Ajker Patrika

যে শহরে আড়াই লাখ বিড়াল থাকে

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
ইস্তাম্বুল শহরে বাসবাসকারী প্রায় দেড় কোটি মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর সঙ্গে বসবাস করে প্রায় আড়াই লাখ বিড়াল! ছবি: উইকিপিডিয়া
ইস্তাম্বুল শহরে বাসবাসকারী প্রায় দেড় কোটি মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর সঙ্গে বসবাস করে প্রায় আড়াই লাখ বিড়াল! ছবি: উইকিপিডিয়া

‘গোলাপি শহর’, ‘হ্রদের শহর’, ‘মসজিদের শহর’ ইত্যাদি বিভিন্ন নামে ডাকা হয় পৃথিবীর বিভিন্ন শহরকে। কিন্তু বিড়ালের শহর? না, এখনো এমন নামে ডাকা না হলেও মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর সঙ্গে সেই শহরে থাকে প্রায় আড়াই লাখ বিড়াল! এ কারণে কি শহরটিকে বিড়ালের শহর নামে ডাকা যাবে?

ইউরোপ ও এশিয়ার সংযোগস্থল এবং বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত শহর ইস্তাম্বুল। এই শহরে বাস করে প্রায় ১ কোটি ৫০ লাখ মানুষ। আর এখানেই মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর সঙ্গে বসবাস করে প্রায় আড়াই লাখ বিড়াল! তারাও শহরবাসীর দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে গেছে।

শহরের রাস্তায়, মসজিদের প্রাঙ্গণে, মেট্রো স্টেশনে কিংবা কফিশপে এই বিড়ালদের সহজে দেখা যায়। তারা মানুষের সঙ্গেই মিলেমিশে থাকে। রাস্তায় খায়, সেখানেই ঘুমায় আর কখনো পর্যটক বা স্থানীয়দের সঙ্গে খেলায় মেতে ওঠে। ‘সিটি ক্যাটস অব ইস্তাম্বুল’ বইয়ের লেখক মার্সেল হেইনজেন বলেন, ইস্তাম্বুলের বিড়ালেরা সাধারণ পোষ্য নয়, কিন্তু রাস্তার বিড়ালও নয়। তারা মানুষের সঙ্গে সহাবস্থানে থাকে এবং শহরবাসীদের সবাই তাদের যত্ন নেয়। তারাও মানুষের মতো শহরের অংশ।

ইতিহাসের ছোঁয়া

ইস্তাম্বুলের বিড়ালদের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক নতুন নয়। ইস্তাম্বুলের ক্যাট মিউজিয়ামের সহপ্রতিষ্ঠাতা ফাতিহ দাগলি বলেন, ওসমানি যুগে এ শহরের মানুষের মধ্যে রাস্তার বিড়ালদের প্রতি গভীর মমতা দেখা যেত। তখন তাদের খাওয়ানো অনেকের পেশা ছিল। স্থানীয়রা নিজে খাবার কিনে দেওয়া বা ম্যানকাজিদের মাধ্যমে বিড়ালদের খাওয়াত।

দাগলি আরও বলেন, ফিনিশীয়রা জাহাজে বিড়াল রাখত ইঁদুর দমন করার জন্য। রোমান ও ওসমানি যুগে যখন বাণিজ্যিক জাহাজগুলো ইস্তাম্বুলে আসে, তখনো তারা বিড়ালদের সঙ্গে নিয়ে আসত।

ওসমানি যুগে ইস্তাম্বুল শহরে রাস্তার বিড়ালদের খাওয়ানো ছিল অনেকের পেশা। ছবি: উইকিপিডিয়া
ওসমানি যুগে ইস্তাম্বুল শহরে রাস্তার বিড়ালদের খাওয়ানো ছিল অনেকের পেশা। ছবি: উইকিপিডিয়া

নগরে সহাবস্থান

আজও মানুষদের সঙ্গে ইস্তাম্বুল শহরের অংশ এই বিড়ালেরা। রাস্তা, বাজার, কফিশপ—সব জায়গায় তাদের দেখা যায়। বেঞ্চে বসে শহর দেখতে দেখতে কিংবা বসফরাসের তীর ধরে হাঁটতে হাঁটতে অনেক পর্যটক এই বিড়ালদের সঙ্গে সময় কাটাতে পছন্দ করেন, তাদের সঙ্গে খেলেন।

হেইনজেন বলেন, শহর সাধারণত কংক্রিট, ইট, রাস্তাঘাট, বড় বড় ভবন আর ব্রিজ দিয়ে তৈরি। সেখানে কোনো প্রাণীর জন্য সহজ বা স্বাভাবিক থাকার ব্যবস্থা থাকে না। কিন্তু ইস্তাম্বুলে শহরের মাঝখানেও বিড়ালেরা সুন্দর বাস করছে। শহরের মানুষও তাদের ব্যাপারে বেশ যত্নবান। স্থানীয়রা তাদের খাওয়ায়, চিকিৎসায় সাহায্য করে।

মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব

ইস্তাম্বুলের বিড়ালেরা শুধু শহরের অংশ নয়, তারা মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্বও গড়ে তুলেছে। বাজার, মেট্রো স্টেশন বা কফিশপের বাইরে খাবারের বাটি ও পানি রাখা থাকে তাদের জন্য। স্থানীয়রা নিজের খাবারের অংশ ভাগ করে দেয় বিড়ালদের। অনেক দোকানেও এদের দেখতে পাওয়া যায়। পর্যটকদের জন্য বিভিন্ন সময় তারা বিড়াল পোষে। শহরের ঐতিহাসিক এলাকায়, যেমন ফাতিহ, ব্লু মসজিদ বা হাগিয়া সোফিয়ার আশপাশে এদের বেশি দেখা যায়। কিছু বেড়াল পর্যটকদের ছবিতে পোজ দেয়।

ক্যাটেস্তাম্বুলের শিক্ষণীয় দিক

ইস্তাম্বুলের বিড়ালেরা শুধু শহরের অংশ, এমন নয়। তারা মানুষের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের এক দারুণ উদাহরণ। শহরের ব্যস্ততা, যানজট, রাস্তাঘাট, কংক্রিটের বিশাল ভবন সবকিছু মিলিয়ে শহরটি সব সময় ব্যস্ত। তবু এই ছোট প্রাণীরা শহরটিতে তাদের জায়গা করে নিয়েছে। স্থানীয়দের যত্ন বিড়ালদের জীবনকে নিরাপদ ও আনন্দময় করে তুলেছে। শহরের হঠাৎ হুড়োহুড়ি, ভিড় ও শব্দের মধ্যে এই ছোট প্রাণীরা শান্তি নিয়ে আসে।

বিশ্বজুড়ে অনেকেই বিড়াল পোষে। বিভিন্ন প্রজাতির বিড়াল দেখা যায় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে। কিন্তু একটি শহরের রাস্তায় প্রায় আড়াই লাখ বিড়ালের এমন পরিবার অনন্য এক উদাহরণ। এই পৃথিবী যে সব প্রাণীর জন্য, তার এক অনন্য উদাহরণ ইস্তাম্বুল।

ইস্তাম্বুলের মতো বিশাল নগরীতেও ভিন্ন প্রজাতির প্রাণীর সঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে স্থান, খাদ্য ও জীবন ভাগ করে নেওয়া সম্ভব। এই ‘ক্যাটেস্তাম্বুল’ বিশ্বের কাছে এক সুন্দর বার্তা বহন করে। মানবতা কোনো সীমানা বা প্রজাতি মানে না। ভালোবাসা ও যত্নের মাধ্যমে একটি শহর সত্যিকার অর্থেই প্রাণবন্ত এবং মানবিক হয়ে উঠতে পারে।

সূত্র: বিবিসি

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রতিদিন ওজন কমবেশি হয় যে ৫ কারণে

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
নিজের ওজন প্রতিদিন এক রকম দেখা যায় না। তা শূন্য দশমিক ৫৭ থেকে ৩ দশমিক ২ পাউন্ড পর্যন্ত কমবেশি হওয়া স্বাভাবিক। ছবি: ফ্রিপিক
নিজের ওজন প্রতিদিন এক রকম দেখা যায় না। তা শূন্য দশমিক ৫৭ থেকে ৩ দশমিক ২ পাউন্ড পর্যন্ত কমবেশি হওয়া স্বাভাবিক। ছবি: ফ্রিপিক

দীর্ঘ মেয়াদে ওজন কমানো বা বাড়ানোর পরিকল্পনা করতে চাইলে নিয়মিত ওজন মাপার প্রয়োজন আছে। তবে ওজন মাপার মেশিনে দাঁড়ালে নিজের ওজন প্রতিদিন এক রকম দেখা যায় না। তা শূন্য দশমিক ৫৭ থেকে ৩ দশমিক ২ পাউন্ড পর্যন্ত ওঠানামা হওয়া স্বাভাবিক। এটি দেখে ভয় পাওয়া বা হতাশ হওয়ার কিছু নেই। এটি শরীরের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, যা মোটেও আপনার চর্বি কমা বা বাড়ার ফল নয়। প্রতিদিন এই ওজন ওঠানামার কিছু কারণ জেনে নিন।

দিনের কোন সময়ে ওজন মাপছেন

সারা দিন শরীর এক অবস্থায় থাকে না। সারা রাত খাবার খাওয়া হয় না, পানিও কম পান করা হয় বলে সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর শরীর তুলনামূলকভাবে বেশি হালকা থাকে। দিন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আপনি খাবার খান, পানি পান করেন, শরীরে গ্লাইকোজেন জমে, লবণ খান, হজমের প্রক্রিয়া চলে, ঘাম ঝরে। ফলে ওজন কমবেশি হওয়া স্বাভাবিক। অনেকে দুপুর বা সন্ধ্যায় ওজন মাপেন। তখন ওজন বেশি দেখায় বলে ভাবেন, তাঁরা মোটা হয়ে গেছেন। আসলে সময়ভেদে এই পরিবর্তন স্বাভাবিক। প্রতিদিন একই সময় ওজন মাপলে তুলনাটা বোঝা সহজ। তবে প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, সকালে টয়লেট ব্যবহারের পর এবং নাশতার করার আগে ওজন মাপানো ভালো।

সারা দিনে কী খেয়েছেন

আপনার খাবারের উপাদান সাময়িকভাবে শরীরে পানি ধরে রাখে এবং গ্লাইকোজেন বাড়ায়।

শর্করা: অতিরিক্ত শর্করা খেলে শরীরে গ্লাইকোজেন জমে। প্রতি গ্রাম গ্লাইকোজেনের সঙ্গে প্রায় ৩ গ্রাম পানি জমে। ফলে হঠাৎ ওজন বাড়ে।

লবণ: বেশি লবণ শরীরে পানি ধরে রাখে; বিশেষ করে প্যাকেটজাত খাবার, ফাস্ট ফুড, রেস্টুরেন্টের খাবার খেলে ওজন সাময়িকভাবে বেড়ে যেতে পারে।

ভারী খাবার: যেসব খাবার হজম হতে সময় নেয়, সেগুলো পাকস্থলী ও অন্ত্রে থাকা অবস্থায় শরীরের মোট ওজন বাড়িয়ে রাখে।

এসব পরিবর্তনকে অনেকে চর্বি বাড়া বলে ভুল করেন। কিন্তু এগুলো আসলে অস্থায়ী। খাবার হজম হয়ে বেরিয়ে গেলে ওজন আবার কমে যায়।

শরীরে পানির পরিমাণ

শরীরের বেশি অংশই পানি। বয়স, পরিবেশ, কর্মকাণ্ড, খাবার এবং শরীরের হরমোন—সবকিছুর প্রভাবেই পানির পরিমাণ ওঠানামা করে।

  • কম পানি পান করলে শরীর পানি ধরে রাখতে শুরু করে, যাতে ডিহাইড্রেশন না হয়।
  • তীব্র গরমে বেশি ঘাম হলে পানি কমে গিয়ে ওজন কমে যেতে পারে।
  • ব্যায়াম বন্ধ করে দিলে পানি জমে ওজন বাড়তে পারে।
  • লবণ বেশি খাওয়া, মাসিকের সময়, অ্যান্টিবায়োটিক বা নির্দিষ্ট ওষুধ খেলে শরীরে পানি আটকে থাকে। তাতে ওজন বাড়তে পারে।

হরমোনের প্রভাব

হরমোন শরীরের ওজন পরিবর্তনে গভীর ভূমিকা রাখে।

  • মাসিকের আগে বা পরে হরমোনের তারতম্যে শরীরে পানি জমে। অনেকের ক্ষেত্রে এটি ১ থেকে ৩ পাউন্ড পর্যন্ত বাড়তি ওজন দেখায়।
  • মানসিক চাপ বাড়লে কর্টিসল হরমোন বেড়ে যায়। এ হরমোন ক্ষুধা এবং চিনি খাওয়ার প্রবণতা বাড়ায়, একই সঙ্গে শরীরকে পানি ধরে রাখতে বাধ্য করে। ফলে ওজন হঠাৎ বাড়তে পারে।
  • ঘুম কম হলে ঘ্রেলিন ও লেপটিন হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়, ক্ষুধা বাড়ে ও শরীর খাবার ধরে রাখে। এটিও দৈনিক ওজনে প্রভাব ফেলে।

মলত্যাগ কম বা বেশি হওয়া

  • মলত্যাগ শরীরের বর্জ্য বের করার প্রক্রিয়া।
  • দিনে গড়ে ১ থেকে ২ বার মলত্যাগ স্বাভাবিক।
  • কোষ্ঠকাঠিন্য হলে অন্ত্রে বর্জ্য জমে থেকে ওজন বাড়ায়।
  • আঁশযুক্ত খাবার কম খেলে মল শক্ত ও ছোট হয়। এতে ওজন সামান্য কমলেও তা চর্বি কমে না, বর্জ্যের পরিমাণ কমে।
  • পাকস্থলী-অন্ত্রে খাবার, পানি, বর্জ্য কতটা আছে, তার ওপর ওজন নির্ভর করে। তাই প্রতিদিনের ছোট পরিবর্তন নিয়ে দুশ্চিন্তা করার দরকার নেই।

দৈনিক ওজন ওঠানামা বা কমবেশি হওয়া একেবারে স্বাভাবিক। বেশির ভাগ সময় এটি শরীরের চর্বির পরিবর্তনে হয় না। খাবার, পানি, ঘুম, হরমোন, ব্যায়াম, এমনকি আবহাওয়াও এতে প্রভাব ফেলে। তবে হঠাৎ দ্রুত ওজন বাড়া বা কমা যদি দীর্ঘদিন চলতে থাকে এবং কারণ খুঁজে না পান, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ভালো।

সূত্র: হেলথ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজকের রাশিফল: একটু কঞ্জুস হোন, রোমান্সের জন্য দারুণ দিন হলেও রাতে ঝগড়ার সম্ভাবনা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৪৯
আজকের রাশিফল: একটু কঞ্জুস হোন, রোমান্সের জন্য দারুণ দিন হলেও রাতে ঝগড়ার সম্ভাবনা

মেষ

আপনার এনার্জি আজ হাই ভোল্টেজ! এত বেশি যে ভুল করে আজ অফিসে হেঁটে না গিয়ে দৌড়ে যেতে পারেন। আর সহকর্মীরা ভাববে, ‘কিসের এত তাড়া? বেতন কি দ্বিগুণ হচ্ছে?’ কাজের জায়গায় ‘আমিই সেরা’ ভাবটা একটু কমিয়ে রাখুন। না হলে বস হয়তো আপনার গলা থেকে ‘লিও তলস্তয়’-এর মতো একটা ভারিক্কি আওয়াজ শুনতে পাবেন, যা স্রেফ বিরক্তিকর! কোনো পুরোনো বকেয়া টাকা ফেরত আসতে পারে। তবে সেটা লটারির টাকা নয়, পাড়ার চায়ের দোকানের বিল। ভালোবাসার মানুষের সঙ্গে ঝগড়া হলেও সেটা সিরিয়াস কিছু হবে না। বরং দুজনের মধ্যে হাসিঠাট্টার প্রতিযোগিতায় দিনটি কাটবে। সাবধান! ইমোশনাল হয়ে এক্সকে টেক্সট করবেন না যেন, তাতে গ্রহরা খুব হাসবে!

বৃষ

আপনার জীবনে শান্তি মানেই খাবার। আজ সারা দিন কী খাবেন, এই নিয়েই গুরুতর গবেষণায় কাটবে। বাইরের কোনো লোক আপনাকে কিছু বোঝানোর চেষ্টা করলে আপনি গোঁ ধরে থাকা ষাঁড়ের মতো আচরণ করবেন। অর্থভাগ্য মন্দ নয়। কিন্তু সেই টাকা যেন শুধু ভালো রেস্তোরাঁর বিল মেটাতেই না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখুন। দুপুরে বসের দেওয়া কঠিন কাজটা এড়িয়ে যেতে পারেন যদি আপনার টেবিলে ভালো কোনো স্ন্যাকস থাকে। রোমান্টিক ডিনারে যেতে পারেন, তবে মনে রাখবেন, সঙ্গী যেন আপনার প্লেটে হাত না দেয়! আজ আপনার প্রেমজীবনের গতি একটু ধীর, ঠিক যেন দুপুরের খাওয়া শেষে ধীরগতিতে হাঁটা।

মিথুন

আপনার ভেতরের দুই ব্যক্তি আজ সারা দিন মারামারি করবে। একজন বলবে, ‘চলো কাজ করি!’, আর অন্যজন বলবে, ‘না না, আগে একটু ইন্টারনেট ঘেঁটে দেখি আজ কোন সেলিব্রিটি কী করেছে!’ দিন শেষে ক্লান্ত হয়ে যাবেন শুধু এই সিদ্ধান্তহীনতার কারণে। আপনার যোগাযোগ দক্ষতা আজ তুঙ্গে। চাইলেই অফিসের সবচেয়ে বিরক্তিকর লোকটার সঙ্গেও হেসে কথা বলতে পারবেন। কিন্তু সাবধানে, বেশি কথা বললে গোপন তথ্য ফাঁস হয়ে যেতে পারে। পকেট আজ হালকা, কিন্তু মন ফুরফুরে। সঙ্গী হয়তো আপনার দ্বৈত ব্যক্তিত্ব দেখে কনফিউজড। একবার আপনি প্রেমিক, পরের মুহূর্তেই দার্শনিক। ঠিক করুন কোনটা আপনি!

কর্কট

আজ আপনি একটু বেশিই সংবেদনশীল! পাড়ার কুকুরটা লেজ না নাড়লে মন খারাপ হতে পারে। মনে রাখবেন, পৃথিবীটা আপনার মতো ইমোশনাল নয়। তাই সামান্য বিষয়ে কান্না পেলে তাড়াতাড়ি বালিশের নিচে লুকিয়ে পড়ুন। সহকর্মীরা আপনার আবেগপ্রবণতা দেখে সহানুভূতি দেখাতে পারে, কিন্তু কাজে ফাঁকি দিলে কিন্তু কেউ ছাড়বে না। টাকাপয়সার ব্যাপারে আজ একটু কঞ্জুস থাকুন। ইমোশনাল কেনাকাটা এড়িয়ে চলুন। ঘরে তৈরি খাবার বা একটা মিষ্টি বার্তা আজ সঙ্গীর মন জয় করে নেবে। সন্ধ্যায় সিনেমা দেখতে গিয়ে পুরোনো দিনের কষ্টের দৃশ্য দেখে হাউমাউ করে কেঁদে ফেললে পাশে বসা মানুষটি একটু অস্বস্তিতে পড়তে পারে। আপনার মুড সুইং ঘূর্ণিঝড়ের মতো, নিজেকে কন্ট্রোল করুন!

সিংহ

আপনি হলেন আজকের দিনের ‘সেন্টার অব অ্যাট্রাকশন’। যদি কেউ আপনাকে প্রশংসা না করে, তবে নিজেই নিজের প্রশংসা করতে শুরু করে দিতে পারেন। ‘আমি যখন অফিসে ঢুকি, সবাই আমার দিকে কেন তাকায় জানেন? কারণ, আমিই সেরা!’–এই ধরনের কথা আজ বলতে ইচ্ছা হতে পারে। বস আজ আপনার ওপর খুশি হতে পারেন। প্রমোশন না হলেও একটা ভালো ‘শাবাশ’ তো জুটবেই। তবে নিজের ক্রেডিট অন্যকে দিতে শিখুন, না হলে সবাই আপনাকে ‘সেলফি-কিং/কুইন’ বলে ডাকতে পারে। অর্থ উপার্জনের নতুন পরিকল্পনা আসবে, যার মধ্যে একটা হবে ‘নিজের নামে ফ্যান ক্লাব’ খোলা। রোমান্সের জন্য দারুণ দিন। কিন্তু সঙ্গী যদি অন্য কারও দিকে ভুলেও তাকায়, আপনার ভেতরের রাজা/রানি ক্ষেপে উঠতে পারে! নিজের পারফরম্যান্সে একটু ব্রেক দিন। আয়না থেকে চোখ সরিয়ে বাকি পৃথিবীর দিকে তাকান।

কন্যা

আপনার ভেতরের ‘পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার গোয়েন্দা’ আজ জেগে উঠবে। সবার ফাইলের বানান ভুল, জুতা রাখার জায়গায় সামান্য ধুলা—সব আপনার চোখে ধরা পড়বে। মনে রাখবেন, পৃথিবীর সব মানুষ আপনার মতো নিখুঁত নন। একটু ‘চিল’ করুন! আপনার তীক্ষ্ণ বিশ্লেষণ ক্ষমতা আজ কাজে লাগবে। তবে বসের দুর্বলতা নিয়ে বেশি বিশ্লেষণ করতে যাবেন না, তাতে বিপদ। টাকা গোনার সময় দুবার গুনবেন না, এতে সময় নষ্ট হয়। খরচ কমানোর জন্য আজ নতুন সফটওয়্যার বানিয়ে ফেলতে পারেন। সঙ্গী যদি জামাকাপড় গুছিয়ে না রাখে, তাহলে আজ রাতে একটা ঝগড়ার সম্ভাবনা আছে। মনে রাখবেন, সম্পর্কের ক্ষেত্রে সামান্য বিশৃঙ্খলাও কখনো কখনো প্রয়োজন।

তুলা

আজ সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো দুপুরের খাবার কী খাবেন তা ঠিক করা। চায়নিজ, নাকি থাই? এই নিয়ে তিন ঘণ্টা পেরিয়ে যেতে পারে। সবকিছুতে একটা নিখুঁত ভারসাম্য খুঁজবেন, যা জীবন বলে না। জীবন মানেই একটু এদিক-ওদিক। কেউ আপনার সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করলে, প্রচণ্ড অস্বস্তিতে পড়বেন। শান্তি বজায় রাখার জন্য আজ হয়তো বিনা দোষেও ‘সরি’ বলে দেবেন। আর্থিক বিষয়ে ভালো কোনো চুক্তি হতে পারে। তবে চুক্তিপত্রে সই করার আগে অন্যের মতামত শুনতে শুনতে রাত পার হয়ে যেতে পারে। মিষ্টি স্বভাবের কারণে একাধিক মানুষ আপনার প্রতি আকৃষ্ট হতে পারে। কিন্তু কার দিকে যাবেন, সেই সিদ্ধান্ত নিতেই আপনার সন্ধ্যা শেষ। সবকিছু ব্যালেন্স করতে গিয়ে নিজে কাত হয়ে পড়বেন না যেন!

বৃশ্চিক

চোখ আজ শকুনের মতো তীক্ষ্ণ! সবাই ভাববে আপনি হয়তো কোনো গভীর রহস্যের সমাধান করছেন, কিন্তু আসলে পাশের সিটের লোকটা কেন বারবার হাই তুলছে, সেটা লক্ষ্য করছেন। আপনার রহস্যময় এবং তীব্রতা আজ মানুষকে একটু ভয় দেখাতে পারে। কেউ সাহায্য করতে এলে আপনি হয়তো সন্দেহ করবেন, ‘এর আসল উদ্দেশ্যটা কী?’ এই স্বভাব একটু কমান। তবে গোপন কোনো সূত্র থেকে ভালো লাভ হতে পারে। পুরোনো বিনিয়োগ আজ ফল দেবে, যা গোপন রাখবেন। আপনার গভীর চাহনি আজ দারুণ কাজ করবে। কিন্তু মনে রাখবেন, সব কথার উত্তর রহস্যময় হাসি দিয়ে দেওয়া যায় না। অন্তত একবার ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি’ সরাসরি বলুন। দিনে অন্তত একবার জোরে হেসে সবাইকে অবাক করে দিন।

ধনু

আজ মনে হঠাৎ ‘বিশ্ব পর্যটনের’ ভূত চাপতে পারে। বসের সঙ্গে মিটিং চলাকালীন মন হয়তো প্যারিসের কোনো ক্যাফেতে কফি খাচ্ছে, অথবা হিমালয়ের কোনো চূড়ায় হাইকিং করছে। কাজের ফাঁকে একটা ইম্পালসিভ ট্রিপ প্ল্যান করে ফেলতে পারেন। আশাবাদী মনোভাব আজ সংক্রামক হবে। চারপাশে থাকা সবাই আপনার উৎসাহে কাজ করবে, কিন্তু কাজটা শেষ করার দায়িত্ব আপনার একার নয়। ভালো অ্যাডভেঞ্চার মানেই বেশি খরচ নয়। আজ বুঝে খরচ করুন। স্বাধীনচেতা মনোভাব আজ সঙ্গীকে মুগ্ধ করবে। তবে মনে রাখবেন, অ্যাডভেঞ্চারের সময় সঙ্গীকে ফেলে হঠাৎ হারিয়ে যাবেন না যেন! অ্যাডভেঞ্চার বই পড়ুন, কিন্তু আজ প্লেনের টিকিট কাটবেন না।

মকর

আজ এত ব্যস্ত থাকবেন যে মনে হবে আপনি একই সঙ্গে ২০টা অফিসের বস। কাজের বাইরে আর কোনো কিছুতে আপনার আগ্রহ নেই। এমনকি হাসতেও এনার্জি খরচ হচ্ছে বলে মনে হতে পারে। একটা ছোট্ট হাসি, প্লিজ! কাজের প্রতি আপনার ডেডিকেশন দেখে গ্রহরা মুগ্ধ। আজ অতিরিক্ত কাজের জন্য প্রশংসা পেতে পারেন। আপনার আর্থিক পরিকল্পনা একেবারে নিখুঁত। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আজ আপনার দিকে তাকিয়ে হাসি দেবে। তবে একটু ছুটি নিন, না হলে শরীর বিদ্রোহ করতে পারে। সঙ্গীকে হয়তো মনে করিয়ে দিতে হবে যে আপনি শুধু ‘কর্মবীর’ নন, একজন ভালোবাসার মানুষও। রোমান্টিক ডেট মানেই একটা প্রফেশনাল মিটিং নয়। একটু রিল্যাক্স করুন। মনে রাখবেন, আপনার জীবন শুধু টাস্ক লিস্ট আর ডেডলাইন নয়!

কুম্ভ

আপনি আজ এত উদ্ভাবনী আইডিয়া নিয়ে বসে থাকবেন যে আশপাশের মানুষজন আপনাকে এলিয়েন ভাবতে পারে। হয়তো অফিস থেকে কীভাবে পৃথিবীকে বাঁচানো যায়, সেই নিয়ে বক্তৃতা দেবেন। আপনার চিন্তাভাবনা আজ ১০ বছর এগিয়ে থাকবে। আপনার আইডিয়াগুলো দারুণ, তবে সেটা কীভাবে বাস্তবায়িত হবে, তা নিয়ে একটু ভাবুন। শুধু ‘বিপ্লব’ করলে তো আর কাজ হবে না! আজ অপ্রত্যাশিত কোনো উৎস থেকে টাকা আসতে পারে। হয়তো পুরোনো বন্ধু ধার শোধ করবে, যা আপনি ভুলেই গিয়েছিলেন। সঙ্গী হয়তো আপনার উদ্ভট আইডিয়াগুলো শুনে মুগ্ধ, কিন্তু বাস্তব জীবনে একটু বেশি মনোযোগী হন। শুধু রোবট বা কোয়ান্টাম ফিজিকস নিয়ে কথা বলবেন না। অন্যদের কাছে আপনার আইডিয়া সহজ করে বলুন, না হলে তারা ভয় পেয়ে যাবে।

মীন

আজ সারা দিন স্বপ্নের জগতে ভেসে থাকবেন। অফিসের ফাইলটা হয়তো আপনার চোখে সমুদ্রের ঢেউ বা মেঘের ভেলা মনে হবে। কেউ কিছু জিজ্ঞেস করলে হয়তো উত্তর দেবেন অন্য কোনো গ্রহ থেকে। বাস্তব আর কল্পনার মধ্যে সীমারেখা আজ একটু অস্পষ্ট। সৃজনশীল কাজের জন্য দারুণ দিন। আপনার কল্পনাশক্তি আজ উচ্চতায়। তবে হিসাব-নিকাশের কাজগুলো আজ অন্য কাউকে দিন। টাকাপয়সার ব্যাপারটা আজ ভুলে গেলে চলবে না। কারণ, দিনের শেষে আপনার পেটে খাবার দরকার। আপনার আবেগপ্রবণতা আজ সঙ্গীকে আরও কাছে টানবে। তবে স্বপ্নের জগৎ থেকে দুই মিনিটের জন্য বেরিয়ে এসে বাস্তব মানুষের সঙ্গে কথা বলুন। রোমান্স ভালো, তবে ডিনারটা কে অর্ডার করবে, সেটা ভুলবেন না। ঘুম থেকে উঠুন! এই পৃথিবীতেও অনেক সুন্দর জিনিস আছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এই ডিসেম্বরে চুলের যত্নে যে বিষয়গুলো অবশ্যই মেনে চলবেন

সানজিদা সামরিন, ঢাকা 
ঠান্ডা আবহাওয়াতেও আপনার চুল যেন মজবুত, মসৃণ ও উজ্জ্বল থাকে, সে জন্য কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।
ঠান্ডা আবহাওয়াতেও আপনার চুল যেন মজবুত, মসৃণ ও উজ্জ্বল থাকে, সে জন্য কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।

ডিসেম্বরের সকাল। এক কাপ গরম চা নিয়ে বারান্দায় চেয়ারে পা তুলে বসে প্রকৃতি দেখার আরামের সঙ্গে আর কোনো কিছুরই তুলনা চলে না। কিন্তু শীতের সকালে যখন জীবনের অন্যতম সেরা সময় কাটাচ্ছেন, তখন আপনার চুল হয়তো ততটাই ভুগছে। শীতে চুল রুক্ষ, নির্জীব ও ভেঙে যাওয়ার সমস্যায় বেশি ভোগে। তাই ঠান্ডা আবহাওয়াতেও আপনার চুল যেন মজবুত, মসৃণ ও উজ্জ্বল থাকে, সে জন্য কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। আর চুলের যত্নে এই নিয়মগুলো মেনে চলুন ডিসেম্বরের শুরু থেকেই।

মাথার ত্বক আর্দ্র রাখতে চুলে নিয়মিত তেল দিন

শীতে নারকেল তেলের সঙ্গে অল্প পরিমাণে ক্যাস্টর অয়েল মিশিয়ে নিয়মিত মাথার ত্বকে ম্যাসাজ করতে পারেন। ডিম ও টক দই চুলের জন্য ভীষণ উপকারী দুটি উপাদান। শ্যাম্পু করার আধা ঘণ্টা আগে মাথার ত্বক ও চুলে ডিম এবং টক দইয়ের মিশ্রণ লাগিয়ে রেখে দিন আধা ঘণ্টা। এরপর শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। এভাবে সপ্তাহে এক দিন হেয়ার প্যাক লাগান। শীতে চুল সুন্দর থাকবে। শারমিন কচি, রূপবিশেষজ্ঞ, স্বত্বাধিকারী, বিন্দিয়া এক্সক্লুসিভ কেয়ার

শীতকালে বাতাসে আর্দ্রতার অভাবে মাথার ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে ওঠে। ফলে অনেকে মাথার ত্বকে চুলকানির সমস্যায় ভোগেন। খুশকি, মাথার ত্বকে জ্বালা এবং চুলকানির কারণে চুল পড়ার সমস্যাও দেখা দিতে পারে। এ সময় নারকেল ও অলিভ অয়েলের মতো পুষ্টিকর তেল হালকা গরম করে মাথায় ম্যাসাজ করুন। এই তেল চুলের গভীরে প্রবেশ করে চুল আর্দ্র রাখে। অন্যদিকে ম্যাসাজ করলে মাথার ত্বকে রক্ত​​সঞ্চালন বাড়ে। ফলে চুল স্বাস্থ্যোজ্জ্বল দেখায় এবং দ্রুত বড় হয়। শীতে সপ্তাহে ২ থেকে ৩ দিন মাথার ত্বকে তেল ম্যাসাজ করুন। বিশেষ করে যেদিন চুল শ্যাম্পু করবেন, সেদিন চুল ধোয়ার আগে প্রি-ওয়াশ অয়েল ট্রিটমেন্ট করুন। এটি মাথার ত্বক ময়শ্চারাইজ করতে সাহায্য করবে এবং একই সঙ্গে চুলের বৃদ্ধিও হবে।

ঘন ঘন চুল ধোয়া এড়িয়ে চলুন

ঘন ঘন শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধোয়ার ফলে মাথার ত্বকের প্রাকৃতিক তেল ধুয়ে যায়। ফলে মাথার ত্বকে আরও শুষ্কতা ও জ্বালা করার সমস্যা দেখা দিতে পারে। সপ্তাহে দুবারের বেশি চুল শ্যাম্পু করবেন না। প্রাকৃতিক আর্দ্রতার ভারসাম্য বজায় রাখতে সব সময় সালফেটমুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করুন।

সপ্তাহে দুবারের বেশি চুল শ্যাম্পু করবেন না। ছবি: পেক্সেলস
সপ্তাহে দুবারের বেশি চুল শ্যাম্পু করবেন না। ছবি: পেক্সেলস

চুল সঠিকভাবে কন্ডিশনিং করুন

শীতকালে কখনো কন্ডিশনার এড়িয়ে যাবেন না। চুলের আর্দ্রতা ও পুষ্টির জন্য নারকেল, জলপাই, জোজোবা তেল এবং শিয়া বাটারের মতো প্রাকৃতিক তেলযুক্ত ঘন ও ক্রিমি কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। সঠিক উপায়ে কীভাবে কন্ডিশনার ব্যবহার করবেন, এ প্রশ্নই তো মনে ঘুরপাক খাচ্ছে? বলছি। চুল শ্যাম্পু করে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। চুলের মাঝ বরাবর থেকে চুলের আগা পর্যন্ত কন্ডিশনার লাগান। শুষ্কতা ও চুলের আগা ফাটা রোধ করতে চুলের আগার অংশে বেশি পরিমাণে কন্ডিশনার লাগিয়ে কয়েক মিনিটের জন্য রেখে দিন। তারপর সাধারণ পানি দিয়ে চুল ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন।

হিট স্টাইলিং সরঞ্জাম এড়িয়ে চলুন

বলা যতটা সহজ, মেনে চলা ততটাই কঠিন। শীতে বিভিন্ন রকম সামাজিক অনুষ্ঠান লেগেই থাকে। ফলে ডিসেম্বর চুলের জন্য অতটা ইতিবাচক মাসও নয়। কিন্তু এ সময় যেহেতু চুল এমনিতেই নির্জীব এবং ভেঙে যাওয়ার সমস্যায় ভোগে, তাই হিট স্টাইলিং সরঞ্জাম যত কম ব্যবহার করা যায়, ততই চুলের জন্য ভালো।

শীতে নির্জীব ও ভেঙে যাওয়ার সমস্যায় এড়িয়ে চলতে হিট স্টাইলিং সরঞ্জাম কম ব্যবহার করুন। ছবি: পেক্সেলস
শীতে নির্জীব ও ভেঙে যাওয়ার সমস্যায় এড়িয়ে চলতে হিট স্টাইলিং সরঞ্জাম কম ব্যবহার করুন। ছবি: পেক্সেলস

সপ্তাহে এক দিন ডিপ কন্ডিশনিং হেয়ার মাস্ক ব্যবহার করুন

সাপ্তাহিক হেয়ার মাস্ক ট্রিটমেন্ট আপনার সামগ্রিক চুলের স্বাস্থ্য নিশ্চিত করার জন্য একটি চমৎকার প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা। শীতকালে, ঠান্ডা বাতাসে চুল দ্রুত নির্জীব হয়ে যায়। তাই এ সময় চুলের স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি কন্ডিশনিংয়ের প্রয়োজন পড়ে। ডিম ও মধুর মতো পুষ্টিকর ও ময়শ্চারাইজিং উপাদানযুক্ত হেয়ার মাস্ক চুল কন্ডিশন করে। এই উপাদানগুলো নির্জীব চুলকে ময়শ্চারাইজ করে, চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে, চুল উজ্জ্বল ও নরম করে। ডিমের কুসুমে পানিতে দ্রবণীয় পেপটাইড থাকে, যা চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে। মধু অ্যামিনো অ্যাসিড ও ভিটামিন সমৃদ্ধ। এটি চুলের মসৃণতা ধরে রাখে।

ভেজা চুল নিয়ে বাইরে বের হবেন না

ঠান্ডা বাতাস চুলের জন্য ক্ষতিকর। তাই ভেজা চুল ছেড়ে বাইরে বের হলে ক্ষতি ছাড়া ভালো কিছু হবে না। বের হওয়ার আগে এমন সময় গোসল করুন, যেন চুল শুকিয়ে যেতে যথেষ্ট সময় পায়। শুকিয়ে এলে চুল বেঁধে তবেই বের হোন। ভালো হয়, সারা দিন পর বাড়ি ফিরে তারপর গোসল করলে। এতে করে বাইরের ধুলাবালু চুলে লেগে থাকলে সেগুলোও পানিতে ধুয়ে যাবে।

চুল ঢেকে রাখুন

ঠান্ডা ও শুষ্ক বাতাসের সংস্পর্শে এলে চুলে টান পড়ে। ফলে চুল ঝরে পড়ার সমস্যা তৈরি হয়। বাইরে বের হওয়ার সময় স্কার্ফ বা টুপি দিয়ে চুল ঢেকে রাখুন। তুলা ও পশমি কাপড়ের ঘর্ষণ রোধ করতে চুল প্রথমে সিল্ক বা সাটিন কাপড় দিয়ে ঢেকে রেখে তারপর টুপি পরতে পারেন।

মাইক্রোফাইবার তোয়ালে ব্যবহার করুন

চুল শুকানোর জন্য সুতির তোয়ালে ব্যবহার করা এড়িয়ে চলুন। এর পরিবর্তে মাইক্রোফাইবার তোয়ালে ব্যবহার করুন। এতে আপনার চুলে কম ঘর্ষণ লাগবে। অন্যদিকে, তুলা বা অন্য কোনো উপাদানে তৈরি তোয়ালে আপনার চুল রুক্ষ করে তুলতে পারে এবং জট লাগা ও চুল পড়ে যাওয়ার কারণ হতে পারে।

চুল সুস্থ রাখতে স্বাস্থ্যকর খাবার খান

প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার চুলের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এই ডিসেম্বরে মাছ, বাদাম, গাজর, ডিম, কুমড়ার মতো প্রয়োজনীয় ভিটামিনসমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পরিমাণ বাড়ান। আপনার শরীর ও চুল সুস্থ রাখতে শাকসবজি, দুধ দিয়ে তৈরি খাবার, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং মাংসের সমন্বয়ে সুষম খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। এর পাশাপাশি পর্যাপ্ত পানি পানেও মনোযোগ দিতে হবে।

সূত্র: স্টাইলক্রেজ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যে আচার মৌসুমি রোগবালাই থেকে মুক্ত রাখবে

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
রসুনের আচার
রসুনের আচার

শীতকাল মানেই জ্বর-সর্দি-কাশি। আর এ সমস্যা ঘরে ঘরে চলতেই থাকে। মৌসুমি সংক্রমণ থেকে রেহাই পেতে সাহায্য করে রসুনের আচার। রসুনের আচার শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। তা ছাড়া আচারে রয়েছে নানা ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন ‘সি’ ও ‘ই’। শীতকালে খাদ্যতালিকায় রসুনের আচার রাখলে কী উপকার পাওয়া সম্ভব জেনে নিন:

  • শরীরে আয়রনের ঘাটতি হলে রক্তাল্পতার সমস্যা শুরু হয়। শরীরে বাসা বাঁধে বিভিন্ন রোগ। রসুন রক্তে আয়রন শোষণের মাত্রা বাড়ায়। তাই খাদ্যতালিকায় রসুনের আচার রাখতে পারেন।
  • রসুনের মধ্যকার ভিটামিন বি৬, সি, আঁশ, ম্যাগনেশিয়াম ও ক্যালসিয়াম মেদ ঝরানোর ক্ষেত্রে দারুণ উপকারী। রসুন খেলে শরীরের বিপাক হার বাড়ে। ফলে বেশি মাত্রায় ক্যালরি ঝরে।
  • রসুন প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। শীতকালে বাতের ব্যথা বাড়ে। বাতের ব্যথা থাকলে খাদ্যতালিকায় রসুনের আচার রাখতে পারেন।
  • শীতে রোগবালাইকে জব্দ করতে কীভাবে রসুনের আচার বানাবেন তারই রেসিপি ও ছবি দিয়েছেন রন্ধনশিল্পী আফরোজা খানম মুক্তা।

উপকরণ

রসুন ৫০০ গ্রাম, গাজর একটি, লেবুর রস ৬ টেবিল চামচ, লেবু স্লাইস ৮ থেকে ১০ পিস, কাঁচা মরিচ ৫ থেকে ৬টি, লবণ স্বাদমতো, হলুদ, মরিচ ও ধনে গুঁড়া দুই চা-চামচ করে, পাঁচফোড়ন এক টেবিল চামচ, মৌরি গুঁড়া এক চা-চামচ, আস্ত মেথি এক চা-চামচ, সরিষার তেল ২ কাপ।

প্রণালি

আস্ত রসুন কোয়া ছাড়িয়ে পানিতে ভিজিয়ে রাখুন ১ ঘণ্টা। পরে খোসা ছাড়িয়ে নিন। এবার রসুনের কোয়া, গাজর, কাঁচা মরিচ, লেবু স্লাইস ধুয়ে রাখুন চালুনিতে। বাটিতে নিয়ে প্রথমে হলুদ গুঁড়া দিয়ে মেখে নিন। পরে মরিচ ও ধনে গুঁড়া, লবণ, পাঁচফোড়ন, আস্ত মেথি ও মৌরি গুঁড়া দিয়ে আবারও মেখে নিন। এবার কাচের বোতলে মাখানো রসুন ভরে লেবুর রস দিন। সব শেষে সরিষার তেল গরম করে ঢেলে দিন। এবার ঢাকনাসহ ৭ থেকে ১০ দিন রোদে রাখুন। তারপর পরিবেশন করুন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত