Ajker Patrika

‘মুজিব’ দেখে আবেগে ভাসলেন দর্শক

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
Thumbnail image

যেন ইতিহাসের বই খুলে একেকটা পাতা উল্টে ধরা হচ্ছে দর্শকের সামনে। বঙ্গবন্ধুর স্কুলজীবন, ধীরে ধীরে রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে যাওয়া, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক, আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠা, ভাষা আন্দোলন, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, বারবার বঙ্গবন্ধুর কারাবরণ, গণ-অভ্যুত্থান, স্বাধীনতার ঘোষণা, মহান মুক্তিযুদ্ধ, বিজয়, স্বদেশ প্রত্যাবর্তন হয়ে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট—‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ সিনেমায় ধরা আছে একটি জাতির জন্মের ইতিহাস।

গল্প শুরু হয়েছে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি থেকে, যেদিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের বন্দিত্ব থেকে মুক্তি পেয়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের মাটিতে পা রাখেন। উড়োজাহাজের জানালায় চোখ রেখে, অনেক দিন পর জন্মভূমিতে ফেরার আনন্দে তাঁর চোখ ভিজে ওঠে। বিমান বন্দরে নেমে মাথা ঠেকান স্বাধীন দেশের পবিত্র মাটিতে। এ দৃশ্য দেখে আবেগে ভিজে ওঠে দর্শকদের মন।

‘মুজিব’ সিনেমার শেষ দৃশ্যটি আরও আবেগের, আরও বেদনার। গভীর রাতে দুঃস্বপ্ন দেখে ঘুম ভেঙে যায় ফজিলাতুন নেছার। কিছুক্ষণ পর কর্কশ শব্দে ঘর কাঁপিয়ে বেজে ওঠে টেলিফোন। ফোন ধরে বঙ্গবন্ধু জানতে পারেন, আবদুর রব সেরনিয়াবাতের বাসায় কারা যেন হামলা চালিয়েছে।

‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ সিনেমার দৃশ্য	ছবি: সংগৃহীতকিছুক্ষণ পর বঙ্গবন্ধুর বাসায়ও গুলিবর্ষণ শুরু হয়। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের সেই হৃদয়বিদারক দৃশ্য এমন বিস্তারিতভাবে পর্দায় তুলে এনেছেন নির্মাতা শ্যাম বেনেগাল—যা দেখে প্রতিটি মানুষের বুক কেঁপে ওঠে, কণ্ঠ স্তব্ধ হয়ে যায়। সিনেমা শেষেও তাই হলজুড়ে পিনপতন নীরবতা। দর্শকের প্রত্যেকেই ধীর পায়ে মাথা নিচু করে, চোখ মুছতে মুছতে বেরোতে থাকেন একরাশ বেদনা নিয়ে।

‘মুজিব’ সিনেমার কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন আরিফিন শুভ। লুক, কণ্ঠ, অভিনয়—সব মিলিয়ে তিনি পর্দায় তুলে এনেছেন সত্যিকারের বঙ্গবন্ধুকে। সবার প্রশংসায় সিক্ত হচ্ছেন। শুভ বলেন, ‘সিনেমা দেখে প্রধানমন্ত্রী কেঁদেছেন। প্রশংসা করেছেন। উনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘‘কীভাবে করলে এত সুন্দর করে?’’ এরপর আমার বলার কিছু নেই। যাঁর বাবার চরিত্র করেছি, উনি বলেছেন আমি পেরেছি।’

‘মুজিব’-এর প্রিমিয়ারে অংশ নিতে এক দিনের জন্য ঢাকায় এসেছিলেন এ সিনেমার সুরকার ও সংগীত পরিচালক শান্তনু মৈত্র। তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং ব্যাপার ছিল, কীভাবে সুরকার শান্তনুকে আলাদা করে মাটির গন্ধ বের করতে পারি। প্রচুর রিসার্চ করেছি, প্রচুর গান শুনেছি, অনেকের সঙ্গে কথা বলেছি। ফাইনালি যেটা হয়েছে, তাতে আমি খুব খুশি। আমি সিনেমাটা অ্যাটলিস্ট ৫০ বার দেখেছি।

অবাক হয়েছি অভিনেতাদের পারফরম্যান্স দেখে।’ বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ প্রযোজনায় তৈরি ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ সিনেমাটি গতকাল থেকে চলছে সারা দেশের ১৫৩টি প্রেক্ষাগৃহে। দেশজুড়ে ব্যাপক প্রচারণা চলছে। রাস্তাঘাট, দেয়াল ছেয়ে গেছে সিনেমার পোস্টার, ব্যানার, স্টিকারে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ঢুঁ মারলেই চোখে পড়ছে মুজিবের গান, ট্রেলার। নিকট অতীতে এত ব্যাপকভাবে কোনো সিনেমার প্রচার লক্ষ করা যায়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত