Ajker Patrika

ঘূর্ণিঝড়ে শ্রীলঙ্কায় মৃত বেড়ে ১৫৩, আন্তর্জাতিক সাহায্য প্রার্থনা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
শ্রীলঙ্কায় ঘূর্ণিঝড় দিতওয়াহর তাণ্ডবে প্রায় ১৫ হাজার ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্য
শ্রীলঙ্কায় ঘূর্ণিঝড় দিতওয়াহর তাণ্ডবে প্রায় ১৫ হাজার ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্য

ঘূর্ণিঝড় দিতওয়াহর প্রভাবে সৃষ্ট প্রবল বর্ষণ ও বন্যায় শ্রীলঙ্কায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৫৩ জনে দাঁড়িয়েছে। আরও ১৭৬ জন নিখোঁজ রয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে জরুরি সহায়তা চেয়েছে শ্রীলঙ্কা সরকার।

দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র (ডিএমসি) আজ শনিবার জানিয়েছে, চরম আবহাওয়ার কারণে সারা দেশে প্রায় ১৫ হাজার ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে এবং প্রায় ৪৪ হাজার মানুষ সরকারি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় দিতওয়াহ শনিবার উত্তর দিকে প্রতিবেশী ভারতের দিকে চলে গেলেও এর প্রভাবে মধ্য শ্রীলঙ্কার ক্যান্ডি জেলায় (রাজধানী কলম্বো থেকে ১১৫ কিমি পূর্বে) আরও ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। প্রধান প্রবেশপথের রাস্তাগুলোর বেশ কিছু জায়গা এখনো পানির নিচে।

ডিএমসির মহাপরিচালক সম্পাথ কোটুওয়েগোডা সর্বশেষ হতাহতের সংখ্যা ঘোষণা করার সময় জানান, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর হাজার হাজার সদস্য মোতায়েন করে ত্রাণসহায়তা জোরদার করা হয়েছে। তিনি কলম্বোয় সাংবাদিকদের বলেন, ‘সশস্ত্র বাহিনীর সহায়তায় ত্রাণ কার্যক্রম চলছে।’

শ্রীলঙ্কা রেডক্রস সোসাইটির মহাসচিব মহেশ গুণসেকরা জানান, উদ্ধারকর্মীরা পৌঁছানোর চেষ্টা করলেও বহু মানুষ বিভিন্ন বন্যাকবলিত এলাকায় আটকা পড়েছে। তিনি বলেন, ‘ত্রাণের চাহিদা বাড়ছে। দুই দিন পরও পানি এখনো বাড়ছে। ঘূর্ণিঝড় ধীরে ধীরে সরে গেলেও আমাদের জন্য এখনো বিপদ শেষ হয়নি।’

এদিকে, আজ দেশটির সরকার আন্তর্জাতিক সাহায্যের আবেদন জানিয়েছে। পাশাপাশি প্রায় ৫ লাখ ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে সহায়তার জন্য বিদেশে থাকা নাগরিকদের নগদ অনুদান দেওয়ার অনুরোধ করেছে।

প্রথম দেশ হিসেবে ভারত দ্রুত সাড়া দিয়ে এগিয়ে এসেছে। ভারত ইতিমধ্যে দুটি বিমানবোঝাই ত্রাণসামগ্রী পাঠিয়েছে। এ ছাড়া একটি ভারতীয় যুদ্ধজাহাজ (আগে থেকে শুভেচ্ছা সফরে কলম্বোয় ছিল) তার নিজস্ব রেশন দুর্গতদের সহায়তার জন্য দান করেছে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে শ্রীলঙ্কায় প্রাণহানির ঘটনায় সমবেদনা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে আমরা আরও ত্রাণ ও সহায়তা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত।’

প্রসঙ্গত, উষ্ণমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ তালিকায় থাকা ‘দিতওয়াহ’ শব্দটির অর্থ হলো ‘লেগুন’ বা উপহ্রদ। এই লেগুন হলো অগভীর জলাশয়, যা সাধারণত বালিয়াড়ি বা দ্বীপের কারণে মহাসাগর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এই নাম দিয়েছে ইয়েমেন। নামটি ইয়েমেনের সুকাত্রা দ্বীপের দিতওয়াহ উপহ্রদকে (Detwah Lagoon) নির্দেশ করে, যা এর অনন্য ও স্বতন্ত্র উপকূলীয় বাস্তুতন্ত্রের জন্য পরিচিত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...