ড. এম জসিম আলী চৌধুরী

‘সংস্কার’ আমাদের এক পৌনঃপুনিক নিয়তি। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতারা পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর ২৪ বছরের স্বৈরাচারী রাষ্ট্রপতিতন্ত্র থেকে চিরস্থায়ী মুক্তির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শিক ভিত্তিগুলোর ওপর দাঁড়িয়ে তাঁরা সংসদীয় গণতন্ত্রব্যবস্থা বেছে নেন। কিন্তু এ সুখ আমাদের বেশি দিন সয়নি। ১৯৭৫ সালে ‘দ্বিতীয় বিপ্লব’-এর ডাক দিয়ে একটি জাতীয় দলভিত্তিক রাষ্ট্রপতির শাসনব্যবস্থা চালু করা হয়। এটিও টেকেনি। কয়েক মাসের মধ্যেই দেশ রক্তপাত এবং চরম বিশৃঙ্খলার ভেতর পড়ে যায়। ১৯৭৫-৭৯ সময়কালটা পুরোটাই সংবিধান সংস্কার, সংশোধন এবং পুনর্লিখনে কেটেছে। এ সময় সংবিধানের মূলনীতিগুলোকে পরিবর্তন করা হয়। বহুদলীয় রাজনীতি ফিরিয়ে আনা হলেও রাষ্ট্রপতিব্যবস্থা রেখে দেওয়া হয়। রাষ্ট্রপতিশাসিত ব্যবস্থাকে বরং আরও সংহত করা হয়। ১৯৮০-এর দশকের শুরুতে আবার রক্তপাত এবং আরেকটি সামরিক অভ্যুত্থান। এবার এক সামরিক শাসক সংবিধান স্থগিত করেন, নিজে একটি অন্তর্বর্তী সংবিধান দেন এবং সংবিধানের মৌলিক নীতিগুলোকে আরও পরিবর্তন করেন। ১৯৭৫ থেকে ৯০ পর্যন্ত সময়ে দেশে বড় দুটি রাজনৈতিক দল জন্ম নেয়। জামায়াতে ইসলামী পুনঃস্থাপিত হয়। আওয়ামী লীগও বাকশাল ছেড়ে নিজের জায়গায় ফিরে আসে। সামরিক সরকারগুলো প্রথম দিকে ঢাকঢোল পিটিয়ে দুর্নীতিবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে। তারপর আস্তে আস্তে রাষ্ট্রপতি স্বৈরাচার, দুর্নীতি, ভোট কারচুপি ও রাজনীতির দূষণে মেতে ওঠে। সংসদ, স্থানীয় সরকার, বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারপ্রধানের এবং সরকারি দলের খামখেয়ালির কাছে জিম্মি থেকে যায়। ১৯৯০ সালের শেষের দিকে স্বাধীন দেশের প্রথম গণ-অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়। সামরিক শাসন বিদায় নেয় এবং বেসামরিক শাসনের সূচনা হয়।
১৯৯১ সালে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার নামের একটি প্রতিশ্রুতিশীল প্রতিষ্ঠান জন্ম নেয় এবং সংসদীয় ব্যবস্থা ফিরে আসে। তবে সংসদীয় গণতন্ত্রের পুনর্জাগরণের মধুচন্দ্রিমাও বেশি দিন টেকে না। দ্বিদলীয় ব্যবস্থাটা প্রতিযোগিতামূলকভাবে কর্তৃত্ববাদী, সংঘাতপূর্ণ, ষড়যন্ত্র এবং কূটচালের রাজনীতি হয়ে ওঠে। নিয়মিত ও শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর কেন জানি অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। ১৯৯৬ সালে আবার জ্বালাও-পোড়াও ও গণ-আন্দোলনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরে আসে। গণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতার রদবদল টিকিয়ে রাখার জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার অনেকটা নিশ্বাস ফেলার জায়গা হয়ে দাঁড়ায়। সংসদীয় ব্যবস্থা অবশ্য জবাবদিহিহীনতা, দুর্নীতি এবং রাজনীতির পারিবারিকীকরণ, দুর্বৃত্তায়ন এবং গোষ্ঠীস্বার্থের আখড়ায় পরিণত হয়। নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া আর কোথাও সামগ্রিকভাবে জবাবদিহিমূলক শাসন ও ন্যায়বিচারের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার কোনো লক্ষণ দেখা যায় না। স্থানীয় সরকার, দুর্নীতি দমন কমিশন, নির্বাচন কমিশন, বিচার বিভাগ, আমলাতন্ত্র এবং সংসদ—সবই দলীয় সরকার এবং সরকারপ্রধানের অদম্য ক্ষমতালিপ্সার কাছে আত্মসমর্পণ করে। ২০০৬ সাল আসতে আসতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাটিও নষ্ট করে দেওয়া হয়।
২০০৭ সালে সামরিক বাহিনী আবার দৃশ্যপটে আসে। তারা রাষ্ট্রের সমস্যাগুলো একবারে এবং চিরতরে সমাধানের প্রতিশ্রুতি দেয়। আবারও ‘দুর্নীতিবিরোধী অভিযান’ শুরু হয়। এবার বড় দুটি রাজনৈতিক দলের ‘সংস্কার’ কাজে হাত দেওয়া হয়। বহুল প্রচারিত ‘মাইনাস-টু’ ফর্মুলার মাধ্যমে দলের নেতৃত্ব পরিবর্তনের চেষ্টা চলে। তবে একই সঙ্গে সেনাপ্রধানের নিজের রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ প্রকাশ হতে থাকায় ফর্মুলাটি দ্রুতই আকর্ষণ হারায়। সংস্কারের প্রাথমিক উদ্যম দেড় বছরের মধ্যে ম্লান হয়ে আসে। ২০০৮- এর শেষের দিকে সামরিক নেতৃত্বকে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হলেও তাঁরা নিম্ন আদালতকে নির্বাহী বিভাগ থেকে আলাদা করে যান এবং নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা ও কাঠামোয় উল্লেখযোগ্য সংস্কার আনেন। দুর্নীতি দমন কমিশন এবং অন্যান্য জবাবদিহিমূলক প্রতিষ্ঠানগুলোতেও উল্লেখযোগ্য সংস্কার করা হয়। ২০০৯ সালের শুরুতে ‘দিনবদলের সনদ’ নামে ব্যাপক জনপ্রিয় একটি রাজনৈতিক মেনিফেস্টো দিয়ে একটি বড় দল ক্ষমতায় আসে। কিন্তু দিন বদল হওয়ার বদলে খারাপ থেকে খারাপতর হতে থাকে। পরবর্তী ১৬ বছর বাংলাদেশ তার ইতিহাসের দীর্ঘতম একদলীয় আধিপত্য এবং কর্তৃত্ববাদী প্রধানমন্ত্রীর শাসনের ভেতর দিয়ে যায়।
২০২৪ সালে আরেক দফা রক্তপাত, যন্ত্রণাদায়ক সহিংসতা এবং ব্যাপক ছাত্র আন্দোলনে ওই সরকারের পতন হয়েছে। এখন একটি ‘অন্তর্বর্তী সরকার’ ক্ষমতায় এসে সংবিধানসহ রাষ্ট্রের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে আবার সংস্কারের কাজে হাত দিয়েছে। সংস্কারের ক্ষেত্রগুলো স্বাধীনতার পর থেকে যেগুলো আমরা বারবার দেখে আসছি সেগুলোই—প্রতিষ্ঠান নির্মাণ, জবাবদিহি, আইনের শাসন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন এবং দুর্নীতিমুক্ত শাসন।
এখন অনেকেই সমস্যাগুলোর জন্য সংবিধানের মূলনীতিকে দায়ী করছেন। তাঁরা ওগুলো নতুন করে লিখতে চান। অথচ মূলনীতিগুলো আমরা অতীতে অন্তত চারবার পাল্টেছি, ভেঙেছি ও গড়েছি (১৯৭৫, ১৯৭৯, ১৯৮৮ এবং ২০১১)। অন্য অনেকে বলছেন, সাংবিধানের মূলনীতি না বরং কাঠামোটাই ত্রুটিপূর্ণ। তাঁরাও কাঠামোটিকে নতুন করে সাজাতে চান। অথচ কাঠামোটাও আমরা অতীতে অন্তত পাঁচবার উল্টেপাল্টে দেখেছি (১৯৭৫, ১৯৭৯, ১৯৯২, ১৯৯৬ এবং ২০১১)। এতবার সংস্কারের এতবার ব্যর্থতার জন্য একাডেমিক গবেষকেরা পাইকারিভাবে ‘রাজনৈতিক ইচ্ছা’ এবং রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে ‘প্রাতিষ্ঠানিক গণতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গির অভাব’কে দায়ী করেন। অথচ রাজনৈতিক দলগুলোর সংস্কার নিয়ে সরাসরি কিছু বলেন না। এবারো বলছেন না।
বাংলাদেশের জন্মের পর থেকে ২০২৪-এর আগপর্যন্ত আমরা অন্তত তিনটি নতুন করে শুরু করার মুহূর্ত পেয়েছি—১৯৭২, ১৯৯১ এবং ২০০৯। প্রতিটি মুহূর্তে রাজনৈতিক দল এবং তাদের নেতারা সময়ের সম্ভাব্য সেরা প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা এবং রাজনৈতিক ঐকমত্য পেয়েছিলেন। অথচ প্রতিটি মুহূর্তই শোচনীয় ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে। ক্ষমতা পাওয়া রাজনৈতিক দলগুলো যেটুকু ভালো পেয়েছিল তার সবটুকু নষ্ট করে দিয়ে তাদের নিজেদের ক্ষমতাকে সুসংহত ও স্থায়ী করায় মনোযোগ দিয়েছে। ২০২৪ সালে এসেও তারা এখানে-ওখানে এই সংস্কার, ওই সংস্কার, ৩১ দফা, ১০ দফা ইত্যাদি প্রস্তাব-প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। প্রশ্ন হলো, আমরা কি তাদের আর আদৌ বিশ্বাস করতে পারি?
সংবিধানে যে প্রাতিষ্ঠানিক এবং আইনি কাঠামো দেওয়া হয়, সেগুলো দেওয়া হয় রাষ্ট্র যেন একটি স্বশাসিত ব্যবস্থা হিসেবে কাজ করতে পারে সে উদ্দেশ্যে। সংবিধান নিজে এগুলো বাস্তবায়ন করবে না। রাজনৈতিক দলগুলোই এগুলো বাস্তবায়ন (বা ধ্বংস) করবে। অথচ আশ্চর্যজনকভাবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো নিজেরা সব সময়ই সংবিধানের সীমা ও নিয়মের বাইরে থেকে গেছে।
প্রখ্যাত রাষ্ট্রবিজ্ঞানী রিচার্ড পিল্ডাস দেখিয়েছেন যে সংবিধান কয়েকটি উপায়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে জবাবদিহি করাতে পারে। সংবিধান গণতান্ত্রিক প্রতিযোগিতায় সব দলের সমান অংশগ্রহণ এবং সবার জন্য সমর্থন অনুপাতে রাষ্ট্রীয় তহবিল বরাদ্দ দিয়ে তাদের আর্থিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে পারে। সংসদের মতো প্রতিষ্ঠানে রাজনীতিতে স্থায়ী সংখ্যালঘুদের জন্য আসন সংরক্ষণ করার মাধ্যমে সংখ্যাগরিষ্ঠের স্থায়ী কর্তৃত্বের ওপর সীমাবদ্ধতা আরোপ করতে পারে। নিয়মতান্ত্রিক বিরোধী দলগুলোকে অসাংবিধানিক নিষেধাজ্ঞার হাত থেকে রক্ষা করতে পারে। সবশেষে, এটা নিশ্চিত করতে পারে যে দলগুলো নিজেরা অভ্যন্তরীণভাবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে জনগণের ভেতর থেকে নেতৃত্ব উঠে আসার পথ খোলা রাখবে।
২০২৪-এর সংস্কার প্রকল্পের একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ হতে হবে, রাজনৈতিক দলগুলো সংস্কারকে নষ্ট করার কাজটি যেন আর করতে না পারে। এবারের সংস্কার অ্যাজেন্ডায় রাজনৈতিক দলগুলোর সংস্কার এবং তাদের সংবিধানের কাঠামোর ভেতরে নিয়ে আসা অত্যন্ত জরুরি। জনগণকে জানতে হবে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো কীভাবে গঠিত হয়, কীভাবে চলে, অর্থ কোত্থেকে পায়, খরচ কোথায় করে, তাদের নেতা কীভাবে নির্বাচিত হয় এবং জনগণের বা রাষ্ট্রের কাছে তাদের জবাবদিহি কোথায়। এবারের সংস্কারকে সফল হতে এবং দীর্ঘ মেয়াদে টিকে থাকতে হলে অবশ্যই রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে ঐতিহাসিকভাবে উপেক্ষিত এ প্রশ্নগুলোর সমাধান হতে হবে।
লেখক: প্রভাষক, আইন বিভাগ, ইউনিভার্সিটি অব হাল, যুক্তরাজ্য

‘সংস্কার’ আমাদের এক পৌনঃপুনিক নিয়তি। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতারা পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর ২৪ বছরের স্বৈরাচারী রাষ্ট্রপতিতন্ত্র থেকে চিরস্থায়ী মুক্তির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শিক ভিত্তিগুলোর ওপর দাঁড়িয়ে তাঁরা সংসদীয় গণতন্ত্রব্যবস্থা বেছে নেন। কিন্তু এ সুখ আমাদের বেশি দিন সয়নি। ১৯৭৫ সালে ‘দ্বিতীয় বিপ্লব’-এর ডাক দিয়ে একটি জাতীয় দলভিত্তিক রাষ্ট্রপতির শাসনব্যবস্থা চালু করা হয়। এটিও টেকেনি। কয়েক মাসের মধ্যেই দেশ রক্তপাত এবং চরম বিশৃঙ্খলার ভেতর পড়ে যায়। ১৯৭৫-৭৯ সময়কালটা পুরোটাই সংবিধান সংস্কার, সংশোধন এবং পুনর্লিখনে কেটেছে। এ সময় সংবিধানের মূলনীতিগুলোকে পরিবর্তন করা হয়। বহুদলীয় রাজনীতি ফিরিয়ে আনা হলেও রাষ্ট্রপতিব্যবস্থা রেখে দেওয়া হয়। রাষ্ট্রপতিশাসিত ব্যবস্থাকে বরং আরও সংহত করা হয়। ১৯৮০-এর দশকের শুরুতে আবার রক্তপাত এবং আরেকটি সামরিক অভ্যুত্থান। এবার এক সামরিক শাসক সংবিধান স্থগিত করেন, নিজে একটি অন্তর্বর্তী সংবিধান দেন এবং সংবিধানের মৌলিক নীতিগুলোকে আরও পরিবর্তন করেন। ১৯৭৫ থেকে ৯০ পর্যন্ত সময়ে দেশে বড় দুটি রাজনৈতিক দল জন্ম নেয়। জামায়াতে ইসলামী পুনঃস্থাপিত হয়। আওয়ামী লীগও বাকশাল ছেড়ে নিজের জায়গায় ফিরে আসে। সামরিক সরকারগুলো প্রথম দিকে ঢাকঢোল পিটিয়ে দুর্নীতিবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে। তারপর আস্তে আস্তে রাষ্ট্রপতি স্বৈরাচার, দুর্নীতি, ভোট কারচুপি ও রাজনীতির দূষণে মেতে ওঠে। সংসদ, স্থানীয় সরকার, বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারপ্রধানের এবং সরকারি দলের খামখেয়ালির কাছে জিম্মি থেকে যায়। ১৯৯০ সালের শেষের দিকে স্বাধীন দেশের প্রথম গণ-অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়। সামরিক শাসন বিদায় নেয় এবং বেসামরিক শাসনের সূচনা হয়।
১৯৯১ সালে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার নামের একটি প্রতিশ্রুতিশীল প্রতিষ্ঠান জন্ম নেয় এবং সংসদীয় ব্যবস্থা ফিরে আসে। তবে সংসদীয় গণতন্ত্রের পুনর্জাগরণের মধুচন্দ্রিমাও বেশি দিন টেকে না। দ্বিদলীয় ব্যবস্থাটা প্রতিযোগিতামূলকভাবে কর্তৃত্ববাদী, সংঘাতপূর্ণ, ষড়যন্ত্র এবং কূটচালের রাজনীতি হয়ে ওঠে। নিয়মিত ও শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর কেন জানি অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। ১৯৯৬ সালে আবার জ্বালাও-পোড়াও ও গণ-আন্দোলনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরে আসে। গণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতার রদবদল টিকিয়ে রাখার জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার অনেকটা নিশ্বাস ফেলার জায়গা হয়ে দাঁড়ায়। সংসদীয় ব্যবস্থা অবশ্য জবাবদিহিহীনতা, দুর্নীতি এবং রাজনীতির পারিবারিকীকরণ, দুর্বৃত্তায়ন এবং গোষ্ঠীস্বার্থের আখড়ায় পরিণত হয়। নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া আর কোথাও সামগ্রিকভাবে জবাবদিহিমূলক শাসন ও ন্যায়বিচারের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার কোনো লক্ষণ দেখা যায় না। স্থানীয় সরকার, দুর্নীতি দমন কমিশন, নির্বাচন কমিশন, বিচার বিভাগ, আমলাতন্ত্র এবং সংসদ—সবই দলীয় সরকার এবং সরকারপ্রধানের অদম্য ক্ষমতালিপ্সার কাছে আত্মসমর্পণ করে। ২০০৬ সাল আসতে আসতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাটিও নষ্ট করে দেওয়া হয়।
২০০৭ সালে সামরিক বাহিনী আবার দৃশ্যপটে আসে। তারা রাষ্ট্রের সমস্যাগুলো একবারে এবং চিরতরে সমাধানের প্রতিশ্রুতি দেয়। আবারও ‘দুর্নীতিবিরোধী অভিযান’ শুরু হয়। এবার বড় দুটি রাজনৈতিক দলের ‘সংস্কার’ কাজে হাত দেওয়া হয়। বহুল প্রচারিত ‘মাইনাস-টু’ ফর্মুলার মাধ্যমে দলের নেতৃত্ব পরিবর্তনের চেষ্টা চলে। তবে একই সঙ্গে সেনাপ্রধানের নিজের রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ প্রকাশ হতে থাকায় ফর্মুলাটি দ্রুতই আকর্ষণ হারায়। সংস্কারের প্রাথমিক উদ্যম দেড় বছরের মধ্যে ম্লান হয়ে আসে। ২০০৮- এর শেষের দিকে সামরিক নেতৃত্বকে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হলেও তাঁরা নিম্ন আদালতকে নির্বাহী বিভাগ থেকে আলাদা করে যান এবং নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা ও কাঠামোয় উল্লেখযোগ্য সংস্কার আনেন। দুর্নীতি দমন কমিশন এবং অন্যান্য জবাবদিহিমূলক প্রতিষ্ঠানগুলোতেও উল্লেখযোগ্য সংস্কার করা হয়। ২০০৯ সালের শুরুতে ‘দিনবদলের সনদ’ নামে ব্যাপক জনপ্রিয় একটি রাজনৈতিক মেনিফেস্টো দিয়ে একটি বড় দল ক্ষমতায় আসে। কিন্তু দিন বদল হওয়ার বদলে খারাপ থেকে খারাপতর হতে থাকে। পরবর্তী ১৬ বছর বাংলাদেশ তার ইতিহাসের দীর্ঘতম একদলীয় আধিপত্য এবং কর্তৃত্ববাদী প্রধানমন্ত্রীর শাসনের ভেতর দিয়ে যায়।
২০২৪ সালে আরেক দফা রক্তপাত, যন্ত্রণাদায়ক সহিংসতা এবং ব্যাপক ছাত্র আন্দোলনে ওই সরকারের পতন হয়েছে। এখন একটি ‘অন্তর্বর্তী সরকার’ ক্ষমতায় এসে সংবিধানসহ রাষ্ট্রের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে আবার সংস্কারের কাজে হাত দিয়েছে। সংস্কারের ক্ষেত্রগুলো স্বাধীনতার পর থেকে যেগুলো আমরা বারবার দেখে আসছি সেগুলোই—প্রতিষ্ঠান নির্মাণ, জবাবদিহি, আইনের শাসন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন এবং দুর্নীতিমুক্ত শাসন।
এখন অনেকেই সমস্যাগুলোর জন্য সংবিধানের মূলনীতিকে দায়ী করছেন। তাঁরা ওগুলো নতুন করে লিখতে চান। অথচ মূলনীতিগুলো আমরা অতীতে অন্তত চারবার পাল্টেছি, ভেঙেছি ও গড়েছি (১৯৭৫, ১৯৭৯, ১৯৮৮ এবং ২০১১)। অন্য অনেকে বলছেন, সাংবিধানের মূলনীতি না বরং কাঠামোটাই ত্রুটিপূর্ণ। তাঁরাও কাঠামোটিকে নতুন করে সাজাতে চান। অথচ কাঠামোটাও আমরা অতীতে অন্তত পাঁচবার উল্টেপাল্টে দেখেছি (১৯৭৫, ১৯৭৯, ১৯৯২, ১৯৯৬ এবং ২০১১)। এতবার সংস্কারের এতবার ব্যর্থতার জন্য একাডেমিক গবেষকেরা পাইকারিভাবে ‘রাজনৈতিক ইচ্ছা’ এবং রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে ‘প্রাতিষ্ঠানিক গণতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গির অভাব’কে দায়ী করেন। অথচ রাজনৈতিক দলগুলোর সংস্কার নিয়ে সরাসরি কিছু বলেন না। এবারো বলছেন না।
বাংলাদেশের জন্মের পর থেকে ২০২৪-এর আগপর্যন্ত আমরা অন্তত তিনটি নতুন করে শুরু করার মুহূর্ত পেয়েছি—১৯৭২, ১৯৯১ এবং ২০০৯। প্রতিটি মুহূর্তে রাজনৈতিক দল এবং তাদের নেতারা সময়ের সম্ভাব্য সেরা প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা এবং রাজনৈতিক ঐকমত্য পেয়েছিলেন। অথচ প্রতিটি মুহূর্তই শোচনীয় ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে। ক্ষমতা পাওয়া রাজনৈতিক দলগুলো যেটুকু ভালো পেয়েছিল তার সবটুকু নষ্ট করে দিয়ে তাদের নিজেদের ক্ষমতাকে সুসংহত ও স্থায়ী করায় মনোযোগ দিয়েছে। ২০২৪ সালে এসেও তারা এখানে-ওখানে এই সংস্কার, ওই সংস্কার, ৩১ দফা, ১০ দফা ইত্যাদি প্রস্তাব-প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। প্রশ্ন হলো, আমরা কি তাদের আর আদৌ বিশ্বাস করতে পারি?
সংবিধানে যে প্রাতিষ্ঠানিক এবং আইনি কাঠামো দেওয়া হয়, সেগুলো দেওয়া হয় রাষ্ট্র যেন একটি স্বশাসিত ব্যবস্থা হিসেবে কাজ করতে পারে সে উদ্দেশ্যে। সংবিধান নিজে এগুলো বাস্তবায়ন করবে না। রাজনৈতিক দলগুলোই এগুলো বাস্তবায়ন (বা ধ্বংস) করবে। অথচ আশ্চর্যজনকভাবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো নিজেরা সব সময়ই সংবিধানের সীমা ও নিয়মের বাইরে থেকে গেছে।
প্রখ্যাত রাষ্ট্রবিজ্ঞানী রিচার্ড পিল্ডাস দেখিয়েছেন যে সংবিধান কয়েকটি উপায়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে জবাবদিহি করাতে পারে। সংবিধান গণতান্ত্রিক প্রতিযোগিতায় সব দলের সমান অংশগ্রহণ এবং সবার জন্য সমর্থন অনুপাতে রাষ্ট্রীয় তহবিল বরাদ্দ দিয়ে তাদের আর্থিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে পারে। সংসদের মতো প্রতিষ্ঠানে রাজনীতিতে স্থায়ী সংখ্যালঘুদের জন্য আসন সংরক্ষণ করার মাধ্যমে সংখ্যাগরিষ্ঠের স্থায়ী কর্তৃত্বের ওপর সীমাবদ্ধতা আরোপ করতে পারে। নিয়মতান্ত্রিক বিরোধী দলগুলোকে অসাংবিধানিক নিষেধাজ্ঞার হাত থেকে রক্ষা করতে পারে। সবশেষে, এটা নিশ্চিত করতে পারে যে দলগুলো নিজেরা অভ্যন্তরীণভাবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে জনগণের ভেতর থেকে নেতৃত্ব উঠে আসার পথ খোলা রাখবে।
২০২৪-এর সংস্কার প্রকল্পের একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ হতে হবে, রাজনৈতিক দলগুলো সংস্কারকে নষ্ট করার কাজটি যেন আর করতে না পারে। এবারের সংস্কার অ্যাজেন্ডায় রাজনৈতিক দলগুলোর সংস্কার এবং তাদের সংবিধানের কাঠামোর ভেতরে নিয়ে আসা অত্যন্ত জরুরি। জনগণকে জানতে হবে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো কীভাবে গঠিত হয়, কীভাবে চলে, অর্থ কোত্থেকে পায়, খরচ কোথায় করে, তাদের নেতা কীভাবে নির্বাচিত হয় এবং জনগণের বা রাষ্ট্রের কাছে তাদের জবাবদিহি কোথায়। এবারের সংস্কারকে সফল হতে এবং দীর্ঘ মেয়াদে টিকে থাকতে হলে অবশ্যই রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে ঐতিহাসিকভাবে উপেক্ষিত এ প্রশ্নগুলোর সমাধান হতে হবে।
লেখক: প্রভাষক, আইন বিভাগ, ইউনিভার্সিটি অব হাল, যুক্তরাজ্য

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

‘সংস্কার’ আমাদের এক পৌনঃপুনিক নিয়তি। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতারা পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর ২৪ বছরের স্বৈরাচারী রাষ্ট্রপতিতন্ত্র থেকে চিরস্থায়ী মুক্তির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শিক ভিত্তিগুলোর ওপর দাঁড়িয়ে তাঁরা সংসদীয় গণতন্ত্রব্যবস্থা বেছে নেন। কিন্তু এ সুখ আমাদের বেশি দিন
১৭ অক্টোবর ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘সংস্কার’ আমাদের এক পৌনঃপুনিক নিয়তি। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতারা পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর ২৪ বছরের স্বৈরাচারী রাষ্ট্রপতিতন্ত্র থেকে চিরস্থায়ী মুক্তির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শিক ভিত্তিগুলোর ওপর দাঁড়িয়ে তাঁরা সংসদীয় গণতন্ত্রব্যবস্থা বেছে নেন। কিন্তু এ সুখ আমাদের বেশি দিন
১৭ অক্টোবর ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

‘সংস্কার’ আমাদের এক পৌনঃপুনিক নিয়তি। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতারা পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর ২৪ বছরের স্বৈরাচারী রাষ্ট্রপতিতন্ত্র থেকে চিরস্থায়ী মুক্তির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শিক ভিত্তিগুলোর ওপর দাঁড়িয়ে তাঁরা সংসদীয় গণতন্ত্রব্যবস্থা বেছে নেন। কিন্তু এ সুখ আমাদের বেশি দিন
১৭ অক্টোবর ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

‘সংস্কার’ আমাদের এক পৌনঃপুনিক নিয়তি। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতারা পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর ২৪ বছরের স্বৈরাচারী রাষ্ট্রপতিতন্ত্র থেকে চিরস্থায়ী মুক্তির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শিক ভিত্তিগুলোর ওপর দাঁড়িয়ে তাঁরা সংসদীয় গণতন্ত্রব্যবস্থা বেছে নেন। কিন্তু এ সুখ আমাদের বেশি দিন
১৭ অক্টোবর ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫