Ajker Patrika

গত এক বছরে সমাজে বৈষম্য বেড়েছে: সাইফুল হক

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় সংহতি মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় সংহতি মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা। ছবি: আজকের পত্রিকা

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি সাইফুল হক বলেছেন, ‘সরকারের আন্তরিকতা নিয়ে বড় প্রশ্ন না থাকলেও তাদের প্রজ্ঞা, দক্ষতা ও যোগ্যতা নিয়ে নাগরিকদের মধ্যে সন্দেহ রয়েছে। এই সরকারের যাত্রাটা শুরু হয়েছিল বৈষম্যবিরোধী চেতনার জায়গা থেকে। গত এক বছরে আমাদের রাষ্ট্র ও সমাজে বৈষম্য আরও বেড়েছে। না খেয়ে থাকা মানুষের সংখ্যা ও কর্মহীনতা বেড়েছে, বিনিয়োগ পরিস্থিতিও খারাপ হয়েছে। সাধারণ মানুষ ও শ্রমিকেরা প্রতিদিন বুকচাপা কষ্ট নিয়ে দিন পার করছেন।’

আজ শুক্রবার (৮ আগস্ট) সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় সংহতি মিলনায়তনে বাংলাদেশ বিপ্লবী শ্রমিক সংহতি আয়োজিত ‘গণ-অভ্যুত্থান ও অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর—শ্রমিক মেহনতিদের অধিকারের প্রশ্ন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি সাইফুল হক।

গত এক বছরে এই সরকারকে কত নম্বর দেবেন—এই প্রসঙ্গে সাইফুল হক বলেন, ‘টেনেটুনে সরকারকে আমরা পাস করিয়ে দিচ্ছি, কারণ, এটা আমাদেরই সরকার, কিছুটা পক্ষপাত থাকবেই। সরকার ব্যর্থ হলে আমাদেরও দায় থাকবে। তাই ৩৩ না পেলেও গ্রেস মার্কে পাস দিচ্ছি। তবে নির্বাচন ঘোষণার পর থেকে সরকার ভালো পারফরম করছে। আশা করছি, এক-দুই মাসের মধ্যে বি-প্লাস দিতে পারব। আর যদি ফেব্রুয়ারিতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়, তাহলে সরকার এ-প্লাস পাবে।’

অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের সময় দুটি ভুল হয়েছে উল্লেখ করে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির এই নেতা বলেন, ‘আমাদের ঐকমত্যের ভিত্তিতেই অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। তবে দুটি বড় দুর্বলতা ছিল—একটি হলো, উপদেষ্টা মনোনয়নে ছাত্রদের মত নিয়েছে, কিন্তু রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে আলোচনা না করা। অন্যটি, সরকারের মেয়াদ নির্ধারণ না করা। এসব কারণে দুর্বল উপদেষ্টামণ্ডলীর সঙ্গে এক বছর পথ চলতে হয়েছে, যা এড়ানো যেত। এতে শ্রমিকদের হাহাকার, মানুষের আকুতি-বেদনার কিছুটা হলেও অবসান ঘটানো সম্ভব হতো।’

শ্রমিকদের অধিকারের বিষয়ে সাইফুল হক বলেন, ‘সরকারে ছাত্রদের প্রতিনিধিত্ব থাকলেও সবচেয়ে বেশি ত্যাগ করা শ্রমিকদের কোনো জায়গা নেই। এক বছর পেরিয়ে গেলেও শ্রমিকদের জীবন নিরাপদ হয়নি, তারা এখনো ন্যূনতম মানবিক মজুরি পাচ্ছে না। অনেক কারখানা এখনো বন্ধ, হাজারো শ্রমিক বেকার। সামান্য আর্থিক সহায়তা দিলে অনেক কারখানা চালু করা সম্ভব হতো। এই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে শ্রমিকদের জন্য রেশন ব্যবস্থা করা যেত, সেটাও হয়নি। শ্রমিকদের ন্যায্য আন্দোলনকে ষড়যন্ত্র বলে চালিয়ে দেওয়া ঠিক নয়। অন্তর্বর্তী সরকার যেন শ্রমিকদের জন্য মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি নেয় এবং অন্তত মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা করে শ্রমিকদের।’

জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে ওয়ার্কার্স পার্টির এই নেতা বলেন, ‘আমন্ত্রণ পেলেও আমরা অনুষ্ঠানে যাইনি, কারণ, এটি অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় তৈরি হয়েছে। কয়েকটি দল ছাড়া অন্যদের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি। একধরনের লুকোচুরির মাধ্যমে ঘোষণাপত্র তৈরি হয়েছে। শুধু সাক্ষী হতে না চেয়ে আমরা অংশ নিইনি—এটাই ছিল আমাদের প্রতিবাদ।’

নির্বাচন প্রসঙ্গে সাইফুল হক বলেন, নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা অনেকটা কেটে গেছে, মানুষের মধ্যে ভোট নিয়ে আস্থা ফিরছে। গত ১৬-১৭ বছর ধরে মানুষ সঠিক নির্বাচনের অপেক্ষায় ছিল। দেশে যে নৈরাজ্য ও নিরাপত্তাহীনতা ছিল, সেখানে নির্বাচনকাল ঘোষণায় কিছুটা স্থিতি এসেছে। তবে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত আরও গ্রহণযোগ্য করতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে যেকোনো সংশোধন চূড়ান্ত করা উচিত নির্বাচন কমিশনের।

এই আলোচনা সভায় বাংলাদেশ বিপ্লবী শ্রমিক সংহতির সভাপতি মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলামসহ শ্রমিক নেতা ও সাধারণ শ্রমিকেরা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রায় ২৫০ কারখানার পণ্য পুড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছি: বিজিএমইএ সভাপতি

বিমানবন্দরের মতো কৌশলগত স্থাপনায় আগুন নিরাপত্তা ঘাটতির স্পষ্ট প্রমাণ: জামায়াত আমির

বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ আগুন যেসব প্রশ্ন তুলল, সর্বশেষ যা জানা গেল

এখনো যথেষ্ট আগুন রয়েছে, তবে নিয়ন্ত্রণে

শাহজালাল বিমানবন্দরে নাশকতার প্রমাণ পেলে ‘কঠোর ব্যবস্থা নেবে’ সরকার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত