Ajker Patrika

সুফিয়া আহমেদ

সম্পাদকীয়
সুফিয়া আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত
সুফিয়া আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

‘ভাষাকন্যা’ হিসেবে খ্যাত সুফিয়া আহমেদের জন্ম ১৯৩২ সালের ২০ নভেম্বর ফরিদপুরে। ভাষা আন্দোলনের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের এই ছাত্রী একুশে ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা ভঙ্গকারীদের মধ্যে অন্যতম। সেদিন তিনি পুলিশি নির্যাতনে আহত হন। পরবর্তী সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সান্ধ্য আইন জারির প্রতিবাদে মিছিলকারী ছাত্রীদের মধ্যেও তিনি ছিলেন অগ্রগণ্য।

সুফিয়া আহমেদ শৈশবে প্রথমে ঢাকার সেন্ট ফ্রান্সিস জেভিয়ার্স স্কুল এবং পরে ভারতের দার্জিলিংয়ের একটি স্কুলে পড়াশোনা করেন।

এরপর দেশ ভাগ হলে চলে আসেন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে। প্রাইভেটে মাধ্যমিক এবং বরিশালের ব্রজমোহন কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।

১৯৬০ সালে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এসওএএস থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। পরের বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে প্রভাষক পদে যোগ দেন। বাংলাদেশে তিনিই প্রথম নারী, যিনি জাতীয় অধ্যাপক হন, ১৯৯৫ সালে।

আজীবন ইতিহাস গবেষক হিসেবে সুফিয়া বাংলার মুসলিম নারীদের পশ্চাৎপদতার কারণ এবং তাদের উন্নয়নের পথরেখা নির্দেশ করেছেন একাডেমিক পন্থায়। তাঁর রচিত ‘বাংলার মুসলিম সম্প্রদায়’ বইটি বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত।

গবেষণা ও শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশ ইতিহাস পরিষদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য, বাংলাদেশ পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সেন্টার, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড ও বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা সংস্থার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি ইস্তাম্বুলের বসফরাস বিশ্ববিদ্যালয় এবং উইসকনসিনের মিলোউকির আলভার্নো কলেজের আমন্ত্রিত অধ্যাপক ছিলেন।

তাঁর বাবা মুহাম্মদ ইবরাহিম ছিলেন ঢাকা হাইকোর্টের বিচারপতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এবং পাকিস্তান কেন্দ্রীয় সরকারের আইনমন্ত্রী। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এবং সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ ছিলেন তাঁর স্বামী।

২০২০ সালের ৯ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন সুফিয়া আহমেদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত