মারুফ রসূল
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আবারও সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হয়েছেন বাংলাদেশি তরুণ। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদভাষ্যে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের মিজৌরি অঙ্গরাজ্যের সেন্ট লুইস শহরের হ্যাম্পটন অ্যাভিনিউর ১১০০ ব্লকের বিপি গ্যাস স্টেশনে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে গত ৪ জানুয়ারি বাংলাদেশি আরেক তরুণ সাঈদ ফয়সালকে কেমব্রিজের চেস্টনাট স্ট্রিটে গুলি করে হত্যা করে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের পুলিশ।
যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশ বা সন্ত্রাসীদের আক্রমণে বাংলাদেশি নিহত হওয়ার ঘটনা নতুন নয়। প্রায়ই বাংলাদেশ বা যুক্তরাষ্ট্রের খবরের কাগজে এ ধরনের হত্যাকাণ্ডের খবর প্রকাশিত হয়; কিন্তু এগুলোর তদন্ত বা বিচার নিয়ে পরে কোনো সংবাদ পাওয়া যায় না। ২০১৫ সালে বাংলাদেশের গণমাধ্যমে এ বিষয়ে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের সূত্রে জানা যায়, ২০১২ থেকে ২০১৫—এই তিন বছরে যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন হামলায় নিহত হয়েছেন ছয় বাংলাদেশি। ২০১৫ সালের অক্টোবরে ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোশতাক আহমেদ।
একই বছর আগস্টে আরেকটি মর্মান্তিক হামলায় নিহত হন ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম। ২০১৩ সালে নিউইয়র্কের ওজন পার্কে সন্ত্রাসীদের হামলায় নিহত হন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুক্তরাষ্ট্র শাখার নেতা নাজমুল ইসলাম। ২০১২ সালে কানেকটিকাটে দুর্বৃত্তদের হামলায় নিহত হন যুক্তরাষ্ট্র শাখা আওয়ামী লীগের আরেক নেতা বেলাল তরফদার। বাংলাদেশি চলচ্চিত্র পরিচালক এ বি মানিকও নিহত হয়েছিলেন ২০১৪ সালের আগস্ট মাসে। একই সময় সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছিলেন কামাল উদ্দিন নামের একজন ক্যাবচালক। তাঁর মৃতদেহ রাস্তায় পড়ে ছিল।
২০১৫ সালে যে সময় যুক্তরাষ্ট্রে একের পর এক বাংলাদেশি হত্যাকাণ্ড ঘটছিল, তখন বাংলাদেশেও দুজন বিদেশি নাগরিক নিহত হয়েছিলেন। ঢাকায় ইতালির নাগরিক চেজারে তাভেল্লা এবং রংপুরে জাপানি নাগরিক কুনিও হোশি হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে তখন বেশ তৎপর ছিল মার্কিন দূতাবাস। তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রদূত বার্নিকাট এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশের নামে প্রায় শোরগোল তুলে দিয়েছিলেন।
আমাদের গণমাধ্যমও তা বেশ জোর দিয়ে প্রচার করেছিল। কিন্তু এর বিপরীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি নাগরিক হত্যার বিষয়ে তেমন কোনো জোর প্রতিবাদ বা কূটনৈতিক তৎপরতা আমাদের চোখে পড়েনি। এমনকি বিভিন্ন সংবাদ সম্মেলনে বার্নিকাটকে এ বিষয়ে তেমন জোরালো কোনো প্রশ্নও করা হয়নি।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড প্রায় নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। ‘চ্যাম্পিয়ন অব ডেমোক্রেসি অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস’-এর গালভরা নামাবলি গায়ে চাপানো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে হরহামেশাই বন্দুকধারীদের আক্রমণের সংবাদ আমরা খবরের কাগজে পড়ি। বার্তা সংস্থা এপি, সংবাদমাধ্যম ইউএসএ টুডে এবং বোস্টনের নর্থ ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির যৌথ গবেষণা-আর্কাইভের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের প্রথম ছয় মাসে ২৮টি বন্দুক হামলা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন ১৪০ জন মানুষ।
১ জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, দেশটিতে প্রায় প্রতি সপ্তাহেই কোথাও না কোথাও বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটেছে। মার্কিন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে দেখা যায়, ২০১৭ সালে দেশটিতে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন ২২৪, ২০১৯ সালে ২১১, ২০২০ সালে ৬১০, ২০২১ সালে ৬৯২ এবং ২০২২ সালে ৬৪৮ জন।
কিন্তু কোথাও এই হত্যাকাণ্ডগুলোর বিষয়ে প্রশাসনের কোনো উদ্যোগ বা তৎপরতার সংবাদ নেই, নেই কোনো মামলা বা বিচারের সংবাদ। এমন ভয়াবহ যে দেশের পরিস্থিতি তারা বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে গিয়ে মানবাধিকার রক্ষার নামে সেই সব রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে।
গত কয়েক মাসে বাংলাদেশের নির্বাচন, সরকারব্যবস্থা ও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বাইডেন প্রশাসন যে পরিমাণ বাক্যব্যয় করেছে, তার সিকিভাগও নিজের দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে করেনি। করলে অন্তত ছয় মাসের ব্যবধানে দুজন বাংলাদেশি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হতেন না।
২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে ঘটে যাওয়া সাঈদ ফয়সালের হত্যাকাণ্ড ঘিরে নানামাত্রিক প্রতিবাদের কথা আগেও উল্লেখ করেছি। প্রতিবাদ যেমন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে হয়েছে, তেমনি বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী বাংলাদেশিরাও এই প্রতিবাদে যুক্ত হয়েছেন। সবে গণমাধ্যমে এ নিয়ে লেখালেখি ও আলোচনা শুরু হয়েছিল। তারপরই হঠাৎ করে গত ২৪ মে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি জে. ব্লিঙ্কেন ঘোষণা করলেন নতুন ভিসা নীতি। দুয়ে দুয়ে চার মেলালে অঙ্কটি খুব জটিল হওয়ার কথা নয়। নানা কারণেই অভিবাসনে আগ্রহী বাংলাদেশিরা যুক্তরাষ্ট্রকে পছন্দের তালিকায় রাখেন। দেশটির ভিসা পাওয়ার তোড়জোড়ও তাই বেশি থাকে।
গণতান্ত্রিক নির্বাচনকে শিখণ্ডী হিসেবে দাঁড় করালেও আমি মনে করি, মার্কিন প্রশাসনের মূল উদ্দেশ্য ছিল সাঈদ ফয়সালসহ বিভিন্ন সময় নিহত বাংলাদেশিদের বিষয়ে রাজপথ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যে প্রতিবাদটি শুরু হয়েছিল, তাকে দমন করা। এর আগে ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট (রাজস্ব বিভাগ) এবং পররাষ্ট্র দপ্তর নিষেধাজ্ঞা দেয় বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা র্যাবের সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর। তাঁদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়। মানবাধিকার লঙ্ঘনের এমন একতরফা সংজ্ঞায়নের নজির সত্যিই বিরল।
প্রশ্ন হচ্ছে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কি এসব বিষয়ে সুদৃঢ় অবস্থান নিতে পেরেছে? স্পষ্ট উত্তর হচ্ছে, পারেনি। ‘অসন্তোষ’, ‘ক্ষোভ’ বা ‘প্রতিবাদ’ জানানোর মতো মৃদু উদ্যোগ আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিলেও শক্ত কূটনৈতিক অবস্থান নিতে পারেনি। না পারার যথেষ্ট কারণও রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গোটা পৃথিবীর অন্যতম পরাশক্তি। চাইলেই বাংলাদেশের মতো একটি দেশ এমন পরাশক্তির সঙ্গে প্রকাশ্য কূটনৈতিক লড়াইয়ে যেতে পারে না।
তা ছাড়া, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতিও ভারসাম্যমূলক পন্থা অনুসরণ করে। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্যবাদী কূটনীতির সামনে ‘ধীরে চলো নীতি’ অবলম্বন ছাড়া বাংলাদেশের জন্য কার্যকর আর কী হতে পারে? কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যেভাবে বাংলাদেশি নাগরিকেরা হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছেন আর প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের পর বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিহতের পরিবারের প্রতি যে সহানুভূতির ফাঁকা বুলি ছাড়ছেন, তাতে কূটনৈতিক সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রশ্নে বাংলাদেশ কত দিন ধীরে চলবে, সেটা একটি বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আবারও সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হয়েছেন বাংলাদেশি তরুণ। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদভাষ্যে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের মিজৌরি অঙ্গরাজ্যের সেন্ট লুইস শহরের হ্যাম্পটন অ্যাভিনিউর ১১০০ ব্লকের বিপি গ্যাস স্টেশনে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে গত ৪ জানুয়ারি বাংলাদেশি আরেক তরুণ সাঈদ ফয়সালকে কেমব্রিজের চেস্টনাট স্ট্রিটে গুলি করে হত্যা করে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের পুলিশ।
যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশ বা সন্ত্রাসীদের আক্রমণে বাংলাদেশি নিহত হওয়ার ঘটনা নতুন নয়। প্রায়ই বাংলাদেশ বা যুক্তরাষ্ট্রের খবরের কাগজে এ ধরনের হত্যাকাণ্ডের খবর প্রকাশিত হয়; কিন্তু এগুলোর তদন্ত বা বিচার নিয়ে পরে কোনো সংবাদ পাওয়া যায় না। ২০১৫ সালে বাংলাদেশের গণমাধ্যমে এ বিষয়ে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের সূত্রে জানা যায়, ২০১২ থেকে ২০১৫—এই তিন বছরে যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন হামলায় নিহত হয়েছেন ছয় বাংলাদেশি। ২০১৫ সালের অক্টোবরে ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোশতাক আহমেদ।
একই বছর আগস্টে আরেকটি মর্মান্তিক হামলায় নিহত হন ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম। ২০১৩ সালে নিউইয়র্কের ওজন পার্কে সন্ত্রাসীদের হামলায় নিহত হন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুক্তরাষ্ট্র শাখার নেতা নাজমুল ইসলাম। ২০১২ সালে কানেকটিকাটে দুর্বৃত্তদের হামলায় নিহত হন যুক্তরাষ্ট্র শাখা আওয়ামী লীগের আরেক নেতা বেলাল তরফদার। বাংলাদেশি চলচ্চিত্র পরিচালক এ বি মানিকও নিহত হয়েছিলেন ২০১৪ সালের আগস্ট মাসে। একই সময় সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছিলেন কামাল উদ্দিন নামের একজন ক্যাবচালক। তাঁর মৃতদেহ রাস্তায় পড়ে ছিল।
২০১৫ সালে যে সময় যুক্তরাষ্ট্রে একের পর এক বাংলাদেশি হত্যাকাণ্ড ঘটছিল, তখন বাংলাদেশেও দুজন বিদেশি নাগরিক নিহত হয়েছিলেন। ঢাকায় ইতালির নাগরিক চেজারে তাভেল্লা এবং রংপুরে জাপানি নাগরিক কুনিও হোশি হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে তখন বেশ তৎপর ছিল মার্কিন দূতাবাস। তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রদূত বার্নিকাট এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশের নামে প্রায় শোরগোল তুলে দিয়েছিলেন।
আমাদের গণমাধ্যমও তা বেশ জোর দিয়ে প্রচার করেছিল। কিন্তু এর বিপরীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি নাগরিক হত্যার বিষয়ে তেমন কোনো জোর প্রতিবাদ বা কূটনৈতিক তৎপরতা আমাদের চোখে পড়েনি। এমনকি বিভিন্ন সংবাদ সম্মেলনে বার্নিকাটকে এ বিষয়ে তেমন জোরালো কোনো প্রশ্নও করা হয়নি।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড প্রায় নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। ‘চ্যাম্পিয়ন অব ডেমোক্রেসি অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস’-এর গালভরা নামাবলি গায়ে চাপানো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে হরহামেশাই বন্দুকধারীদের আক্রমণের সংবাদ আমরা খবরের কাগজে পড়ি। বার্তা সংস্থা এপি, সংবাদমাধ্যম ইউএসএ টুডে এবং বোস্টনের নর্থ ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির যৌথ গবেষণা-আর্কাইভের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের প্রথম ছয় মাসে ২৮টি বন্দুক হামলা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন ১৪০ জন মানুষ।
১ জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, দেশটিতে প্রায় প্রতি সপ্তাহেই কোথাও না কোথাও বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটেছে। মার্কিন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে দেখা যায়, ২০১৭ সালে দেশটিতে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন ২২৪, ২০১৯ সালে ২১১, ২০২০ সালে ৬১০, ২০২১ সালে ৬৯২ এবং ২০২২ সালে ৬৪৮ জন।
কিন্তু কোথাও এই হত্যাকাণ্ডগুলোর বিষয়ে প্রশাসনের কোনো উদ্যোগ বা তৎপরতার সংবাদ নেই, নেই কোনো মামলা বা বিচারের সংবাদ। এমন ভয়াবহ যে দেশের পরিস্থিতি তারা বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে গিয়ে মানবাধিকার রক্ষার নামে সেই সব রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে।
গত কয়েক মাসে বাংলাদেশের নির্বাচন, সরকারব্যবস্থা ও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বাইডেন প্রশাসন যে পরিমাণ বাক্যব্যয় করেছে, তার সিকিভাগও নিজের দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে করেনি। করলে অন্তত ছয় মাসের ব্যবধানে দুজন বাংলাদেশি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হতেন না।
২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে ঘটে যাওয়া সাঈদ ফয়সালের হত্যাকাণ্ড ঘিরে নানামাত্রিক প্রতিবাদের কথা আগেও উল্লেখ করেছি। প্রতিবাদ যেমন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে হয়েছে, তেমনি বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী বাংলাদেশিরাও এই প্রতিবাদে যুক্ত হয়েছেন। সবে গণমাধ্যমে এ নিয়ে লেখালেখি ও আলোচনা শুরু হয়েছিল। তারপরই হঠাৎ করে গত ২৪ মে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি জে. ব্লিঙ্কেন ঘোষণা করলেন নতুন ভিসা নীতি। দুয়ে দুয়ে চার মেলালে অঙ্কটি খুব জটিল হওয়ার কথা নয়। নানা কারণেই অভিবাসনে আগ্রহী বাংলাদেশিরা যুক্তরাষ্ট্রকে পছন্দের তালিকায় রাখেন। দেশটির ভিসা পাওয়ার তোড়জোড়ও তাই বেশি থাকে।
গণতান্ত্রিক নির্বাচনকে শিখণ্ডী হিসেবে দাঁড় করালেও আমি মনে করি, মার্কিন প্রশাসনের মূল উদ্দেশ্য ছিল সাঈদ ফয়সালসহ বিভিন্ন সময় নিহত বাংলাদেশিদের বিষয়ে রাজপথ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যে প্রতিবাদটি শুরু হয়েছিল, তাকে দমন করা। এর আগে ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট (রাজস্ব বিভাগ) এবং পররাষ্ট্র দপ্তর নিষেধাজ্ঞা দেয় বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা র্যাবের সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর। তাঁদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়। মানবাধিকার লঙ্ঘনের এমন একতরফা সংজ্ঞায়নের নজির সত্যিই বিরল।
প্রশ্ন হচ্ছে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কি এসব বিষয়ে সুদৃঢ় অবস্থান নিতে পেরেছে? স্পষ্ট উত্তর হচ্ছে, পারেনি। ‘অসন্তোষ’, ‘ক্ষোভ’ বা ‘প্রতিবাদ’ জানানোর মতো মৃদু উদ্যোগ আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিলেও শক্ত কূটনৈতিক অবস্থান নিতে পারেনি। না পারার যথেষ্ট কারণও রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গোটা পৃথিবীর অন্যতম পরাশক্তি। চাইলেই বাংলাদেশের মতো একটি দেশ এমন পরাশক্তির সঙ্গে প্রকাশ্য কূটনৈতিক লড়াইয়ে যেতে পারে না।
তা ছাড়া, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতিও ভারসাম্যমূলক পন্থা অনুসরণ করে। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্যবাদী কূটনীতির সামনে ‘ধীরে চলো নীতি’ অবলম্বন ছাড়া বাংলাদেশের জন্য কার্যকর আর কী হতে পারে? কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যেভাবে বাংলাদেশি নাগরিকেরা হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছেন আর প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের পর বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিহতের পরিবারের প্রতি যে সহানুভূতির ফাঁকা বুলি ছাড়ছেন, তাতে কূটনৈতিক সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রশ্নে বাংলাদেশ কত দিন ধীরে চলবে, সেটা একটি বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি বেড়েই চলছে। এ কারণে চালক ও যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে এই সড়ক। ডাকাতির শিকার বেশি হচ্ছেন প্রবাসফেরত লোকজন। ডাকাতেরা অস্ত্র ঠেকিয়ে লুট করে নিচ্ছে সর্বস্ব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েও ঘটছে ডাকাতির ঘটনা।
৫ দিন আগেবিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৬ জানুয়ারি ২০২৫গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪