Ajker Patrika

সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়া হয়ে এআই চিপ পাচার, যুক্তরাষ্ট্রে দুই চীনা গ্রেপ্তার

অনলাইন ডেস্ক
পাঠানো চিপগুলোর মধ্যে ছিল এনভিডিয়ার এইচ ১০০ গ্রাফিকস প্রসেসিং ইউনিট (জিপিইউ)। ছবি: এএফপি
পাঠানো চিপগুলোর মধ্যে ছিল এনভিডিয়ার এইচ ১০০ গ্রাফিকস প্রসেসিং ইউনিট (জিপিইউ)। ছবি: এএফপি

যুক্তরাষ্ট্র থেকে সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়া হয়ে চীনে এনভিডিয়ার শক্তিশালী এআই চিপ অবৈধভাবে পাঠানোর অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন দুই চীনা নাগরিক। গত মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ (ডিওজে)।

ডিওজের অভিযোগ, গত তিন বছরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে চীনে চিপগুলো রপ্তানি করেছে এএলএক্স সলিউশনস নামে একটি কোম্পানি। এ জন্য প্রয়োজনীয় লাইসেন্স নেওয়া হয়নি। এই কোম্পানি চালাতেন চীনা নাগরিক চুয়ান জেন ও শিউই ইয়াং।

কোর্টের নথি অনুযায়ী, পাঠানো চিপগুলোর মধ্যে ছিল এনভিডিয়ার এইচ ১০০ গ্রাফিকস প্রসেসিং ইউনিট (জিপিইউ)। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানি নিয়ন্ত্রণের আওতায় রয়েছে চিপটি। চীন যেন অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করতে না পারে এ জন্য এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

এদিকে এনভিডিয়ার মুখপাত্র বলেন, চিপ পাচার করা ‘সম্ভব নয়’। এনভিডিয়া সুপরিচিত অংশীদারদের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করে। সমস্ত বিক্রয় মার্কিন রপ্তানি নিয়ন্ত্রণের নিয়ম মেনে হচ্ছে, তা এই অংশীদাররা নিশ্চিত করেন।

মুখপাত্র আরও বলেন, ‘যদিও ছোট রপ্তানিকারক বা সামান্য শিপমেন্টও সম্পূর্ণভাবে পরীক্ষা করা হয়। যদি কোনো পণ্য ভুলভাবে অন্যত্র চলে যায়, তাহলে সেগুলো কোনো সার্ভিস, সাপোর্ট বা আপডেট পাবে না।’

কোর্টের নথি অনুযায়ী, ক্যালিফোর্নিয়ার এএলএক্স সলিউশনসের তিনজন কর্মীর মধ্যে জেন অর্থ পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন, কোম্পানির সেক্রেটারি ছিলেন ইয়াং। তবে কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কে ছিলেন তা নথিতে উল্লেখ নেই।

ডিওজে জানিয়েছে, এই তিনজন ‘পূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ ক্ষমতা ও শিপমেন্ট সমন্বয়’ করতেন।

জেন ছিলেন ক্যালিফোর্নিয়ার স্থায়ী বাসিন্দা এবং ইয়াং ছিলেন ‘অবৈধ অভিবাসী’। ইয়াং ভিসার মেয়াদ বাড়িয়েছিলেন।

ব্যবসায়িক নথি অনুযায়ী, ২০২২ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৫ সালের জুলাই পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র থেকে সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ার শিপিং ফার্মে পণ্য পাঠিয়েছে এএলএক্স। ডিওজের মতে, চীনে অবৈধ শিপমেন্ট লুকানোর জন্য ট্রানজিট হাব হিসেবে সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়াকে ব্যবহার করা হয়। এএলএক্স কখনো শিপিং ফার্ম থেকে টাকা পায়নি। বরং হংকং ও চীনের বিভিন্ন কোম্পানি থেকে অর্থ গ্রহণ করত।

ডিওজে জানায়, ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে একটি চীনা কোম্পানি থেকে ১০ লাখ ডলার পেয়েছিল কোম্পানিটি।

গত ডিসেম্বরে এএলএক্স একটি রপ্তানি-নিয়ন্ত্রিত কম্পিউটিং চিপের শিপমেন্ট পাঠায়, যার মধ্যে এনভিডিয়ার এইচ ১০০ ও জেফোর্স আরটিএক্স ৪০৯০ জিপিইউ ছিল।

২০২৩ সালে এএলএক্স একটি ইনভয়েস (পেমেন্ট বা অর্ডারের কাগজ) তৈরি করে সুপার মাইক্রো কম্পিউটারকে জানায়, ২ কোটি ৮৪ লাখ ডলারের বেশি মূল্যের যে চিপগুলো তারা পাঠাচ্ছে, তা সিঙ্গাপুরের কোনো গ্রাহক অর্ডার করেছে।

তবে সিঙ্গাপুরের মার্কিন রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা যাচাই করতে পারেননি যে চিপগুলো দেশটিতে পৌঁছেছে কি না এবং উল্লেখিত কোম্পানি সেই স্থানে নেই।

এর আগে এক বিবৃতিতে সুপার মাইক্রো কম্পিউটার বলেছে, তারা ‘মার্কিন রপ্তানি নিয়ন্ত্রণের সব নিয়ম মেনে চলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’ এবং চলমান মামলার বিষয়ে মন্তব্য করবে না, তবে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সহযোগিতা করবে।

ডিওজে জানিয়েছে, ইয়াং শনিবার গ্রেপ্তার হয়েছেন এবং জেন স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেন। গত সোমবার লস অ্যাঞ্জেলেসের ফেডারেল কোর্টে উপস্থিত হয়েছেন দুজনেই। দোষী সাব্যস্ত হলে তাদের ২০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।

কোর্টের নথি অনুযায়ী, এএলএক্স সলিউশনসের কোনো ওয়েবসাইট নেই। এএলএক্স ক্লাউড নামে একটি ক্লাউড কম্পিউটিং কোম্পানির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, এটি এএলএক্সের অধীনস্থ একটি কোম্পানি।

তথ্যসূত্র: বিবিসি

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত