Ajker Patrika

স্বামীর সম্পত্তি বঞ্চিত করার কথা থানায় জানানোয় দ্বিতীয় স্ত্রীর ওপর হামলার অভিযোগ

আপডেট : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২: ৩১
স্বামীর সম্পত্তি বঞ্চিত করার কথা থানায় জানানোয় দ্বিতীয় স্ত্রীর ওপর হামলার অভিযোগ

গাজীপুরের শ্রীপুরে স্বামীর রেখে যাওয়া বাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, গাড়ি ও সম্পত্তি ভোগ করছেন প্রথম পক্ষের স্ত্রী। এতে বঞ্চিত হচ্ছেন দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী ও তাঁর শিশুছেলে। এসব বিষয় গত ৩০ জানুয়ারি থানায় জানিয়ে বাড়ি ফেরার পথে দ্বিতীয় স্ত্রী ও তাঁর স্বজনদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে প্রথম স্ত্রী ও তাঁর লোকজনের বিরুদ্ধ। এতে আহত হয়েছেন দ্বিতীয় স্ত্রীসহ তিনজন। 

এই ঘটনায় গত ২ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় স্ত্রী পায়েল সরকার বাদী হয়ে প্রথম স্ত্রী ও তাঁর লোকজনের বিরুদ্ধে শ্রীপুর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। গত ৩০ জানুয়ারি রাত ১১টায় শ্রীপুর পৌরসভার মাওনা বাজার সড়কের নোভা হাসপাতালের সামনে হামলার ঘটনা ঘটে। ইতিমধ্যে ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। মামলার বাদী হলেন শ্রীপুর উপজেলার মাওনা চৌরাস্তা এলাকার মোশারফ হোসেন সরকারের দ্বিতীয় স্ত্রী। মোশারফ মারা যান গত বছরের ২২ অক্টোবর। 

মামলা হওয়ার বিষয় আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেন শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ জামান। তিনি বলেন, হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিদেরকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব তাঁদেরকে গ্রেপ্তার করা হবে। 

আহতরা হলেন মোশারফের দ্বিতীয় স্ত্রী পায়েল সরকার (৩২) ও তাঁর এক বছর বয়সী ছেলে নাফি সরকার, পায়েলের ভাই মনির হোসেন মামুন (২১) ও হামলা থেকে তাঁদের রক্ষা করতে যাওয়া প্রত্যক্ষদর্শী ইনজুর হোসেন (৩০)। স্থানীয় লোকজন আহতদেরকে উদ্ধার করে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর তাঁদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে পাঠান। 

মামলার আসামিরা হলেন মোশারফের প্রথম স্ত্রী সেলিনা আকতার (৪৪) এবং তাঁর ভাই লাভলু সিকদার (৪২) ও তাঁর স্ত্রী নরুন্নাহার (৩৮), লাভলুর ছেলে নুর মোহাম্মদ নিপু সিকদার (২০), গাড়ির চালক আলমগীর হোসেন (২৮), স্থানীয় বাসিন্দা গৌরাঙ্গ চন্দ্র দাস (৪৮) এবং সেলিনার স্বজন অমিও (২০), সুমাইয়া (১৯), আছমা (৪০) ও সাগর (২২)। 

মামলার বাদী পায়েল সরকার জানান, গত বছরের ২২ অক্টোবর তাঁর স্বামী মোশারফ সরকার মারা যান। এরপর থেকে আসামিরা স্বামীর সম্পত্তি ও ব্যবসা থেকে বঞ্চিত করার উদ্দেশ্যে এলাকা ছাড়া করার জন্য বিভিন্নভাবে নির্যাতন ও হুমকি দিয়ে আসছেন। গত ৩০ জানুয়ারি তাঁদের অব্যাহত নির্যাতন ও হুমকির ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিয়ে বাসায় ফিরছিলেন। সিএনজিচালিত অটোরিকশা থেকে নামার পরপরই আগে থেকে ওত পেতে থাকা আসামিরা তাঁদের ওপর হামলা করেন। এ সময় তাঁর কোলে থাকা শিশুছেলেকে টেনে নিয়ে সড়কের ওপর ফেলে দেন তাঁরা। এ সময় মনির হোসেন মামুন বোন পায়েলকে রক্ষা করতে এলে আসামিরা তাঁকে রামদা দিয়ে জখম করেন। পরে তাঁদের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যান। পরে স্থানীয় লোকজন আহতদের উদ্ধার করে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁদেরকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে পাঠান। 

পায়েল সরকার বলেন, ‘আমার স্বামীর মৃত্যুর পর আসামিরা আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দেন। আমি ভাড়া বাসায় থাকি। আমার স্বামীর বাড়ি ভাড়ার টাকা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, গাড়ি ও সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার জন্য একের পর এক হয়রানি করে যাচ্ছেন তাঁরা। আমাকে স্বামীর প্রাপ্য সবকিছু থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। আমি পৌরসভায় একাধিকবার বিচার চেয়ে ও বিচার না পেয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেছি। এমনকি মামলা প্রত্যাহার না করলে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছেন আসামিরা।’ 

অভিযোগের বিষয়ে লাভলু সরকার বলেন, ‘ঘটনার দিন সিএনজি থেকে নেমে আমাকে দেখেই পায়েল সরকার ও তাঁর ভাই আমাকে টেনে-হিঁচড়ে লাঞ্ছিত করেছেন। আমি তাঁকে হামলা ও মারধর করিনি। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করার চেষ্টা করছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত