Ajker Patrika

সরলা দেবী চৌধুরাণী

সম্পাদকীয়
Thumbnail image

সরলা দেবী চৌধুরাণী ছিলেন শিক্ষক, সাহিত্যিক ও সমাজসেবক। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন তাঁর মামা। তবে মেধায় ও কর্মচেষ্টায় তিনি তৈরি করেছিলেন আত্মপরিচয়। ছোটবেলায় তাঁর নাম ছিল সরলা ঘোষাল, বিয়ের পর নাম হয় সরলা দেবী চৌধুরাণী। 

সরলা দেবী ১৮৭২ সালের ৯ সেপ্টেম্বর কলকতার জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি কলকাতার বেথুন স্কুল থেকে এন্ট্রান্স, বেথুন কলেজ থেকে এফএ এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে অনার্সসহ বিএ পাস করেন। বিএ পরীক্ষায় মেয়েদের মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে তিনি ‘পদ্মাবতী স্বর্ণপদক’ লাভ করেন। সংস্কৃত ও ফারসি ভাষায় দক্ষ ছিলেন সরলা। সংগীতজ্ঞ হিসেবেও তাঁর খ্যাতি ছিল এবং তিনি শতাধিক স্বদেশপ্রেমমূলক গান রচনা করেন। তিনি রবীন্দ্রনাথের অনেক গানের সুরের খসড়া তৈরি করেন। ভালো পিয়ানো বাজাতে পারতেন। রবীন্দ্রনাথের ‘সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে’ গানটার পিয়ানো রূপ এবং ‘এ কী লাবণ্যে পূর্ণ প্রাণ’-এ সুর দিয়েছিলেন। 

পড়ালেখা শেষ করে সরলা দেবী কলকাতা ছেড়ে মহীশুরে চলে যান। সেখানে মহারাণী গার্লস স্কুলে শিক্ষকতার মাধ্যমে তাঁর কর্মজীবন শুরু হয়। এ সময়ে তিনি বাংলার প্রথম গুপ্ত বিপ্লবী দল গঠনে সহায়তা করেন এবং স্বদেশি আন্দোলনের অংশ হিসেবে তাঁতবস্ত্র প্রচার ও লক্ষ্মীর ভান্ডার স্থাপন করেন। 

১৮৯৫ সাল থেকে তিনি তাঁর মা স্বর্ণকুমারী দেবীর সঙ্গে যুগ্মভাবে ‘ভারতী’ পত্রিকা সম্পাদনা শুরু করেন। তিনি ১৯১০ সালে ‘ভারত স্ত্রী মহামন্ডল’ প্রতিষ্ঠা করেন। কলকাতায়ও তিনি ‘ভারত স্ত্রীশিক্ষা সদন’ প্রতিষ্ঠা করে নারীদের মধ্যে তরবারি চালনা, লাঠিখেলা ইত্যাদির প্রচলন করেন। 

সরলা দেবী রচিত ১০০টি দেশাত্মবোধক গানের একটি সংকলন গ্রন্থ ‘শতগান’ ১৯০০ সালে প্রকাশিত হয়। এ ছাড়া তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলো হলো: বাঙালির পিতৃধন, ভারত-স্ত্রী-মহামন্ডল, নববর্ষের স্বপ্ন, জীবনের ঝরাপাতা (আত্মজীবনী), বেদবাণী (১১ খণ্ড), শিবরাত্রি পূজা ইত্যাদি। 

তিনি ১৯৪৫ সালের ১৮ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত