Ajker Patrika

গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করতে হবে: ফরহাদ মজহার

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ৩১ আগস্ট ২০২৩, ২১: ৪৪
গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করতে হবে: ফরহাদ মজহার

জনগণের বিজয় নিশ্চিত না করে জাতীয় বা অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের মধ্য দিয়ে নির্বাচন আয়োজন করলে সেই নির্বাচনে বিজয়ী দল বা গোষ্ঠী জনগণের অভিপ্রায় পূরণ করবে না। বরং বর্তমান সরকারের মতো তারাও ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ইনসাফ কমিটির আহ্বায়ক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ফরহাদ মজহার।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে জনগণের প্রত্যাশা ও করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা এবং জাতীয় জনতার জোট নামে নতুন রাজনৈতিক জোটের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। 

ফরহাদ মজহার বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে জনগণের বিজয় নিশ্চিত করে জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল সকল দলকে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করতে হবে।’

ফরহাদ মজহার আরও বলেন, ‘আমরা এক মাফিয়াকে হটিয়ে অন্য মাফিয়াকে ক্ষমতায় বসাতে চাই না। গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করা না গেলে গত কয়েক দশকে গড়ে ওঠা সুবিধাবাদী, সন্ত্রাসী ও লুটেরা শক্তিকে পরাস্ত করা সম্ভব হবে না। আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে জনগণের বিজয় নিশ্চিত না করে তথাকথিত জাতীয় বা অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রব্যবস্থা অক্ষুণ্ন রেখে ক্ষমতা লাভের খায়েশমাত্র।’ 

জাতীয় ইনসাফ কমিটির আহ্বায়ক বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট শক্তিকে উৎখাত করে জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল ছোট-বড় সব দলকে নিয়ে একটি অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয় সরকার গঠন করা হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে নতুন গঠনতন্ত্রের ভিত্তিতে নতুন জাতীয় নির্বাচন হবে। জনগণের ইচ্ছা ও অভিপ্রায়ের ভিত্তিতে নতুনভাবে বাংলাদেশ গঠনের এটাই সঠিক পথ।’

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কর্মপদ্ধতি ও রূপরেখা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ হচ্ছে গঠনতন্ত্র প্রণয়ন সভা আহ্বান করা এবং জনগণের অংশগ্রহণের ভিত্তিতে বাংলাদেশকে নতুনভাবে গঠন করা। নতুন গঠনতন্ত্রে স্বাধীন, নিরপেক্ষ, শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচনী ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য নির্বাচনের সময় সব নির্বাহী ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকবে। নতুন গঠনতন্ত্র প্রণয়নের পরপরই অন্তর্বর্তী জাতীয় সরকার পদত্যাগ করবে।’

আলোচনা সভায় নৈতিক সমাজের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) আমসা আমিন বলেন, ‘১৫ কোটি টাকার নিচে এখন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বড় রাজনৈতিক দলগুলোর মনোনয়ন পাওয়া যায় না। এ কারণে সমাজ ও রাজনীতির সংস্কার করতে হবে। সর্বস্তরে জবাবদিহি ও দায়বদ্ধতা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।’

সভায় জাতীয় জনতার জোট চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির সভাপতি মো. দেলোয়ার হোসাইন বলেন, ‘জাতীয় জনতার জোট একটি উন্মুক্ত মঞ্চ। এখানে সব রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী, শ্রমজীবী, সামাজিক সংগঠন অংশগ্রহণ করতে পারবে এবং আমাদের মঞ্চে দেশের জন্য প্রত্যেকের সমস্যা এবং সমাধান নিয়ে আলোচনা করতে পারবে।’

দেলোয়ার হোসাইন আরও বলেন, ‘জাতীয় জনতার জোট বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের অধিকার নিয়ে কথা বলবে। মানুষের সমস্যা কীভাবে সমাধান করা যায় এর উপায় নিয়ে কথা বলবে। বিরোধিতার জন্য বিরোধিতা এই সংস্কৃতি থেকে জাতীয় জনতার জোট এ দেশের মানুষকে বের করে আনতে চায়।’

নতুন এই জোটে বাংলাদেশ জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি ছাড়াও বাংলাদেশ সর্বজনীন দল, বাংলাদেশ জনতা ঐক্য, বাংলাদেশ মানবতাবাদী পার্টি, ন্যাশনাল সবুজ বাংলা পার্টি ও বাংলাদেশ ইসলামী গণতান্ত্রিক পার্টি রয়েছে।

সভায় আরও বক্তব্য দেন সার্বজনীন দলের চেয়ারম্যান রাসেল কবির, মানবতাবাদী পার্টির চেয়ারম্যান মওলানা কারী মো. আব্দুল মজিদ প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত