Ajker Patrika

রক্তের দাগ ধরে পাওয়া গেল নিহত ও খুনি

কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ০২ এপ্রিল ২০২২, ১৯: ২৪
রক্তের দাগ ধরে পাওয়া গেল নিহত ও খুনি

রংপুরের কাউনিয়ায় ঘরের মেঝে খুঁড়ে সাইদুল ইসলাম (২৪) নামে এক যুবকের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ শনিবার দুপুরে উপজেলার টেপামধুপুর ইউনিয়নের বিশ্বনাথ গ্রামে একটি বাড়ির ঘরের মেঝে খুঁড়ে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। হত্যার ঘটনাস্থল থেকে রক্তের দাগ ধরে নিহত ব্যক্তির মরদেহের খোঁজ পায় পুলিশ। এ ঘটনায় নিহত সাইদুলের চাচাতো ভাই রফিকুল ইসলামকে (৩০) গ্রেপ্তার এবং তাঁর স্ত্রী বুলবুলি বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। 

মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেলের ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কাউনিয়া থানা-পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুমুর রহমান। 

সাইদুল একই গ্রামের অজিমুদ্দিনের ছেলে। অভিযুক্ত রফিকুল ওই গ্রামের হারেস উদ্দিনের ছেলে। তাঁরা সম্পর্কে চাচাতো ভাই। 

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন বলেছেন, গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি সাইদুল। শনিবার সকালে রফিকুলের বাড়ির পাশে একটি ভুট্টাখেতে রক্তমাখা দা ও মাটিতে রক্তের দাগ দেখতে পেরে পুলিশে খবর দেন স্থানীয় লোকজন। পুলিশ সেখানে গিয়ে ওই রক্তের দাগ অনুসরণ করে রফিকুলের ছোট ভাইয়ের ঘর পর্যন্ত যায়। পরে মেঝের মাটি খুঁড়ে পুঁতে রাখা সাইদুলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। 

আটক রফিকুলের বরাত দিয়ে ওসি মাসুমুর রহমান বলেন, রফিকুলের স্ত্রী বুলবুলি বেগমকে প্রায় সময় কুপ্রস্তাব দিতেন সাইদুল। এ নিয়ে কয়েকবার নিষেধ করা হলেও তা মানেননি সাইদুল। এরই জেরে শুক্রবার রাত ১০টার দিকে বাজার থেকে বাড়ি ফিরে ঘরের পেছনে সাইদুলকে দেখতে পেরে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন রফিকুল। এ সময় তাঁদের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে সাইদুলকে পাশের ভুট্টাখেতে নিয়ে গিয়ে দা দিয়ে ঘাড়ে কোপ দেন রফিকুল। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান সাইদুল। পরে মরদেহ নিয়ে এসে রফিকুল তাঁর ঢাকায় অবস্থানরত ছোট ভাইয়ের ঘরের মেঝে খুঁড়ে পুঁতে রাখেন। 

চাচাতো ভাইকে গলা কেটে হত্যার অভিযোগে আটক রফিকুল ও তার স্ত্রী বুলবুলি বেগম। ওসি মাসুমুর রহমান আরও বলেন, ‘এ ঘটনায় আটক রফিকুল প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন। এ ঘটনায় রফিকুলের স্ত্রী বুলবুলি বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। তবে ৪-৫ বছর আগে জমির আইল নিয়ে সাইদুলের সঙ্গে রফিকুলের হাতাহাতি হয়। পুলিশ সব দিক বিবেচনা করে তদন্ত অব্যাহত রেখেছে।’ 

সাইদুলের বাবা আজিম উদ্দিন বলেন, তাঁর একমাত্র ছেলে সাইদুল এলাকার কারও সঙ্গে ঝগড়াবিবাদে লিপ্ত ছিলেন না। রফিকুল কেন তাঁর ছেলেকে হত্যা করলেন এটি তিনি বুঝতে পারছেন না। তবে তিনি এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন। 

এ বিষয়ে রংপুর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু তৈয়ব মো. আরিফ বলেন, ‘স্ত্রীকে কুপ্রস্তাব দিতেন বলে আসামি রফিকুল যে দাবি করছেন তা প্রকৃত কারণ না-ও হতে পারে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আরও কোনো বিষয় জড়িত আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’ 

জেলা পুলিশের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, রফিকুলের বিরুদ্ধে গরু চুরিসহ বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে বলে স্থানীয়রা তাঁকে জানিয়েছেন। হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে রফিকুলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কি না, এ জন্য রফিকুলের স্ত্রী বুলবুলিকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইতিহাস দরজায় কড়া নেড়ে বলছে, ১৯৭১ থেকে পাকিস্তান কি শেখেনি কিছুই

‘আমাদের মরদেহ বাড়িতে নিয়ো না’

কৃষি ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের খামারবাড়ি অবরোধের ঘোষণা

মারধর করে ছাত্রলীগ কর্মীর পিঠে পাড়া দিয়ে অটোরিকশায় শহর ঘোরাল ছাত্রদল, সঙ্গে উচ্চ স্বরে গান

যশোরে আত্মগোপনে থাকা আ.লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের বাড়িতে পুলিশের অভিযান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত