Ajker Patrika

চীন সীমান্তে নতুন বিমানঘাঁটি চালু করল ভারত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

গত কয়েক মাস ধরেই চীনের সঙ্গে সীমান্ত উত্তেজনা শিথিল হয়ে আসছে ভারতের। এই ধারাবাহিকতার মধ্যেই লাদাখ অঞ্চলে এবার নতুন একটি বিমানঘাঁটির কার্যক্রম শুরু করেছে দেশটি। ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, ‘মুধ-নিওমা’ নামের ওই বিমানঘাঁটি চীনা সীমান্ত থেকে মাত্র ১৪ মাইল (২৩ কিলোমিটার) দূরে অবস্থিত।

১৩ হাজার ৭০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত এই বিমানঘাঁটি নির্মাণ করেছে ভারতের বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশন (বিআরও)। প্রায় ২৫ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে নির্মিত ঘাঁটিটির প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল ২০২৩ সালে।

এই ঘাঁটিতে রয়েছে ১.৭ মাইল দীর্ঘ রানওয়ে, নতুন হ্যাঙ্গার, এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি) ভবন, ক্র্যাশ বে এবং প্রয়োজনীয় আবাসিক ব্যবস্থা। বড় পরিবহন বিমান ও আধুনিক যুদ্ধবিমান অবতরণ ও উড্ডয়নের উপযোগী করে এটি নির্মাণ করা হয়েছে।

২০২০ সালে লাদাখ সীমান্তে সংঘর্ষে বহু হতাহতের পর ভারত-চীন সম্পর্ক তীব্রভাবে অবনতি ঘটে। তবে ২০২৪ সাল থেকে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক উষ্ণতা ফিরে আসে। সেই বছরের অক্টোবরে রাশিয়ার কাজানে ব্রিকস সম্মেলনের ফাঁকে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও চীনা প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং বৈঠক করেন। এরপর উভয় দেশ সীমান্ত টহল সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে।

দীর্ঘ পাঁচ বছর বন্ধ থাকার পর গত জুলাইয়ে চীনা নাগরিকদের জন্য পর্যটন ভিসা দেওয়া পুনরায় শুরু করেছে ভারত। এর পরের মাসেই মোদি ২০১৮ সালের পর প্রথমবারের মতো চীন সফর করেন এবং তিয়ানজিনে অনুষ্ঠিত সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) সম্মেলনে যোগ দেন।

চলতি বছরের অক্টোবরে দুই দেশের মধ্যে সরাসরি বিমান যোগাযোগও পুনরায় চালু হয়েছে। কোভিড-১৯ মহামারির শুরুতে ২০২০ সালে এই ফ্লাইটগুলো স্থগিত করা হয়েছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আমরা কিন্তু তোমাদের দেখছি—সুদানে যুদ্ধরত দুই পক্ষকে সতর্ক করলেন ফলকার তুর্ক

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক। ছবি: সংগৃহীত
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক। ছবি: সংগৃহীত

সুদানে গৃহযুদ্ধে লিপ্ত দুই পক্ষকে কঠোর সতর্কবার্তা দিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার তুর্ক। তিনি বলেছেন, তাদের সব অপরাধ আন্তর্জাতিক মহল নথিবদ্ধ করছে এবং একসময় তাদের জবাবদিহি করতেই হবে।

২০২৩ সালের এপ্রিলে সুদানি সশস্ত্র বাহিনী (এসএএফ) ও প্যারামিলিটারি র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছে প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষ। দেশটি বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম ভয়াবহ মানবিক সংকটে ডুবে আছে।

সাম্প্রতিক সময়ে আরএসএফ দারফুরের গুরুত্বপূর্ণ শহর আল ফাশের দখল নিলে এই সহিংসতা নতুনভাবে বেড়ে যায়। এর পর থেকে গণহত্যা, নির্যাতন ও অন্যান্য নৃশংসতার খবর আসছে।

আজ শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের এক বিশেষ বৈঠকে ফলকার তুর্ক বলেছেন, ‘এই সংঘাতে জড়িত সবাইকে জানিয়ে দিই—আমরা তোমাদের ওপর নজর রাখছি এবং একসময় ন্যায়বিচার অবশ্যই প্রতিষ্ঠিত হবে।’

যুক্তরাজ্যের অনুরোধে এবং জার্মানি, আয়ারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস ও নরওয়ের সমর্থনে ডাকা এই বিশেষ অধিবেশনে ২৩টি পরিষদ সদস্য এবং ৩১টি পর্যবেক্ষক রাষ্ট্র সমর্থন দেয়। এর মাধ্যমে সুদানের পরিস্থিতিতে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার শর্ত পূরণ হয়েছে।

অধিবেশনে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রগুলো সর্বসম্মতভাবে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করেছে। এর মাধ্যমে দারফুরের আল ফাশের শহর দখলের সময় সংঘটিত গণহত্যা ও অপরাধ তদন্তে একটি ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন গঠন করা হবে। আল ফাশের ছিল পশ্চিম সুদানের বিশাল অঞ্চলে সুদানি সেনাবাহিনীর শেষ ঘাঁটি।

এই মিশন শহরটিতে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড, লুটপাট, নির্যাতনসহ সম্ভাব্য আন্তর্জাতিক অপরাধের প্রমাণ সংগ্রহ করবে এবং দায়ীদের শনাক্ত করবে।

তুর্ক বলেন, ‘আমার কর্মীরা এমন সব প্রমাণ সংগ্রহ করছেন, যা ভবিষ্যতে আইনগত প্রক্রিয়ায় ব্যবহার করা যাবে। আমরা ইতিমধ্যে পালিয়ে যাওয়া বেসামরিকদের সঙ্গে কথা বলতে বিভিন্ন স্থানে আমাদের প্রতিনিধি পাঠিয়েছি এবং আরও পাঠাচ্ছি। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতও পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।’

ফলকার তুর্ক আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আল ফাশের এবং আশপাশের অঞ্চল থেকে পালানো নাগরিকদের জরুরি সহায়তা, খাবার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আহ্বান জানিয়েছেন।

আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানায়, আরএসএফ শহরটি দখল করার পর থেকে অন্তত ৯০ হাজার মানুষ পালিয়ে গেছে। গত দুই সপ্তাহের গোলাবর্ষণ ও স্থল আক্রমণে তারা বিপজ্জনক পথে পালাতে বাধ্য হয়েছে। এসব পথে খাবার, পানি বা চিকিৎসা কোনোকিছুই ছিল না।

আইওএম আরও জানায়, এখনো শহরের ভেতরে হাজারো মানুষ আটকা পড়ে আছে। হাসপাতাল, বাজার, পানির সরবরাহব্যবস্থা ধসে পড়ায় তারা দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতিতে পড়েছে।

জাতিসংঘের সুদানবিষয়ক স্বাধীন ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনের সদস্য মোনা রিশমাওয়ি বিশেষ অধিবেশনে জানান, এখন আল ফাশেরের বেশির ভাগ জায়গা অপরাধস্থল। তিনি আরও জানান, তাঁরা প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন এবং যে প্রমাণ পেয়েছেন, তা ভয়াবহ। সেখানে ইচ্ছাকৃত হত্যাকাণ্ড, নির্যাতন, ধর্ষণ, মুক্তিপণের জন্য অপহরণ, নির্বিচারে আটক ও গুমের মতো ঘটনা ঘটেছে।

যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এসএএফ এবং আরএসএফ উভয়ের বিরুদ্ধে জাতিসংঘ গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ তুলেছে। চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্র সুদানের সেনাপ্রধান ও কার্যত দেশটির শাসক জেনারেল আব্দেল ফাত্তাহ আল-বুরহানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয়। ওয়াশিংটন অভিযোগ তোলে, তিনি রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সুইডেনে যাত্রীছাউনিতে ঢুকে পড়ল বাস, বেশ কয়েকজন নিহতের খবর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
পুলিশ নিহত বা আহত ব্যক্তিদের সংখ্যা, লিঙ্গ বা বয়স সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
পুলিশ নিহত বা আহত ব্যক্তিদের সংখ্যা, লিঙ্গ বা বয়স সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে একটি যাত্রীছাউনিতে বাস ঢুকে পড়ে বেশ কয়েকজন নিহত ও আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির পুলিশ। তবে পুলিশ বলছে, এ ঘটনায় সন্ত্রাসী হামলার কোনো ইঙ্গিত এখনো পাওয়া যায়নি।

স্টকহোমের উদ্ধারকারী পরিষেবা বিভাগের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, এ ঘটনায় ছয়জন হতাহত হয়েছেন। তবে তিনি নিহত ও আহতের সুনির্দিষ্ট সংখ্যা জানাননি। তিনি আরও জানান, দুর্ঘটনার সময় বাসটিতে কোনো যাত্রী ছিলেন না।

পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি অবহেলাজনিত হত্যাকাণ্ড হিসেবে তদন্ত করা হচ্ছে। স্থানীয় পুলিশের এক কর্মকতা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘বাসের চালককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এটিকে সন্ত্রাসী হামলা বলে মনে হওয়ার মতো কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই।’

পুলিশ নিহত বা আহত ব্যক্তিদের সংখ্যা, লিঙ্গ বা বয়স সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

দুর্ঘটনার পরপরই পুলিশ, উদ্ধারকর্মী ও অ্যাম্বুলেন্স সেখানে কাজ শুরু করে। সুইডিশ দৈনিক আফটোনব্লাডেট প্রকাশিত একটি ছবিতে দেখা গেছে, একটি নীল ডাবল ডেকার বাসকে ঘিরে জরুরি সেবার কর্মীরা কাজ করছেন আর বাসের চারপাশে ছড়িয়ে রয়েছে ধ্বংসাবশেষ।

পুলিশ জানায়, ঘটনাটি রয়্যাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে ঘটেছে।

সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী উলফ ক্রিস্টারসন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছেন, ‘এ ঘটনার কারণ এখনো জানা যায়নি। তবে এই মুহূর্তে আমাদের চিন্তা ক্ষতিগ্রস্ত ও তাদের পরিবার নিয়ে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জলবায়ু সম্মেলনের প্রবেশপথ আটকে আদিবাসীরা বললেন—কেউ ঢুকবে না, কেউ বেরোবে না

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
কপ ৩০ সম্মেলনের প্রবেশপথে বিক্ষোভকারী আদিবাসীদের একাংশ। ছবি: সংগৃহীত
কপ ৩০ সম্মেলনের প্রবেশপথে বিক্ষোভকারী আদিবাসীদের একাংশ। ছবি: সংগৃহীত

ব্রাজিলে আমাজন বনের কিনারায় আয়োজিত জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন ‘কপ-৩০’ এর মূল প্রবেশপথ আটকে দিয়েছেন একদল আদিবাসী বিক্ষোভকারী। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান জানিয়েছে, শুক্রবার সকালে সম্মেলনের পঞ্চম দিনের বৈঠক শুরুর প্রাক্কালে প্রবেশ পথ আটকে দিয়ে প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে অবরোধ গড়ে তোলেন আদিবাসীরা। এ সময় তাঁরা ‘কেউ ঢুকবে না, কেউ বেরোবে না’ স্লোগানে মানবশৃঙ্খল তৈরি করে মূল গেট আটকে রাখেন।

এ সময় ব্রাজিলের সামরিক বাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও কোনো ধরনের শারীরিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি। বিক্ষোভকারীদের বেশির ভাগই ঐতিহ্যবাহী আদিবাসী পোশাক পরিহিত ছিলেন। আর আদিবাসীদের মানবশৃঙ্খলের বাইরে আরও একটি স্তর তৈরি করে অন্যান্য পরিবেশবাদী গোষ্ঠীর কর্মীরা তাঁদের সমর্থন জানান।

গত চার দিনের মধ্যে এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো কপ ৩০–এর কর্মসূচি ব্যাহত করলেন আদিবাসীরা, যদিও আয়োজকেরা এবারের সম্মেলনটিকে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়ন ও উদ্‌যাপনের সমাবেশ হিসেবে তুলে ধরছেন।

জানা গেছে, এই ধরনের বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছে মুন্দুরুকু নামে একটি আদিবাসী গোষ্ঠী। তাঁরা ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভার সঙ্গে বৈঠকের দাবি জানিয়েছেন। একটি লিখিত বিবৃতিতে তাঁরা বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট লুলা, আমরা কপ–এর সামনে এসেছি, কারণ আমরা চাই—আপনি আমাদের কথা শুনুন। কৃষি ব্যবসার স্বার্থে আমরা আমাদের বিসর্জন দিতে রাজি নই। আমাদের বন বিক্রির জন্য নয়। আমরা জলবায়ুর রক্ষক, বড় বড় কোম্পানির লাভের জন্য আমাজনকে আর ধ্বংস করা যাবে না।’

মুন্দুরুকু নেতারা ব্রাজিল সরকারের প্রতি বেশ কিছু দাবি উপস্থাপন করেছেন। এসব দাবির মধ্যে ছিল—নদীগুলোকে বাণিজ্যিকভাবে উন্নয়নের পরিকল্পনা বাতিল, বন নিধন নিয়ে আশঙ্কা থাকা সত্ত্বেও চালু হওয়া শস্যবাহী রেল প্রকল্প স্থগিত, আদিবাসী ভূখণ্ডের সুস্পষ্ট সীমারেখা নির্ধারণ এবং বন উজাড় থেকে প্রাপ্ত কার্বন ক্রেডিট প্রত্যাখ্যান।

আদিবাসী অবরোধের মুখে সম্মেলনের অংশগ্রহণকারীদের শেষ পর্যন্ত একটি বিকল্প প্রবেশপথ দিয়ে ভেতরে ঢোকার নির্দেশ দেওয়া হয়। এ অবস্থায় জাতিসংঘের কর্মীরা দ্রুত ধাতব ডিটেক্টর সরিয়ে বিকল্প প্রবেশপথ তৈরি করেন।

স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে বিক্ষোভটি শুরু হলে সম্মেলনের সভাপতি ও অভিজ্ঞ ব্রাজিলিয়ান কূটনীতিক আন্দ্রে করেয়া দু লাগো আলোচনা করার জন্য বিক্ষোভকারীদের সামনে যান। আলাপ চলাকালে তিনি এক আদিবাসী নারীর শিশুকে কোলে নেন এবং তাঁদের সঙ্গে শান্তভাবে কথা বলেন। তাঁর কথায় বিক্ষোভকারীরা শান্ত হলে সকাল ৯টা ৩৭ মিনিটে প্রবেশপথ থেকে তাঁরা সরে যান।

জাতিসংঘের জলবায়ু সংস্থা জানিয়েছে, এটি ছিল একটি ‘শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ’। কোনো ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকি ছিল না। তবে অভিজ্ঞ জলবায়ু আন্দোলনকর্মী হার্জিত সিং বলেছেন, ‘৩৩ বছরে কপ আলোচনায় তেমন অগ্রগতি না হওয়ায় আদিবাসীরা স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছেন—জলবায়ু ও জীববৈচিত্র্যের প্রকৃত রক্ষক তারাই।’

এর আগে গত মঙ্গলবার সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন রাতে আরেকটি ঘটনায় আদিবাসী বিক্ষোভকারীরা প্রধান ভেন্যুর দরজায় হঠাৎ ধাক্কা দিলে দুজন নিরাপত্তারক্ষী আহত হয়েছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

১ লাখ ২০ হাজার গ্লাইড বোমা বানাচ্ছে রাশিয়া, দাবি ইউক্রেনের শীর্ষ গোয়েন্দা কর্মকর্তার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
গ্লাইড বোমার কার্যকর পাল্লা ছিল সর্বোচ্চ ৯০ কিলোমিটার। ছবি: এএফপির সৌজন্যে
গ্লাইড বোমার কার্যকর পাল্লা ছিল সর্বোচ্চ ৯০ কিলোমিটার। ছবি: এএফপির সৌজন্যে

রাশিয়া চলতি বছরে অন্তত ১ লাখ ২০ হাজার বিধ্বংসী গ্লাইড বোমা তৈরি করার পরিকল্পনা করছে বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার এক শীর্ষ কর্মকর্তা। এর মধ্যে অন্তত ৫০০টি থাকবে নতুন প্রযুক্তির দূরপাল্লার গ্লাইড বোমা।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রায় আক্রমণ শুরুর পর থেকে রাশিয়া অস্ত্র উৎপাদন বাড়িয়েছে। দেশটির প্রতিরক্ষা কারখানাগুলো এখন ২৪ ঘণ্টা চালু থাকে। তবে সামরিক উৎপাদনের বিস্তারিত তথ্য মস্কো গোপন রাখে। এ জন্য রয়টার্স রাশিয়ার ২০২৫ সালের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা যাচাই করতে পারেনি।

ইউক্রেনের ডেপুটি ডিফেন্স ইন্টেলিজেন্সের প্রধান মেজর জেনারেল ভাদিম স্কিবিৎসকির দেওয়া এ তথ্য এসেছে একটি সাক্ষাৎকার থেকে। তিনি সংখ্যাটি কীভাবে পেলেন বা আগের উৎপাদন হার কত ছিল—তা জানাতে চাননি। তবে তাঁর মতে, গ্লাইড বোমা তৈরির ক্ষেত্রে এটি এখন পর্যন্ত রাশিয়ার সবচেয়ে বড় উদ্যোগ।

স্কিবিৎসকির ভাষ্য অনুযায়ী, ১ লাখ ২০ হাজারের এই হিসাবের মধ্যে থাকবে সম্পূর্ণ নতুন বোমা এবং পুরোনো বোমাগুলোকে গ্লাইড বোমায় রূপান্তর করে আপগ্রেড করার প্রক্রিয়া।

স্কিবিৎসকি জানান, রুশ বাহিনী প্রতিদিন ২০০ থেকে ২৫০টি গ্লাইড বোমা নিক্ষেপ করছে। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত মাসে এই গড় ছিল দিনে প্রায় ১৭০টি।

স্কিবিৎসকি বলেন, ‘এসব বোমা গুলি করে নামানো সম্ভব, কিন্তু রাশিয়ার তৈরি বোমার সংখ্যা এত বেশি যে, তাদের সঙ্গে পাল্লা দেওয়াই অসম্ভব। তাই এ হুমকি মোকাবিলায় আমাদের যথাযথভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে।’

আগে এসব গ্লাইড বোমার কার্যকর পাল্লা ধরা হতো সর্বোচ্চ ৯০ কিলোমিটার। ফলে রুশ পাইলটেরা সীমান্ত অতিক্রম না করেও নিরাপদে বোমা ফেলতে পারতেন। কারণ, বিমান সীমান্তের ওপারে গেলে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা সেগুলো ভূপাতিত করে দিতে পারে। তাই এ বোমা রাশিয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

গ্লাইড বোমা সাধারণ ক্ষেপণাস্ত্রের তুলনায় অনেক সস্তা এবং বিপুল পরিমাণে তৈরি করা যায়। কয়েক শ কেজি বিস্ফোরক বহন করতে পারায় এগুলো বড় ভবনসহ সেনাঘাঁটিও ধ্বংস করতে সক্ষম। খারকিভ ও খেরসনের মতো ফ্রন্টলাইন শহরগুলোতে এসব বোমা দিয়েই ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে রাশিয়া।

স্কিবিৎসকি বলেন, রাশিয়া এবার নতুন একধরনের গ্লাইড বোমা তৈরি করছে, যা যুদ্ধবিমান থেকে নিক্ষেপের পর ২০০ কিলোমিটার পর্যন্ত উড়ে যেতে পারবে। চলতি বছরের শেষ নাগাদ এমন ৫০০টির বেশি বোমা তৈরির পরিকল্পনা করেছে রাশিয়া।

ইউক্রেনের ধারণা, রাশিয়া এই বোমাগুলোর পাল্লা ৪০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। এটা করতে পারলে রাশিয়া ক্ষেপণাস্ত্র ছাড়াই ইউক্রেনের বহু শহর টার্গেট করতে পারবে।

এ বিষয়ে জানতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করেছিল, কিন্তু তারা তাৎক্ষিণকভাবে সাড়া দেয়নি।

রাশিয়া দাবি করে, তারা বেসামরিকদের লক্ষ্য করে না। তবে ইউক্রেনে আক্রমণের শুরু থেকে হাজারো মানুষ নিহত ও আহত হয়েছে। মস্কো যুক্তি দেয়, ইউক্রেনের পশ্চিমাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়া রাশিয়ার জন্য হুমকি, যা ঠেকানো জরুরি।

স্কিবিৎসকি রাশিয়ার ড্রোন উৎপাদন সম্পর্কেও নতুন তথ্য দেন। তাঁর মতে, ড্রোন উৎপাদন বাড়ার ফলে রাশিয়া ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোতে আরও কার্যকরভাবে হামলা চালাতে পারছে।

স্কিবিৎসকি জানান, ২০২৫ সালে রাশিয়া ৭০ হাজার দূরপাল্লার ড্রোন তৈরি করবে। এর মধ্যে ৩০ হাজার হবে শাহেদ ড্রোন, যা রাশিয়ার হামলার মূল বাহন।

স্কিবিৎসকি জানান, তারা মাসে ৩০টি ড্রোন দিয়ে শুরু করেছিল, এখন ৩০টি ড্রোন একসঙ্গে একটিমাত্র লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে। তাঁর মতে, এই শীতেও ইউক্রেনের গ্যাস ও জ্বালানি স্থাপনাগুলোতে হামলা বাড়তে থাকবে।

স্কিবিৎসকি আরও বলেন, বর্তমানে যে পোক্রোভস্ক শহরে তীব্র লড়াই চলছে, সেটি রুশ বাহিনী দখল করতে পারলে তারা দোনেৎস্কের দিকে অগ্রসর হতে পারে। এটাই তাদের দীর্ঘদিনের লক্ষ্য।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত