Ajker Patrika

ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি: স্কুলিং পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে গণজমায়েতের ডাক শিক্ষা ক্যাডারদের

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০০: ৪২
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজধানীর সরকারি সাত কলেজ নিয়ে প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাদেশের খসড়ার স্কুলিং পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের কার্যালয় শিক্ষা ভবন চত্বরে গণজমায়েত কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন কলেজগুলোর বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত শিক্ষকেরা।

তাঁরা প্রস্তাবিত নতুন বিশ্ববিদ্যালয় কাঠামোর প্রশাসনিক, শিক্ষক পদসহ সর্বস্তরে স্থায়ীভাবে শুধু বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করে অধ্যাদেশ জারির দাবি জানিয়েছেন।

সোমবার (১ ডিসেম্বর) রাতে রাজধানীর তোপখানা রোডে শিক্ষাবিদ ইনস্টিটিউটে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন সাত কলেজ স্বাতন্ত্র্য রক্ষা পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক মাহফিল আরা বেগম। কর্মসূচি তুলে ধরে তিনি বলেন, ৩ ডিসেম্বর সারা দেশের সব সরকারি কলেজে মানববন্ধন ও ব্রিফিং, ৪ ডিসেম্বর পাবলিক পরীক্ষা বন্ধসহ সাত কলেজে সর্বাত্মক কর্মবিরতি, ৬ ডিসেম্বর বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের সারা দেশের সব সদস্যের অংশগ্রহণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে মহাসমাবেশ করা হবে। যদি ঢাকার ৭ কলেজের অন্যতম প্রধান অংশীদার বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের মতামত ও দাবি উপেক্ষা করে চূড়ান্ত অধ্যাদেশ জারি করা হয়, তাহলে তাৎক্ষণিকভাবে দেশের সব সরকারি কলেজ ও দপ্তরে অনির্দিষ্টকালের জন্য সর্বাত্মক কর্মবিরতি (টোটাল শাটডাউন) শুরু হয়ে যাবে।

২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের শ্রেণি কার্যক্রম নির্বিঘ্নে পরিচালনার স্বার্থে প্রস্তাবিত নতুন বিশ্ববিদ্যালয় কাঠামোর সর্বস্তরে স্থায়ীভাবে শুধু বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করে অধ্যাদেশ জারির দাবি তুলে তিনি এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতি অনুরোধ জানান।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে অন্তর্বর্তী সরকার রাজধানীর বড় সাতটি কলেজকে নিয়ে ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি গঠনের প্রক্রিয়া গুছিয়ে এনেছে। তবে এ নিয়ে কলেজগুলোর স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থী, উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছেন।

গত ২৪ সেপ্টেম্বর ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাদেশের খসড়া প্রকাশ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। খসড়ায় সাতটি কলেজকে চারটি স্কুলে বিভক্ত করে ‘ইন্টারডিসিপ্লিনারি’ কাঠামোতে বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাবনা অনুযায়ী কলেজগুলোর উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের পাঠদানও চালু থাকবে।

প্রস্তাবিত মডেলের ‘সংকট’ তুলে ধরে অধ্যাপক মাহফিল আরা বেগম বলেন, প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয় মডেল সরকারি কলেজগুলোর সক্ষমতা সংকোচনের ঝুঁকি তৈরি করেছে, যা শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ, সামগ্রিক শিক্ষাব্যবস্থা ও সামাজিক সমতার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। সরকারি কলেজে আসনসংখ্যা কমে গেলে শিক্ষার্থীরা বাধ্য হয়ে উচ্চ ফি-নির্ভর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে, বেসরকারি কলেজে ভর্তি হতে বাধ্য হবেন; ফলে শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ ত্বরান্বিত হবে। অথচ জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ উচ্চশিক্ষার প্রসারের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।

অংশীজনদের মতামত গ্রহণের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার আগেই শ্রেণি কার্যক্রম শুরুর ঘোষণা উদ্বেগজনক দাবি করে তিনি বলেন, অধ্যাদেশের ৬-এর ২(ক) ধারায় বলা আছে, ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠিত হইবার পূর্বে উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের কলেজসমূহের বিরাজমান পরিচয়, বৈশিষ্ট্য, অবকাঠামো ও অন্যান্য বিদ্যমান সুযোগ-সুবিধা অক্ষুণ্ণ থাকিবে; শুধু তা-ই নয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ব্যবহৃত “উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা” বাক্যাংশটি উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাকাঠামো বিলুপ্ত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি করেছে, যা সাত কলেজ ইস্যুকে আরও জটিল করবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...