Ajker Patrika

হারাতে বসেছে গিগজের মুড়ি

মিসু সাহা নিক্কন, রামগতি (লক্ষ্মীপুর)
আপডেট : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৪: ০৮
Thumbnail image

লক্ষ্মীপুরের ঐতিহ্যবাহী খাদ্যের তালিকায় গিগজের মুড়ির অবস্থান প্রথম দিকে। হাতে ভাজা গিগজ ধানের চালের মুড়ির স্বাদ প্রাচীনকাল থেকেই সারা দেশে সুবিদিত। তবে কয়েক বছর ধরে এ ধানের বিলুপ্তির পাশাপাশি মেশিনে তৈরি মুড়ির চাপে দেশের বিভিন্ন জেলায় এ মুড়ি হারিয়ে যেতে বসেছে।

স্থানীয়ভাবে জানা যায়, হাতে তৈরি গিগজের মুড়ি টিকিয়ে রাখতে উৎপাদনকারীদের পড়তে হচ্ছে নানা প্রতিকূলতায়। বিশেষ করে এ মুড়ির ক্রেতাদের অনেকেরই এ পেশা সম্পর্কে তেমন ধারণা নেই।

সাধারণ ধানের তুলনায় গিগজের ধানের দাম বেশি হওয়ায় হাতে ভাজা গিগজের মুড়ির দামও অনেক বেশি। তবু এ মুড়ির রয়েছে ব্যাপক চাহিদা।

রামগতি উপজেলার চর ডাক্তার এবং রঘুনাথপুর হাতে ভাজা গিগজের মুড়ির জন্য বিখ্যাত। এ গ্রামের বহু পরিবার হাতে ভাজা গিগজের মুড়ি ভেজে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। অত্যন্ত কষ্টকর পেশা হলেও বংশগতভাবে যুগ যুগ ধরে তাঁরা এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।

রামগতি বাজারের পরিতোষ চন্দ্র সাহা নামের এক ব্যবসায়ী জানান, আগে হাতে ভাজা মুড়ির প্রধান উপাদান গিগজ ধানের প্রচুর চাষ হতো। বর্তমানে গিগজ ধানের উৎপাদন কমে গেছে। গিগজ ধানের পাশাপাশি একই মানের ভূষিহারা, ধলামোডা জাতের দেশীয় ধান থেকেও এ মুড়ি তৈরি হয়।

লক্ষ্মীপুরের আড়তদার স্বদেশ দাস জানান, আড়ত ছাড়াও বিভিন্ন দোকানি উৎপাদনকারীদের কাছ থেকে সরাসরিও মুড়ি কিনে থাকেন। মাঝেমধ্যে কিছু রপ্তানিকারক মালয়েশিয়া, মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রে লক্ষ্মীপুরের মুড়ি রপ্তানি করেন।

মুড়ি উৎপাদনকারী প্রদুল চন্দ্র দাস জানান, হাতে ভাজা মুড়িতে লবণ-পানি ছাড়া কোনো উপাদান দেওয়া হয় না, লাকড়ি ছাড়া গ্যাসের আগুনেও এ মুড়ি ভাজা যায় না। বাজারে পাওয়া কোনো চালেও এ মুড়ি তৈরি করা যায় না। এ অঞ্চলের মুড়ি নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুরের আড়তে এবং স্থানীয় বাজারে বিক্রি হয়।

উৎপাদনকারীরা জানান, এ শিল্প টিকিয়ে রাখতে পুঁজির অভাবই প্রধান সমস্যা। এ ক্ষেত্রে স্বল্প সুদে ঋণ সুবিধার পাশাপাশি সরকারি সহায়তা প্রয়োজন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত