Ajker Patrika

দ্রব্যমূল্যে দিশেহারা ক্রেতা

মহিউদ্দিন রানা, ঈশ্বরগঞ্জ
আপডেট : ০৪ নভেম্বর ২০২১, ১৮: ৩৩
Thumbnail image

‘এমনিতেই কাত্তি (কার্তিক) মাস। আত (হাত) নাই টেহা-পয়সা। আরও তয়তরহারিসহ (তরিতরকারি) জিনিসপাতির যেইবা দাম বাড়ছে, কিবা কিইন্ন্যা খাইয়াম।’ বাজারের ব্যাগ হাতে আক্ষেপের সুরে কথাগুলো বলছিলেন ষাটোর্ধ্ব আব্দুস ছামাদ।

তিনি ব্যাগ বের করে দেখালেন, ২০ টাকায় কেজি দরে আলু, পেঁপে, আর এক আঁটি ডাঁটা কিনেছেন। তাঁর সাধ্যের মধ্যে এগুলোই ছিল বলে জানান ছামাদ। শুধু ছামাদই নন, জিনিসপত্রের আকাশছোঁয়া দামে হিমশিম খাচ্ছে মধ্যবিত্তরাও।

ঈশ্বরগঞ্জ পৌর এলাকার বাজারে সরেজমিনে দেখা যায়, বেশির ভাগ দোকানে নেই মূল্য তালিকা। প্রতি কেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৬০ টাকায়। এ ছাড়া টমেটো ১৪০-১৬০, গাজর ১৪০-১৫০, করলা ৭০-৮০, ঢ্যাঁড়স ৬০-৭০, বেগুন ৫০-৬০, বরবটি ৬০-৭০, পটল ৪০-৫০, ঝিঙে ৫০-৬০, চিচিঙ্গা ৫০-৬০, শসা ৪০-৫০, ফুলকপি প্রতিটি ৪০-৫০, বাঁধাকপি ৪০-৫০, লাউ ৪০-৫০, মিষ্টি কুমড়া ৬০-৮০, চাল কুমড়া ৪০-৫০, কাঁচাকলা ৪০-৫০ টাকা হালি, পেঁয়াজ ৪৫-৫০, রসুন চায়না ১২০, রসুন দেশি ৭০-৮০, আদা ১০০-১২০, লাউশাক ও লালশাক ২০ টাকা আঁটি বিক্রি হচ্ছে। দেশি আলু ৩০ টাকা ও বড় আলু বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়।

অন্যদিকে দাম বেড়েছে চাল, ডাল, তেল, ডিম, মাছ, মাংসেরও। মোটা চাল প্রতি কেজি ৩৩-৩৪ টাকা, ২৮ চাল ৪৪-৪৫, নাজিরশাইল ৫৮-৬০, মসুর ডাল প্রতি কেজি মোটা ৯০, ক্যাঙারু ১২০, সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৫০, খোলা তেল ১৪৫, ফার্মের মুরগির ডিম ৯০ টাকা ডজনে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়াও প্রতি কেজি খাসির মাংস ৮৫০-৮৮০, গরুর মাংস ৫২০-৫৫০, ব্রয়লার ১৬০-১৬৫, ব্রাউন কক ৩০০-৩২০ টাকা।

এদিকে দাম বেড়েছে মাছেরও। প্রতি কেজি রুই ১৮০-৩০০, কাতল ২৫০-৩০০, সিলভার ১৮০-২০০, বড় গ্রাসকার্প ২০০-২৫০, চাপিলা ৩৫০-৪০০, দেশি ট্যাংরা ৪৫০-৫৫০, শিং ৩৫০-৪৫০, পাবদা ৩০০-৩৫০, গুলশা ৪০০-৪৫০, সরপুঁটি ১৮০-২৫০, তেলাপিয়া ১২০-১৪০, কই মাছ ১২০-১৫০, পাঙাশ ৯০-১১০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়।

দিনমজুর খোকন দাস বলেন, ‘বাজারে জিনিসপত্রের যে হারে দাম বেড়েছে, আমাদের মতো স্বল্প আয়ের মানুষজনের দিনাতিপাত করা কঠিন।’

সবজি বিক্রেতা মো. বাবুল মিয়া, মাসুম মিয়া, খোকন মিয়াসহ অনেকেই জানান, পাইকারদের কাছ থেকে অধিক মূল্যে পণ্য সংগ্রহ করতে হচ্ছে। এজন্য কম দামে বিক্রির সুযোগ নেই।

ঈশ্বরগঞ্জ গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ কামরুল আলম বলেন, ‘হুটহাট নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বৃদ্ধি পেলেও, মানুষের আয় বৃদ্ধি পায়নি।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাধন কুমার গুহ মজুমদার বলেন, ‘শীতকালীন সবজি বাজারে আসলে শাক-সবজির দাম কমবে।’

এ বিষয়ে ঈশ্বরগঞ্জের ইউএনও মোসা. হাফিজা জেসমিন বলেন, ‘বাজারদর নিয়ন্ত্রণে দোকানগুলো প্রতিনিয়ত মনিটরিং করা হচ্ছে। যে সব দোকানে মূল্য তালিকা নেই, তাঁদের অর্থদণ্ড দিয়ে দ্রুত তালিকা টানানোর জন্য বলা হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত