অনলাইন ডেস্ক
আমেরিকার রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক নীতিতে এক প্রভাব বিস্তারকারী ধর্মীয় গোষ্ঠীর নাম ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টান। এদের মধ্যেই রয়েছে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ—খ্রিষ্টান জায়নবাদী, যারা আধুনিক ইসরায়েল রাষ্ট্রের দৃঢ় সমর্থক। তারা আসলে কারা, তাদের বিশ্বাস কী এবং কেন ইসরায়েল প্রসঙ্গে বারবার উঠে আসে তাদের নাম?
ইসরায়েলে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হাকাবি গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে একটি টেক্সট বার্তা পাঠিয়ে জানিয়েছেন, পেনসিলভানিয়ার সমাবেশে গুলিটি তাঁর মাথা একটুর জন্য মিস করেছে। তার মানে তিনি ঈশ্বরের কৃপায় রক্ষা পেয়েছেন। শতাব্দীর মধ্যে একজন ‘ঈশ্বর নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট’ তিনি। এই কারণে ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে তাঁর বাইবেলের নির্দেশনা অনুসরণ করা উচিত। এমন আরেকজন প্রভাবশালী রাজনীতিক হলেন রিপাবলিকান সিনেটর টেড ক্রুজ। যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান উভয় দলের মধ্যেই লোক আছেন। তারা মূলত ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টান।
ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টান কারা?
‘ইভানজেলিক্যাল’ শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ ইউয়েনজেলিয়ন (euangelion) থেকে, যার অর্থ ‘গুড নিউজ’ বা ‘সুসংবাদ’। যুক্তরাষ্ট্রে ইভানজেলিক্যাল বলতে বোঝায় প্রোটেস্ট্যান্ট খ্রিষ্টানদের একটি বিস্তৃত গোষ্ঠী, যারা যিশুখ্রিষ্টের বার্তা প্রচার, বাইবেলের আক্ষরিক ব্যাখ্যা এবং রূপান্তরের ওপর জোর দেয়।
এই গোষ্ঠীর বিশ্বাসের কেন্দ্রে রয়েছে চারটি মূল ধারণা। যার প্রথমটি ব্যক্তিগত বিশ্বাস ও রূপান্তর। ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টানরা বিশ্বাস করেন, প্রত্যেক মানুষের একপর্যায়ে যিশুখ্রিষ্টকে ব্যক্তিগত ত্রাতা হিসেবে গ্রহণ করে ‘নতুন জন্ম’ বা রূপান্তরের অভিজ্ঞতা অর্জন করা প্রয়োজন। এটি তাদের বিশ্বাসের মূল ভিত্তি—যেখানে ব্যক্তি পাপমুক্ত হয়ে নতুন জীবনে প্রবেশ করে। দ্বিতীয় ধারণাটি হলো বাইবেলের সর্বোচ্চ কর্তৃত্ব। তাদের বিশ্বাস—বাইবেল ঈশ্বরপ্রদত্ত, নির্ভুল ও চূড়ান্ত গ্রন্থ। জীবনের সব প্রশ্নে বাইবেলের নির্দেশই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।
তৃতীয় বিষয়টি হলো যিশুর ক্রুশবিদ্ধ হওয়া ও পুনরুত্থানে বিশ্বাস। ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টানরা মনে করেন, সব মানুষ পাপী এবং ঈশ্বরের সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করতে হলে পাপ থেকে মুক্তি দরকার। তাদের বিশ্বাস অনুযায়ী, যিশুখ্রিষ্ট যখন ক্রুশে মৃত্যুবরণ করেন, তখন তিনি মানবজাতির পাপের দায় নিজ কাঁধে নেন। আর তার মৃত্যুর পর পুনরুত্থান প্রমাণ করে যে ঈশ্বর এই আত্মবলিদান গ্রহণ করেছেন এবং পরিত্রাণের পথ খুলে দিয়েছেন। তাই যিশুর এই আত্মত্যাগ ও পুনরুত্থানই ইভানজেলিক্যাল বিশ্বাসের মূলভিত্তি।
চতুর্থত ধর্মীয় প্রচার ও সক্রিয় অংশগ্রহণ। শুধু নিজে বিশ্বাস করলেই চলবে না, সক্রিয়ভাবে ধর্ম প্রচারে অংশ নিতে হবে। প্রচারকাজ, মিশনারি কার্যক্রম এবং সমাজকল্যাণমূলক কাজের মাধ্যমে নিজের বিশ্বাস ছড়িয়ে দিতে সচেষ্ট ইভানজেলিক্যালরা। বর্তমানে আমেরিকান জনসংখ্যার প্রায় এক চতুর্থাংশই ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টান—যারা রাজনীতি, সংস্কৃতি এবং পররাষ্ট্রনীতিতে ব্যাপকভাবে গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছেন।
খ্রিষ্টান জায়নবাদ কী?
খ্রিষ্টান জায়নবাদ হলো এমন এক ধর্মীয় ও রাজনৈতিক বিশ্বাস, যার অনুসারীরা মনে করেন—আধুনিক ইসরায়েল রাষ্ট্রের অস্তিত্ব বাইবেলের ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী নির্ধারিত, এবং ইহুদিদের সেই ভূখণ্ডে ফিরে যাওয়া ঈশ্বরের পরিকল্পনারই অংশ। এই বিশ্বাসীরা প্রাচীন বাইবেল, বিশেষ করে ওল্ড টেস্টামেন্টের এমন সব শ্লোকের ওপর ধারণা তৈরি করেন, যেখানে ঈশ্বর ইহুদিদের জন্য একটি প্রতিশ্রুত ভূমির কথা বলেছেন। তাদের মতে, ইসরায়েল রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা যিশুখ্রিষ্টের দ্বিতীয় আগমনের একটি পূর্বশর্ত—তাই ইসরায়েলকে সমর্থন করা মানে ঈশ্বরের ইচ্ছায় সাড়া দেওয়া।
জেনেসিস ১২: ৩ শ্লোকে ঈশ্বর আব্রাহামকে আশ্বাস দেন যে, যেসব জাতি তাকে আশীর্বাদ করবে, ঈশ্বরও তাদের আশীর্বাদ করবেন। খ্রিষ্টান জায়নবাদীরা বিশ্বাস করেন, ইসরায়েল আব্রাহামের বংশধর ও ঈশ্বরের নির্বাচিত জাতি—তাই ইসরায়েলকে সমর্থন করা মানে ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করা। এই বিশ্বাস থেকেই তারা ইসরায়েলের প্রতি ধর্মীয়ভাবে অবিচল সমর্থন দেখায়।
উল্লেখ্য, জেনেসিস বাইবেলের প্রথম বই, যা ওল্ড টেস্টামেন্টের অংশ। হিব্রু ভাষায় এর নাম ‘রেশিত’, যার অর্থ ‘আরম্ভে’ বা ‘শুরুতে’। জেনেসিসে মূলত পৃথিবী সৃষ্টির কাহিনি, আদম ও হাওয়ার সৃষ্টি, নূহের (আ.) প্লাবন, ইব্রাহীমের (আ.) সঙ্গে ঈশ্বরের চুক্তি, এবং তাঁর বংশধরদের ইতিহাস (ইসহাক, ইয়াকুব, ইউসুফ ইত্যাদি) বর্ণনা করা হয়েছে।
অনেক খ্রিষ্টান জায়নবাদী ডিসপেনসেশনালিজম নামক একটি ধর্মতাত্ত্বিক মতবাদ অনুসরণ করেন। এই মতে, বিশ্ব ইতিহাস একাধিক ‘যুগে’ বিভক্ত এবং বর্তমানে মানবসভ্যতা শেষ যুগে প্রবেশ করেছে। তারা বিশ্বাস করে, ইহুদিদের ইসরায়েলে প্রত্যাবর্তন যিশুর দ্বিতীয় আগমনের ইঙ্গিত এবং শেষ বিচারের সময় আসন্ন। সেই আগমনের পর যিশুখ্রিষ্ট এক সহস্রাব্দ ধরে পৃথিবীতে শাসন করবেন। সুতরাং, ইসরায়েল রাষ্ট্রের অস্তিত্ব ও সম্প্রসারণ তাদের ধর্মীয় ভবিষ্যদ্বাণীর এক বাস্তব রূপ।
খ্রিষ্টান জায়নবাদীরা মার্কিন রাজনীতিতেও ব্যাপক প্রভাব রাখে। তারা মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিকে প্রভাবিত করে এমনভাবে, যাতে ইসরায়েল সব সময় যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে অগ্রাধিকার পায়। তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের মূল উদ্দেশ্য—ইসরায়েলের সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করা এবং ফিলিস্তিন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রকে ইসরায়েলপন্থী রাখা। অনেক বিশ্লেষকের মতে, মার্কিন নীতিনির্ধারকদের ওপর এই গোষ্ঠীর চাপ ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষপাতদুষ্ট অবস্থানের একটি বড় উৎস। কিছু সূত্র অনুযায়ী, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ইহুদি জায়নবাদীদের চেয়ে খ্রিষ্টান জায়নবাদীর সংখ্যা বেশি।
যুক্তরাষ্ট্রে খ্রিষ্টান জায়নবাদী প্রভাব বিস্তারে সবচেয়ে প্রভাবশালী সংগঠন হলো ক্রিশ্চিয়ানস ইউনাইটেড ফর ইসরায়েল (সিইউএফআই)। ২০০৬ সালে ধর্মীয় নেতা জন হ্যাগি এই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন। ইসরায়েল এবং ইহুদি জনগণের প্রতি মার্কিন খ্রিষ্টানদের সমর্থন বাড়ানো, তাদের ‘ঈশ্বরের নির্বাচিত জাতি’ হিসেবে তুলে ধরা এবং মার্কিন নীতিনির্ধারণে এই আদর্শকে প্রতিষ্ঠিত করাই তাদের মূল লক্ষ্য।
আমেরিকার রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক নীতিতে এক প্রভাব বিস্তারকারী ধর্মীয় গোষ্ঠীর নাম ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টান। এদের মধ্যেই রয়েছে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ—খ্রিষ্টান জায়নবাদী, যারা আধুনিক ইসরায়েল রাষ্ট্রের দৃঢ় সমর্থক। তারা আসলে কারা, তাদের বিশ্বাস কী এবং কেন ইসরায়েল প্রসঙ্গে বারবার উঠে আসে তাদের নাম?
ইসরায়েলে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হাকাবি গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে একটি টেক্সট বার্তা পাঠিয়ে জানিয়েছেন, পেনসিলভানিয়ার সমাবেশে গুলিটি তাঁর মাথা একটুর জন্য মিস করেছে। তার মানে তিনি ঈশ্বরের কৃপায় রক্ষা পেয়েছেন। শতাব্দীর মধ্যে একজন ‘ঈশ্বর নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট’ তিনি। এই কারণে ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে তাঁর বাইবেলের নির্দেশনা অনুসরণ করা উচিত। এমন আরেকজন প্রভাবশালী রাজনীতিক হলেন রিপাবলিকান সিনেটর টেড ক্রুজ। যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান উভয় দলের মধ্যেই লোক আছেন। তারা মূলত ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টান।
ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টান কারা?
‘ইভানজেলিক্যাল’ শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ ইউয়েনজেলিয়ন (euangelion) থেকে, যার অর্থ ‘গুড নিউজ’ বা ‘সুসংবাদ’। যুক্তরাষ্ট্রে ইভানজেলিক্যাল বলতে বোঝায় প্রোটেস্ট্যান্ট খ্রিষ্টানদের একটি বিস্তৃত গোষ্ঠী, যারা যিশুখ্রিষ্টের বার্তা প্রচার, বাইবেলের আক্ষরিক ব্যাখ্যা এবং রূপান্তরের ওপর জোর দেয়।
এই গোষ্ঠীর বিশ্বাসের কেন্দ্রে রয়েছে চারটি মূল ধারণা। যার প্রথমটি ব্যক্তিগত বিশ্বাস ও রূপান্তর। ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টানরা বিশ্বাস করেন, প্রত্যেক মানুষের একপর্যায়ে যিশুখ্রিষ্টকে ব্যক্তিগত ত্রাতা হিসেবে গ্রহণ করে ‘নতুন জন্ম’ বা রূপান্তরের অভিজ্ঞতা অর্জন করা প্রয়োজন। এটি তাদের বিশ্বাসের মূল ভিত্তি—যেখানে ব্যক্তি পাপমুক্ত হয়ে নতুন জীবনে প্রবেশ করে। দ্বিতীয় ধারণাটি হলো বাইবেলের সর্বোচ্চ কর্তৃত্ব। তাদের বিশ্বাস—বাইবেল ঈশ্বরপ্রদত্ত, নির্ভুল ও চূড়ান্ত গ্রন্থ। জীবনের সব প্রশ্নে বাইবেলের নির্দেশই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।
তৃতীয় বিষয়টি হলো যিশুর ক্রুশবিদ্ধ হওয়া ও পুনরুত্থানে বিশ্বাস। ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টানরা মনে করেন, সব মানুষ পাপী এবং ঈশ্বরের সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করতে হলে পাপ থেকে মুক্তি দরকার। তাদের বিশ্বাস অনুযায়ী, যিশুখ্রিষ্ট যখন ক্রুশে মৃত্যুবরণ করেন, তখন তিনি মানবজাতির পাপের দায় নিজ কাঁধে নেন। আর তার মৃত্যুর পর পুনরুত্থান প্রমাণ করে যে ঈশ্বর এই আত্মবলিদান গ্রহণ করেছেন এবং পরিত্রাণের পথ খুলে দিয়েছেন। তাই যিশুর এই আত্মত্যাগ ও পুনরুত্থানই ইভানজেলিক্যাল বিশ্বাসের মূলভিত্তি।
চতুর্থত ধর্মীয় প্রচার ও সক্রিয় অংশগ্রহণ। শুধু নিজে বিশ্বাস করলেই চলবে না, সক্রিয়ভাবে ধর্ম প্রচারে অংশ নিতে হবে। প্রচারকাজ, মিশনারি কার্যক্রম এবং সমাজকল্যাণমূলক কাজের মাধ্যমে নিজের বিশ্বাস ছড়িয়ে দিতে সচেষ্ট ইভানজেলিক্যালরা। বর্তমানে আমেরিকান জনসংখ্যার প্রায় এক চতুর্থাংশই ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টান—যারা রাজনীতি, সংস্কৃতি এবং পররাষ্ট্রনীতিতে ব্যাপকভাবে গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছেন।
খ্রিষ্টান জায়নবাদ কী?
খ্রিষ্টান জায়নবাদ হলো এমন এক ধর্মীয় ও রাজনৈতিক বিশ্বাস, যার অনুসারীরা মনে করেন—আধুনিক ইসরায়েল রাষ্ট্রের অস্তিত্ব বাইবেলের ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী নির্ধারিত, এবং ইহুদিদের সেই ভূখণ্ডে ফিরে যাওয়া ঈশ্বরের পরিকল্পনারই অংশ। এই বিশ্বাসীরা প্রাচীন বাইবেল, বিশেষ করে ওল্ড টেস্টামেন্টের এমন সব শ্লোকের ওপর ধারণা তৈরি করেন, যেখানে ঈশ্বর ইহুদিদের জন্য একটি প্রতিশ্রুত ভূমির কথা বলেছেন। তাদের মতে, ইসরায়েল রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা যিশুখ্রিষ্টের দ্বিতীয় আগমনের একটি পূর্বশর্ত—তাই ইসরায়েলকে সমর্থন করা মানে ঈশ্বরের ইচ্ছায় সাড়া দেওয়া।
জেনেসিস ১২: ৩ শ্লোকে ঈশ্বর আব্রাহামকে আশ্বাস দেন যে, যেসব জাতি তাকে আশীর্বাদ করবে, ঈশ্বরও তাদের আশীর্বাদ করবেন। খ্রিষ্টান জায়নবাদীরা বিশ্বাস করেন, ইসরায়েল আব্রাহামের বংশধর ও ঈশ্বরের নির্বাচিত জাতি—তাই ইসরায়েলকে সমর্থন করা মানে ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করা। এই বিশ্বাস থেকেই তারা ইসরায়েলের প্রতি ধর্মীয়ভাবে অবিচল সমর্থন দেখায়।
উল্লেখ্য, জেনেসিস বাইবেলের প্রথম বই, যা ওল্ড টেস্টামেন্টের অংশ। হিব্রু ভাষায় এর নাম ‘রেশিত’, যার অর্থ ‘আরম্ভে’ বা ‘শুরুতে’। জেনেসিসে মূলত পৃথিবী সৃষ্টির কাহিনি, আদম ও হাওয়ার সৃষ্টি, নূহের (আ.) প্লাবন, ইব্রাহীমের (আ.) সঙ্গে ঈশ্বরের চুক্তি, এবং তাঁর বংশধরদের ইতিহাস (ইসহাক, ইয়াকুব, ইউসুফ ইত্যাদি) বর্ণনা করা হয়েছে।
অনেক খ্রিষ্টান জায়নবাদী ডিসপেনসেশনালিজম নামক একটি ধর্মতাত্ত্বিক মতবাদ অনুসরণ করেন। এই মতে, বিশ্ব ইতিহাস একাধিক ‘যুগে’ বিভক্ত এবং বর্তমানে মানবসভ্যতা শেষ যুগে প্রবেশ করেছে। তারা বিশ্বাস করে, ইহুদিদের ইসরায়েলে প্রত্যাবর্তন যিশুর দ্বিতীয় আগমনের ইঙ্গিত এবং শেষ বিচারের সময় আসন্ন। সেই আগমনের পর যিশুখ্রিষ্ট এক সহস্রাব্দ ধরে পৃথিবীতে শাসন করবেন। সুতরাং, ইসরায়েল রাষ্ট্রের অস্তিত্ব ও সম্প্রসারণ তাদের ধর্মীয় ভবিষ্যদ্বাণীর এক বাস্তব রূপ।
খ্রিষ্টান জায়নবাদীরা মার্কিন রাজনীতিতেও ব্যাপক প্রভাব রাখে। তারা মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিকে প্রভাবিত করে এমনভাবে, যাতে ইসরায়েল সব সময় যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে অগ্রাধিকার পায়। তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের মূল উদ্দেশ্য—ইসরায়েলের সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করা এবং ফিলিস্তিন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রকে ইসরায়েলপন্থী রাখা। অনেক বিশ্লেষকের মতে, মার্কিন নীতিনির্ধারকদের ওপর এই গোষ্ঠীর চাপ ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষপাতদুষ্ট অবস্থানের একটি বড় উৎস। কিছু সূত্র অনুযায়ী, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ইহুদি জায়নবাদীদের চেয়ে খ্রিষ্টান জায়নবাদীর সংখ্যা বেশি।
যুক্তরাষ্ট্রে খ্রিষ্টান জায়নবাদী প্রভাব বিস্তারে সবচেয়ে প্রভাবশালী সংগঠন হলো ক্রিশ্চিয়ানস ইউনাইটেড ফর ইসরায়েল (সিইউএফআই)। ২০০৬ সালে ধর্মীয় নেতা জন হ্যাগি এই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন। ইসরায়েল এবং ইহুদি জনগণের প্রতি মার্কিন খ্রিষ্টানদের সমর্থন বাড়ানো, তাদের ‘ঈশ্বরের নির্বাচিত জাতি’ হিসেবে তুলে ধরা এবং মার্কিন নীতিনির্ধারণে এই আদর্শকে প্রতিষ্ঠিত করাই তাদের মূল লক্ষ্য।
যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক যুদ্ধ-ইতিহাস দেখলে বোঝা যাবে, নতুন করে ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কতটা ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে। ইরাক যুদ্ধ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য প্রাণহানি ও বিপুল অর্থনৈতিক ক্ষতির কারণ হয়েছিল।
৪ ঘণ্টা আগেমার্কিন সংবিধানের প্রথম অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, যুদ্ধ ঘোষণা করার ক্ষমতা কংগ্রেসের। অনেক আইনজীবী এটিকে এভাবে ব্যাখ্যা করেন, দেশের সামরিক হস্তক্ষেপের সিদ্ধান্ত নেওয়ার চূড়ান্ত অধিকার কংগ্রেসের, প্রেসিডেন্টের নয়। অর্থাৎ, যুদ্ধের ব্যাপারে প্রধান নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান হচ্ছে আইন প্রণয়নকারী শাখা এবং চূড়ান্ত...
৭ ঘণ্টা আগেইরান-ইসরায়েল সংঘাত কেবল সামরিক হামলা বা পাল্টা হামলার বিষয় নয়—এটি এক দীর্ঘকালীন আদর্শিক, ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক সংঘর্ষ। যখন দুই নেতা নিজেদের জাতির অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য অতীতের ধর্মীয় প্রতীক ও যুদ্ধগাথা তুলে আনেন, তখন বোঝা যায়, সংঘাতের এই ক্ষেত্র কেবল আকাশপথে বা ভূখণ্ডে সীমাবদ্ধ নয়।
৮ ঘণ্টা আগেমধ্যপ্রাচ্য এক বিস্তৃত আঞ্চলিক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে। ১৩ জুন থেকে ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক অবকাঠামো, গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো এবং তেল-গ্যাসের ডিপোগুলোতে টানা বোমাবর্ষণ শুরু করেছে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ভাষায়, এই হামলার লক্ষ্য, ইরানের সম্ভাব্য পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির হুমকি ‘দমন...
৯ ঘণ্টা আগে