Ajker Patrika

আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থীকে হামলার মামলায় গ্রেপ্তার, আদালতে জামিন

ফেনী প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ১২: ২৯
Thumbnail image

ফেনীতে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশ নিয়ে গুলিবিদ্ধ হওয়া শিক্ষার্থীকে হামলার মামলায় গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। গতকাল শনিবার আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন তিনি। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়কদের দাবি, ওই শিক্ষার্থীকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হয়েছে। 

জামিন পাওয়া শিক্ষার্থী হলেন বেসরকারি ফেনী ইউনিভার্সিটির বিবিএ ২৬তম ব্যাচের মোহাম্মদ সাজিদ সিয়াম (২৬)। তিনি জেলার সদর উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের মঠবাড়িয়া গ্রামের খুরশিদ মাস্টারের ছেলে। গতকাল শনিবার বিকেলে জেলার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারহানা লোকমানের আদালত তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন। 

মোহাম্মদ সাজিদ সিয়াম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের গুলিতে আহত হন বলে ফেনী ইউনিভার্সিটির বিভিন্ন শিক্ষার্থী জানান। 

আদালত সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের নিশ্চিন্তপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. আবদুল হান্নান (৩২) ফেনী শহরে অটোরিকশা চালান। শহরে গত ১৮ সেপ্টেম্বর ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় তাঁর অটোরিকশার ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আবদুল হান্নান বাদী হয়ে ফেনী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সাজিদ সিয়ামকে ৭৭ নম্বর আসামি করা হয়েছে। 

গত শুক্রবার ফেনী সদর উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের মঠবাড়িয়া এলাকা থেকে সিয়ামকে গ্রেপ্তার করে ফেনী মডেল থানায় হস্তান্তর করে র‍্যাব-৭। পরে ওই দিন রাতভর ফেনী ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্রতিনিধিরা তাঁকে ছাড়ানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। গতকাল শনিবার বিকেলের দিকে তাঁকে আদালতে নিলে সেখানে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ফটকে অবস্থান নিয়ে চলাচলের সড়ক বন্ধ করে দেয়। সন্ধ্যায় সিয়ামের জামিন আদেশের পরে তাঁকে নিয়ে আদালত প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন সহপাঠীরা। 

জামিন পাওয়ার পর মোহাম্মদ সাজিদ সিয়ামমামলার বাদী আবদুল হান্নান বলেন, ‘আমি সিয়াম নামের কাউকে কখনো দেখিনি। এই মামলার বিষয়ে কিছু জানি না।’ 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ফেনীর সমন্বয়ক আব্দুল কাইয়ুম সোহাগ বলেন, ‘সিয়াম আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেও ষড়যন্ত্রমূলক এই মামলার আসামি হয়েছেন। এভাবে যেন আর কাউকে মিথ্যা মামলায় হয়রানি করা না হয়, সেদিকে সবার নজর রাখতে হবে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে সব সময় সোচ্চার রয়েছি।’ 

সিয়ামের আইনজীবী মাসুদুর রহমান বলেন, ‘সিয়াম আন্দোলনে সক্রিয় থেকে গুলিবিদ্ধ হন। কিন্তু জমিসংক্রান্ত একটি বিরোধের জেরে তাঁকে মিথ্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে। আদালতে বিস্তারিত তুলে ধরার পর তাঁর সাত দিনের জামিন মঞ্জুর করেছেন। এ ছাড়া আগামী সাত দিনের মধ্যে সিয়ামের মেডিকেল সার্টিফিকেটের তথ্য উপস্থাপন করতে আদেশ দিয়েছেন আদালত।’ 

আদালত প্রাঙ্গণে ফেনী ইউনিভার্সিটির রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের বিভাগীয় প্রধান ও সহকারী অধ্যাপক কাজী মনিরুল ইসলাম, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান আলি আকবরসহ ইউনিভার্সিটির বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত