Ajker Patrika

‘শেষ কটা বছর ঋত্বিকের বেঁচে থাকাটাই একটা বিরাট অঘটন’

 খায়রুল বাসার নির্ঝর, ঢাকা
আপডেট : ০৪ নভেম্বর ২০২২, ২১: ৪১
‘শেষ কটা বছর ঋত্বিকের বেঁচে থাকাটাই একটা বিরাট অঘটন’

ঋত্বিক ঘটক—যেন একজন গ্রিক মাস্টার! লম্বা শরীর, এলোমেলো চুল, একটা ঝোলা কাঁধ বেয়ে নেমে ঝুলে পড়েছে, পাঞ্জাবি—তার ওপর খাদির জ্যাকেট। বোতাম খোলা। আর জ্বলজ্বলে বুদ্ধিদীপ্ত দুটো চোখ, যেন ধরে রাখছে সব। প্রতিটি মুহূর্ত, দৃশ্য, জীবন—কিছুই ও চোখে এড়ায় না। সবমিলিয়ে ঋত্বিক ঘটক। বাংলা চলচ্চিত্র তাঁর হাতেই অনেকখানি জীবনবোধ শিখেছে, আন্তর্জাতিকতা পেয়েছে। এই ঋত্বিক ঘটক যতদিনে সবার পরিচিত ‘ঋত্বিক’ হয়ে ওঠেননি, তখন থেকেই মৃণাল সেনের সঙ্গে তাঁর দোস্তি। দেশভাগের যন্ত্রণা দুজনকেই তৈরি করছিল একটু একটু করে। শিল্পে, সংগ্রামে, রাজনীতিতে, ময়দানে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলেছেন ঋত্বিক ও মৃণাল। ঋত্বিকের মৃত্যুর ৯ বছর পরে, ১৯৮৫ সালে, নির্মাতা মৃণাল সেন যে লেখাটি লিখেছিলেন ঋত্বিককে নিয়ে সেটার শেষ লাইনটি ছিল, ‘কে জানে হয়তো মরেই ঋত্বিক বাঁচল। শেষ কটা বছর ঋত্বিকের বেঁচে থাকাটাই একটা বিরাট অঘটন।’ তার আগে, মৃণালের পুরো লেখাটা জুড়ে, হাজির হয়েছেন সেই ঋত্বিক, যিনি ততদিনে তাঁর প্রথম সিনেমাটিও বানিয়ে ফেলতে পারেননি। তৈরি হচ্ছেন। নিজেকে প্রস্তুত করছেন ভবিষ্যতের সম্ভাব্য সব ঝড় সামলাতে। আজ ঋত্বিকের জন্মদিনে পাঠকদের জন্য মৃণাল সেনের পুরো লেখাটি থাকল এখানে।

আমাদের একটা ছোট্ট দল ছিল তখন। একজন ছাড়া সবাই ছিলাম বেকার। কারুরই কোনো সংসার ছিল না, মা-বাবার সংসারে দায়িত্ব এড়িয়ে চলতাম সবাই। সকাল হতেই বেরিয়ে পড়তাম, হাজরা রোডের ওপর ছোট্ট একটা চায়ের দোকানে ভিড় করতাম, আট বাই বারো ফিটের মতো একটা ঘর, ন্যাড়া টেবিল আর ভাঙা চেয়ারে ঠাসা দোকান, নাম প্যারাডাইস কাফে। ঋত্বিক ছিল আমাদের দলের সবচেয়ে লম্বাটে, সবচেয়ে রোগাটে এবং অবশ্যই সবচেয়ে ডাকসাইটে শরিক।

ঋত্বিক, সলিল চৌধুরী, তাপস সেন, হৃষীকেশ মুখোপাধ্যায়, বংশী চন্দ্রগুপ্ত, নৃপেন গঙ্গোপাধ্যায় আর আমি—এই নিয়ে আমাদের দল। কখনো কখনো বিজন ভট্টাচার্য এসে জুটতেন আমাদের আড্ডায়, কখনোবা কালী বন্দ্যোপাধ্যায়। সকাল আটটা থেকে বেলা একটা পর্যন্ত চলত একটানা আসর। দোকানি ঝাঁপ বন্ধ করতেই রাস্তায় বেরিয়ে পড়তে হত। আবার এসে জড়ো হতাম সূর্য ডোবার আগেই। গুচ্ছের চা গিলতাম, ভাগাভাগি করে এর ওর পকেট হাতড়ে ধার মেটাতাম, অবস্থার ফেরে ধারের অঙ্ক বাড়াতাম। আর কথা, কথা আর বক্তৃতা। যুক্তি তক্কো আর গল্পের ফোয়ারা। অঢেল, অশেষ। এসবের মধ্যমণি ছিল ঋত্বিক।

কী এত কথা বলতাম? দিনের পর দিন? যা কখনও ফুরিয়ে যেত না?

কী বলতাম না? সূর্যের তলায় যা কিছু ছিল সবই তুলে ধরতাম চায়ের টেবিলে, বিচারে আর বিশ্লেষণে মুখর হয়ে উঠতাম প্রতি মুহূর্তে। কিন্তু বারবার নানা কথার মধ্যেও যে-প্রশ্নে, যে-তর্কে, যে-বিষয়ে ফিরে আসতাম তা হল সিনেমা। সিনেমা, সিনেমা আর সশস্ত্র বিপ্লব।

সিনেমাকে বিপ্লবের সঙ্গে জড়িয়ে নিয়ে আমরা চলতে শিখেছিলাম সেদিন থেকেই। ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির প্রতি অচঞ্চল বিশ্বাস রেখে সেদিন থেকেই আমরা অন্তঃসারশূন্য দেশজ সিনেমাকে তীব্রভাবে ঘৃণা করতে শিখেছিলাম, নতুন একটা ফ্রন্ট গড়ার জন্য মুখিয়ে উঠেছিলাম প্যারাডাইস কাফের ভাঙা চেয়ার-টেবিলে ঠাসা ওই ছোট্ট ঘরে, যে-ফ্রন্টে বিপ্লব আর সিনেমা হাত ধরাধরি করে চলবে। এই প্রাণচঞ্চল আসরগুলোয় যার গলা সবচেয়ে উঁচু পর্দায় বাধা ছিল সে হল ঋত্বিক।

 ১৯৭০-এর দশকে ঋত্বিক ঘটক। ছবি: সংগৃহীতঋত্বিক ছিল আমাদের মধ্যে সবচেয়ে বেপরোয়া। কোনো কিছুকেই তোয়াক্কা করত না ঋত্বিক, আগুপিছু ভাবার মতো ধৈর্য ছিল না। ধার আমরা সবাই করতাম। ধার করতাম কেন-না আমাদের কারুরই পকেটে পয়সা ছিল না। চা সিগারেট সবই আমাদের ধারে চলত, ধার করে সেই ধার মেটাতাম। ঋত্বিক চা খেত ঘন ঘন, সিগারেট খেত না। খেত বিডি। বিড়ি তখন এক পয়সায় তিন চারটে পাওয়া যেত। সেই বিড়িও ঋত্বিককে কিনতে হত ধারে। এক বিড়ির দোকানে শুধু বিড়ির জন্য ওর একবার ধার হয়েছিল আশি টাকা। ঋত্বিকের বেপরোয়া মেজাজের এ এক জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত। এই মেজাজ পরবর্তীকালে ঋত্বিকের দর্শক প্রত্যক্ষ করেছেন ‘অযান্ত্রিক’-এ, ‘মেঘে ঢাকা তারা’য়, ‘সুবর্ণরেখা’য়, ওর কথায় বার্তায়। ওর লিখিত বক্তব্যে।

সিনেমার রাজ্যে ঢোকা প্রায় যখন অসম্ভব মনে হচ্ছিল তখন আমরা সবাই ঠিক করলাম স্টুডিয়োর অসচ্ছল কর্মী ও কলাকুশলীদের নিয়ে একটি সক্রিয় ট্রেড ইউনিয়ন দল গড়ে ভুলব। শুরু হল আমাদের অভিযান। দল বেঁধে স্টুডিয়ো স্টুডিয়ো ঘুরতাম, কর্মীদের বাড়ি বাড়ি যেতাম, বলতাম, বোঝাতাম, নিজেদের শক্তি সম্পর্কে ভালোবাসা ও প্রত্যয় জাগিয়ে তোলার চেষ্টা চালাতাম এবং শেষ পর্যন্ত একদিন স্টুডিয়োর মধ্যে জোরালো আওয়াজ তুললাম। সেই আওয়াজী মিছিলের প্রথম সারির মানুষ রোগাটে লম্বাটে ঋত্বিক।

‘সুবর্ণরেখা’ সিনেমার সেটে ঋত্বিক ঘটক। ছবি: সংগৃহীত

একদিন, রাতারাতি দেখা গেল, স্টুডিয়ো চত্বরে প্রচণ্ড উত্তেজনা। স্টুডিয়োর কর্মকর্তারা ঋত্বিকের ওপর খড়্গহস্ত হয়ে উঠলেন। কারণ, আগের দিন বিকেলে স্টুডিয়োর কর্মীদের এক সভায় ঋত্বিক বলেছে স্টুডিয়োর ভেতরে মদ্যপান চলবে না। ঋত্বিকের মতে এ এক অসহ্য বেলেল্লাপনা, এর বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে সংঘবদ্ধভাবে। কর্মকর্তারা খেপে উঠলেন, বললেন, ব্যক্তিগত জীবনে চারিত্রিক শুদ্ধতা ও অশুদ্ধতার ওপর তাঁদের কোনো হাত নেই, কিন্তু ঋত্বিককথিত এহেন ঢালাও অপবাদ অন্যায় এবং অশালীন। আমাদের বাকিরা সবাই তখন ঋত্বিককে নিয়ে পড়লাম, কী করে ওকে সামলানো যায়। ওকে সামলাই তো কর্তারা বেঁকে বসছেন, কর্তাদের নরম করি তো ঋত্বিক গরম হয়ে উঠছে। শেষ পর্যন্ত অবস্থা আয়ত্তে এল। অনেক কাঠখড় পোড়াতে হল। কিন্তু মদ সম্পর্কে ঋত্বিকের ঘৃণা তীব্রতর হয়ে উঠল। অথচ এই মদই পরবর্তী জীবনে ওকে গ্রাস করে বসল, মদ থেকে আত্মমর্দন, আত্মমর্দন থেকে আত্মহননের দিকে দ্রুত এগিয়ে চলল।

তখন গণ-আন্দোলনের জোয়ারে সারা পশ্চিমবঙ্গ তোলপাড়। একদিকে সংগ্রামী জনতা, কৃষক-মজদুর-মধ্যবিত্তের আপসহীন লড়াই, অন্যদিকে শাসকের লাঠি, গুলি আর মারণযজ্ঞের নানা প্রক্রিয়া। কাকদ্বীপে লাল এলাকা তৈরি হয়েছিল সেই সময়ে। সেই সময়েই কৃষকরমণী অহল্যাকে তার পেটের বাচ্চাসমেত খুন করেছিল দেশজ পুলিশ। এবং শহিদ অহল্যাকে স্মরণ করে ও সাধারণ মানুষের সংগ্রামী মননকে শ্রদ্ধা জানিয়ে সলিল রচনা করেছিল এক মহৎ কবিতা— শপথ।

আমাদের ছোট্ট দলের সবাই ঠিক করলাম আমরা পালিয়ে যাব কাকদ্বীপে। আমরা শপথ নিলাম আমরা ছবি করব, নির্বাক ছবি, ষোলো মিলিমিটারে তুলব, লুকিয়ে লুকিয়ে কলকাতার কোনো ল্যাবরেটরিতে সেই ছবি ধোলাই করব, সম্পাদনা করব। তারপর লুকিয়ে লুকিয়ে গ্রামে গ্রামে দেখিয়ে বেড়াব। আমি চিত্রনাট্য লিখলাম, সলিল নামকরণ করল ‘জমির লড়াই’, ঋত্বিক ভাঙা একটা ক্যামেরা জোগাড় করল। কাকদ্বীপে অবশ্য যাওয়া হল না শেষ পর্যন্ত। কিন্তু সেই সুযোগে ক্যামেরাটাকে, তা সে যতই প্রাচীন আর ভাঙা হোক না কেন, নাড়াচাড়া করতে পেরে ঋত্বিক ছবি তোলার কলাকৌশলের অনেকটা রপ্ত করে নিল।

 ১৯৪০ এর দশকে ঋত্বিক ঘটক

আমরা ঝগড়াও করেছি প্রচুর। তখন এবং পরবর্তী জীবনে। ঝগড়া করেছি, মতান্তর ঘটেছে, মনান্তর ভয়ংকর চেহারা নিয়েছে এক এক সময়ে, আবার সময় আর ঘটনার মধ্য দিয়ে মিশে গিয়েছি আগেকার মতোই, এক সঙ্গে চলেছি।

ছেলেমানুষি করেছি অনেক: আমি, ঋত্বিক, আমরা সবাই। ছেলেমানুষিকে প্রশ্রয়ও দিয়েছি সবাই। অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটিয়েছি একাধিক। পরে বুঝতে পেরেছি, পুরোনো সম্পর্কে ফিরে যেতে চেষ্টা করেছি আপ্রাণ।

ফেব্রুয়ারির ছ-তারিখে রাত এগারোটা পাঁচ মিনিটে ঋত্বিক মরে গেল। ও মরবে আমরা জানতাম। ঋত্বিক নিজেও জানত। চব্বিশে ডিসেম্বর শেষবারের মতো জ্যান্ত অবস্থায় হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে আমাদের বাড়িতে যখন এল, দেখলাম ও ধুঁকছে। ধুঁকতে ধুঁকতে কথা বলছে, হাসছে। অনেক খেল, বলল, মদ আর খাব না। আবার বলল: আর বেশি দিন বাঁচব না। বলল: এ যাত্রায় তো টাঁসলাম না। দেখা যাক।

সাল ১৯৭৬। ঋত্বিক ঘটকের স্মরণ সভায়। ছবি: সংগৃহীতঋত্বিক সেদিন আমাকে দেখতে পায়নি। কিন্তু ওর পাশে আমি দাঁড়িয়ে ও তখন মরছে। কোমায় আচ্ছন্ন ঋত্বিক, দামাল ঋত্বিক, বেপরোয়া ঋত্বিক, অসহিষ্ণু ঋত্বিক, বিশৃঙ্খল ঋত্বিক। ঋত্বিক মরল।

কে জানে, হয়তো মরেই ঋত্বিক বাঁচল। শেষ কটা বছর ঋত্বিকের বেঁচে থাকাটাই একটা বিরাট অঘটন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তানজিন তিশার বিরুদ্ধে প্রতারণা ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
তানজিন তিশা। ছবি: সংগৃহীত
তানজিন তিশা। ছবি: সংগৃহীত

একদিকে প্রথম সিনেমার শুটিং, অন্যদিকে একের পর এক প্রতারণার অভিযোগ—সব মিলিয়ে আলোচনা-সমালোচনার কেন্দ্রে অভিনেত্রী তানজিন তিশা। তাঁর বিরুদ্ধে একটি অনলাইন ফ্যাশন হাউস থেকে শাড়ি নিয়ে প্রচার না করার অভিযোগ ওঠে গত মাসে। তবে অভিনেত্রীর দাবি, সেই শাড়ি উপহার হিসেবে পেয়েছেন তিনি। এ মাসের শুরুতে তিশার নামে মামলা করেছে ওই অনলাইনভিত্তিক ফ্যাশন হাউস অ্যাপোনিয়া। এবার শাড়ি নিয়ে ফেরত না দেওয়ার পাশাপাশি প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার নতুন অভিযোগ উঠল তিশার বিরুদ্ধে।

আজ রাজধানীর গুলশান থানায় প্রতারণা ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগে তিশার বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন সানায়া কুটিয়র ফ্যাশন হাউসের কর্ণধার ও ফ্যাশন ডিজাইনার আয়েশাহ আনুম ফায়যাহ সানায়া চৌধুরী। জিডিতে এই উদ্যোক্তা উল্লেখ করেন, ২০২৪ সালের ১৩ ডিসেম্বর তাঁর কাছ থেকে ৭৫ হাজার টাকা দামের একটি শাড়ি অনুষ্ঠানে পরার জন্য নেন তানজিন তিশা। শাড়িটি পরা শেষে পরের দিন ফেরত দেওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত তিনি শাড়িটি ফেরত দেননি। ১৫ ডিসেম্বর তিশার ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে শাড়িটি ফেরত চাইলে ১৭ ডিসেম্বর তাঁকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজসহ প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেন তিশা। এমনকি ডিবির মাধ্যমে হেনস্তা করবেন বলেও হুমকি দেন। এরপর এ বছরের ১৩ মার্চ এবং ১৮ মে এই উদ্যোক্তাকে তিশা জানান, তিনি শাড়ি ফেরত দেবেন না। সম্প্রতি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে তিশার বিরুদ্ধে একটি শাড়িবিষয়ক মামলার কথা জেনে ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে আবারও শাড়িটি ফেরত দেওয়ার অনুরোধ করেন এই উদ্যোক্তা। কিন্তু তিশা এবারও মামলার হুমকিসহ সম্মানহানি ও সমাজে হেয় করে ভাইরাল করার হুমকি দেন বলে জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া তিশার সঙ্গে কথোপকথনের রেকর্ড ও মেসেঞ্জারের স্ক্রিনশট তুলে রাখা আছে বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তা সানায়া।

তানজিন তিশা। ছবি: সংগৃহীত
তানজিন তিশা। ছবি: সংগৃহীত

সানায়া বলেন, ‘তিশা আগেও আমার কাছ থেকে পোশাক নিয়েছেন, তবে ফেরত পেতে সব সময় অনেক অনুরোধ করতে হয়েছে। এবার ৭৫ হাজার টাকার একটি শাড়ি নিয়ে আর ফেরত দিচ্ছেন না; বরং উল্টো হুমকি দিচ্ছেন। এখন নিজের নিরাপত্তা নিয়ে আমি শঙ্কিত।’

এ বিষয়ে গণমাধ্যমে তিশা জানান, একটি চক্র ইচ্ছা করে তাঁর বিরুদ্ধে এসব করছে। সবকিছু জেনে বিস্তারিত কথা বলবেন তিনি।

নারী উদ্যোক্তাদের অভিযোগে তিশা যখন সমালোচিত, সেই সময়ে অভিনেত্রী ব্যস্ত তাঁর প্রথম সিনেমার শুটিংয়ে। সাকিব ফাহাদের পরিচালনায় ‘সোলজার’ নামের সিনেমায় তিশার বিপরীতে আছেন শাকিব খান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রিয়াদ সিজনে শুরু হয়েছে বাংলাদেশ পর্ব: দর্শক মাতাবেন মনির খান, আসিফ আকবর, দীঘিরা

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১২ নভেম্বর ২০২৫, ০৮: ৫৩
(বাঁ থেকে) আসিফ আকবর, দীঘি ও মনির খান। ছবি: সংগৃহীত
(বাঁ থেকে) আসিফ আকবর, দীঘি ও মনির খান। ছবি: সংগৃহীত

সৌদি আরবের রিয়াদ শহরে ষষ্ঠবারের মতো শুরু হয়েছে রিয়াদ সিজন। গত ১০ অক্টোবর শুরু হওয়া এই আয়োজনে অংশ নিচ্ছে ১৪টি দেশ। প্রতিটি দেশের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে বিশেষ কয়েকটি দিন। ওই দিনগুলোয় নির্দিষ্ট দেশ তাদের সংগীত, নৃত্য, ঐতিহ্যবাহী পোশাক ও খাবার উপস্থাপন করবে। গতকাল শুরু হয়েছে বাংলাদেশ পর্ব। ‘বাংলাদেশ কালচার’ শিরোনামে এই আয়োজন চলবে ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত।

গত বছর রিয়াদ সিজনের কনসার্টে প্রথম অংশ নিয়েছিলেন ব্যান্ড তারকা নগর বাউল জেমস। শুধু রিয়াদ নয়, দেশটির বিভিন্ন শহরে থাকা বাংলাদেশিরা ভিড় করেছিলেন প্রিয় শিল্পীর কনসার্ট উপভোগ করতে। জেমস ছাড়া পারফর্ম করেছেন হাবিব ওয়াহিদ, পড়শিসহ অনেকে। এবারও থাকছে বাংলাদেশের জনপ্রিয় তারকাদের উপস্থিতি। অংশগ্রহণ করছেন সংগীতশিল্পী আসিফ আকবর, মনির খান, বেলাল খান, আকাশ মাহমুদ, ইশরাত জাহান জুঁই, পুষ্পিতা মিত্র, হুমায়রা ইশিকা, ডিজে তুরিন, অভিনেত্রী প্রার্থনা ফারদিন দীঘিসহ অনেকে।

গতকাল প্রথম দিনে রিয়াদের আল সুওয়াইদি পার্কে গান শোনান আকাশ মাহমুদ, মুহাম্মদ ইমরান, হুমায়রা ঈশিকা ও ডিজে তুরিন এমএনআর। আজ গান শোনাবেন বেলাল খান, পুষ্পিতা মিত্র, ইশরাত জাহান জুঁই এবং ডিজে তুরিন এমএনআর।

১৩ নভেম্বরও মঞ্চে থাকবেন বেলাল খান, মুহাম্মদ ইমরান, হুমায়রা ঈশিকা ও ডিজে তুরিন এমএনআর। ওই দিনের বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে গাইবেন মনির খান।

শেষ দিনের বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে গান শোনাবেন আসিফ আকবর। যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় দুই মাসের সংগীত সফর করে এসেছেন তিনি। এবার সৌদি আরবে মুগ্ধতা ছড়াবেন। শেষ দিনের আয়োজনে আরও গাইবেন আকাশ মাহমুদ, ডিজে তুরিন এমএনআর, পুষ্পিতা মিত্র ও ইশরাত জাহান জুঁই। এই আয়োজনে বিশেষ পারফর্মে অংশ নেবেন বলে নিশ্চিত করেছেন অভিনেত্রী দীঘি। তবে তিনি কোন ইভেন্টে পারফর্ম করবেন, তা জানা যায়নি।

১১ থেকে ১৪ নভেম্বর বাংলাদেশ কালচার পর্বে সংগীত ছাড়া তুলে ধরা হবে বাংলাদেশের নানা ঐতিহ্য। থাকছে নৃত্য, বাদ্যযন্ত্র, পোশাক, খাবারসহ নানা শিল্প ও সাংস্কৃতিক প্রদর্শনী।

২০১৯ সাল থেকে সৌদি সরকার নিয়মিত আয়োজন করে আসছে ‘রিয়াদ সিজন’। বিনোদন, সংস্কৃতি, খেলাসহ নানা আয়োজনে অংশ নিতে প্রতিবছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে রিয়াদে একত্র হন বিনোদনপ্রেমীরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘দেনা পাওনা’ সিনেমায় যুক্ত হলেন শিপন বাদ পড়লেন ইমন

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
শিপন মিত্র। ছবি: সংগৃহীত
শিপন মিত্র। ছবি: সংগৃহীত

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোটগল্প ‘দেনা পাওনা’ অবলম্বনে একই নামে সিনেমা বানাচ্ছেন সাদেক সিদ্দিকী। সরকারি অনুদানের এই সিনেমায় জুটি হয়ে অভিনয় করার কথা ছিল মামনুন ইমন ও প্রার্থনা ফারদিন দীঘির। তবে শুটিংয়ের আগে বদলে যায় নায়িকা। দীঘির পরিবর্তে সাদিয়া জাহান প্রভাকে নিয়ে গত আগস্টে শুরু হয় শুটিং। এবার দ্বিতীয় লটের শুটিং শুরুর আগে জানা গেল নায়ক পরিবর্তনের খবর। ইমনের পরিবর্তে দেনা পাওনা সিনেমায় যুক্ত হয়েছেন শিপন মিত্র। বিষয়টি আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছেন নির্মাতা সাদেক সিদ্দিকী।

প্রথম লটের শুটিংয়ের সময় নির্মাতা জানিয়েছিলেন, দীঘি না থাকলেও ইমন থাকছেন নায়ক হিসেবে। তবে গতকাল ইমনের জায়গায় শিপন মিত্রের সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন করেন নির্মাতা। ইমনকে বাদ দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে নির্মাতা জানান, বিদেশে থাকায় শিডিউলজনিত সমস্যায় শুটিং করতে পারছেন না ইমন, তাঁর পরিবর্তে নেওয়া হয়েছে শিপনকে।

সাদেক সিদ্দিকী বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রে আছেন ইমন। এ কারণে প্রথম লটের শুটিং তাঁকে ছাড়া করতে হয়েছে। এখন দ্বিতীয় লটের শুটিং শুরু করতে হবে। এটি সরকারি অনুদানের সিনেমা। তাই নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করার তাড়া থাকে। ইতিমধ্যে দ্বিতীয় লটের শুটিংয়ের পরিকল্পনা করা হয়েছে। কিন্তু ইমন জানিয়েছেন, ওই সময়ের মধ্যে দেশে ফিরতে পারছেন না তিনি। তাই তাঁর সঙ্গে আলাপ করেই নায়ক পরিবর্তন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে শিপনের সঙ্গে আমাদের চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। আশা করছি এ সিনেমায় সে ভালো করবে।’

মামনুন ইমনের মতো একই কারণে এই সিনেমায় দীঘির পরিবর্তে প্রভাকে চুক্তিবদ্ধ করা হয়। সে সময় নির্মাতা জানিয়েছিলেন, দেশের বাইরে থাকার কারণে সময় দিতে না পারায় দীঘিকে পরিবর্তন করা হয়েছে।

দেনা পাওনা সিনেমায় শিপন অভিনয় করবেন জমিদারের ছেলের চরিত্রে। যে কলকাতায় ম্যাজিস্ট্রেটের চাকরি করে। গ্রামের মধ্যবিত্ত ঘরের মেয়ে নিরুপমার সঙ্গে তার বিয়ে ঠিক হয়। কিন্তু অসচ্ছল পিতা বিয়ের পণ দিতে না পারায় লজ্জায় আত্মহত্যা করে নিরুপমা। নিরুপমার চরিত্রে অভিনয় করছেন প্রভা। এতে আরও অভিনয় করছেন ইরা শিকদার, তানিন সুবাহ, সুমনা সোমা, রিপা, অভি, সাব্বির প্রমুখ। নির্মাতা জানিয়েছেন, এ মাসের শেষ দিকে শুরু হবে দেনা পাওনা সিনেমার দ্বিতীয় লটের শুটিং।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কোরিয়ান ড্রামায় অভিনয়ের আগ্রহ রাশমিকার

বিনোদন ডেস্ক
রাশমিকা মান্দানা। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
রাশমিকা মান্দানা। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

রহস্য, রোমান্স কিংবা অ্যাকশন—সব গল্পেই সমানভাবে মানিয়ে যান রাশমিকা মান্দানা। কন্নড়, তেলুগু, তামিল, হিন্দি—বিভিন্ন ভাষার নানা ঘরানার সিনেমায় অভিনয় করে অভ্যস্ত তিনি। রাশমিকার নজর এবার কোরিয়ান ভাষার দিকে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়তা বেড়েছে কোরিয়ান ড্রামার। রাশমিকা নিজেও এসব সিরিজের ভক্ত। তাঁর খুব ইচ্ছা কোরিয়ান ড্রামায় অভিনয় করার।

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে রাশমিকা বলেন, ‘কোভিডের সময় কোরিয়ান ড্রামার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছিল আমার। ওই সময় থেকে কে-ড্রামা দেখা শুরু করেছিলাম। হাতে তখন অনেক সময় ছিল। প্রতিটি কে-ড্রামা সাধারণত ১৬ পর্বের। ফলে ১৬ ঘণ্টা খুব আনন্দে কাটানো যেত।’ অভিনেত্রী জানান, ‘ইটস ওকে টু নট বি ওকে’, ‘লাভ স্কাউট’, ‘আন্ডারকভার হাইস্কুল’, ‘হোয়েন লাইফ গিভস ইউ ট্যানজারিন’সহ অনেক কোরিয়ান সিরিজ রয়েছে তাঁর পছন্দের তালিকায়।

কোরিয়ান সিরিজে অভিনয়ের সুযোগ পেলে লুফে নেবেন বলে জানান রাশমিকা। তিনি বলেন, ‘যদি সুযোগ পাই, ব্যাপারটা খুব মজার হবে। সেই অপেক্ষায় আছি। তবে কোন ধরনের চরিত্রে অফার পাচ্ছি, সেটাও দেখার বিষয়। কারণ, সবাই জানে, চরিত্র নিয়ে আমি কতটা খুঁতখুঁতে।’

কোরিয়ান সিরিজ ছাড়াও জাপানি অ্যানিমের ভীষণ ভক্ত রাশমিকা। ছোটবেলা থেকে এখনো নিয়ম করে অ্যানিমে দেখেন তিনি। ‘নারুতো শিপুডেন’ দেখে বড় হয়েছেন। ২২টি সিজনে ৬০০-র বেশি পর্ব আছে এ অ্যানিমে সিরিজে। সবই দেখেছেন। নারুতো উজুমাকি তাঁর খুবই পছন্দের চরিত্র। এ ছাড়া ‘জুজুৎসু কাইসেন’, ‘ডিমন স্লেয়ার’, ‘উইন্ড ব্রেকার’, ‘দ্য অ্যাপোথেক্যারি ডায়েরিজ’ অ্যানিমেগুলোও নিয়মিত দেখেন। তাঁর ভাষায়, ‘অ্যানিমে দেখেই বড় হয়েছি। এটা আমার কমফোর্ট জোন’।

সিনেমা আর ব্যক্তিজীবন—সব মিলিয়ে বছরজুড়ে আলোচনায় আছেন রাশমিকা মান্দানা। বিজয় দেবরাকোন্ডার সঙ্গে বাগদান নিয়ে আলোচনা তো আছেই। প্রেক্ষাগৃহেও একের পর এক সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে তাঁর। গত ২১ অক্টোবর মুক্তি পাওয়া ভৌতিক সিনেমা ‘থাম্মা’ এরই মধ্যে বক্স অফিসে ২০৬ কোটি রুপি পেরিয়েছে। এতে রাশমিকা ছাড়াও আছেন আয়ুষ্মান খুরানা ও নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকী। এ সাফল্যের মাঝেই ৭ নভেম্বর হলে এসেছে তাঁর আরও এক সিনেমা ‘দ্য গার্লফ্রেন্ড’। এটিও ভালো সাড়া পাচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত