রায়হান আল ইমরান

বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত চা-বাগান, টিলা, উঁচু পাহাড় আর আধ্যাত্মিকতার শহর সিলেট। এই শহরের বুকে ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ছোঁয়ায় নির্মিত এক অনন্য স্থাপনা শাহি ঈদগাহ। তিন শতাধিক বছর ধরে দাঁড়িয়ে থাকা এই ঈদগাহ শুধু নামাজের স্থান নয়; এটি এক জীবন্ত ইতিহাস, স্থাপত্যকলার নন্দিত রূপ ও আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যের দীপ্ত প্রতীক।
স্থপতি ও স্থাপত্যের ধরন
সপ্তদশ শতকের গোড়ার দিকে মোগল সম্রাট আওরঙ্গজেবের আমলে, সিলেটের তৎকালীন ফৌজদার মোহাম্মদ ফরহাদ খাঁর তত্ত্বাবধানে গড়ে ওঠে এই ঈদগাহ। টিলার বুক চিরে, দৃষ্টিনন্দন গম্বুজ আর রাজকীয় শৈলীতে নির্মিত এই স্থাপনা এক মহান উদ্যোগ; যার প্রতিটি ইট, প্রতিটি খোদাই যেন মোগল স্থাপত্যের অনন্য ছাপ বহন করে।
ঈদগাহের মূল অংশে উঠতে হলে পাড়ি দিতে হয় ২২টি অলংকৃত সিঁড়ি। সিঁড়ি মাড়িয়ে ওপরে উঠলেই চোখে পড়ে ১৫টি গম্বুজে সজ্জিত বিশাল প্রাঙ্গণ, যেখানে প্রতি ঈদেই জমায়েত হন লাখের বেশি মুসল্লি। ঈদগাহের সম্মুখদিকে রয়েছে কারুকার্যময় ৮টি গম্বুজ। চারদিক থেকে ঘিরে থাকা সীমানাপ্রাচীরে আছে ছোট-বড় ১০টি ফটক। ঈদগাহের সামনের দিকে রয়েছে প্রধান তিনটি ফটক, যেগুলো আকারে তুলনামূলক বৃহৎ ও বিস্তৃত। চারপাশে সবুজ বৃক্ষের ছায়া, বিস্তৃত ময়দান আর অজুর জন্য পাকাঘাট ঘেরা পুকুর—সব মিলিয়ে এই ঈদগাহ যেন তৈরি করছে এক প্রশান্তিময় পরিবেশ।
বিপ্লবের সূতিকাগার
শাহি ঈদগাহ শুধু ইবাদতের স্থান হিসেবে নয়; এটি একসময় ছিল সংগ্রামের মঞ্চও। ১৭৭২ সালে এখানেই ব্রিটিশবিরোধী প্রথম আন্দোলনের সূচনা করেন সৈয়দ হাদী ও মাহদী। তাঁদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে এই ময়দান পরিণত হয় স্বাধীনতার প্রতীকস্থলে। পরে এই ঈদগাহ হয়ে ওঠে উপমহাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের অন্যতম সাক্ষী। মহাত্মা গান্ধী, কায়েদে আযম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক, মোহাম্মদ আলী জওহর, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী—সবাই কোনো না কোনো সময় এই ঈদগাহ প্রাঙ্গণে বক্তব্য দিয়েছেন। তাই এই ঈদগাহ কালক্রমে হয়ে উঠেছে প্রেরণার স্থান; যেখানে ধর্ম ও রাজনীতি, ইতিহাস ও অনুভূতি মিলে হয়েছে একাকার।
নবরূপে শাহি ঈদগাহ
সময় বদলেছে। শাহি ঈদগাহও সেজেছে নবরূপে, যদিও এর মূল রূপ দৃশ্যমান এখনো। স্থানীয়দের মতে, সমাজসেবক জহির উদ্দিন তারু মিয়া ২০০১ সালে নিজ উদ্যোগে তিনটি মূল গেটের সংস্কার করেন। উদ্বোধন করেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। পরে ২০০৩ সালে পুকুরের চারপাশে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান ঘাট নির্মাণের কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। অতঃপর তিনিই ২০১০ সালে বিদ্যুতায়ন ও ফুটপাত নির্মাণের কাজে তদারকি করেন।
কালের প্রবাহে সিলেট সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে ঈদগাহের চারপাশে স্থাপিত হয় কারুকার্যময় প্রাচীর, পরিচ্ছন্ন সড়ক এবং বৃক্ষবেষ্টিত পরিবেশ—সব মিলিয়ে এটি এখন সিলেটের ঐতিহ্যপূর্ণ দর্শনীয় স্থান। এখানে প্রতিদিনই দেখা মেলে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত পর্যটকদের। কেউ আসেন ঈদগাহের মনোরম দৃশ্য অবলোকন করতে, আবার কেউ মোগল আমলের ঐতিহাসিক স্থাপত্যশৈলী চর্চা করতে।
ঐতিহ্য, ধর্ম আর প্রকৃতির মেলবন্ধন
সিলেট জেলার ঐতিহ্য শাহি ঈদগাহ যেমন ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যের প্রতীক, তেমনি নন্দিত রূপ, মনোরম পরিবেশ এবং নৈসর্গিক সৌন্দর্যেরও এক অনুপম নিদর্শন। চারপাশে ঘেরা নানা প্রজাতির বৃক্ষ কিংবা সবুজের আবেশে যখন দর্শকের দৃষ্টি পড়ে, তখন চোখ যেন মুগ্ধতায় থমকে যায়, হৃদয় পুলকিত হয়। মোগল আমলে নির্মিত শাহি ঈদগাহ শুধু একটি ঈদের মাঠ নয়; এটি ইতিহাসের এক জীবন্ত দলিল, মোগল স্থাপত্যের এক মহৎ নিদর্শন এবং সিলেটের আত্মার প্রতীক।
লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক

বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত চা-বাগান, টিলা, উঁচু পাহাড় আর আধ্যাত্মিকতার শহর সিলেট। এই শহরের বুকে ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ছোঁয়ায় নির্মিত এক অনন্য স্থাপনা শাহি ঈদগাহ। তিন শতাধিক বছর ধরে দাঁড়িয়ে থাকা এই ঈদগাহ শুধু নামাজের স্থান নয়; এটি এক জীবন্ত ইতিহাস, স্থাপত্যকলার নন্দিত রূপ ও আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যের দীপ্ত প্রতীক।
স্থপতি ও স্থাপত্যের ধরন
সপ্তদশ শতকের গোড়ার দিকে মোগল সম্রাট আওরঙ্গজেবের আমলে, সিলেটের তৎকালীন ফৌজদার মোহাম্মদ ফরহাদ খাঁর তত্ত্বাবধানে গড়ে ওঠে এই ঈদগাহ। টিলার বুক চিরে, দৃষ্টিনন্দন গম্বুজ আর রাজকীয় শৈলীতে নির্মিত এই স্থাপনা এক মহান উদ্যোগ; যার প্রতিটি ইট, প্রতিটি খোদাই যেন মোগল স্থাপত্যের অনন্য ছাপ বহন করে।
ঈদগাহের মূল অংশে উঠতে হলে পাড়ি দিতে হয় ২২টি অলংকৃত সিঁড়ি। সিঁড়ি মাড়িয়ে ওপরে উঠলেই চোখে পড়ে ১৫টি গম্বুজে সজ্জিত বিশাল প্রাঙ্গণ, যেখানে প্রতি ঈদেই জমায়েত হন লাখের বেশি মুসল্লি। ঈদগাহের সম্মুখদিকে রয়েছে কারুকার্যময় ৮টি গম্বুজ। চারদিক থেকে ঘিরে থাকা সীমানাপ্রাচীরে আছে ছোট-বড় ১০টি ফটক। ঈদগাহের সামনের দিকে রয়েছে প্রধান তিনটি ফটক, যেগুলো আকারে তুলনামূলক বৃহৎ ও বিস্তৃত। চারপাশে সবুজ বৃক্ষের ছায়া, বিস্তৃত ময়দান আর অজুর জন্য পাকাঘাট ঘেরা পুকুর—সব মিলিয়ে এই ঈদগাহ যেন তৈরি করছে এক প্রশান্তিময় পরিবেশ।
বিপ্লবের সূতিকাগার
শাহি ঈদগাহ শুধু ইবাদতের স্থান হিসেবে নয়; এটি একসময় ছিল সংগ্রামের মঞ্চও। ১৭৭২ সালে এখানেই ব্রিটিশবিরোধী প্রথম আন্দোলনের সূচনা করেন সৈয়দ হাদী ও মাহদী। তাঁদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে এই ময়দান পরিণত হয় স্বাধীনতার প্রতীকস্থলে। পরে এই ঈদগাহ হয়ে ওঠে উপমহাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের অন্যতম সাক্ষী। মহাত্মা গান্ধী, কায়েদে আযম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক, মোহাম্মদ আলী জওহর, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী—সবাই কোনো না কোনো সময় এই ঈদগাহ প্রাঙ্গণে বক্তব্য দিয়েছেন। তাই এই ঈদগাহ কালক্রমে হয়ে উঠেছে প্রেরণার স্থান; যেখানে ধর্ম ও রাজনীতি, ইতিহাস ও অনুভূতি মিলে হয়েছে একাকার।
নবরূপে শাহি ঈদগাহ
সময় বদলেছে। শাহি ঈদগাহও সেজেছে নবরূপে, যদিও এর মূল রূপ দৃশ্যমান এখনো। স্থানীয়দের মতে, সমাজসেবক জহির উদ্দিন তারু মিয়া ২০০১ সালে নিজ উদ্যোগে তিনটি মূল গেটের সংস্কার করেন। উদ্বোধন করেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। পরে ২০০৩ সালে পুকুরের চারপাশে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান ঘাট নির্মাণের কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। অতঃপর তিনিই ২০১০ সালে বিদ্যুতায়ন ও ফুটপাত নির্মাণের কাজে তদারকি করেন।
কালের প্রবাহে সিলেট সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে ঈদগাহের চারপাশে স্থাপিত হয় কারুকার্যময় প্রাচীর, পরিচ্ছন্ন সড়ক এবং বৃক্ষবেষ্টিত পরিবেশ—সব মিলিয়ে এটি এখন সিলেটের ঐতিহ্যপূর্ণ দর্শনীয় স্থান। এখানে প্রতিদিনই দেখা মেলে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত পর্যটকদের। কেউ আসেন ঈদগাহের মনোরম দৃশ্য অবলোকন করতে, আবার কেউ মোগল আমলের ঐতিহাসিক স্থাপত্যশৈলী চর্চা করতে।
ঐতিহ্য, ধর্ম আর প্রকৃতির মেলবন্ধন
সিলেট জেলার ঐতিহ্য শাহি ঈদগাহ যেমন ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যের প্রতীক, তেমনি নন্দিত রূপ, মনোরম পরিবেশ এবং নৈসর্গিক সৌন্দর্যেরও এক অনুপম নিদর্শন। চারপাশে ঘেরা নানা প্রজাতির বৃক্ষ কিংবা সবুজের আবেশে যখন দর্শকের দৃষ্টি পড়ে, তখন চোখ যেন মুগ্ধতায় থমকে যায়, হৃদয় পুলকিত হয়। মোগল আমলে নির্মিত শাহি ঈদগাহ শুধু একটি ঈদের মাঠ নয়; এটি ইতিহাসের এক জীবন্ত দলিল, মোগল স্থাপত্যের এক মহৎ নিদর্শন এবং সিলেটের আত্মার প্রতীক।
লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক
রায়হান আল ইমরান

বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত চা-বাগান, টিলা, উঁচু পাহাড় আর আধ্যাত্মিকতার শহর সিলেট। এই শহরের বুকে ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ছোঁয়ায় নির্মিত এক অনন্য স্থাপনা শাহি ঈদগাহ। তিন শতাধিক বছর ধরে দাঁড়িয়ে থাকা এই ঈদগাহ শুধু নামাজের স্থান নয়; এটি এক জীবন্ত ইতিহাস, স্থাপত্যকলার নন্দিত রূপ ও আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যের দীপ্ত প্রতীক।
স্থপতি ও স্থাপত্যের ধরন
সপ্তদশ শতকের গোড়ার দিকে মোগল সম্রাট আওরঙ্গজেবের আমলে, সিলেটের তৎকালীন ফৌজদার মোহাম্মদ ফরহাদ খাঁর তত্ত্বাবধানে গড়ে ওঠে এই ঈদগাহ। টিলার বুক চিরে, দৃষ্টিনন্দন গম্বুজ আর রাজকীয় শৈলীতে নির্মিত এই স্থাপনা এক মহান উদ্যোগ; যার প্রতিটি ইট, প্রতিটি খোদাই যেন মোগল স্থাপত্যের অনন্য ছাপ বহন করে।
ঈদগাহের মূল অংশে উঠতে হলে পাড়ি দিতে হয় ২২টি অলংকৃত সিঁড়ি। সিঁড়ি মাড়িয়ে ওপরে উঠলেই চোখে পড়ে ১৫টি গম্বুজে সজ্জিত বিশাল প্রাঙ্গণ, যেখানে প্রতি ঈদেই জমায়েত হন লাখের বেশি মুসল্লি। ঈদগাহের সম্মুখদিকে রয়েছে কারুকার্যময় ৮টি গম্বুজ। চারদিক থেকে ঘিরে থাকা সীমানাপ্রাচীরে আছে ছোট-বড় ১০টি ফটক। ঈদগাহের সামনের দিকে রয়েছে প্রধান তিনটি ফটক, যেগুলো আকারে তুলনামূলক বৃহৎ ও বিস্তৃত। চারপাশে সবুজ বৃক্ষের ছায়া, বিস্তৃত ময়দান আর অজুর জন্য পাকাঘাট ঘেরা পুকুর—সব মিলিয়ে এই ঈদগাহ যেন তৈরি করছে এক প্রশান্তিময় পরিবেশ।
বিপ্লবের সূতিকাগার
শাহি ঈদগাহ শুধু ইবাদতের স্থান হিসেবে নয়; এটি একসময় ছিল সংগ্রামের মঞ্চও। ১৭৭২ সালে এখানেই ব্রিটিশবিরোধী প্রথম আন্দোলনের সূচনা করেন সৈয়দ হাদী ও মাহদী। তাঁদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে এই ময়দান পরিণত হয় স্বাধীনতার প্রতীকস্থলে। পরে এই ঈদগাহ হয়ে ওঠে উপমহাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের অন্যতম সাক্ষী। মহাত্মা গান্ধী, কায়েদে আযম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক, মোহাম্মদ আলী জওহর, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী—সবাই কোনো না কোনো সময় এই ঈদগাহ প্রাঙ্গণে বক্তব্য দিয়েছেন। তাই এই ঈদগাহ কালক্রমে হয়ে উঠেছে প্রেরণার স্থান; যেখানে ধর্ম ও রাজনীতি, ইতিহাস ও অনুভূতি মিলে হয়েছে একাকার।
নবরূপে শাহি ঈদগাহ
সময় বদলেছে। শাহি ঈদগাহও সেজেছে নবরূপে, যদিও এর মূল রূপ দৃশ্যমান এখনো। স্থানীয়দের মতে, সমাজসেবক জহির উদ্দিন তারু মিয়া ২০০১ সালে নিজ উদ্যোগে তিনটি মূল গেটের সংস্কার করেন। উদ্বোধন করেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। পরে ২০০৩ সালে পুকুরের চারপাশে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান ঘাট নির্মাণের কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। অতঃপর তিনিই ২০১০ সালে বিদ্যুতায়ন ও ফুটপাত নির্মাণের কাজে তদারকি করেন।
কালের প্রবাহে সিলেট সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে ঈদগাহের চারপাশে স্থাপিত হয় কারুকার্যময় প্রাচীর, পরিচ্ছন্ন সড়ক এবং বৃক্ষবেষ্টিত পরিবেশ—সব মিলিয়ে এটি এখন সিলেটের ঐতিহ্যপূর্ণ দর্শনীয় স্থান। এখানে প্রতিদিনই দেখা মেলে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত পর্যটকদের। কেউ আসেন ঈদগাহের মনোরম দৃশ্য অবলোকন করতে, আবার কেউ মোগল আমলের ঐতিহাসিক স্থাপত্যশৈলী চর্চা করতে।
ঐতিহ্য, ধর্ম আর প্রকৃতির মেলবন্ধন
সিলেট জেলার ঐতিহ্য শাহি ঈদগাহ যেমন ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যের প্রতীক, তেমনি নন্দিত রূপ, মনোরম পরিবেশ এবং নৈসর্গিক সৌন্দর্যেরও এক অনুপম নিদর্শন। চারপাশে ঘেরা নানা প্রজাতির বৃক্ষ কিংবা সবুজের আবেশে যখন দর্শকের দৃষ্টি পড়ে, তখন চোখ যেন মুগ্ধতায় থমকে যায়, হৃদয় পুলকিত হয়। মোগল আমলে নির্মিত শাহি ঈদগাহ শুধু একটি ঈদের মাঠ নয়; এটি ইতিহাসের এক জীবন্ত দলিল, মোগল স্থাপত্যের এক মহৎ নিদর্শন এবং সিলেটের আত্মার প্রতীক।
লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক

বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত চা-বাগান, টিলা, উঁচু পাহাড় আর আধ্যাত্মিকতার শহর সিলেট। এই শহরের বুকে ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ছোঁয়ায় নির্মিত এক অনন্য স্থাপনা শাহি ঈদগাহ। তিন শতাধিক বছর ধরে দাঁড়িয়ে থাকা এই ঈদগাহ শুধু নামাজের স্থান নয়; এটি এক জীবন্ত ইতিহাস, স্থাপত্যকলার নন্দিত রূপ ও আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যের দীপ্ত প্রতীক।
স্থপতি ও স্থাপত্যের ধরন
সপ্তদশ শতকের গোড়ার দিকে মোগল সম্রাট আওরঙ্গজেবের আমলে, সিলেটের তৎকালীন ফৌজদার মোহাম্মদ ফরহাদ খাঁর তত্ত্বাবধানে গড়ে ওঠে এই ঈদগাহ। টিলার বুক চিরে, দৃষ্টিনন্দন গম্বুজ আর রাজকীয় শৈলীতে নির্মিত এই স্থাপনা এক মহান উদ্যোগ; যার প্রতিটি ইট, প্রতিটি খোদাই যেন মোগল স্থাপত্যের অনন্য ছাপ বহন করে।
ঈদগাহের মূল অংশে উঠতে হলে পাড়ি দিতে হয় ২২টি অলংকৃত সিঁড়ি। সিঁড়ি মাড়িয়ে ওপরে উঠলেই চোখে পড়ে ১৫টি গম্বুজে সজ্জিত বিশাল প্রাঙ্গণ, যেখানে প্রতি ঈদেই জমায়েত হন লাখের বেশি মুসল্লি। ঈদগাহের সম্মুখদিকে রয়েছে কারুকার্যময় ৮টি গম্বুজ। চারদিক থেকে ঘিরে থাকা সীমানাপ্রাচীরে আছে ছোট-বড় ১০টি ফটক। ঈদগাহের সামনের দিকে রয়েছে প্রধান তিনটি ফটক, যেগুলো আকারে তুলনামূলক বৃহৎ ও বিস্তৃত। চারপাশে সবুজ বৃক্ষের ছায়া, বিস্তৃত ময়দান আর অজুর জন্য পাকাঘাট ঘেরা পুকুর—সব মিলিয়ে এই ঈদগাহ যেন তৈরি করছে এক প্রশান্তিময় পরিবেশ।
বিপ্লবের সূতিকাগার
শাহি ঈদগাহ শুধু ইবাদতের স্থান হিসেবে নয়; এটি একসময় ছিল সংগ্রামের মঞ্চও। ১৭৭২ সালে এখানেই ব্রিটিশবিরোধী প্রথম আন্দোলনের সূচনা করেন সৈয়দ হাদী ও মাহদী। তাঁদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে এই ময়দান পরিণত হয় স্বাধীনতার প্রতীকস্থলে। পরে এই ঈদগাহ হয়ে ওঠে উপমহাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের অন্যতম সাক্ষী। মহাত্মা গান্ধী, কায়েদে আযম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক, মোহাম্মদ আলী জওহর, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী—সবাই কোনো না কোনো সময় এই ঈদগাহ প্রাঙ্গণে বক্তব্য দিয়েছেন। তাই এই ঈদগাহ কালক্রমে হয়ে উঠেছে প্রেরণার স্থান; যেখানে ধর্ম ও রাজনীতি, ইতিহাস ও অনুভূতি মিলে হয়েছে একাকার।
নবরূপে শাহি ঈদগাহ
সময় বদলেছে। শাহি ঈদগাহও সেজেছে নবরূপে, যদিও এর মূল রূপ দৃশ্যমান এখনো। স্থানীয়দের মতে, সমাজসেবক জহির উদ্দিন তারু মিয়া ২০০১ সালে নিজ উদ্যোগে তিনটি মূল গেটের সংস্কার করেন। উদ্বোধন করেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। পরে ২০০৩ সালে পুকুরের চারপাশে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান ঘাট নির্মাণের কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। অতঃপর তিনিই ২০১০ সালে বিদ্যুতায়ন ও ফুটপাত নির্মাণের কাজে তদারকি করেন।
কালের প্রবাহে সিলেট সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে ঈদগাহের চারপাশে স্থাপিত হয় কারুকার্যময় প্রাচীর, পরিচ্ছন্ন সড়ক এবং বৃক্ষবেষ্টিত পরিবেশ—সব মিলিয়ে এটি এখন সিলেটের ঐতিহ্যপূর্ণ দর্শনীয় স্থান। এখানে প্রতিদিনই দেখা মেলে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত পর্যটকদের। কেউ আসেন ঈদগাহের মনোরম দৃশ্য অবলোকন করতে, আবার কেউ মোগল আমলের ঐতিহাসিক স্থাপত্যশৈলী চর্চা করতে।
ঐতিহ্য, ধর্ম আর প্রকৃতির মেলবন্ধন
সিলেট জেলার ঐতিহ্য শাহি ঈদগাহ যেমন ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যের প্রতীক, তেমনি নন্দিত রূপ, মনোরম পরিবেশ এবং নৈসর্গিক সৌন্দর্যেরও এক অনুপম নিদর্শন। চারপাশে ঘেরা নানা প্রজাতির বৃক্ষ কিংবা সবুজের আবেশে যখন দর্শকের দৃষ্টি পড়ে, তখন চোখ যেন মুগ্ধতায় থমকে যায়, হৃদয় পুলকিত হয়। মোগল আমলে নির্মিত শাহি ঈদগাহ শুধু একটি ঈদের মাঠ নয়; এটি ইতিহাসের এক জীবন্ত দলিল, মোগল স্থাপত্যের এক মহৎ নিদর্শন এবং সিলেটের আত্মার প্রতীক।
লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক

নামাজ মুসলমানের জীবনের প্রাণ, ইমানের প্রমাণ। দিনে পাঁচবার আল্লাহর সামনে সিজদায় লুটিয়ে পড়া আত্মশুদ্ধির এক মহা সুযোগ। নামাজের পরপরই অনেকেই দ্রুত নিজ কাজে বেরিয়ে পড়েন। অথচ রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর জীবনে আমাদের শিখিয়েছেন, ফরজ নামাজ শেষে কিছু ছোট ছোট আমল আছে, যেগুলোর মাধ্যমে ইমান আরও পরিশুদ্ধ হয়....
২ ঘণ্টা আগে
ইসলাম সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণের ধর্ম। এর মূল লক্ষ্য হলো মানবসমাজ থেকে সকল প্রকার ফেতনা-ফ্যাসাদ, জুলুম, অনাচার ও বিশৃঙ্খলা, নৈরাজ্য ও অরাজকতা দূর করে একটি ন্যায় ও ইনসাফপূর্ণ সমাজ উপহার দেওয়া।
২ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১০ ঘণ্টা আগে
হজের মতো এটিও একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। জীবনে একবার ওমরাহ আদায় করা সুন্নতে মুয়াক্কাদা (জরুরি সুন্নাহ)। হজের নির্দিষ্ট সময় (৮ জিলহজ থেকে ১২ জিলহজ) ব্যতীত বছরের যেকোনো সময়ই ওমরাহ পালন করা যায়। ওমরাহ করার জন্য কোনো নির্দিষ্ট সময় নেই। একই সফরে একাধিক ওমরাহ করার অনুমতি আছে।
১২ ঘণ্টা আগেআব্দুল্লাহ আফফান

নামাজ মুসলমানের জীবনের প্রাণ, ইমানের প্রমাণ। দিনে পাঁচবার আল্লাহর সামনে সিজদায় লুটিয়ে পড়া আত্মশুদ্ধির এক মহা সুযোগ। নামাজের পরপরই অনেকেই দ্রুত নিজ কাজে বেরিয়ে পড়েন। অথচ রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর জীবনে আমাদের শিখিয়েছেন, ফরজ নামাজ শেষে কিছু ছোট ছোট আমল আছে, যেগুলোর মাধ্যমে ইমান আরও পরিশুদ্ধ হয়, হৃদয় প্রশান্ত হয় এবং আল্লাহর নৈকট্য পাওয়া যায়। এসব আমল সংক্ষিপ্ত হলেও বরকত অসীম।
ফরজ নামাজের পর আমল
» এক. রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রতি ফরজ নামাজ শেষে তিনবার বলতেন, ‘আস্তাগফিরুল্লাহ’। অর্থাৎ ‘হে আল্লাহ, আমি তোমার নিকট ক্ষমা চাই।’ এরপর তিনি পড়তেন, ‘আল্লাহুম্মা আনতাস সালাম, ওয়া মিনকাস সালাম, তাবারাকতা ইয়া জাল-জালালি ওয়াল ইকরাম।’ অর্থ, ‘হে আল্লাহ, আপনি শান্তির উৎস এবং আপনার থেকেই শান্তি আসে। আপনি মহিমান্বিত ও বরকতময়।’ এই আমলের বর্ণনা সহিহ মুসলিমের ১২১২ নম্বর হাদিসে পাওয়া যায়।
» দুই. রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রতি ফরজ নামাজের পর ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ, ৩৩ বার আল্লাহু আকবার পাঠ করবে এবং শেষে বলবে—‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু, ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির’, তার গুনাহ সাগরের ফেনারাশির মতো হলেও ক্ষমা করে দেওয়া হবে। (সহিহ মুসলিম: ৪৯০৬)
» তিন. রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি প্রতি ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পাঠ করবে, তার জান্নাতে প্রবেশে কেবল মৃত্যু ছাড়া আর কোনো বাধা থাকবে না।’ (সুনানে নাসায়ি: ৯৯২৮)
ফজর ও মাগরিবের পর দোয়া
রাসুলুল্লাহ (সা.) শিক্ষা দিয়েছেন—ফজর ও মাগরিবের নামাজের পর সাতবার পড়তে হবে, ‘আল্লাহুম্মা আজিরনি মিনান্নার’। অর্থাৎ ‘হে আল্লাহ, আমাকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করুন।’ (মিশকাতুল মাসাবিহ: ২৩৯৬)। যদিও হাদিসটি সনদের দিক থেকে দুর্বল, তবু আমলের জন্য গ্রহণযোগ্য বলে মত দিয়েছেন ইসলামবিষয়ক গবেষকগণ।
কোরআন তিলাওয়াতের আমল
নামাজের পর পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত অন্যতম শ্রেষ্ঠ জিকির। সাহাবায়ে কেরাম বিভিন্ন নামাজের পর বিভিন্ন সুরা পাঠ করতেন—ফজরের পর সুরা ইয়াসিন, জোহরের পর সুরা ফাতহ, আসরের পর সুরা নাবা, মাগরিবের পর সুরা ওয়াকিয়া, এশার পর সুরা মুলক।
রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজেও প্রতি রাতে সুরা সাজদাহ ও সুরা মুলক পাঠ না করে ঘুমাতেন না। (জামে তিরমিজি: ২৮৯২)
ফরজ নামাজ শেষে এই সংক্ষিপ্ত আমলগুলো আমাদের আত্মাকে করে তুলবে প্রশান্ত, মনকে দেবে শান্তি, আর জীবনকে করে দেবে বরকতময়। নামাজ শেষ হওয়া মানেই ইবাদতের শেষ নয়; বরং সেটাই আল্লাহর স্মরণে নতুন করে ডুবে যাওয়ার সময়। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পর কিছুক্ষণ যদি আমরা এসব দোয়া ও তিলাওয়াতে ব্যয় করি, তাহলে আমাদের প্রতিটি দিন হবে আলোকিত, আর হৃদয় ভরে উঠবে ইমানের মাধুর্যে।

নামাজ মুসলমানের জীবনের প্রাণ, ইমানের প্রমাণ। দিনে পাঁচবার আল্লাহর সামনে সিজদায় লুটিয়ে পড়া আত্মশুদ্ধির এক মহা সুযোগ। নামাজের পরপরই অনেকেই দ্রুত নিজ কাজে বেরিয়ে পড়েন। অথচ রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর জীবনে আমাদের শিখিয়েছেন, ফরজ নামাজ শেষে কিছু ছোট ছোট আমল আছে, যেগুলোর মাধ্যমে ইমান আরও পরিশুদ্ধ হয়, হৃদয় প্রশান্ত হয় এবং আল্লাহর নৈকট্য পাওয়া যায়। এসব আমল সংক্ষিপ্ত হলেও বরকত অসীম।
ফরজ নামাজের পর আমল
» এক. রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রতি ফরজ নামাজ শেষে তিনবার বলতেন, ‘আস্তাগফিরুল্লাহ’। অর্থাৎ ‘হে আল্লাহ, আমি তোমার নিকট ক্ষমা চাই।’ এরপর তিনি পড়তেন, ‘আল্লাহুম্মা আনতাস সালাম, ওয়া মিনকাস সালাম, তাবারাকতা ইয়া জাল-জালালি ওয়াল ইকরাম।’ অর্থ, ‘হে আল্লাহ, আপনি শান্তির উৎস এবং আপনার থেকেই শান্তি আসে। আপনি মহিমান্বিত ও বরকতময়।’ এই আমলের বর্ণনা সহিহ মুসলিমের ১২১২ নম্বর হাদিসে পাওয়া যায়।
» দুই. রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রতি ফরজ নামাজের পর ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ, ৩৩ বার আল্লাহু আকবার পাঠ করবে এবং শেষে বলবে—‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু, ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির’, তার গুনাহ সাগরের ফেনারাশির মতো হলেও ক্ষমা করে দেওয়া হবে। (সহিহ মুসলিম: ৪৯০৬)
» তিন. রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি প্রতি ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পাঠ করবে, তার জান্নাতে প্রবেশে কেবল মৃত্যু ছাড়া আর কোনো বাধা থাকবে না।’ (সুনানে নাসায়ি: ৯৯২৮)
ফজর ও মাগরিবের পর দোয়া
রাসুলুল্লাহ (সা.) শিক্ষা দিয়েছেন—ফজর ও মাগরিবের নামাজের পর সাতবার পড়তে হবে, ‘আল্লাহুম্মা আজিরনি মিনান্নার’। অর্থাৎ ‘হে আল্লাহ, আমাকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করুন।’ (মিশকাতুল মাসাবিহ: ২৩৯৬)। যদিও হাদিসটি সনদের দিক থেকে দুর্বল, তবু আমলের জন্য গ্রহণযোগ্য বলে মত দিয়েছেন ইসলামবিষয়ক গবেষকগণ।
কোরআন তিলাওয়াতের আমল
নামাজের পর পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত অন্যতম শ্রেষ্ঠ জিকির। সাহাবায়ে কেরাম বিভিন্ন নামাজের পর বিভিন্ন সুরা পাঠ করতেন—ফজরের পর সুরা ইয়াসিন, জোহরের পর সুরা ফাতহ, আসরের পর সুরা নাবা, মাগরিবের পর সুরা ওয়াকিয়া, এশার পর সুরা মুলক।
রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজেও প্রতি রাতে সুরা সাজদাহ ও সুরা মুলক পাঠ না করে ঘুমাতেন না। (জামে তিরমিজি: ২৮৯২)
ফরজ নামাজ শেষে এই সংক্ষিপ্ত আমলগুলো আমাদের আত্মাকে করে তুলবে প্রশান্ত, মনকে দেবে শান্তি, আর জীবনকে করে দেবে বরকতময়। নামাজ শেষ হওয়া মানেই ইবাদতের শেষ নয়; বরং সেটাই আল্লাহর স্মরণে নতুন করে ডুবে যাওয়ার সময়। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পর কিছুক্ষণ যদি আমরা এসব দোয়া ও তিলাওয়াতে ব্যয় করি, তাহলে আমাদের প্রতিটি দিন হবে আলোকিত, আর হৃদয় ভরে উঠবে ইমানের মাধুর্যে।

বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত চা-বাগান, টিলা, উঁচু পাহাড় আর আধ্যাত্মিকতার শহর সিলেট। এই শহরের বুকে ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ছোঁয়ায় নির্মিত এক অনন্য স্থাপনা শাহি ঈদগাহ। তিন শতাধিক বছর ধরে দাঁড়িয়ে থাকা এই ঈদগাহ শুধু নামাজের স্থান নয়; এটি এক জীবন্ত ইতিহাস, স্থাপত্যকলার নন্দিত রূপ ও আধ্যাত্মিক ঐতিহ্য
২ ঘণ্টা আগে
ইসলাম সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণের ধর্ম। এর মূল লক্ষ্য হলো মানবসমাজ থেকে সকল প্রকার ফেতনা-ফ্যাসাদ, জুলুম, অনাচার ও বিশৃঙ্খলা, নৈরাজ্য ও অরাজকতা দূর করে একটি ন্যায় ও ইনসাফপূর্ণ সমাজ উপহার দেওয়া।
২ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১০ ঘণ্টা আগে
হজের মতো এটিও একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। জীবনে একবার ওমরাহ আদায় করা সুন্নতে মুয়াক্কাদা (জরুরি সুন্নাহ)। হজের নির্দিষ্ট সময় (৮ জিলহজ থেকে ১২ জিলহজ) ব্যতীত বছরের যেকোনো সময়ই ওমরাহ পালন করা যায়। ওমরাহ করার জন্য কোনো নির্দিষ্ট সময় নেই। একই সফরে একাধিক ওমরাহ করার অনুমতি আছে।
১২ ঘণ্টা আগেতাসনিফ আবীদ

ইসলাম সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণের ধর্ম। এর মূল লক্ষ্য হলো মানবসমাজ থেকে সকল প্রকার ফেতনা-ফ্যাসাদ, জুলুম, অনাচার ও বিশৃঙ্খলা, নৈরাজ্য ও অরাজকতা দূর করে একটি ন্যায় ও ইনসাফপূর্ণ সমাজ উপহার দেওয়া। যুগে যুগে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বহু নবী-রাসুলকে এই শান্তি ও ন্যায়ের বার্তা দিয়ে প্রেরণ করেছেন, যেন তাঁরা অন্ধকারজগতের বাসিন্দাদের আলোর পথে ফিরিয়ে এনে দিশাহীনদের সঠিক পথ দেখাতে পারেন। কোরআন ও সুন্নাহর নির্দেশনা অনুযায়ী, মানুষের জীবন, সম্পদ ও সম্মান রক্ষা করা ইসলামের মৌলিক কর্তব্য। এ জন্য ইসলামে নৈরাজ্য, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ এবং সমাজের শৃঙ্খলা নষ্টকারী সব ধরনের কার্যকলাপকে ঘৃণিত পাপ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।
হত্যা ও রক্তপাতের বিরুদ্ধে ইসলামের কঠোর হুঁশিয়ারি
নৈরাজ্য ও অরাজকতার সবচেয়ে ভয়াবহ রূপ হলো অন্যায়ভাবে মানুষের রক্তপাত ঘটানো বা হত্যা করা। ইসলামে এটিকে জঘন্যতম অপরাধ হিসেবে দেখা হয়েছে। অন্যায়ভাবে বিচারবহির্ভূত মানুষ হত্যা, পৃথিবীতে রক্তপাত, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। মহান আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন—যে অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করল, সে যেন দুনিয়ার সব মানুষকেই হত্যা করল। আর যে কারও প্রাণ রক্ষা করল, সে যেন সব মানুষের প্রাণ রক্ষা করল। (সুরা মায়েদা: ৩২)। অন্যত্র হত্যার ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করে বলা হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি কোনো মুমিনকে ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করবে, তার শাস্তি জাহান্নাম। সেখানে সে চিরকাল থাকবে। আল্লাহ তার প্রতি ক্ষুব্ধ হয়েছেন, তাকে অভিসম্পাত করেছেন এবং তার জন্য প্রস্তুত রেখেছেন ভয়ংকর শাস্তি।’ (সুরা নিসা: ৯৩)
এমনকি, কিয়ামতের দিবসে সর্বপ্রথম রক্তপাত তথা হত্যার বিচার হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) মুসলিম রাষ্ট্রের অমুসলিম নাগরিক (জিম্মি) হত্যা সম্পর্কেও কঠোরভাবে সতর্ক করে বলেছেন, হত্যাকারী জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না। এই নির্দেশনাসমূহ প্রমাণ করে, নৈরাজ্য ও সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে জড়িতরা পথভ্রষ্ট, তাদের কোনো ধর্ম নেই।
ফিতনা (বিশৃঙ্খলা) সৃষ্টি: হত্যা অপেক্ষাও মারাত্মক অপরাধ
ইসলামে অরাজকতা, অস্থিরতা, হানাহানি, মতবিরোধ এবং গুজব ছড়িয়ে সমাজে ফিতনা বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করাকে অত্যন্ত গুরুতর পাপ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। কোরআনে পরিষ্কারভাবে বলা হয়েছে, ‘ফেতনা হত্যা অপেক্ষা গুরুতর পাপ।’ (সুরা বাকারা: ১৯১)। এ ছাড়া আল্লাহ তাআলা বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের অপছন্দ করেন—‘পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করতে প্রয়াসী হইও না। নিশ্চয়ই আল্লাহ বিপর্যয় সৃষ্টিকারীকে পছন্দ করেন না।’ (সুরা কাসাস: ৭৭)
ইসলাম এসব কর্ম পরিহার করে সর্বদা ভারসাম্যপূর্ণ মধ্যপন্থা অবলম্বনের নির্দেশ দেয়। নবীজি (সা.) উম্মতকে শেষ জামানায় আগত ফিতনা থেকে বাঁচতে বারবার সতর্ক করেছেন এবং ফিতনার সময় নেক আমলের দিকে অগ্রসর হতে ও মুসলিম জামাত আঁকড়ে ধরে থাকার গুরুত্ব দিয়েছেন।
অর্থনৈতিক নৈরাজ্য ও মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য
শান্তি ও শৃঙ্খলার প্রধান শত্রু কেবল বোমাবাজি বা সন্ত্রাস নয়, অর্থনৈতিক নৈরাজ্যও সমাজকে গ্রাস করে। বাজারে পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে না থাকা, নিম্ন ও মধ্যবিত্তের ক্রয়ক্ষমতা নাগালের বাইরে চলে যাওয়া এবং অসাধু ব্যবসায়ীদের মুনাফালিপ্সা এর বড় প্রমাণ। সরবরাহের ঘাটতি না থাকা সত্ত্বেও কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দালাল বা মধ্যস্বত্বভোগীরা পণ্যের মূল্য বাড়িয়ে দিচ্ছে, যার ফলে কৃষক ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এবং ভোক্তাকে উচ্চমূল্য দিতে হচ্ছে। এটিও একধরনের সামাজিক নৈরাজ্য। রাসুলুল্লাহ (সা.) এ ধরনের অর্থনৈতিক অরাজকতা সৃষ্টিকারীদের বিষয়ে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন—‘যে ব্যক্তি মূল্যবৃদ্ধির অসদুদ্দেশে মুসলমানদের লেনদেনে হস্তক্ষেপ করে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা তাকে আগুনের হাঁড়িতে বসিয়ে শাস্তি দেবেন।’ (তাবরানি: ৮ / ২১০)
নৈরাজ্য রোধে কার্যকর হাতিয়ার: খোদাভীতি ও জবাবদিহির মানসিকতা
নৈরাজ্য ও অরাজকতা স্থায়ীভাবে বন্ধ করার প্রধান উপায় হলো মানুষের মধ্যে খোদাভীতি (তাকওয়া) এবং পরকালীন জবাবদিহির মানসিকতা সৃষ্টি করা। যাদের অন্তরে আল্লাহভীতি এবং আখিরাতে হিসাব দেওয়ার পরোয়া নেই, তাদের মধ্যেই অরাজকতার স্বভাব সহজে প্রবেশ করে। জনসাধারণকে অবহিত করতে হবে যে দুনিয়ায় মানুষের চোখকে ফাঁকি দেওয়া গেলেও আখিরাতে আল্লাহর দরবারে সব কর্মকাণ্ডের পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাব দিতে হবে। এমনকি কিয়ামতের দিন হাত-পা, অঙ্গপ্রত্যঙ্গও কৃতকর্মের সাক্ষ্য দেবে। আল্লাহ তাআলার ঘোষণা—‘আজ আমি তাদের মুখে মোহর এঁটে দেব, তাদের হাত আমার সঙ্গে কথা বলবে এবং তাদের পা তাদের কৃতকর্মের সাক্ষ্য দেবে।’ (সুরা ইয়াসিন: ৬৫)
যাদের মধ্যে তাকওয়া থাকবে, তারা কখনো অন্যায় ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে না। আল্লাহ ওয়াদা করেছেন, যখন কোনো এলাকার মানুষ ইমান আনবে এবং তাকওয়ার জীবন অবলম্বন করবে, তখন তাদের ওপর আসমান-জমিনের যাবতীয় বরকতের দুয়ার খুলে দেওয়া হবে।
ইসলামি শরিয়তের দুই মূল উৎস কোরআন ও সুন্নাহর বিধানকে নিজেদের জীবনের জন্য অপরিহার্য করে তোলাই হলো সব ধরনের নৈরাজ্য ও অরাজকতা থেকে বাঁচার কার্যকর উপায়। রাষ্ট্রীয় আইন যেমন অপরাধ দমনে গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি খোদাভীতি হলো অপরাধ দমনের অভ্যন্তরীণ ঢাল। আমাদের কর্তব্য হলো সত্যিকারের ইসলামি জীবনচর্চার মাধ্যমে সমাজকে ফিতনা ও অরাজকতা থেকে রক্ষা করে পরিবার ও রাষ্ট্রের সর্বত্র শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখা।

ইসলাম সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণের ধর্ম। এর মূল লক্ষ্য হলো মানবসমাজ থেকে সকল প্রকার ফেতনা-ফ্যাসাদ, জুলুম, অনাচার ও বিশৃঙ্খলা, নৈরাজ্য ও অরাজকতা দূর করে একটি ন্যায় ও ইনসাফপূর্ণ সমাজ উপহার দেওয়া। যুগে যুগে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বহু নবী-রাসুলকে এই শান্তি ও ন্যায়ের বার্তা দিয়ে প্রেরণ করেছেন, যেন তাঁরা অন্ধকারজগতের বাসিন্দাদের আলোর পথে ফিরিয়ে এনে দিশাহীনদের সঠিক পথ দেখাতে পারেন। কোরআন ও সুন্নাহর নির্দেশনা অনুযায়ী, মানুষের জীবন, সম্পদ ও সম্মান রক্ষা করা ইসলামের মৌলিক কর্তব্য। এ জন্য ইসলামে নৈরাজ্য, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ এবং সমাজের শৃঙ্খলা নষ্টকারী সব ধরনের কার্যকলাপকে ঘৃণিত পাপ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।
হত্যা ও রক্তপাতের বিরুদ্ধে ইসলামের কঠোর হুঁশিয়ারি
নৈরাজ্য ও অরাজকতার সবচেয়ে ভয়াবহ রূপ হলো অন্যায়ভাবে মানুষের রক্তপাত ঘটানো বা হত্যা করা। ইসলামে এটিকে জঘন্যতম অপরাধ হিসেবে দেখা হয়েছে। অন্যায়ভাবে বিচারবহির্ভূত মানুষ হত্যা, পৃথিবীতে রক্তপাত, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। মহান আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন—যে অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করল, সে যেন দুনিয়ার সব মানুষকেই হত্যা করল। আর যে কারও প্রাণ রক্ষা করল, সে যেন সব মানুষের প্রাণ রক্ষা করল। (সুরা মায়েদা: ৩২)। অন্যত্র হত্যার ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করে বলা হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি কোনো মুমিনকে ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করবে, তার শাস্তি জাহান্নাম। সেখানে সে চিরকাল থাকবে। আল্লাহ তার প্রতি ক্ষুব্ধ হয়েছেন, তাকে অভিসম্পাত করেছেন এবং তার জন্য প্রস্তুত রেখেছেন ভয়ংকর শাস্তি।’ (সুরা নিসা: ৯৩)
এমনকি, কিয়ামতের দিবসে সর্বপ্রথম রক্তপাত তথা হত্যার বিচার হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) মুসলিম রাষ্ট্রের অমুসলিম নাগরিক (জিম্মি) হত্যা সম্পর্কেও কঠোরভাবে সতর্ক করে বলেছেন, হত্যাকারী জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না। এই নির্দেশনাসমূহ প্রমাণ করে, নৈরাজ্য ও সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে জড়িতরা পথভ্রষ্ট, তাদের কোনো ধর্ম নেই।
ফিতনা (বিশৃঙ্খলা) সৃষ্টি: হত্যা অপেক্ষাও মারাত্মক অপরাধ
ইসলামে অরাজকতা, অস্থিরতা, হানাহানি, মতবিরোধ এবং গুজব ছড়িয়ে সমাজে ফিতনা বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করাকে অত্যন্ত গুরুতর পাপ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। কোরআনে পরিষ্কারভাবে বলা হয়েছে, ‘ফেতনা হত্যা অপেক্ষা গুরুতর পাপ।’ (সুরা বাকারা: ১৯১)। এ ছাড়া আল্লাহ তাআলা বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের অপছন্দ করেন—‘পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করতে প্রয়াসী হইও না। নিশ্চয়ই আল্লাহ বিপর্যয় সৃষ্টিকারীকে পছন্দ করেন না।’ (সুরা কাসাস: ৭৭)
ইসলাম এসব কর্ম পরিহার করে সর্বদা ভারসাম্যপূর্ণ মধ্যপন্থা অবলম্বনের নির্দেশ দেয়। নবীজি (সা.) উম্মতকে শেষ জামানায় আগত ফিতনা থেকে বাঁচতে বারবার সতর্ক করেছেন এবং ফিতনার সময় নেক আমলের দিকে অগ্রসর হতে ও মুসলিম জামাত আঁকড়ে ধরে থাকার গুরুত্ব দিয়েছেন।
অর্থনৈতিক নৈরাজ্য ও মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য
শান্তি ও শৃঙ্খলার প্রধান শত্রু কেবল বোমাবাজি বা সন্ত্রাস নয়, অর্থনৈতিক নৈরাজ্যও সমাজকে গ্রাস করে। বাজারে পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে না থাকা, নিম্ন ও মধ্যবিত্তের ক্রয়ক্ষমতা নাগালের বাইরে চলে যাওয়া এবং অসাধু ব্যবসায়ীদের মুনাফালিপ্সা এর বড় প্রমাণ। সরবরাহের ঘাটতি না থাকা সত্ত্বেও কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দালাল বা মধ্যস্বত্বভোগীরা পণ্যের মূল্য বাড়িয়ে দিচ্ছে, যার ফলে কৃষক ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এবং ভোক্তাকে উচ্চমূল্য দিতে হচ্ছে। এটিও একধরনের সামাজিক নৈরাজ্য। রাসুলুল্লাহ (সা.) এ ধরনের অর্থনৈতিক অরাজকতা সৃষ্টিকারীদের বিষয়ে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন—‘যে ব্যক্তি মূল্যবৃদ্ধির অসদুদ্দেশে মুসলমানদের লেনদেনে হস্তক্ষেপ করে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা তাকে আগুনের হাঁড়িতে বসিয়ে শাস্তি দেবেন।’ (তাবরানি: ৮ / ২১০)
নৈরাজ্য রোধে কার্যকর হাতিয়ার: খোদাভীতি ও জবাবদিহির মানসিকতা
নৈরাজ্য ও অরাজকতা স্থায়ীভাবে বন্ধ করার প্রধান উপায় হলো মানুষের মধ্যে খোদাভীতি (তাকওয়া) এবং পরকালীন জবাবদিহির মানসিকতা সৃষ্টি করা। যাদের অন্তরে আল্লাহভীতি এবং আখিরাতে হিসাব দেওয়ার পরোয়া নেই, তাদের মধ্যেই অরাজকতার স্বভাব সহজে প্রবেশ করে। জনসাধারণকে অবহিত করতে হবে যে দুনিয়ায় মানুষের চোখকে ফাঁকি দেওয়া গেলেও আখিরাতে আল্লাহর দরবারে সব কর্মকাণ্ডের পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাব দিতে হবে। এমনকি কিয়ামতের দিন হাত-পা, অঙ্গপ্রত্যঙ্গও কৃতকর্মের সাক্ষ্য দেবে। আল্লাহ তাআলার ঘোষণা—‘আজ আমি তাদের মুখে মোহর এঁটে দেব, তাদের হাত আমার সঙ্গে কথা বলবে এবং তাদের পা তাদের কৃতকর্মের সাক্ষ্য দেবে।’ (সুরা ইয়াসিন: ৬৫)
যাদের মধ্যে তাকওয়া থাকবে, তারা কখনো অন্যায় ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে না। আল্লাহ ওয়াদা করেছেন, যখন কোনো এলাকার মানুষ ইমান আনবে এবং তাকওয়ার জীবন অবলম্বন করবে, তখন তাদের ওপর আসমান-জমিনের যাবতীয় বরকতের দুয়ার খুলে দেওয়া হবে।
ইসলামি শরিয়তের দুই মূল উৎস কোরআন ও সুন্নাহর বিধানকে নিজেদের জীবনের জন্য অপরিহার্য করে তোলাই হলো সব ধরনের নৈরাজ্য ও অরাজকতা থেকে বাঁচার কার্যকর উপায়। রাষ্ট্রীয় আইন যেমন অপরাধ দমনে গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি খোদাভীতি হলো অপরাধ দমনের অভ্যন্তরীণ ঢাল। আমাদের কর্তব্য হলো সত্যিকারের ইসলামি জীবনচর্চার মাধ্যমে সমাজকে ফিতনা ও অরাজকতা থেকে রক্ষা করে পরিবার ও রাষ্ট্রের সর্বত্র শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখা।

বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত চা-বাগান, টিলা, উঁচু পাহাড় আর আধ্যাত্মিকতার শহর সিলেট। এই শহরের বুকে ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ছোঁয়ায় নির্মিত এক অনন্য স্থাপনা শাহি ঈদগাহ। তিন শতাধিক বছর ধরে দাঁড়িয়ে থাকা এই ঈদগাহ শুধু নামাজের স্থান নয়; এটি এক জীবন্ত ইতিহাস, স্থাপত্যকলার নন্দিত রূপ ও আধ্যাত্মিক ঐতিহ্য
২ ঘণ্টা আগে
নামাজ মুসলমানের জীবনের প্রাণ, ইমানের প্রমাণ। দিনে পাঁচবার আল্লাহর সামনে সিজদায় লুটিয়ে পড়া আত্মশুদ্ধির এক মহা সুযোগ। নামাজের পরপরই অনেকেই দ্রুত নিজ কাজে বেরিয়ে পড়েন। অথচ রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর জীবনে আমাদের শিখিয়েছেন, ফরজ নামাজ শেষে কিছু ছোট ছোট আমল আছে, যেগুলোর মাধ্যমে ইমান আরও পরিশুদ্ধ হয়....
২ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১০ ঘণ্টা আগে
হজের মতো এটিও একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। জীবনে একবার ওমরাহ আদায় করা সুন্নতে মুয়াক্কাদা (জরুরি সুন্নাহ)। হজের নির্দিষ্ট সময় (৮ জিলহজ থেকে ১২ জিলহজ) ব্যতীত বছরের যেকোনো সময়ই ওমরাহ পালন করা যায়। ওমরাহ করার জন্য কোনো নির্দিষ্ট সময় নেই। একই সফরে একাধিক ওমরাহ করার অনুমতি আছে।
১২ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ২৯ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৪: ৫৩ মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৫৪ মিনিট | ০৬: ১১ মিনিট |
| জুমা | ১১: ৪৪ মিনিট | ০৩: ৩৬ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৩৭ মিনিট | ০৫: ১২ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ১৪ মিনিট | ০৬: ৩০ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৩১ মিনিট | ০৪: ৫৩ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ২৯ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৪: ৫৩ মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৫৪ মিনিট | ০৬: ১১ মিনিট |
| জুমা | ১১: ৪৪ মিনিট | ০৩: ৩৬ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৩৭ মিনিট | ০৫: ১২ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ১৪ মিনিট | ০৬: ৩০ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৩১ মিনিট | ০৪: ৫৩ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত চা-বাগান, টিলা, উঁচু পাহাড় আর আধ্যাত্মিকতার শহর সিলেট। এই শহরের বুকে ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ছোঁয়ায় নির্মিত এক অনন্য স্থাপনা শাহি ঈদগাহ। তিন শতাধিক বছর ধরে দাঁড়িয়ে থাকা এই ঈদগাহ শুধু নামাজের স্থান নয়; এটি এক জীবন্ত ইতিহাস, স্থাপত্যকলার নন্দিত রূপ ও আধ্যাত্মিক ঐতিহ্য
২ ঘণ্টা আগে
নামাজ মুসলমানের জীবনের প্রাণ, ইমানের প্রমাণ। দিনে পাঁচবার আল্লাহর সামনে সিজদায় লুটিয়ে পড়া আত্মশুদ্ধির এক মহা সুযোগ। নামাজের পরপরই অনেকেই দ্রুত নিজ কাজে বেরিয়ে পড়েন। অথচ রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর জীবনে আমাদের শিখিয়েছেন, ফরজ নামাজ শেষে কিছু ছোট ছোট আমল আছে, যেগুলোর মাধ্যমে ইমান আরও পরিশুদ্ধ হয়....
২ ঘণ্টা আগে
ইসলাম সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণের ধর্ম। এর মূল লক্ষ্য হলো মানবসমাজ থেকে সকল প্রকার ফেতনা-ফ্যাসাদ, জুলুম, অনাচার ও বিশৃঙ্খলা, নৈরাজ্য ও অরাজকতা দূর করে একটি ন্যায় ও ইনসাফপূর্ণ সমাজ উপহার দেওয়া।
২ ঘণ্টা আগে
হজের মতো এটিও একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। জীবনে একবার ওমরাহ আদায় করা সুন্নতে মুয়াক্কাদা (জরুরি সুন্নাহ)। হজের নির্দিষ্ট সময় (৮ জিলহজ থেকে ১২ জিলহজ) ব্যতীত বছরের যেকোনো সময়ই ওমরাহ পালন করা যায়। ওমরাহ করার জন্য কোনো নির্দিষ্ট সময় নেই। একই সফরে একাধিক ওমরাহ করার অনুমতি আছে।
১২ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

ওমরাহ শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো ভ্রমণ করা বা জনবহুল স্থানে ভ্রমণ করা। ইসলামি পরিভাষায়, আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে, ইহরাম বাঁধা অবস্থায় কাবা শরিফ তাওয়াফ এবং সাফা-মারওয়া পাহাড়ের মধ্যে সায়ি করাকে ওমরাহ বলে।
ওমরাহ পরিচিতি
নির্দিষ্ট স্থান (মিকাত) থেকে ইহরাম বাঁধার মাধ্যমে ওমরাহ শুরু হয়। এরপর ওমরাহর মধ্যে রয়েছে কাবা ঘরকে সাতবার প্রদক্ষিণ করা, সাফা-মারওয়া পাহাড়ের মধ্যে সাতবার দৌড়ানো বা হাঁটা, তাওয়াফ ও সায়ি শেষে মাথা মুণ্ডন বা চুল ছোট করা।
ওমরাহর গুরুত্ব ও সময়
হজের মতো এটিও একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। জীবনে একবার ওমরাহ আদায় করা সুন্নতে মুয়াক্কাদা (জরুরি সুন্নাহ)। হজের নির্দিষ্ট সময় (৮ জিলহজ থেকে ১২ জিলহজ) ব্যতীত বছরের যেকোনো সময়ই ওমরাহ পালন করা যায়। ওমরাহ করার জন্য কোনো নির্দিষ্ট সময় নেই। একই সফরে একাধিক ওমরাহ করার অনুমতি আছে।
ওমরাহর ফজিলত
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা ধারাবাহিকভাবে একের পর এক হজ ও ওমরাহ করতে থাকো। কেননা, হজ ও ওমরাহ এমনভাবে অভাব মোচন করে এবং গুনাহ দূর করে, যেমনভাবে কামারের হাঁপর লোহা ও সোনা-রুপার মরিচা দূর করে।’ (জামে তিরমিজি: ৮১০)
হজরত জাবের (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘হজ আদায়কারী ব্যক্তি কখনোই একেবারে নিঃস্ব হয় না।’ (তাবারানি ফিল আওসাত: ৫২০৯)
অন্যত্র হজরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘এক ওমরাহর পর আরেকটি ওমরাহ আদায় করা উভয়ের মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহের জন্য কাফফারা।’ (সহিহ মুসলিম: ১৩৪৯)
এ ছাড়া ওমরাহ আদায়ে প্রয়োজনে ১ টাকা খরচ করলে ৭০০ টাকা সদকা করার সওয়াব পাওয়া যায়। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘হজ ও ওমরাহ হলো আল্লাহর রাস্তা। আর আল্লাহর রাস্তায় ১ দিরহাম খরচের সওয়াব ৭০০ গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়।’ (তাবারানি ফিল আওসাত: ৫৬৯০)
আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহর পথের মুজাহিদ এবং হজ-ওমরাহ আদায়কারী আল্লাহর প্রতিনিধি। তাঁরা আল্লাহর ডাকে সাড়া দেন আর আল্লাহও তাঁদের প্রার্থনা কবুল করেন।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ: ২৮৯৩)
আবু হুরাইরা (রা.) মহানবী (সা.) থেকে বর্ণনা করেন, ‘এক ওমরাহ অন্য ওমরাহ পর্যন্ত মধ্যবর্তী সকল কিছুর কাফফারা।’ (সহিহ বুখারি: ১৭২৩)
আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি বায়তুল্লাহর তাওয়াফ করে এবং দুই রাকাত নামাজ আদায় করে, সে একটি গোলাম আজাদ করার সওয়াব পায়।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ: ২৯৫৬)
আম্মাজান হজরত আয়েশা (রা.)-কে রাসুলুল্লাহ (সা.) নসিহত করেন, ‘হে আয়েশা, তুমি ব্যয় করতে সংকোচ কোরো না। কারণ, তোমার ব্যয় অনুপাতে ওমরাহর প্রতিদান দেওয়া হবে।’ (তারগিব: ১৬৮১)
হাজরে আসওয়াদ ইসতেলামের ফজিলত
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘এই পাথর কিয়ামতের দিন এমন অবস্থায় উপস্থিত হবে যে তার দুটি চোখ থাকবে, যা দ্বারা সে দেখবে। জিহ্বা থাকবে যা দ্বারা সে কথা বলবে। সে ওই ব্যক্তির পক্ষে সাক্ষ্য দেবে যে তাকে সঠিক পন্থায় ইসতেলাম করবে।’ (ইবনে মাজাহ: ২৯৪৪)। হাজরে আসওয়াদকে চুমু দেওয়া, স্পর্শ করা বা দূর থেকে চুমুর ইঙ্গিত করাকে বলে ইসতেলাম। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত।
সাফা-মারওয়া সায়ি করার ফজিলত
আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা সাফা-মারওয়া সায়ি করো। কেননা, তা ৭০ জন দাস মুক্ত করার সমতুল্য।’ (সহিহ ইবনে হিব্বান: ১৮৮৭)
হলক বা চুল কাটার ফজিলত
আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘হে আল্লাহ, আপনি হলককারীকে ক্ষমা করুন।’ সাহাবিরা জিজ্ঞেস করলেন, ‘ইয়া রাসুলুল্লাহ, যারা চুল কাটবে তাদের?’ তিনি বললেন, ‘হে আল্লাহ, আপনি হলককারীকে ক্ষমা করুন।’ সাহাবায়ে কেরাম আবার জিজ্ঞেস করলেন, ‘যারা চুল কাটবে তাদের?’ তিনি বললেন, ‘হে আল্লাহ, আপনি হলককারীকে ক্ষমা করুন।’ তৃতীয়বার আবার আরজ করলে নবীজি (সা.) বললেন, যারা চুল কাটবে তাদেরকেও।’ (সহিহ বুখারি: ১৭২৮)
ওমরাহ পালনের উপকারিতা
লেখক: হাফেজ মাওলানা আজিজুল হক, কলামিস্ট ও মাদ্রাসাশিক্ষক।

ওমরাহ শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো ভ্রমণ করা বা জনবহুল স্থানে ভ্রমণ করা। ইসলামি পরিভাষায়, আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে, ইহরাম বাঁধা অবস্থায় কাবা শরিফ তাওয়াফ এবং সাফা-মারওয়া পাহাড়ের মধ্যে সায়ি করাকে ওমরাহ বলে।
ওমরাহ পরিচিতি
নির্দিষ্ট স্থান (মিকাত) থেকে ইহরাম বাঁধার মাধ্যমে ওমরাহ শুরু হয়। এরপর ওমরাহর মধ্যে রয়েছে কাবা ঘরকে সাতবার প্রদক্ষিণ করা, সাফা-মারওয়া পাহাড়ের মধ্যে সাতবার দৌড়ানো বা হাঁটা, তাওয়াফ ও সায়ি শেষে মাথা মুণ্ডন বা চুল ছোট করা।
ওমরাহর গুরুত্ব ও সময়
হজের মতো এটিও একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। জীবনে একবার ওমরাহ আদায় করা সুন্নতে মুয়াক্কাদা (জরুরি সুন্নাহ)। হজের নির্দিষ্ট সময় (৮ জিলহজ থেকে ১২ জিলহজ) ব্যতীত বছরের যেকোনো সময়ই ওমরাহ পালন করা যায়। ওমরাহ করার জন্য কোনো নির্দিষ্ট সময় নেই। একই সফরে একাধিক ওমরাহ করার অনুমতি আছে।
ওমরাহর ফজিলত
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা ধারাবাহিকভাবে একের পর এক হজ ও ওমরাহ করতে থাকো। কেননা, হজ ও ওমরাহ এমনভাবে অভাব মোচন করে এবং গুনাহ দূর করে, যেমনভাবে কামারের হাঁপর লোহা ও সোনা-রুপার মরিচা দূর করে।’ (জামে তিরমিজি: ৮১০)
হজরত জাবের (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘হজ আদায়কারী ব্যক্তি কখনোই একেবারে নিঃস্ব হয় না।’ (তাবারানি ফিল আওসাত: ৫২০৯)
অন্যত্র হজরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘এক ওমরাহর পর আরেকটি ওমরাহ আদায় করা উভয়ের মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহের জন্য কাফফারা।’ (সহিহ মুসলিম: ১৩৪৯)
এ ছাড়া ওমরাহ আদায়ে প্রয়োজনে ১ টাকা খরচ করলে ৭০০ টাকা সদকা করার সওয়াব পাওয়া যায়। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘হজ ও ওমরাহ হলো আল্লাহর রাস্তা। আর আল্লাহর রাস্তায় ১ দিরহাম খরচের সওয়াব ৭০০ গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়।’ (তাবারানি ফিল আওসাত: ৫৬৯০)
আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহর পথের মুজাহিদ এবং হজ-ওমরাহ আদায়কারী আল্লাহর প্রতিনিধি। তাঁরা আল্লাহর ডাকে সাড়া দেন আর আল্লাহও তাঁদের প্রার্থনা কবুল করেন।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ: ২৮৯৩)
আবু হুরাইরা (রা.) মহানবী (সা.) থেকে বর্ণনা করেন, ‘এক ওমরাহ অন্য ওমরাহ পর্যন্ত মধ্যবর্তী সকল কিছুর কাফফারা।’ (সহিহ বুখারি: ১৭২৩)
আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি বায়তুল্লাহর তাওয়াফ করে এবং দুই রাকাত নামাজ আদায় করে, সে একটি গোলাম আজাদ করার সওয়াব পায়।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ: ২৯৫৬)
আম্মাজান হজরত আয়েশা (রা.)-কে রাসুলুল্লাহ (সা.) নসিহত করেন, ‘হে আয়েশা, তুমি ব্যয় করতে সংকোচ কোরো না। কারণ, তোমার ব্যয় অনুপাতে ওমরাহর প্রতিদান দেওয়া হবে।’ (তারগিব: ১৬৮১)
হাজরে আসওয়াদ ইসতেলামের ফজিলত
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘এই পাথর কিয়ামতের দিন এমন অবস্থায় উপস্থিত হবে যে তার দুটি চোখ থাকবে, যা দ্বারা সে দেখবে। জিহ্বা থাকবে যা দ্বারা সে কথা বলবে। সে ওই ব্যক্তির পক্ষে সাক্ষ্য দেবে যে তাকে সঠিক পন্থায় ইসতেলাম করবে।’ (ইবনে মাজাহ: ২৯৪৪)। হাজরে আসওয়াদকে চুমু দেওয়া, স্পর্শ করা বা দূর থেকে চুমুর ইঙ্গিত করাকে বলে ইসতেলাম। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত।
সাফা-মারওয়া সায়ি করার ফজিলত
আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা সাফা-মারওয়া সায়ি করো। কেননা, তা ৭০ জন দাস মুক্ত করার সমতুল্য।’ (সহিহ ইবনে হিব্বান: ১৮৮৭)
হলক বা চুল কাটার ফজিলত
আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘হে আল্লাহ, আপনি হলককারীকে ক্ষমা করুন।’ সাহাবিরা জিজ্ঞেস করলেন, ‘ইয়া রাসুলুল্লাহ, যারা চুল কাটবে তাদের?’ তিনি বললেন, ‘হে আল্লাহ, আপনি হলককারীকে ক্ষমা করুন।’ সাহাবায়ে কেরাম আবার জিজ্ঞেস করলেন, ‘যারা চুল কাটবে তাদের?’ তিনি বললেন, ‘হে আল্লাহ, আপনি হলককারীকে ক্ষমা করুন।’ তৃতীয়বার আবার আরজ করলে নবীজি (সা.) বললেন, যারা চুল কাটবে তাদেরকেও।’ (সহিহ বুখারি: ১৭২৮)
ওমরাহ পালনের উপকারিতা
লেখক: হাফেজ মাওলানা আজিজুল হক, কলামিস্ট ও মাদ্রাসাশিক্ষক।

বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত চা-বাগান, টিলা, উঁচু পাহাড় আর আধ্যাত্মিকতার শহর সিলেট। এই শহরের বুকে ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ছোঁয়ায় নির্মিত এক অনন্য স্থাপনা শাহি ঈদগাহ। তিন শতাধিক বছর ধরে দাঁড়িয়ে থাকা এই ঈদগাহ শুধু নামাজের স্থান নয়; এটি এক জীবন্ত ইতিহাস, স্থাপত্যকলার নন্দিত রূপ ও আধ্যাত্মিক ঐতিহ্য
২ ঘণ্টা আগে
নামাজ মুসলমানের জীবনের প্রাণ, ইমানের প্রমাণ। দিনে পাঁচবার আল্লাহর সামনে সিজদায় লুটিয়ে পড়া আত্মশুদ্ধির এক মহা সুযোগ। নামাজের পরপরই অনেকেই দ্রুত নিজ কাজে বেরিয়ে পড়েন। অথচ রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর জীবনে আমাদের শিখিয়েছেন, ফরজ নামাজ শেষে কিছু ছোট ছোট আমল আছে, যেগুলোর মাধ্যমে ইমান আরও পরিশুদ্ধ হয়....
২ ঘণ্টা আগে
ইসলাম সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণের ধর্ম। এর মূল লক্ষ্য হলো মানবসমাজ থেকে সকল প্রকার ফেতনা-ফ্যাসাদ, জুলুম, অনাচার ও বিশৃঙ্খলা, নৈরাজ্য ও অরাজকতা দূর করে একটি ন্যায় ও ইনসাফপূর্ণ সমাজ উপহার দেওয়া।
২ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১০ ঘণ্টা আগে