Ajker Patrika

পরোপকারী বন্ধু ডেলটা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক
পরোপকারী বন্ধু ডেলটা

মাথাটা বাতিল রাইস কুকার দিয়ে তৈরি। ইন্দোনেশিয়ার প্রত্যন্ত একটি গ্রামে করোনায় আক্রান্ত হয়ে আইসোলেশনে থাকা রোগীদের কাছে সাক্ষাৎ দেবী এই যন্ত্রমানবী ডেলটা। রোগীদের কাছে যেতে যখন কাছের মানুষও ভয় পাচ্ছেন, তখন ডেলটা সামনে গিয়ে হাজির। সুললিত কণ্ঠে প্রথমেই বলছে, ‘আসসালামু আলাইকুম’। তারপর প্রয়োজনীয় খাবার আর ওষুধ হাতে তুলে দিচ্ছে। শুধু কি তাই, পুরো গ্রাম জীবাণুমুক্ত করার কাজটিও নিজের হাতে সামলাচ্ছে ডেলটা।

ইন্দোনেশিয়ার পূর্ব জাভায় অবস্থিত তেম্বক গেডে গ্রামে এই যন্ত্রমানবী ডেলটার বসবাস। সারা দেশের মতো করোনায় কাবু হয়ে গেছে ইন্দোনেশিয়ার ছোট্ট এই গ্রামটি। সেই বিপদের দিনে যন্ত্রমানবী ডেলটা সবার পরোপকারী বন্ধু হয়ে গেছে। মহামারিতে স্তব্ধ হয়ে যাওয়া গ্রামটিতে সে এখন মানুষের আনন্দের খোরাক।

গ্রামের মানুষের সম্মিলিত প্রয়াসেই ডেলটা মানবীর সৃষ্টি হয়েছে। গৃহস্থালির বিভিন্ন বাতিল মালামাল ব্যবহার করে তৈরি হয়েছে তার অঙ্গপ্রত্যঙ্গ। রাইস কুকার দিয়ে তৈরি তার মাথাটি ছাড়াও বুকের অংশটি তৈরি হয়েছে একটি টেলিভিশন দিয়ে। আর তার হাতগুলো পিভিসি পাইপ। তার মুখে যেসব কথা শোনা যায়, সেগুলো আসলে একজন নারীর বলা কথাগুলো রেকর্ড করে সংযুক্ত করা হয়েছে। সেই নারী আর কেউ নন, ডেলটা মানবীর প্রধান নির্মাতা আশেয়ান্তোর স্ত্রী।

রোগীদের বাড়িতে গিয়ে সালাম দেওয়ার পরই ডেলটা মানবী বলে, ‘কিছু মনে করবেন না, এটা একটা ডেলিভারি...।’ তারপর ধন্যবাদ দিয়ে বিদায় নেওয়ার সময় রোগীর উদ্দেশে বলে, ‘আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আশা করি, দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন।’ এ ছাড়া নিয়ম করে প্রতি সপ্তাহেই একবার গ্রামের রাস্তায় জীবাণুনাশক ছিটিয়ে আসে ডেলটা।

নিউইয়র্ক টাইমস ১২ আগস্ট ডেলটাকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন করেছে। তাতে বলা হয়েছে, মাত্র দুই সপ্তাহ আগেই জীবন পেয়েছে ডেলটা মানবী। তাকে পরিচালনা করা হয় একটি রিমোট কন্ট্রোলের সাহায্যে। বর্তমানে তাকে প্রায় ৬০০ ফুট দূর থেকেই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তবে তার সৃষ্টিকর্তা আশেয়ান্তোর অন্য পরিকল্পনাও আছে। তিনি ভাবছেন, মোবাইল ফোন আর ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে আরও অনেক দূর থেকেই নিয়ন্ত্রণ করা হবে ডেলটাকে।

জানা গেছে, ছোট হলেও ‘স্মার্ট ভিলেজ’ হিসেবে বেশ পরিচিতি রয়েছে তেম্বক গেডে গ্রামটির। বাতিল জিনিসপত্র কাজে লাগিয়ে মাঝে মাঝেই আরও নানা চমকপ্রদ জিনিস তৈরি করেন গ্রামের বাসিন্দারা। ডেলটা মানবীকে নির্মাণের ধারণাটি এসেছিল অন্য চিন্তা থেকে। স্থানীয় একটি খাবারের দোকানে ক্রেতাদের খাবার ও পানীয় পৌঁছে দিতেই প্রথমে এর ডিজাইন করা হয়। এ কাজে সহযোগিতা করে জাভা প্রদেশের দুটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান।

আশেয়ান্তো জানান, অন্য চিন্তা থাকলেও মহামারি পরিস্থিতি যন্ত্রমানবীকে নতুন কাজে ধাবিত করেছে। তেম্বক গেডে গ্রামটি ছোট হলেও ঘনবসতিপূর্ণ। ফলে এই গ্রামে করোনায় আক্রান্তের হারও বেশি। দুই সপ্তাহ আগে গ্রামটিতে আইসোলেশনে থাকা এক ব্যক্তি হঠাৎ করে খাদ্য ও অন্যান্য কিছু জিনিস চাইলে এটিকে কাজে লাগানোর বিষয়টি মাথায় আসে। করোনার নতুন ধরনের সঙ্গে মিলিয়ে এটির নামকরণ করা হয় ডেলটা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের সঙ্গে আফগানিস্তান-শ্রীলঙ্কাও ঢাকায় এসিসির সভা বর্জন করল

মুক্তি পেয়ে আ.লীগ নেতার ভিডিও বার্তা, বেআইনি বলল বিএনপি

গাড়ি কেনার টাকা না দেওয়ায় স্ত্রীকে মারধর, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের বিরুদ্ধে মামলা

যুদ্ধবিমানের ২৫০ ইঞ্জিন কিনছে ভারত, ফ্রান্সের সঙ্গে ৬১ হাজার কোটি রুপির চুক্তি

সালাহউদ্দিনকে নিয়ে বিষোদ্‌গার: চকরিয়ায় এনসিপির পথসভার মঞ্চে বিএনপির হামলা-ভাঙচুর

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত