এ বছর বিশ্বজুড়ে এআই খাতে সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ

কয়েক বছর ধরে এআই প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের বড় প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানগুলো। এ বছর এআই খাতে তাদের বিনিয়োগের যে পরিকল্পনা, তা বিগত বছরগুলোকে কয়েক গুণ ছাড়িয়ে যাবে। আমাজন, গুগল, মাইক্রোসফট ও মেটা এবার এআই প্রযুক্তি উন্নয়নে ব্যয় করবে ৩২৫ বিলিয়ন ডলার। এ ছাড়া খাতটিতে বিনিয়োগ করবে স্টার গেট প্রকল্প। অন্যদিকে আছে চীনের আলোচিত প্রতিষ্ঠান বাইটডান্সের বড় অঙ্কের বিনিয়োগের ঘোষণা।

আমাজনের সিইও অ্যান্ডি জ্যাসি বলেছেন, ‘এআই ইন্টারনেট ও ক্লাউড টেকনোলজির পর সবচেয়ে বড় সুযোগ। এতে দীর্ঘ মেয়াদে বিনিয়োগে ব্যাপক সফলতা আসবে।’

গুগলের সিইও সুন্দর পিচাই বলেছেন, ‘এআইয়ের খরচ কমতে থাকলে এর ব্যবহার বাড়বে এবং নতুন নতুন উদ্ভাবন আসবে। তাই এখনই বিনিয়োগ জরুরি।’

আমাজন

প্রতিষ্ঠানটি এ বছর এআই প্রযুক্তিতে ১০৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে। এর মূল উদ্দেশ্য, তাদের ওয়েব সার্ভিস আরও শক্তিশালী করা। তারা নতুন ডেটাসেন্টার তৈরি করবে এবং এআই ব্যবহার করে গ্রাহকসেবা, পণ্য সরবরাহ এবং অন্যান্য সেবা উন্নত করবে। মূলত আমাজন তাদের পণ্য ডেলিভারি আরও দ্রুত ও সহজ করতে চাইছে।

মাইক্রোসফট

এআই প্রকল্পে ৮০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে মাইক্রোসফট। তারা নিজেদের ক্লাউড সার্ভিসের জন্য এআই মডেল এবং ডেটাসেন্টার তৈরি করবে। এর মাধ্যমে মাইক্রোসফট ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও সহজে এআই টুলস ব্যবহারে সাহায্য করবে। মাইক্রোসফটের উদ্দেশ্য তাদের জনপ্রিয় সফটওয়্যার; যেমন ওয়ার্ড, এক্সেল বা পাওয়ার পয়েন্টে এআইয়ের মাধ্যমে উন্নত সেবা দেওয়া।

গুগল

এ বছর এআই খাতে ৭৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে গুগল। এর মাধ্যমে তাদের সার্চ ইঞ্জিন এবং ইউটিউব প্ল্যাটফর্মে এআই ব্যবহার করে আরও উন্নত সেবা দেবে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া গুগলের ক্লাউড সার্ভিসেও এআই সেবা থাকবে, যাতে অন্যান্য প্রতিষ্ঠান এটি সহজে ব্যবহার করতে পারে।

মেটা

৬৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে মেটা। এআই ব্যবহার করে তাদের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোর অভিজ্ঞতা আরও উন্নত করতে চাইছে এই টেক জায়ান্ট। এ ছাড়া মেটা ভার্চুয়াল রিয়েলিটি এবং অগমেন্টেড রিয়েলিটি ব্যবহার করে মেটাভার্স তৈরিতে বিনিয়োগ করবে।

বাইটড্যান্সের বিনিয়োগ

টিকটকের মূল প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্স ২০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা করেছে এ বছর, যার একটি বড় অংশ এআইয়ের উন্নতির জন্য ব্যয় হবে। এর সঙ্গে এই অর্থ ব্যয় হবে ডেটাসেন্টার এবং নেটওয়ার্কিং প্রযুক্তি প্রকল্পের জন্য। যদিও বাইটড্যান্সের এআই বিনিয়োগ মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলোর তুলনায় কম। তবে এই বাজেটের মধ্যে বাইটড্যান্স নতুন উদাহরণ তৈরি করবে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা।

স্টার গেট প্রকল্প

স্টার গেট প্রকল্প একটি বড় উদ্যোগ। এখানে রয়েছে ওপেনএআই, সফট ব্যাংক, ওরাকলের মতো প্রতিষ্ঠান। এই প্রকল্পে এ বছর কত বিনিয়োগ করা হবে, তা জানা না গেলেও ২০২৯ সাল পর্যন্ত ৫০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হবে বলে জানা যায়। এর উদ্দেশ্য হলো নতুন ধরনের এআই প্রযুক্তি তৈরি করা; যা স্বাস্থ্যসেবা, অর্থনীতি, প্রতিরক্ষা এবং শক্তি ও জ্বালানি খাতে ব্যবহার করা যাবে।

এআই প্রযুক্তির উন্নয়নে বিভিন্ন কাজ আরও দ্রুততম সময়ে এবং সহজে করা যাবে। এটি বিভিন্ন খাতের উন্নয়নকে সাহায্য করবে। ব্যবসার কাজ আরও সহজ করবে, মানুষের দৈনন্দিন জীবনকে আরও উন্নত করবে এবং নতুন কাজের সুযোগ তৈরি করবে। এ ছাড়া এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের সেবা আরও উন্নত করতে সক্ষম হবে।