে কিছু কথা স্বামীকে শোনাত। মধ্যরাতে ঘুমন্ত শিরিনকে দেখে বরকতের মায়া হলে বুকের মধ্যে জড়িয়ে ধরে। শিরিনের গা যেন হিমশীতল—ডিপ ফ্রিজ।
৬
সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা। এই অবস্থায় তোমার ফ্রিজ কিনা আনাই লাইগব ক্যান? ফুটানি মারার আর...
চুপ থাক কইলাম।
ক্যান চুপ করমু?—নাহারকে থামিয়ে দিয়ে বাহুবন্ধনে জড়িয়ে ধরে কাঁদো কাঁদো গলায় আশরাফুল বলে,
নাহার, বউ রে, এই শহরে সবাই খেলে। সবাই ছড়ি ঘোরায়। রাস্তা কও, অফিস কও, পাড়া কও, মহল্লা কও, মুদির দোকান কও—কোথাও ভালোবাসা নাই। তোমার-আমার এই জীবনে ভালোবাসার পরিমাণ খুব কম। খেয়াল কইরা দেখ, তোমার মাথা থেইকা ঝইরা যাওয়া একটা চুলের মতো এতই কম। আমি তো ওই ভালোবাসাটারেই ফ্রিজে রাখবার চাই।
ভাতের মইধ্যে যে চুল পাও আর পাইয়া যে তুমি আমারে ডাক দিয়া হাসো, ওই হাসি রাগ কইরা না তাইলে?—বাচ্চা মেয়ের মতো ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে বলে নাহার।
নবীন ছেলের মতো ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে আশরাফুল বলে, না। ভাতের মইধ্যে যে চুল পাই তা আমার কাছে ভালোবাসার গোলাপ ফুল। আমি তোমার মাথা থেইকা পইড়া যাওয়া চুলগুলাই ফ্রিজে রাখতে চাই। বিশ্বাস করো, আমার আপেল-কমলা, মাছ, গোস্ত ফ্রিজে রাখা লাইগব না। জীবনের এই চুল পরিমাণ ভালোবাসাটাও যদি জমাইয়া না রাখতে পারি, তাইলে বাঁচমু ক্যামনে ভালোবাসার এই আকালে? নাহার তুমি কও, কও তুমি নাহার!
এর পর থেকে আশরাফুল-নাহার দম্পতির ফ্রিজে রাখা চুলগুলো রোজ সকালে গোলাপ ফুল হয়ে যায়।

শ্রাবণ মাসেতে যেন কালো মেঘ সাজে
দাগল-দীঘল কেশ বায়েতে বিরাজে।।
কখন খোঁপা বান্ধে কন্যা কখন বান্ধে বেনি
কূপে রঙ্গে সাজে কন্যা মদনমোহিনী।।
(কমলা—দ্বিজ ঈশান)
১
অ্যাঁই, নাহার?—বলে রাগাশ্রিত ডাক দেয় আশরাফুল। এমন ডাকে কাছে আসার সম্ভাবনা কম দেখে পরবর্তী সময়ে সে মুখটা দরজার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলে, একটা ভালো কথা, এই দিক আইসো। ভেজা চুল গামছা দিয়ে মুছতে মুছতে ব্যালকনি থেকে নাহার জবাব দেয়, ভালো কথার কাল এখন আছেনি? বুঝলাম না কিছু। পুরুষ মানুষের খালি ডাকাডাকি। আশরাফুল মধুমাখা কণ্ঠে জবাব দেয়, একটা খুব ভালো কথা মনে পইড়ছে, এই দিক আইসো। নিজের অনিচ্ছায়, স্বামীর ইচ্ছায় কাছে যায়। আশরাফুল ভাত খাওয়া বন্ধ করে স্ত্রীকে দেখে আগে থেকে ঠিক করা হাসি হাসে। এই হাসি ডাবল মিনিংয়ের হাসি। এই হাসির দুটো অর্থ আছে। ইন্টারমিডিয়েট ফেল স্ত্রী তা বুঝতে পেরে থমকে যায়। বিএ ফেল স্বামীর মুখের দিকে তবু তাকিয়ে থাকে। আশরাফুল রোমান্টিক সিনেমার কাহিনি বলার ভঙ্গিতে স্ত্রীর দিকে তাকায়। চোখে চোখ। কী আর বলবে মুখে? এমন করে তাকিয়ে থাকার সময় এবং বয়স দুটোই পেরিয়ে গেছে। বিয়ের বয়স তিনে পড়ল। নাহার বলে, কী কইবা কও। অমন কইরা ভ্যাদা মাছের মতো তাকাইয়া থাইকো না তো!
আশরাফুল এইবার মুখে জবাব না দিয়ে, ভাতের প্লেট থেকে লম্বা একটা চুল বের করে নাহারের চোখের সামনে ধরে। নাহার মস্তক অবনত করে ফেলে। আশরাফুল বলে, যাও এইবার। নাহার হেঁটে যাওয়ার কালে পেছন থেকে আশরাফুল বলে ওঠে, ভাবতাছি একখান ফ্রিজ কিনমু। নাহারের জবাবের আগেই সে আবার বলে, ক্যা, ফ্রিজে কি খালি মাংস-টাংস, ফল-ফ্রুটস আপেল, কমলাই রাইখতে অয়? আর কিছু রাখা যায় না? শেষমেশ নাহার কিছুটা আদুরে, কিছুটা শাসনের স্বরে বলে, অভাবের সময়ে কি ট্যাকায় কামড়ায়?
‘আহ!’ শব্দ উচ্চারিত হলে নাহার পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখে আশরাফুল গাল ধরে বসে আছে। গালে অথবা জিহ্বায় কামড় লেগেছে।
২
ফ্রিজের সামনে দাঁড়িয়ে আছে শিরিন। কিছুক্ষণ আগে ফ্রিজটা খোলা ছিল। ফ্রিজের ঠান্ডা হাওয়ার স্পর্শ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মধ্যরাতে বরকত ফিরলে শিরিনের ভাষায় ‘একলা থাকার অবসান হয়’। এই দুনিয়ায় স্বামী ছাড়া আর কেউ না থাকা শিরিনের এমন মনে হওয়াটা স্বাভাবিক। মানুষ সবচেয়ে বেশি কথা বলে যখন একা থাকে। হাজার মানুষের ভিড়ে বেশি কথা বলা যায় না। শিরিন তো একাই। তার কথা আছে কিন্তু এই শহরে তার কথা শোনার মানুষ নেই। না সে পয়সাওয়ালা মানুষের বউ, না সে ক্ষমতাওয়ালা মানুষের বউ। সে সামান্য একজন গ্রাফিক ডিজাইনারের বউ। শিরিন নিজেও চিত্রশিল্পী। এখন কোনো ছবি সে আঁকে না। আঁকতে পারে না। এখন কথা জমিয়ে রাখাই তার কাজ। ভালো কথা, মন্দ কথা। মনের কথা, বনের কথা। এর কথা, ওর কথা। এ কথা-সে কথা। বরকতের বুকে মাথা গুঁজে শিরিন বলে, শোন, মন দিয়ে শোন একটা কথা। জানি, তুমি মন থেকে এ কাজ করছ না, বাধ্য হয়েই করছ। তবুও বলি, ফ্রিজটা কি না বেচলেই নয়? বরকত স্ত্রীর মুখের দিকে না তাকিয়ে পাশ ফিরে শুয়ে বলে, ওই ফ্রিজ কী কাজে লাগছে শুনি? খাচ্ছি তো কেবল আলু, ডিম আর ডাল। মাছ-মাংস কি জুটছে? আপেল-কমলা? বলো? শুধু শুধু ফ্রিজটা রেখে লাভ কী? দুহাতে পাশ ফিরিয়ে স্বামীর বুকে গলার চেইনটা ছুঁইয়ে শিরিন বলে, তবুও, প্রয়োজনে আমার গলার চেইনটা তুমি বিক্রি করো।
না, এটা সম্ভব নয়, আমি তা পারব না—বলে বালিশে মুখ গুঁজে বরকত।
শিরিন শক্ত করে বরকতকে জড়িয়ে ধরলে টের পায়, শিরিনের গা প্রচণ্ড গরম।
৩
অ্যাঁই নাহার—বলে রাগাশ্রিত ডাক আজকেও দেয় আশরাফুল। দৌড়ে আসে নাহার। স্বামীর মুখের দিকে না তাকিয়ে প্লেটের দিকে তাকায়। আশরাফুল বলে, তোমার যে মাথাভর্তি চুল তা তো আমিও জানি, পাড়া-প্রতিবেশী সবাই জানে। প্রতিটি দিন ভাতের মইধ্যে চুল দিয়া নতুন কইরা প্রমাণ করার কী আছে? অ্যাঁ?
ক্যামনে যে মনের অজান্তে ভাতের মইধ্যে চুল যায়—তা ভাবতে ভাবতে নাহার দ্রুত পা বাড়ায়।
অসুবিধা নাই, নতুন না হইলেও ছেকেন্যান [সেকেন্ড হ্যান্ড] ফ্রিজ তো কিনতেই পারি। তুমি কী কও নাহার?
ডিম, আলু, ডাল রাখার জন্য ফ্রিজ না হইলেও চলে। নতুন ফ্রিজই কী, আর ছেকেন্যান ফ্রিজই কী—নাহার ভেজা চুল মুছতে মুছতে স্বামীর কথার জবাব দেয়।
৪
শিরিনের অনিচ্ছায় বরকত ফ্রিজটা বিক্রি করে দিল। আর নাহারের অনিচ্ছায় আশরাফুল ফ্রিজটা কিনে নিল।
৫
বাসায় ফ্রিজ না থাকায় শিরিন মনের কথাগুলো জমা করে আর রাখতে না পেরে এক সময় বোবাই হয়ে গেল। এখন তার মুখ থেকে কেবল গোঁ-গোঁ আওয়াজ ভেসে আসে। শিরিন সারা দিনের কথাগুলো ফ্রিজে জমা রাখত, মধ্যরাতে স্বামী ফিরলে জমা করা কথা থেকে কিছু কথা স্বামীকে শোনাত। মধ্যরাতে ঘুমন্ত শিরিনকে দেখে বরকতের মায়া হলে বুকের মধ্যে জড়িয়ে ধরে। শিরিনের গা যেন হিমশীতল—ডিপ ফ্রিজ।
৬
সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা। এই অবস্থায় তোমার ফ্রিজ কিনা আনাই লাইগব ক্যান? ফুটানি মারার আর...
চুপ থাক কইলাম।
ক্যান চুপ করমু?—নাহারকে থামিয়ে দিয়ে বাহুবন্ধনে জড়িয়ে ধরে কাঁদো কাঁদো গলায় আশরাফুল বলে,
নাহার, বউ রে, এই শহরে সবাই খেলে। সবাই ছড়ি ঘোরায়। রাস্তা কও, অফিস কও, পাড়া কও, মহল্লা কও, মুদির দোকান কও—কোথাও ভালোবাসা নাই। তোমার-আমার এই জীবনে ভালোবাসার পরিমাণ খুব কম। খেয়াল কইরা দেখ, তোমার মাথা থেইকা ঝইরা যাওয়া একটা চুলের মতো এতই কম। আমি তো ওই ভালোবাসাটারেই ফ্রিজে রাখবার চাই।
ভাতের মইধ্যে যে চুল পাও আর পাইয়া যে তুমি আমারে ডাক দিয়া হাসো, ওই হাসি রাগ কইরা না তাইলে?—বাচ্চা মেয়ের মতো ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে বলে নাহার।
নবীন ছেলের মতো ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে আশরাফুল বলে, না। ভাতের মইধ্যে যে চুল পাই তা আমার কাছে ভালোবাসার গোলাপ ফুল। আমি তোমার মাথা থেইকা পইড়া যাওয়া চুলগুলাই ফ্রিজে রাখতে চাই। বিশ্বাস করো, আমার আপেল-কমলা, মাছ, গোস্ত ফ্রিজে রাখা লাইগব না। জীবনের এই চুল পরিমাণ ভালোবাসাটাও যদি জমাইয়া না রাখতে পারি, তাইলে বাঁচমু ক্যামনে ভালোবাসার এই আকালে? নাহার তুমি কও, কও তুমি নাহার!
এর পর থেকে আশরাফুল-নাহার দম্পতির ফ্রিজে রাখা চুলগুলো রোজ সকালে গোলাপ ফুল হয়ে যায়।

জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল।
৫ দিন আগে
জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
১০ দিন আগে
হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য।
১৬ দিন আগে
হাঙ্গেরির সাহিত্যে অসীম জনপ্রিয়তা ও প্রভাব তাঁর; বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের দাপটেও শিল্পের শক্তি চেনায় তাঁর কলম। তিনি হাঙ্গেরিয়ান ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই; সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৫ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
১৬ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল। কিন্তু ভাষাবিদ ও সাহিত্য ইতিহাসবিদদের মতে, এই ধারণা আসলে পশ্চিমা দৃষ্টিকোণ থেকে তৈরি এক ‘ঔপনিবেশিক কল্পনা’ মাত্র। বাস্তবে আরবি সাহিত্য কখনোই থেমে যায়নি।
প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, অষ্টম শতাব্দীতে আব্বাসীয় খলিফাদের অধীনে বিজ্ঞান, দর্শন ও কবিতার কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল বাগদাদ। আবু নুয়াস, আল-মুতানাব্বি, আল-ফারাবি ও ইবনে সিনার মতো কবি ও দার্শনিকদের হাত ধরে শুরু হয়েছিল এক স্বর্ণযুগ। ঊনবিংশ শতাব্দীর ইউরোপীয় গবেষকেরা—যেমন ফরাসি চিন্তাবিদ আর্নেস্ট রেনাঁ ও ডাচ ইতিহাসবিদ রেইনহার্ট দোজি সেই আমলটিকেই আরবি বুদ্ধিবৃত্তিক জীবনের শিখর বলে স্বীকার করেছিলেন এবং দাবি করেছিলেন, একাদশ শতাব্দীর পর এই ধারাবাহিকতার পতন ঘটে। তাঁদের মতে, এরপর প্রায় ৮০০ বছর আরবে আর কোনো গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যিক বা দার্শনিক কাজ হয়নি—যতক্ষণ না ইউরোপে রেনেসাঁ শুরু হয়।
কিন্তু আধুনিক গবেষকেরা বলছেন, এই ধারণা সরলীকৃত ও পক্ষপাতদুষ্ট। ফ্রাঙ্কফুর্ট আন্তর্জাতিক বইমেলায় শেখ জায়েদ বুক অ্যাওয়ার্ডের আয়োজিত এক আলোচনায় ভাষাবিদেরা দাবি করেছেন, আরবি রচনা শৈলী কখনো বিলুপ্ত হয়নি; বরং তা ধারাবাহিকভাবে কপি, অনুবাদ ও পাঠের মাধ্যমে বেঁচে ছিল।
জার্মান গবেষক বেয়াট্রিস গ্রুন্ডলার তাঁর ‘দ্য রাইজ অব দ্য অ্যারাবিক বুক’ গ্রন্থে দাবি করেছেন, আরবি সাহিত্যে ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে যে ধারণাটি প্রচলিত আছে তা আসলে গাল-গল্প। এই বইটি এবারের শেখ জায়েদ পুরস্কারের শর্টলিস্টে রয়েছে। গ্রুন্ডলার এতে দেখিয়েছেন, নবম শতাব্দীর বাগদাদে বইয়ের ব্যবসা, কপিকারদের প্রতিযোগিতা, জনসম্মুখে পাঠ ও লেখার প্রচলন—সবই ছিল আধুনিক প্রকাশনা সংস্কৃতির পূর্বসূরি। তিনি মত দিয়েছেন, ‘বাগদাদের রাস্তায় হাঁটলে আপনি দেখতেন লোকেরা হস্তলিপি বিক্রি করছে, বিরামচিহ্ন নিয়ে তর্ক করছে—এ যেন এক জীবন্ত প্রকাশনা বাজার।’
গবেষণা বলছে, আরবি সাহিত্য আসলে কখনো এক জায়গায় স্থির থাকেনি। এর কেন্দ্র এক সময় বাগদাদ থেকে কায়রো, দামেস্ক ও আন্দালুসিয়ায় স্থানান্তরিত হয়। কিন্তু ধারাটি অব্যাহতই থাকে। নতুন ঘরানা তৈরি হয়, পুরোনো ঘরানা রূপান্তরিত হয়।
ফরাসি অধ্যাপক হাকান ওজকান তাঁর গবেষণায় দেখিয়েছেন, ‘জাজাল’ নামের কথ্য ছন্দভিত্তিক কবিতার ধারা আব্বাসীয় যুগের পরও বিকশিত হতে থাকে। তাঁর মতে, ‘এই কবিরা নিয়ম ভেঙে নতুন রূপ দিয়েছে—তাঁদের ছন্দ ও ব্যঙ্গ আধুনিক র্যাপের মতো প্রাণবন্ত।’

এদিকে এই বিষয়ে এক প্রতিবেদনে সোমবার (২০ অক্টোবর) আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ন্যাশনাল জানিয়েছে, আবুধাবির নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ‘আরবি সাহিত্য লাইব্রেরি’ প্রকল্প ইতিমধ্যেই ‘হারানো শতাব্দী’ বলে বিবেচিত সময়ের ৬০ টিরও বেশি আরবি সাহিত্যকর্ম পুনরুদ্ধার করেছে। প্রকল্পটির সম্পাদক অধ্যাপক মরিস পোমেরান্টজ বলেছেন, ‘এই বইগুলো সম্পাদনা করা মানে এক চলমান সংলাপে অংশ নেওয়া—যেখানে প্রজন্মের পর প্রজন্ম লেখক, অনুবাদক ও সমালোচকেরা একে অপরকে উত্তর দিয়ে গেছেন।’
মরিস মনে করেন, আরবি সাহিত্য স্থবির হয়ে যাওয়ার ধারণাটি মূলত অনুবাদের অভাব থেকেই জন্ম নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘যখন কোনো লেখা অনুবাদ করা হয় না, তখন সেটি বৈশ্বিক অস্তিত্ব হারায়।’
মরিসের মতে, এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো এই সাহিত্যকে আবার জনসাধারণের কল্পনায় ফিরিয়ে আনা—স্কুলে পড়ানো, মঞ্চে উপস্থাপন করা, অনুবাদের মাধ্যমে বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া। তা না হলে আরবি সাহিত্যের ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে চিহ্নিত সময়টি অধরাই থেকে যাবে।

জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল। কিন্তু ভাষাবিদ ও সাহিত্য ইতিহাসবিদদের মতে, এই ধারণা আসলে পশ্চিমা দৃষ্টিকোণ থেকে তৈরি এক ‘ঔপনিবেশিক কল্পনা’ মাত্র। বাস্তবে আরবি সাহিত্য কখনোই থেমে যায়নি।
প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, অষ্টম শতাব্দীতে আব্বাসীয় খলিফাদের অধীনে বিজ্ঞান, দর্শন ও কবিতার কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল বাগদাদ। আবু নুয়াস, আল-মুতানাব্বি, আল-ফারাবি ও ইবনে সিনার মতো কবি ও দার্শনিকদের হাত ধরে শুরু হয়েছিল এক স্বর্ণযুগ। ঊনবিংশ শতাব্দীর ইউরোপীয় গবেষকেরা—যেমন ফরাসি চিন্তাবিদ আর্নেস্ট রেনাঁ ও ডাচ ইতিহাসবিদ রেইনহার্ট দোজি সেই আমলটিকেই আরবি বুদ্ধিবৃত্তিক জীবনের শিখর বলে স্বীকার করেছিলেন এবং দাবি করেছিলেন, একাদশ শতাব্দীর পর এই ধারাবাহিকতার পতন ঘটে। তাঁদের মতে, এরপর প্রায় ৮০০ বছর আরবে আর কোনো গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যিক বা দার্শনিক কাজ হয়নি—যতক্ষণ না ইউরোপে রেনেসাঁ শুরু হয়।
কিন্তু আধুনিক গবেষকেরা বলছেন, এই ধারণা সরলীকৃত ও পক্ষপাতদুষ্ট। ফ্রাঙ্কফুর্ট আন্তর্জাতিক বইমেলায় শেখ জায়েদ বুক অ্যাওয়ার্ডের আয়োজিত এক আলোচনায় ভাষাবিদেরা দাবি করেছেন, আরবি রচনা শৈলী কখনো বিলুপ্ত হয়নি; বরং তা ধারাবাহিকভাবে কপি, অনুবাদ ও পাঠের মাধ্যমে বেঁচে ছিল।
জার্মান গবেষক বেয়াট্রিস গ্রুন্ডলার তাঁর ‘দ্য রাইজ অব দ্য অ্যারাবিক বুক’ গ্রন্থে দাবি করেছেন, আরবি সাহিত্যে ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে যে ধারণাটি প্রচলিত আছে তা আসলে গাল-গল্প। এই বইটি এবারের শেখ জায়েদ পুরস্কারের শর্টলিস্টে রয়েছে। গ্রুন্ডলার এতে দেখিয়েছেন, নবম শতাব্দীর বাগদাদে বইয়ের ব্যবসা, কপিকারদের প্রতিযোগিতা, জনসম্মুখে পাঠ ও লেখার প্রচলন—সবই ছিল আধুনিক প্রকাশনা সংস্কৃতির পূর্বসূরি। তিনি মত দিয়েছেন, ‘বাগদাদের রাস্তায় হাঁটলে আপনি দেখতেন লোকেরা হস্তলিপি বিক্রি করছে, বিরামচিহ্ন নিয়ে তর্ক করছে—এ যেন এক জীবন্ত প্রকাশনা বাজার।’
গবেষণা বলছে, আরবি সাহিত্য আসলে কখনো এক জায়গায় স্থির থাকেনি। এর কেন্দ্র এক সময় বাগদাদ থেকে কায়রো, দামেস্ক ও আন্দালুসিয়ায় স্থানান্তরিত হয়। কিন্তু ধারাটি অব্যাহতই থাকে। নতুন ঘরানা তৈরি হয়, পুরোনো ঘরানা রূপান্তরিত হয়।
ফরাসি অধ্যাপক হাকান ওজকান তাঁর গবেষণায় দেখিয়েছেন, ‘জাজাল’ নামের কথ্য ছন্দভিত্তিক কবিতার ধারা আব্বাসীয় যুগের পরও বিকশিত হতে থাকে। তাঁর মতে, ‘এই কবিরা নিয়ম ভেঙে নতুন রূপ দিয়েছে—তাঁদের ছন্দ ও ব্যঙ্গ আধুনিক র্যাপের মতো প্রাণবন্ত।’

এদিকে এই বিষয়ে এক প্রতিবেদনে সোমবার (২০ অক্টোবর) আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ন্যাশনাল জানিয়েছে, আবুধাবির নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ‘আরবি সাহিত্য লাইব্রেরি’ প্রকল্প ইতিমধ্যেই ‘হারানো শতাব্দী’ বলে বিবেচিত সময়ের ৬০ টিরও বেশি আরবি সাহিত্যকর্ম পুনরুদ্ধার করেছে। প্রকল্পটির সম্পাদক অধ্যাপক মরিস পোমেরান্টজ বলেছেন, ‘এই বইগুলো সম্পাদনা করা মানে এক চলমান সংলাপে অংশ নেওয়া—যেখানে প্রজন্মের পর প্রজন্ম লেখক, অনুবাদক ও সমালোচকেরা একে অপরকে উত্তর দিয়ে গেছেন।’
মরিস মনে করেন, আরবি সাহিত্য স্থবির হয়ে যাওয়ার ধারণাটি মূলত অনুবাদের অভাব থেকেই জন্ম নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘যখন কোনো লেখা অনুবাদ করা হয় না, তখন সেটি বৈশ্বিক অস্তিত্ব হারায়।’
মরিসের মতে, এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো এই সাহিত্যকে আবার জনসাধারণের কল্পনায় ফিরিয়ে আনা—স্কুলে পড়ানো, মঞ্চে উপস্থাপন করা, অনুবাদের মাধ্যমে বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া। তা না হলে আরবি সাহিত্যের ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে চিহ্নিত সময়টি অধরাই থেকে যাবে।

অ্যাঁই, নাহার?—বলে রাগাশ্রিত ডাক দেয় আশরাফুল। এমন ডাকে কাছে আসার সম্ভাবনা কম দেখে পরবর্তী সময়ে সে মুখটা দরজার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলে, একটা ভালো কথা, এই দিক আইসো। ভেজা চুল গামছা দিয়ে মুছতে মুছতে ব্যালকনি থেকে নাহার জবাব দেয়, ভালো কথার কাল এখন আছেনি? বুঝলাম না কিছু।
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩
জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
১০ দিন আগে
হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য।
১৬ দিন আগে
হাঙ্গেরির সাহিত্যে অসীম জনপ্রিয়তা ও প্রভাব তাঁর; বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের দাপটেও শিল্পের শক্তি চেনায় তাঁর কলম। তিনি হাঙ্গেরিয়ান ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই; সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৫ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
১৬ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
রকিব হাসানের মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন সেবা প্রকাশনীর উপদেষ্টা মাসুমা মায়মুর। তিনি সেবা প্রকাশনীর প্রতিষ্ঠাতা কাজী আনোয়ার হোসেনের ছোট ছেলে কাজী মায়মুর হোসেনের স্ত্রী।
মাসুমা মায়মুর ফেসবুকে লিখেছেন, ‘তিন গোয়েন্দা ও সেবা প্রকাশনীর পাঠকদেরকে আন্তরিক দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, কিছুক্ষণ আগে রকিব হাসান সাহেব পরলোক গমন করেছেন। ডায়ালাইসিস চলাকালে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ওনার জীবনাবসান ঘটে। আপনারা ওনার পবিত্র আত্মার মাগফেরাত কামনা করুন।’
১৯৫০ সালের ১২ ডিসেম্বর কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করেন রকিব হাসান। বাবার চাকরির কারণে শৈশব কেটেছে ফেনীতে। সেখান থেকে স্কুলজীবন শেষ করে ভর্তি হন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে। পড়াশোনা শেষে বিভিন্ন চাকরিতে যুক্ত হলেও অফিসের বাঁধাধরা জীবনে তাঁর মন টেকেনি। অবশেষে তিনি লেখালেখিকে বেছে নেন জীবনের একমাত্র পথ হিসেবে।

সেবা প্রকাশনী থেকে তাঁর লেখকজীবনের সূচনা হয়। প্রথমদিকে বিশ্বসেরা ক্ল্যাসিক বই অনুবাদ করে লেখালেখির জগতে প্রবেশ করেন তিনি। এরপর টারজান, গোয়েন্দা রাজু, রেজা-সুজা সিরিজসহ চার শতাধিক জনপ্রিয় বই লেখেন। তবে তাঁর পরিচয়ের সবচেয়ে বড় জায়গা হলো তিন গোয়েন্দা সিরিজ। এই সিরিজ বাংলাদেশের অসংখ্য কিশোর-কিশোরীর কৈশোরের সঙ্গী।
মূলত রবার্ট আর্থারের থ্রি ইনভেস্টিগেটরস সিরিজ অবলম্বনে তিন গোয়েন্দার সূচনা হয়। তবে রকিব হাসানের লেখনশৈলীতে এটি পেয়েছে একেবারে নতুন রূপ। বাংলাদেশি সাহিত্য হয়ে উঠেছে এটি। এই সিরিজের মাধ্যমে তিনি হয়ে ওঠেন হাজারো কিশোর পাঠকের প্রিয় লেখক।
নিজ নামে লেখার পাশাপাশি তিনি ব্যবহার করেছেন বিভিন্ন ছদ্মনাম। শামসুদ্দীন নওয়াব নামে তিনি অনুবাদ করেছিলেন জুল ভার্নের বইগুলো।
বাংলাদেশের পাঠকদের কাছে রকিব হাসান শুধু একজন গোয়েন্দা লেখক নন, তিনি কয়েক প্রজন্মের শৈশব-কৈশোরের ভালোবাসার মানুষ।

জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
রকিব হাসানের মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন সেবা প্রকাশনীর উপদেষ্টা মাসুমা মায়মুর। তিনি সেবা প্রকাশনীর প্রতিষ্ঠাতা কাজী আনোয়ার হোসেনের ছোট ছেলে কাজী মায়মুর হোসেনের স্ত্রী।
মাসুমা মায়মুর ফেসবুকে লিখেছেন, ‘তিন গোয়েন্দা ও সেবা প্রকাশনীর পাঠকদেরকে আন্তরিক দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, কিছুক্ষণ আগে রকিব হাসান সাহেব পরলোক গমন করেছেন। ডায়ালাইসিস চলাকালে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ওনার জীবনাবসান ঘটে। আপনারা ওনার পবিত্র আত্মার মাগফেরাত কামনা করুন।’
১৯৫০ সালের ১২ ডিসেম্বর কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করেন রকিব হাসান। বাবার চাকরির কারণে শৈশব কেটেছে ফেনীতে। সেখান থেকে স্কুলজীবন শেষ করে ভর্তি হন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে। পড়াশোনা শেষে বিভিন্ন চাকরিতে যুক্ত হলেও অফিসের বাঁধাধরা জীবনে তাঁর মন টেকেনি। অবশেষে তিনি লেখালেখিকে বেছে নেন জীবনের একমাত্র পথ হিসেবে।

সেবা প্রকাশনী থেকে তাঁর লেখকজীবনের সূচনা হয়। প্রথমদিকে বিশ্বসেরা ক্ল্যাসিক বই অনুবাদ করে লেখালেখির জগতে প্রবেশ করেন তিনি। এরপর টারজান, গোয়েন্দা রাজু, রেজা-সুজা সিরিজসহ চার শতাধিক জনপ্রিয় বই লেখেন। তবে তাঁর পরিচয়ের সবচেয়ে বড় জায়গা হলো তিন গোয়েন্দা সিরিজ। এই সিরিজ বাংলাদেশের অসংখ্য কিশোর-কিশোরীর কৈশোরের সঙ্গী।
মূলত রবার্ট আর্থারের থ্রি ইনভেস্টিগেটরস সিরিজ অবলম্বনে তিন গোয়েন্দার সূচনা হয়। তবে রকিব হাসানের লেখনশৈলীতে এটি পেয়েছে একেবারে নতুন রূপ। বাংলাদেশি সাহিত্য হয়ে উঠেছে এটি। এই সিরিজের মাধ্যমে তিনি হয়ে ওঠেন হাজারো কিশোর পাঠকের প্রিয় লেখক।
নিজ নামে লেখার পাশাপাশি তিনি ব্যবহার করেছেন বিভিন্ন ছদ্মনাম। শামসুদ্দীন নওয়াব নামে তিনি অনুবাদ করেছিলেন জুল ভার্নের বইগুলো।
বাংলাদেশের পাঠকদের কাছে রকিব হাসান শুধু একজন গোয়েন্দা লেখক নন, তিনি কয়েক প্রজন্মের শৈশব-কৈশোরের ভালোবাসার মানুষ।

অ্যাঁই, নাহার?—বলে রাগাশ্রিত ডাক দেয় আশরাফুল। এমন ডাকে কাছে আসার সম্ভাবনা কম দেখে পরবর্তী সময়ে সে মুখটা দরজার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলে, একটা ভালো কথা, এই দিক আইসো। ভেজা চুল গামছা দিয়ে মুছতে মুছতে ব্যালকনি থেকে নাহার জবাব দেয়, ভালো কথার কাল এখন আছেনি? বুঝলাম না কিছু।
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩
জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল।
৫ দিন আগে
হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য।
১৬ দিন আগে
হাঙ্গেরির সাহিত্যে অসীম জনপ্রিয়তা ও প্রভাব তাঁর; বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের দাপটেও শিল্পের শক্তি চেনায় তাঁর কলম। তিনি হাঙ্গেরিয়ান ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই; সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৫ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
১৬ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য। লেখক সুসান সনটাগ অবশ্য তাঁকে একসময় ‘মহাপ্রলয়ের হাঙ্গেরিয়ান গুরু’ আখ্যা দিয়েছিলেন।
সাহিত্যজগতে অনেকের কাছে ক্রাসনাহোরকাইয়ের নোবেল পাওয়ার এই ঘোষণাটি যেন কয়েক দশক ধরে চলা একটি বাক্যের সমাপ্তি।
১৯৫৪ সালে হাঙ্গেরির ছোট শহর জিউলা-তে জন্ম নেওয়া ক্রাসনাহোরকাই ১৯৮০-এর দশকের শুরুতে গল্প লেখা শুরু করেন। তাঁর প্রথম উপন্যাস স্যাটানট্যাঙ্গো (১৯৮৫) একটি বৃষ্টিস্নাত, ধ্বংসপ্রায় গ্রামের কাহিনি—যেখানে প্রতারক, মাতাল ও হতাশ মানুষেরা মিথ্যা আশায় আঁকড়ে থাকে। পরিচালক বেলা-তার তাঁর এই উপন্যাসটিকে দীর্ঘ ৭ ঘণ্টার এক সাদাকালো চলচ্চিত্রে রূপ দেন। এই বইতেই ধরা পড়ে ক্রাসনাহোরকাইয়ের লেখার বৈশিষ্ট্যসমূহ, যেমন—অবিরাম দীর্ঘ বাক্য, দার্শনিক হাস্যরস ও পতনের কিনারায় দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের প্রতিচ্ছবি।
তাঁর পরবর্তী উপন্যাসগুলো—দ্য মেলানকোলি অব রেজিস্ট্যান্স (১৯৮৯), ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার (১৯৯৯) ও সেইবো দেয়ার বিলো (২০০৮)—তাঁর এই দৃষ্টিভঙ্গিকে মহাজাগতিক পরিসরে বিস্তৃত করেছে। ‘ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার’–এ তিনি এক নথি প্রহরীর গল্প বলেছেন, যিনি রহস্যময় এক পাণ্ডুলিপি প্রকাশ করতে নিউইয়র্কে পালিয়ে যান এবং আত্মহত্যা করেন—যেন ক্রম বিলীন পৃথিবীতে অর্থ ধরে রাখার এক মরিয়া চেষ্টা তাঁর।
ক্রাসনাহোরকাইয়ের লেখায় কাহিনি প্রায় সময়ই বাক্যের ভেতর হারিয়ে যায়। তিনি লিখেছেন এমন বাক্য, যা একাধিক পৃষ্ঠা জুড়ে পাঠককে টেনে নেয় অবচেতনে, অবিরাম প্রবাহে।
তাঁর সাহিত্যে হাস্যরস ও ট্র্যাজেডি পাশাপাশি চলে। স্যাটানট্যাঙ্গো–এর মাতাল নাচের দৃশ্য যেমন নিঃশেষের প্রতীক, তেমনি ‘ব্যারন ওয়েঙ্কহাইমস হোমকামিং’ (২০১৬)-এ দেখা যায়, ফিরে আসা এক পরাজিত অভিজাতকে। যার মাধ্যমে প্রকাশ পায় সভ্যতার পচন ও মানুষের হাস্যকর ভ্রান্তি।
২০১৫ সালে ম্যান বুকার পুরস্কার পাওয়ার মধ্য দিয়েই প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পান ক্রাসনাহোরকাই। অনুবাদক জর্জ সির্টেস ও ওটিলি মুলজেট তাঁর জটিল হাঙ্গেরিয়ান ভাষাকে ইংরেজিতে রূপ দিতে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। ‘হাডসন রিভিউ’ তাঁকে বর্ণনা করেছিল ‘অন্তহীন বাক্যের ভ্রমণশিল্পী’ হিসেবে।
চল্লিশ বছরের সৃষ্টিতে ক্রাসনাহোরকাইয়ের ভুবন চিত্র, সংগীত, দর্শন ও ভাষার মিলনে বিস্তৃত। সাম্প্রতিক উপন্যাস ‘হার্শট ০৭৭৬৯’ (২০২৪)–এ তিনি এক প্রবাহিত বাক্যে লিখেছেন নব্য-নাৎসি, নেকড়ে আর এক হতভাগ্য পদার্থবিদের কাহিনি—আধুনিক ইউরোপের নৈতিক পক্ষাঘাতের রূপক হিসেবে।
তাঁর সমগ্র সাহিত্যজগৎ এক অন্ধকার ও ধ্যানমগ্ন মহাবিশ্ব—যেখানে পতন, শূন্যতা ও করুণা পাশাপাশি থাকে। ‘সেইবো দেয়ার বিলো’ বইটিতে তিনি লিখেছেন, ‘সৌন্দর্য, যত ক্ষণস্থায়ীই হোক না কেন, তা পবিত্রতার প্রতিবিম্ব।’ এই বিশ্বাসই লাসলো ক্রাসনাহোরকাইকে সেই বিরল লেখক করে তুলেছে, যাঁর নৈরাশ্যও মুক্তির মতো দীপ্ত।

হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য। লেখক সুসান সনটাগ অবশ্য তাঁকে একসময় ‘মহাপ্রলয়ের হাঙ্গেরিয়ান গুরু’ আখ্যা দিয়েছিলেন।
সাহিত্যজগতে অনেকের কাছে ক্রাসনাহোরকাইয়ের নোবেল পাওয়ার এই ঘোষণাটি যেন কয়েক দশক ধরে চলা একটি বাক্যের সমাপ্তি।
১৯৫৪ সালে হাঙ্গেরির ছোট শহর জিউলা-তে জন্ম নেওয়া ক্রাসনাহোরকাই ১৯৮০-এর দশকের শুরুতে গল্প লেখা শুরু করেন। তাঁর প্রথম উপন্যাস স্যাটানট্যাঙ্গো (১৯৮৫) একটি বৃষ্টিস্নাত, ধ্বংসপ্রায় গ্রামের কাহিনি—যেখানে প্রতারক, মাতাল ও হতাশ মানুষেরা মিথ্যা আশায় আঁকড়ে থাকে। পরিচালক বেলা-তার তাঁর এই উপন্যাসটিকে দীর্ঘ ৭ ঘণ্টার এক সাদাকালো চলচ্চিত্রে রূপ দেন। এই বইতেই ধরা পড়ে ক্রাসনাহোরকাইয়ের লেখার বৈশিষ্ট্যসমূহ, যেমন—অবিরাম দীর্ঘ বাক্য, দার্শনিক হাস্যরস ও পতনের কিনারায় দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের প্রতিচ্ছবি।
তাঁর পরবর্তী উপন্যাসগুলো—দ্য মেলানকোলি অব রেজিস্ট্যান্স (১৯৮৯), ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার (১৯৯৯) ও সেইবো দেয়ার বিলো (২০০৮)—তাঁর এই দৃষ্টিভঙ্গিকে মহাজাগতিক পরিসরে বিস্তৃত করেছে। ‘ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার’–এ তিনি এক নথি প্রহরীর গল্প বলেছেন, যিনি রহস্যময় এক পাণ্ডুলিপি প্রকাশ করতে নিউইয়র্কে পালিয়ে যান এবং আত্মহত্যা করেন—যেন ক্রম বিলীন পৃথিবীতে অর্থ ধরে রাখার এক মরিয়া চেষ্টা তাঁর।
ক্রাসনাহোরকাইয়ের লেখায় কাহিনি প্রায় সময়ই বাক্যের ভেতর হারিয়ে যায়। তিনি লিখেছেন এমন বাক্য, যা একাধিক পৃষ্ঠা জুড়ে পাঠককে টেনে নেয় অবচেতনে, অবিরাম প্রবাহে।
তাঁর সাহিত্যে হাস্যরস ও ট্র্যাজেডি পাশাপাশি চলে। স্যাটানট্যাঙ্গো–এর মাতাল নাচের দৃশ্য যেমন নিঃশেষের প্রতীক, তেমনি ‘ব্যারন ওয়েঙ্কহাইমস হোমকামিং’ (২০১৬)-এ দেখা যায়, ফিরে আসা এক পরাজিত অভিজাতকে। যার মাধ্যমে প্রকাশ পায় সভ্যতার পচন ও মানুষের হাস্যকর ভ্রান্তি।
২০১৫ সালে ম্যান বুকার পুরস্কার পাওয়ার মধ্য দিয়েই প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পান ক্রাসনাহোরকাই। অনুবাদক জর্জ সির্টেস ও ওটিলি মুলজেট তাঁর জটিল হাঙ্গেরিয়ান ভাষাকে ইংরেজিতে রূপ দিতে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। ‘হাডসন রিভিউ’ তাঁকে বর্ণনা করেছিল ‘অন্তহীন বাক্যের ভ্রমণশিল্পী’ হিসেবে।
চল্লিশ বছরের সৃষ্টিতে ক্রাসনাহোরকাইয়ের ভুবন চিত্র, সংগীত, দর্শন ও ভাষার মিলনে বিস্তৃত। সাম্প্রতিক উপন্যাস ‘হার্শট ০৭৭৬৯’ (২০২৪)–এ তিনি এক প্রবাহিত বাক্যে লিখেছেন নব্য-নাৎসি, নেকড়ে আর এক হতভাগ্য পদার্থবিদের কাহিনি—আধুনিক ইউরোপের নৈতিক পক্ষাঘাতের রূপক হিসেবে।
তাঁর সমগ্র সাহিত্যজগৎ এক অন্ধকার ও ধ্যানমগ্ন মহাবিশ্ব—যেখানে পতন, শূন্যতা ও করুণা পাশাপাশি থাকে। ‘সেইবো দেয়ার বিলো’ বইটিতে তিনি লিখেছেন, ‘সৌন্দর্য, যত ক্ষণস্থায়ীই হোক না কেন, তা পবিত্রতার প্রতিবিম্ব।’ এই বিশ্বাসই লাসলো ক্রাসনাহোরকাইকে সেই বিরল লেখক করে তুলেছে, যাঁর নৈরাশ্যও মুক্তির মতো দীপ্ত।

অ্যাঁই, নাহার?—বলে রাগাশ্রিত ডাক দেয় আশরাফুল। এমন ডাকে কাছে আসার সম্ভাবনা কম দেখে পরবর্তী সময়ে সে মুখটা দরজার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলে, একটা ভালো কথা, এই দিক আইসো। ভেজা চুল গামছা দিয়ে মুছতে মুছতে ব্যালকনি থেকে নাহার জবাব দেয়, ভালো কথার কাল এখন আছেনি? বুঝলাম না কিছু।
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩
জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল।
৫ দিন আগে
জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
১০ দিন আগে
হাঙ্গেরির সাহিত্যে অসীম জনপ্রিয়তা ও প্রভাব তাঁর; বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের দাপটেও শিল্পের শক্তি চেনায় তাঁর কলম। তিনি হাঙ্গেরিয়ান ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই; সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৫ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
১৬ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

হাঙ্গেরির সাহিত্যে অসীম জনপ্রিয়তা ও প্রভাব তাঁর; বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের দাপটেও শিল্পের শক্তি চেনায় তাঁর কলম। তিনি হাঙ্গেরিয়ান ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই; সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৫ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
আধুনিক হাঙ্গেরীয় সাহিত্যের একজন অন্যতম প্রধান ব্যক্তিত্ব লাসলো। অভিনব শৈলীর পাশাপাশি দার্শনিক গভীরতার জন্য তাঁর সাহিত্য সমাদৃত হয়েছে। তাঁকে ফ্রানৎস কাফকা ও স্যামুয়েল বেকেটের ঐতিহ্যের উত্তরাধিকারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের মধ্যেও শিল্পের লেলিহান ঔজ্জ্বল্য ফুটে ওঠে লাসলোর লেখায়। তাই যুদ্ধবিধ্বস্ত সময়ের বুকে ফুলের মতো স্থান করে নিল তাঁর সাহিত্য।
লাসলোর জন্য সাহিত্যে এটা প্রথম পুরস্কার নয়, ২০১৪ সালে সাহিত্যকর্মের জন্য ম্যান বুকার ইন্টারন্যাশনাল পুরস্কার পান তিনি। এ পুরস্কার বিশ্বসাহিত্যে তাঁর অবস্থানকে সুদৃঢ় করে।
লাসলোর সাহিত্যের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো—স্বতন্ত্র শৈলী ও গঠন। উপন্যাসের মূল বিষয়বস্তু হলো—মানবতার অবক্ষয়, ধ্বংসের অনিবার্যতা ও আধুনিক জীবনের লক্ষ্যহীন চলন। তাঁর চরিত্রদের মধ্যে প্রায়ই একধরনের হতাশা ও বিচ্ছিন্নতা দেখা যায়; তারা এমন এক জগতের পথিক, যেখানে নৈতিকতা ও আশা বিলীনপ্রায়।
১৯৮৫ সালে প্রকাশিত ‘স্যাটানটাঙ্গো’ নামে প্রথম উপন্যাস লিখেই খ্যাতি পান লাসলো। এই উপন্যাসে বিচ্ছিন্ন ও পতিত এক কৃষি সমবায় গ্রামের জীবন তুলে ধরেছেন তিনি। সেখানে একধরনের বিভ্রম ও আশার জন্ম দেয় এক রহস্যময় আগন্তুকের আগমনে। এই উপন্যাস অবলম্বনে একই শিরোনামে সাত ঘণ্টার কালজয়ী চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন বিখ্যাত পরিচালক বেলা টর।
লাসলোর আরেকটি ফিকশন উপন্যাস হলো— ‘দ্য মেলানকোলি অব রেজিস্ট্যান্স’। হাঙ্গেরির এক কাল্পনিক শহরের জীবন ফুটে উঠেছে এই উপন্যাসে। সামুদ্রিক প্রাণী হাঙরের প্রদর্শনীকে কেন্দ্র করে মানুষের মধ্যকার উন্মাদনা, সামাজিক বিশৃঙ্খলা ও একনায়কতন্ত্রের উত্থানের চিত্র আঁকা হয়েছে তাতে।
‘ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার’ লাসলোর আরেকটি বিখ্যাত উপন্যাস। লম্বা লম্বা বাক্যে লেখা এই উপন্যাস লাসলোর শৈলী নিয়ে পাঠকদের নতুন করে ভাবায়। উপন্যাসের নায়ক একটি পাণ্ডুলিপি রক্ষা করার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন শহর ঘুরে বেড়ায়। বিশ্বের চূড়ান্ত ধ্বংসের একটি কাব্যিক বর্ণনা পাওয়া যায় এই উপন্যাসে।
এবার লাসলোকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করার নেপথ্যে নোবেল কমিটির বড় কারণ ছিল তাঁর সাহিত্যে শিল্পের জয়ধ্বনি তোলার প্রচেষ্টা। যখন সারা বিশ্বের বেশ কিছু দেশ যুদ্ধবিধ্বস্ত বা যুদ্ধের জন্য উৎসুক, তখন বারবার শিল্পের মোহিনী প্রেম ও বন্ধনের কথা মনে করিয়ে দিতে চায় লাসলোর সাহিত্য।

হাঙ্গেরির সাহিত্যে অসীম জনপ্রিয়তা ও প্রভাব তাঁর; বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের দাপটেও শিল্পের শক্তি চেনায় তাঁর কলম। তিনি হাঙ্গেরিয়ান ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই; সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৫ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
আধুনিক হাঙ্গেরীয় সাহিত্যের একজন অন্যতম প্রধান ব্যক্তিত্ব লাসলো। অভিনব শৈলীর পাশাপাশি দার্শনিক গভীরতার জন্য তাঁর সাহিত্য সমাদৃত হয়েছে। তাঁকে ফ্রানৎস কাফকা ও স্যামুয়েল বেকেটের ঐতিহ্যের উত্তরাধিকারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের মধ্যেও শিল্পের লেলিহান ঔজ্জ্বল্য ফুটে ওঠে লাসলোর লেখায়। তাই যুদ্ধবিধ্বস্ত সময়ের বুকে ফুলের মতো স্থান করে নিল তাঁর সাহিত্য।
লাসলোর জন্য সাহিত্যে এটা প্রথম পুরস্কার নয়, ২০১৪ সালে সাহিত্যকর্মের জন্য ম্যান বুকার ইন্টারন্যাশনাল পুরস্কার পান তিনি। এ পুরস্কার বিশ্বসাহিত্যে তাঁর অবস্থানকে সুদৃঢ় করে।
লাসলোর সাহিত্যের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো—স্বতন্ত্র শৈলী ও গঠন। উপন্যাসের মূল বিষয়বস্তু হলো—মানবতার অবক্ষয়, ধ্বংসের অনিবার্যতা ও আধুনিক জীবনের লক্ষ্যহীন চলন। তাঁর চরিত্রদের মধ্যে প্রায়ই একধরনের হতাশা ও বিচ্ছিন্নতা দেখা যায়; তারা এমন এক জগতের পথিক, যেখানে নৈতিকতা ও আশা বিলীনপ্রায়।
১৯৮৫ সালে প্রকাশিত ‘স্যাটানটাঙ্গো’ নামে প্রথম উপন্যাস লিখেই খ্যাতি পান লাসলো। এই উপন্যাসে বিচ্ছিন্ন ও পতিত এক কৃষি সমবায় গ্রামের জীবন তুলে ধরেছেন তিনি। সেখানে একধরনের বিভ্রম ও আশার জন্ম দেয় এক রহস্যময় আগন্তুকের আগমনে। এই উপন্যাস অবলম্বনে একই শিরোনামে সাত ঘণ্টার কালজয়ী চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন বিখ্যাত পরিচালক বেলা টর।
লাসলোর আরেকটি ফিকশন উপন্যাস হলো— ‘দ্য মেলানকোলি অব রেজিস্ট্যান্স’। হাঙ্গেরির এক কাল্পনিক শহরের জীবন ফুটে উঠেছে এই উপন্যাসে। সামুদ্রিক প্রাণী হাঙরের প্রদর্শনীকে কেন্দ্র করে মানুষের মধ্যকার উন্মাদনা, সামাজিক বিশৃঙ্খলা ও একনায়কতন্ত্রের উত্থানের চিত্র আঁকা হয়েছে তাতে।
‘ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার’ লাসলোর আরেকটি বিখ্যাত উপন্যাস। লম্বা লম্বা বাক্যে লেখা এই উপন্যাস লাসলোর শৈলী নিয়ে পাঠকদের নতুন করে ভাবায়। উপন্যাসের নায়ক একটি পাণ্ডুলিপি রক্ষা করার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন শহর ঘুরে বেড়ায়। বিশ্বের চূড়ান্ত ধ্বংসের একটি কাব্যিক বর্ণনা পাওয়া যায় এই উপন্যাসে।
এবার লাসলোকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করার নেপথ্যে নোবেল কমিটির বড় কারণ ছিল তাঁর সাহিত্যে শিল্পের জয়ধ্বনি তোলার প্রচেষ্টা। যখন সারা বিশ্বের বেশ কিছু দেশ যুদ্ধবিধ্বস্ত বা যুদ্ধের জন্য উৎসুক, তখন বারবার শিল্পের মোহিনী প্রেম ও বন্ধনের কথা মনে করিয়ে দিতে চায় লাসলোর সাহিত্য।

অ্যাঁই, নাহার?—বলে রাগাশ্রিত ডাক দেয় আশরাফুল। এমন ডাকে কাছে আসার সম্ভাবনা কম দেখে পরবর্তী সময়ে সে মুখটা দরজার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলে, একটা ভালো কথা, এই দিক আইসো। ভেজা চুল গামছা দিয়ে মুছতে মুছতে ব্যালকনি থেকে নাহার জবাব দেয়, ভালো কথার কাল এখন আছেনি? বুঝলাম না কিছু।
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩
জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল।
৫ দিন আগে
জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
১০ দিন আগে
হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য।
১৬ দিন আগে