নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

চীন বাংলাদেশের পাটশিল্পে বড় পরিসরে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। আজ শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে চার দিনব্যাপী ‘কৃষি ও খাদ্যে রাজনৈতিক অঙ্গীকার’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের তৃতীয় দিনের প্রথম অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
অধিবেশনের বিষয় ছিল ‘কৃষি ও খাদ্যে বিনিয়োগ: মানসম্পন্ন কৃষি উপকরণ ও প্রক্রিয়াজাত পণ্য এবং কৃষির বাণিজ্যিকীকরণে ভ্যালুচেইন গঠন’। বাংলাদেশ কৃষি সাংবাদিক ফোরাম (বিএজেএফ) এই সম্মেলনের আয়োজন করেছে।
বিএজেএফের সাধারণ সম্পাদক আবু খালিদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি সাহানোয়ার সাইদ শাহীন।
শফিকুল আলম বলেন, ‘পাটশিল্পে বৃহৎ পরিসরে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে চীন। বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ও সম্ভাবনাময় এ খাতকে কেন্দ্র করে চীনা উদ্যোক্তারা কাঁচাপাট থেকে শুরু করে প্রস্তুত পাটপণ্যসহ সব ক্ষেত্রেই যৌথ উদ্যোগ, প্রযুক্তি স্থানান্তর ও আধুনিক উৎপাদন সুবিধা গড়তে চাচ্ছেন। আমরা আশা করছি, এই আগ্রহ বাস্তবায়িত হলে দেশের পাটশিল্পে নতুন কর্মসংস্থান, রপ্তানি আয় এবং সামগ্রিক অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য গতি আসবে।’
শফিকুল আলম বলেন, ‘জুট ডাইভারসিফিকেশন (পাটপণ্য বৈচিত্র্যকরণ) নিয়ে আমরা যতই কথা বলি না কেন, বাস্তবে তেমন অগ্রগতি নেই। কারণ, পাট পচানোর মতো কাজ এখন আর কেউ করতে চান না। পুরোনো কষ্টকর পদ্ধতি মানুষের আগ্রহ কমিয়ে দিয়েছে। কিন্তু চীনা বিনিয়োগকারীরা আধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে বাংলাদেশে এক মিলিয়ন টন পাট প্রক্রিয়াকরণ, বায়োফার্টিলাইজার, এনার্জি ও সাশ্রয়ী প্লাস্টিকের বিকল্প তৈরি করতে আগ্রহী। সঠিক প্রযুক্তি যুক্ত হলে জুট আবারও বৃহৎ বৈশ্বিক বাজার দখল করতে পারে। কারণ, বাংলাদেশের গতিপথ, ভবিষ্যৎ এবং রাষ্ট্র হিসেবে আমাদের যাত্রা সবকিছুই বড় পরিমাণে নির্ধারণ করে কৃষি খাত। কৃষি শুধু খাদ্যনিরাপত্তা নয়, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, বৈদেশিক সম্পর্ক, এমনকি অর্থনৈতিক সক্ষমতাকেও গভীরভাবে প্রভাবিত করে।’
১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের প্রসঙ্গ তুলে শফিকুল আলম বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫৪ বছরের ইতিহাসে বাংলাদেশের সবচেয়ে ভয়াবহ বছর ছিল ১৯৭৪।’ ড. নাওমি হোসেনের সাম্প্রতিক প্রকাশিত গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, ‘গবেষকের হিসাবে সেই দুর্ভিক্ষে প্রায় ১৫ লাখ মানুষ মারা গিয়েছিল।’
শফিকুল আলম আরও বলেন, ‘তৎকালীন সরকারের অদক্ষতা, দুর্বল রিজার্ভ, বৈশ্বিক কৃষিপণ্যের রাজনীতি এবং বাজারব্যবস্থার ব্যর্থতা দুর্ভিক্ষকে তীব্রতর করেছিল। একই সঙ্গে খাদ্য মজুতদারি ও অস্থিতিশীল বাজার পরিস্থিতি সংকটকে আরও বাড়িয়ে দেয়।’
শফিকুল আলম যোগ করেন, ১৯৭৪ সালের সেই অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের পরবর্তী প্রতিটি সরকারের নীতিনির্ধারণে গভীর প্রভাব ফেলেছে। তা ছাড়া খাদ্য আমদানিনির্ভর দেশগুলোর জন্য যেকোনো বৈশ্বিক টানাপোড়েনে পরিস্থিতি দ্রুত সংকটে গড়াতে পারে।
শফিকুল আলম আরও বলেন, বর্তমানে ছয় থেকে আট মিলিয়ন টন খাদ্যঘাটতি পূরণে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বাজারের ওপর নির্ভরশীল। অথচ ইউক্রেন যুদ্ধ, মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা বা কোনো দেশের হঠাৎ রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা এসবের কারণে খাদ্য আমদানি কঠিন হয়ে ওঠে। তাই খাদ্যনিরাপত্তার জন্য শক্তিশালী রিজার্ভ, পর্যাপ্ত স্টক এবং দ্রুত আমদানির সক্ষমতা অপরিহার্য।
কৃষিতে বর্তমান সরকারের অগ্রাধিকারের কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ইউনূস স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, বাংলাদেশকে নেদারল্যান্ডসের মতো কৃষিতে প্রযুক্তিনির্ভর উৎপাদন বাড়াতে হবে। নেদারল্যান্ডস ছোট দেশ হয়েও বছরে ১৩৩ বিলিয়ন ডলারের কৃষিপণ্য রপ্তানি করে। বাংলাদেশেরও সীমিত জমিতে উৎপাদন দ্বিগুণ-তিন গুণ বাড়ানো সম্ভব। কিন্তু শুধু উৎপাদন বাড়লেই হবে না—ক্ষুদ্র কৃষকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাও জরুরি।
প্রেস সচিব বলেন, হঠাৎ বড় আকারে ফসল উঠলে দাম পড়ে যায় এবং কৃষক ন্যায্যমূল্য পান না। তাই প্রতিটি গ্রামে ছোট আকারে কোল্ড স্টোরেজ, আধুনিক সংরক্ষণব্যবস্থা, নতুন বাজার এবং রপ্তানির সুযোগ তৈরি করা প্রয়োজন। কৃষি, রাজনীতি ও বৈশ্বিক বাণিজ্য একে অন্যের সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত। যেমন—চীন-যুক্তরাষ্ট্রের সয়াবিন সংকটের সময়ে বাংলাদেশ সয়াবিন আমদানি করে যুক্তরাষ্ট্রের একটি শক্তিশালী ফার্ম লবিকে বাংলাদেশের অনুকূলে এনেছে। এটি নতুন ধরনের ফরেন পলিসি অ্যাপ্রোচ।
স্টোরেজ সক্ষমতা বাড়ানোর প্রসঙ্গে প্রেস সচিব বলেন, বর্তমানে ২০ লাখ টন শস্য সংরক্ষণ করা হয় ৷ এটি বাড়িয়ে ৫০ লাখ টনে নেওয়া উচিত। যাতে বৈশ্বিক সংকটের সময়ে বাজার স্থিতিশীল রাখা যায়। একই সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে লবণাক্ততার বিস্তার, জমির ব্যবহার কমে আসাসহ বিভিন্ন বিষয় মাথায় রেখে নতুন জাত, নতুন প্রযুক্তি এবং খাতভিত্তিক গবেষণা জোরদার করার আহ্বান জানান তিনি।
আবাসন বিস্তার করে কৃষিজমি নষ্ট করার প্রবণতার কঠোর সমালোচনা করে শফিকুল আলম বলেন, গ্রামের বাড়িঘর ফাঁকা পড়ে থাকা, কিন্তু কৃষিজমি ক্রমাগত কমে যাওয়া—এই বাস্তবতা মোকাবিলায় পরিকল্পিত গ্রাম উন্নয়ন জরুরি।
বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ কৃষির বাইরে নয়, উল্লেখ করে প্রেস সচিব আরও বলেন, ‘যে সরকার আসবে, যারাই নীতিনির্ধারক হোক, সবারই লক্ষ্য হওয়া উচিত খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা, উদ্বৃত্ত উৎপাদন এবং কৃষিজমি ও কৃষককে সুরক্ষা দেওয়া। আমরা হয়তো নেদারল্যান্ডস হব না, কিন্তু লক্ষ্য রেখে ১০ বছর কাজ করলে অনেকটাই এগোনো সম্ভব।’
সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পার্টনার প্রোগ্রামের এজেন্সি প্রোগ্রাম ডিরেক্টর ও উপসচিব ড. মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল ফারুক বলেন, ‘বাংলাদেশে কৃষি উৎপাদন উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়লেও বাজার সংযোগ দুর্বল এবং বিপণনব্যবস্থার সীমাবদ্ধতার কারণে কৃষক ন্যায্যমূল্য পান না। পার্টনার প্রজেক্টের ১০টি ডিএলআই বাস্তবায়নে সাতটি সরকারি সংস্থা যুক্ত হলেও সমন্বয় ঘাটতি রয়েছে। গ্যাপভিত্তিক নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন, ভ্যালুচেইন প্রমোশনাল বডি গঠন এবং বাজারব্যবস্থা শক্তিশালী করার মাধ্যমে কৃষকের প্রকৃত লাভ নিশ্চিত করা এখন জরুরি।’
এক্সপোর্ট অ্যান্ড প্রাইভেট সেক্টর কনসালট্যান্ট ড. মো. মাহবুবুল আলম বলেন, পার্টনার কর্মসূচির মাধ্যমে সারা দেশে ২০ হাজার কৃষি উদ্যোক্তা গড়ে তোলা হচ্ছে। উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ, ইনকিউবেশন সাপোর্ট, সার্টিফিকেশন সহায়তা এবং যন্ত্রপাতি কেনায় ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে। নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে আসনের ৬০ শতাংশ সংরক্ষিত। আটটি বিষয়ে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ এবং ১৯টি প্রতিষ্ঠানকে যুক্ত করে উদ্যোক্তাদের ভ্যালুচেইনে প্রবেশ সহজ করা হচ্ছে। উৎপাদিত পণ্যের মাত্র পাঁচ ভাগ প্রক্রিয়াজাত হওয়ায় খাদ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্পে বড় সম্ভাবনার কথাও তিনি উল্লেখ করেন।
অধিবেশনে প্রবন্ধ উপস্থাপনে পার্টনার প্রকল্পের (ডিএএম উইং) সিনিয়র মনিটরিং অফিসার মো. বায়েজিদ বোস্তামী বলেন, কৃষি ব্যবসায় যুবক ও নারীদের সম্পৃক্ত করে ২০ হাজার উদ্যোক্তা তৈরি এবং পাঁচটি প্রধান কৃষিপণ্যের ভ্যালুচেইন শক্তিশালী করার কাজ চলছে। আম, আলু, কাঁঠাল, টমেটো ও সুগন্ধি চাল—এই পাঁচ পণ্যে ভ্যালুচেইন প্রমোশনাল বডি গঠনের কাঠামো ও নীতিমালা তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যে ৪২৬টি ম্যাপস ও ৬৬টি উপজেলা সংগঠন গঠিত হয়েছে। এসব কাঠামো উৎপাদক থেকে বাজার পর্যন্ত শক্তিশালী সংযোগ স্থাপন করবে এবং রপ্তানি সম্ভাবনা বাড়াবে।
বিএজেএফের ২৫ বছরপূর্তি উপলক্ষে ঢাকা ট্রিবিউনের সম্পাদক ও বিএজেএফের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য রিয়াজ আহমেদ; কৃষি ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব এবং বিএজেএফের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য রেজাউল করিম সিদ্দিক, বিএজেএফের সাবেক সভাপতি এবং ঢাকা স্ট্রিমের প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশক গোলাম ইফতেখার মাহমুদ এবং বর্তমান সভাপতি সাহানোয়ার সাঈদ শাহীনের হাতে সম্মাননা তুলে দেওয়া হয়।

চীন বাংলাদেশের পাটশিল্পে বড় পরিসরে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। আজ শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে চার দিনব্যাপী ‘কৃষি ও খাদ্যে রাজনৈতিক অঙ্গীকার’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের তৃতীয় দিনের প্রথম অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
অধিবেশনের বিষয় ছিল ‘কৃষি ও খাদ্যে বিনিয়োগ: মানসম্পন্ন কৃষি উপকরণ ও প্রক্রিয়াজাত পণ্য এবং কৃষির বাণিজ্যিকীকরণে ভ্যালুচেইন গঠন’। বাংলাদেশ কৃষি সাংবাদিক ফোরাম (বিএজেএফ) এই সম্মেলনের আয়োজন করেছে।
বিএজেএফের সাধারণ সম্পাদক আবু খালিদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি সাহানোয়ার সাইদ শাহীন।
শফিকুল আলম বলেন, ‘পাটশিল্পে বৃহৎ পরিসরে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে চীন। বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ও সম্ভাবনাময় এ খাতকে কেন্দ্র করে চীনা উদ্যোক্তারা কাঁচাপাট থেকে শুরু করে প্রস্তুত পাটপণ্যসহ সব ক্ষেত্রেই যৌথ উদ্যোগ, প্রযুক্তি স্থানান্তর ও আধুনিক উৎপাদন সুবিধা গড়তে চাচ্ছেন। আমরা আশা করছি, এই আগ্রহ বাস্তবায়িত হলে দেশের পাটশিল্পে নতুন কর্মসংস্থান, রপ্তানি আয় এবং সামগ্রিক অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য গতি আসবে।’
শফিকুল আলম বলেন, ‘জুট ডাইভারসিফিকেশন (পাটপণ্য বৈচিত্র্যকরণ) নিয়ে আমরা যতই কথা বলি না কেন, বাস্তবে তেমন অগ্রগতি নেই। কারণ, পাট পচানোর মতো কাজ এখন আর কেউ করতে চান না। পুরোনো কষ্টকর পদ্ধতি মানুষের আগ্রহ কমিয়ে দিয়েছে। কিন্তু চীনা বিনিয়োগকারীরা আধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে বাংলাদেশে এক মিলিয়ন টন পাট প্রক্রিয়াকরণ, বায়োফার্টিলাইজার, এনার্জি ও সাশ্রয়ী প্লাস্টিকের বিকল্প তৈরি করতে আগ্রহী। সঠিক প্রযুক্তি যুক্ত হলে জুট আবারও বৃহৎ বৈশ্বিক বাজার দখল করতে পারে। কারণ, বাংলাদেশের গতিপথ, ভবিষ্যৎ এবং রাষ্ট্র হিসেবে আমাদের যাত্রা সবকিছুই বড় পরিমাণে নির্ধারণ করে কৃষি খাত। কৃষি শুধু খাদ্যনিরাপত্তা নয়, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, বৈদেশিক সম্পর্ক, এমনকি অর্থনৈতিক সক্ষমতাকেও গভীরভাবে প্রভাবিত করে।’
১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের প্রসঙ্গ তুলে শফিকুল আলম বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫৪ বছরের ইতিহাসে বাংলাদেশের সবচেয়ে ভয়াবহ বছর ছিল ১৯৭৪।’ ড. নাওমি হোসেনের সাম্প্রতিক প্রকাশিত গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, ‘গবেষকের হিসাবে সেই দুর্ভিক্ষে প্রায় ১৫ লাখ মানুষ মারা গিয়েছিল।’
শফিকুল আলম আরও বলেন, ‘তৎকালীন সরকারের অদক্ষতা, দুর্বল রিজার্ভ, বৈশ্বিক কৃষিপণ্যের রাজনীতি এবং বাজারব্যবস্থার ব্যর্থতা দুর্ভিক্ষকে তীব্রতর করেছিল। একই সঙ্গে খাদ্য মজুতদারি ও অস্থিতিশীল বাজার পরিস্থিতি সংকটকে আরও বাড়িয়ে দেয়।’
শফিকুল আলম যোগ করেন, ১৯৭৪ সালের সেই অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের পরবর্তী প্রতিটি সরকারের নীতিনির্ধারণে গভীর প্রভাব ফেলেছে। তা ছাড়া খাদ্য আমদানিনির্ভর দেশগুলোর জন্য যেকোনো বৈশ্বিক টানাপোড়েনে পরিস্থিতি দ্রুত সংকটে গড়াতে পারে।
শফিকুল আলম আরও বলেন, বর্তমানে ছয় থেকে আট মিলিয়ন টন খাদ্যঘাটতি পূরণে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বাজারের ওপর নির্ভরশীল। অথচ ইউক্রেন যুদ্ধ, মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা বা কোনো দেশের হঠাৎ রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা এসবের কারণে খাদ্য আমদানি কঠিন হয়ে ওঠে। তাই খাদ্যনিরাপত্তার জন্য শক্তিশালী রিজার্ভ, পর্যাপ্ত স্টক এবং দ্রুত আমদানির সক্ষমতা অপরিহার্য।
কৃষিতে বর্তমান সরকারের অগ্রাধিকারের কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ইউনূস স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, বাংলাদেশকে নেদারল্যান্ডসের মতো কৃষিতে প্রযুক্তিনির্ভর উৎপাদন বাড়াতে হবে। নেদারল্যান্ডস ছোট দেশ হয়েও বছরে ১৩৩ বিলিয়ন ডলারের কৃষিপণ্য রপ্তানি করে। বাংলাদেশেরও সীমিত জমিতে উৎপাদন দ্বিগুণ-তিন গুণ বাড়ানো সম্ভব। কিন্তু শুধু উৎপাদন বাড়লেই হবে না—ক্ষুদ্র কৃষকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাও জরুরি।
প্রেস সচিব বলেন, হঠাৎ বড় আকারে ফসল উঠলে দাম পড়ে যায় এবং কৃষক ন্যায্যমূল্য পান না। তাই প্রতিটি গ্রামে ছোট আকারে কোল্ড স্টোরেজ, আধুনিক সংরক্ষণব্যবস্থা, নতুন বাজার এবং রপ্তানির সুযোগ তৈরি করা প্রয়োজন। কৃষি, রাজনীতি ও বৈশ্বিক বাণিজ্য একে অন্যের সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত। যেমন—চীন-যুক্তরাষ্ট্রের সয়াবিন সংকটের সময়ে বাংলাদেশ সয়াবিন আমদানি করে যুক্তরাষ্ট্রের একটি শক্তিশালী ফার্ম লবিকে বাংলাদেশের অনুকূলে এনেছে। এটি নতুন ধরনের ফরেন পলিসি অ্যাপ্রোচ।
স্টোরেজ সক্ষমতা বাড়ানোর প্রসঙ্গে প্রেস সচিব বলেন, বর্তমানে ২০ লাখ টন শস্য সংরক্ষণ করা হয় ৷ এটি বাড়িয়ে ৫০ লাখ টনে নেওয়া উচিত। যাতে বৈশ্বিক সংকটের সময়ে বাজার স্থিতিশীল রাখা যায়। একই সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে লবণাক্ততার বিস্তার, জমির ব্যবহার কমে আসাসহ বিভিন্ন বিষয় মাথায় রেখে নতুন জাত, নতুন প্রযুক্তি এবং খাতভিত্তিক গবেষণা জোরদার করার আহ্বান জানান তিনি।
আবাসন বিস্তার করে কৃষিজমি নষ্ট করার প্রবণতার কঠোর সমালোচনা করে শফিকুল আলম বলেন, গ্রামের বাড়িঘর ফাঁকা পড়ে থাকা, কিন্তু কৃষিজমি ক্রমাগত কমে যাওয়া—এই বাস্তবতা মোকাবিলায় পরিকল্পিত গ্রাম উন্নয়ন জরুরি।
বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ কৃষির বাইরে নয়, উল্লেখ করে প্রেস সচিব আরও বলেন, ‘যে সরকার আসবে, যারাই নীতিনির্ধারক হোক, সবারই লক্ষ্য হওয়া উচিত খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা, উদ্বৃত্ত উৎপাদন এবং কৃষিজমি ও কৃষককে সুরক্ষা দেওয়া। আমরা হয়তো নেদারল্যান্ডস হব না, কিন্তু লক্ষ্য রেখে ১০ বছর কাজ করলে অনেকটাই এগোনো সম্ভব।’
সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পার্টনার প্রোগ্রামের এজেন্সি প্রোগ্রাম ডিরেক্টর ও উপসচিব ড. মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল ফারুক বলেন, ‘বাংলাদেশে কৃষি উৎপাদন উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়লেও বাজার সংযোগ দুর্বল এবং বিপণনব্যবস্থার সীমাবদ্ধতার কারণে কৃষক ন্যায্যমূল্য পান না। পার্টনার প্রজেক্টের ১০টি ডিএলআই বাস্তবায়নে সাতটি সরকারি সংস্থা যুক্ত হলেও সমন্বয় ঘাটতি রয়েছে। গ্যাপভিত্তিক নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন, ভ্যালুচেইন প্রমোশনাল বডি গঠন এবং বাজারব্যবস্থা শক্তিশালী করার মাধ্যমে কৃষকের প্রকৃত লাভ নিশ্চিত করা এখন জরুরি।’
এক্সপোর্ট অ্যান্ড প্রাইভেট সেক্টর কনসালট্যান্ট ড. মো. মাহবুবুল আলম বলেন, পার্টনার কর্মসূচির মাধ্যমে সারা দেশে ২০ হাজার কৃষি উদ্যোক্তা গড়ে তোলা হচ্ছে। উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ, ইনকিউবেশন সাপোর্ট, সার্টিফিকেশন সহায়তা এবং যন্ত্রপাতি কেনায় ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে। নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে আসনের ৬০ শতাংশ সংরক্ষিত। আটটি বিষয়ে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ এবং ১৯টি প্রতিষ্ঠানকে যুক্ত করে উদ্যোক্তাদের ভ্যালুচেইনে প্রবেশ সহজ করা হচ্ছে। উৎপাদিত পণ্যের মাত্র পাঁচ ভাগ প্রক্রিয়াজাত হওয়ায় খাদ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্পে বড় সম্ভাবনার কথাও তিনি উল্লেখ করেন।
অধিবেশনে প্রবন্ধ উপস্থাপনে পার্টনার প্রকল্পের (ডিএএম উইং) সিনিয়র মনিটরিং অফিসার মো. বায়েজিদ বোস্তামী বলেন, কৃষি ব্যবসায় যুবক ও নারীদের সম্পৃক্ত করে ২০ হাজার উদ্যোক্তা তৈরি এবং পাঁচটি প্রধান কৃষিপণ্যের ভ্যালুচেইন শক্তিশালী করার কাজ চলছে। আম, আলু, কাঁঠাল, টমেটো ও সুগন্ধি চাল—এই পাঁচ পণ্যে ভ্যালুচেইন প্রমোশনাল বডি গঠনের কাঠামো ও নীতিমালা তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যে ৪২৬টি ম্যাপস ও ৬৬টি উপজেলা সংগঠন গঠিত হয়েছে। এসব কাঠামো উৎপাদক থেকে বাজার পর্যন্ত শক্তিশালী সংযোগ স্থাপন করবে এবং রপ্তানি সম্ভাবনা বাড়াবে।
বিএজেএফের ২৫ বছরপূর্তি উপলক্ষে ঢাকা ট্রিবিউনের সম্পাদক ও বিএজেএফের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য রিয়াজ আহমেদ; কৃষি ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব এবং বিএজেএফের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য রেজাউল করিম সিদ্দিক, বিএজেএফের সাবেক সভাপতি এবং ঢাকা স্ট্রিমের প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশক গোলাম ইফতেখার মাহমুদ এবং বর্তমান সভাপতি সাহানোয়ার সাঈদ শাহীনের হাতে সম্মাননা তুলে দেওয়া হয়।
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

চীন বাংলাদেশের পাটশিল্পে বড় পরিসরে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। আজ শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে চার দিনব্যাপী ‘কৃষি ও খাদ্যে রাজনৈতিক অঙ্গীকার’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের তৃতীয় দিনের প্রথম অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
অধিবেশনের বিষয় ছিল ‘কৃষি ও খাদ্যে বিনিয়োগ: মানসম্পন্ন কৃষি উপকরণ ও প্রক্রিয়াজাত পণ্য এবং কৃষির বাণিজ্যিকীকরণে ভ্যালুচেইন গঠন’। বাংলাদেশ কৃষি সাংবাদিক ফোরাম (বিএজেএফ) এই সম্মেলনের আয়োজন করেছে।
বিএজেএফের সাধারণ সম্পাদক আবু খালিদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি সাহানোয়ার সাইদ শাহীন।
শফিকুল আলম বলেন, ‘পাটশিল্পে বৃহৎ পরিসরে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে চীন। বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ও সম্ভাবনাময় এ খাতকে কেন্দ্র করে চীনা উদ্যোক্তারা কাঁচাপাট থেকে শুরু করে প্রস্তুত পাটপণ্যসহ সব ক্ষেত্রেই যৌথ উদ্যোগ, প্রযুক্তি স্থানান্তর ও আধুনিক উৎপাদন সুবিধা গড়তে চাচ্ছেন। আমরা আশা করছি, এই আগ্রহ বাস্তবায়িত হলে দেশের পাটশিল্পে নতুন কর্মসংস্থান, রপ্তানি আয় এবং সামগ্রিক অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য গতি আসবে।’
শফিকুল আলম বলেন, ‘জুট ডাইভারসিফিকেশন (পাটপণ্য বৈচিত্র্যকরণ) নিয়ে আমরা যতই কথা বলি না কেন, বাস্তবে তেমন অগ্রগতি নেই। কারণ, পাট পচানোর মতো কাজ এখন আর কেউ করতে চান না। পুরোনো কষ্টকর পদ্ধতি মানুষের আগ্রহ কমিয়ে দিয়েছে। কিন্তু চীনা বিনিয়োগকারীরা আধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে বাংলাদেশে এক মিলিয়ন টন পাট প্রক্রিয়াকরণ, বায়োফার্টিলাইজার, এনার্জি ও সাশ্রয়ী প্লাস্টিকের বিকল্প তৈরি করতে আগ্রহী। সঠিক প্রযুক্তি যুক্ত হলে জুট আবারও বৃহৎ বৈশ্বিক বাজার দখল করতে পারে। কারণ, বাংলাদেশের গতিপথ, ভবিষ্যৎ এবং রাষ্ট্র হিসেবে আমাদের যাত্রা সবকিছুই বড় পরিমাণে নির্ধারণ করে কৃষি খাত। কৃষি শুধু খাদ্যনিরাপত্তা নয়, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, বৈদেশিক সম্পর্ক, এমনকি অর্থনৈতিক সক্ষমতাকেও গভীরভাবে প্রভাবিত করে।’
১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের প্রসঙ্গ তুলে শফিকুল আলম বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫৪ বছরের ইতিহাসে বাংলাদেশের সবচেয়ে ভয়াবহ বছর ছিল ১৯৭৪।’ ড. নাওমি হোসেনের সাম্প্রতিক প্রকাশিত গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, ‘গবেষকের হিসাবে সেই দুর্ভিক্ষে প্রায় ১৫ লাখ মানুষ মারা গিয়েছিল।’
শফিকুল আলম আরও বলেন, ‘তৎকালীন সরকারের অদক্ষতা, দুর্বল রিজার্ভ, বৈশ্বিক কৃষিপণ্যের রাজনীতি এবং বাজারব্যবস্থার ব্যর্থতা দুর্ভিক্ষকে তীব্রতর করেছিল। একই সঙ্গে খাদ্য মজুতদারি ও অস্থিতিশীল বাজার পরিস্থিতি সংকটকে আরও বাড়িয়ে দেয়।’
শফিকুল আলম যোগ করেন, ১৯৭৪ সালের সেই অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের পরবর্তী প্রতিটি সরকারের নীতিনির্ধারণে গভীর প্রভাব ফেলেছে। তা ছাড়া খাদ্য আমদানিনির্ভর দেশগুলোর জন্য যেকোনো বৈশ্বিক টানাপোড়েনে পরিস্থিতি দ্রুত সংকটে গড়াতে পারে।
শফিকুল আলম আরও বলেন, বর্তমানে ছয় থেকে আট মিলিয়ন টন খাদ্যঘাটতি পূরণে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বাজারের ওপর নির্ভরশীল। অথচ ইউক্রেন যুদ্ধ, মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা বা কোনো দেশের হঠাৎ রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা এসবের কারণে খাদ্য আমদানি কঠিন হয়ে ওঠে। তাই খাদ্যনিরাপত্তার জন্য শক্তিশালী রিজার্ভ, পর্যাপ্ত স্টক এবং দ্রুত আমদানির সক্ষমতা অপরিহার্য।
কৃষিতে বর্তমান সরকারের অগ্রাধিকারের কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ইউনূস স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, বাংলাদেশকে নেদারল্যান্ডসের মতো কৃষিতে প্রযুক্তিনির্ভর উৎপাদন বাড়াতে হবে। নেদারল্যান্ডস ছোট দেশ হয়েও বছরে ১৩৩ বিলিয়ন ডলারের কৃষিপণ্য রপ্তানি করে। বাংলাদেশেরও সীমিত জমিতে উৎপাদন দ্বিগুণ-তিন গুণ বাড়ানো সম্ভব। কিন্তু শুধু উৎপাদন বাড়লেই হবে না—ক্ষুদ্র কৃষকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাও জরুরি।
প্রেস সচিব বলেন, হঠাৎ বড় আকারে ফসল উঠলে দাম পড়ে যায় এবং কৃষক ন্যায্যমূল্য পান না। তাই প্রতিটি গ্রামে ছোট আকারে কোল্ড স্টোরেজ, আধুনিক সংরক্ষণব্যবস্থা, নতুন বাজার এবং রপ্তানির সুযোগ তৈরি করা প্রয়োজন। কৃষি, রাজনীতি ও বৈশ্বিক বাণিজ্য একে অন্যের সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত। যেমন—চীন-যুক্তরাষ্ট্রের সয়াবিন সংকটের সময়ে বাংলাদেশ সয়াবিন আমদানি করে যুক্তরাষ্ট্রের একটি শক্তিশালী ফার্ম লবিকে বাংলাদেশের অনুকূলে এনেছে। এটি নতুন ধরনের ফরেন পলিসি অ্যাপ্রোচ।
স্টোরেজ সক্ষমতা বাড়ানোর প্রসঙ্গে প্রেস সচিব বলেন, বর্তমানে ২০ লাখ টন শস্য সংরক্ষণ করা হয় ৷ এটি বাড়িয়ে ৫০ লাখ টনে নেওয়া উচিত। যাতে বৈশ্বিক সংকটের সময়ে বাজার স্থিতিশীল রাখা যায়। একই সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে লবণাক্ততার বিস্তার, জমির ব্যবহার কমে আসাসহ বিভিন্ন বিষয় মাথায় রেখে নতুন জাত, নতুন প্রযুক্তি এবং খাতভিত্তিক গবেষণা জোরদার করার আহ্বান জানান তিনি।
আবাসন বিস্তার করে কৃষিজমি নষ্ট করার প্রবণতার কঠোর সমালোচনা করে শফিকুল আলম বলেন, গ্রামের বাড়িঘর ফাঁকা পড়ে থাকা, কিন্তু কৃষিজমি ক্রমাগত কমে যাওয়া—এই বাস্তবতা মোকাবিলায় পরিকল্পিত গ্রাম উন্নয়ন জরুরি।
বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ কৃষির বাইরে নয়, উল্লেখ করে প্রেস সচিব আরও বলেন, ‘যে সরকার আসবে, যারাই নীতিনির্ধারক হোক, সবারই লক্ষ্য হওয়া উচিত খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা, উদ্বৃত্ত উৎপাদন এবং কৃষিজমি ও কৃষককে সুরক্ষা দেওয়া। আমরা হয়তো নেদারল্যান্ডস হব না, কিন্তু লক্ষ্য রেখে ১০ বছর কাজ করলে অনেকটাই এগোনো সম্ভব।’
সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পার্টনার প্রোগ্রামের এজেন্সি প্রোগ্রাম ডিরেক্টর ও উপসচিব ড. মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল ফারুক বলেন, ‘বাংলাদেশে কৃষি উৎপাদন উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়লেও বাজার সংযোগ দুর্বল এবং বিপণনব্যবস্থার সীমাবদ্ধতার কারণে কৃষক ন্যায্যমূল্য পান না। পার্টনার প্রজেক্টের ১০টি ডিএলআই বাস্তবায়নে সাতটি সরকারি সংস্থা যুক্ত হলেও সমন্বয় ঘাটতি রয়েছে। গ্যাপভিত্তিক নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন, ভ্যালুচেইন প্রমোশনাল বডি গঠন এবং বাজারব্যবস্থা শক্তিশালী করার মাধ্যমে কৃষকের প্রকৃত লাভ নিশ্চিত করা এখন জরুরি।’
এক্সপোর্ট অ্যান্ড প্রাইভেট সেক্টর কনসালট্যান্ট ড. মো. মাহবুবুল আলম বলেন, পার্টনার কর্মসূচির মাধ্যমে সারা দেশে ২০ হাজার কৃষি উদ্যোক্তা গড়ে তোলা হচ্ছে। উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ, ইনকিউবেশন সাপোর্ট, সার্টিফিকেশন সহায়তা এবং যন্ত্রপাতি কেনায় ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে। নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে আসনের ৬০ শতাংশ সংরক্ষিত। আটটি বিষয়ে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ এবং ১৯টি প্রতিষ্ঠানকে যুক্ত করে উদ্যোক্তাদের ভ্যালুচেইনে প্রবেশ সহজ করা হচ্ছে। উৎপাদিত পণ্যের মাত্র পাঁচ ভাগ প্রক্রিয়াজাত হওয়ায় খাদ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্পে বড় সম্ভাবনার কথাও তিনি উল্লেখ করেন।
অধিবেশনে প্রবন্ধ উপস্থাপনে পার্টনার প্রকল্পের (ডিএএম উইং) সিনিয়র মনিটরিং অফিসার মো. বায়েজিদ বোস্তামী বলেন, কৃষি ব্যবসায় যুবক ও নারীদের সম্পৃক্ত করে ২০ হাজার উদ্যোক্তা তৈরি এবং পাঁচটি প্রধান কৃষিপণ্যের ভ্যালুচেইন শক্তিশালী করার কাজ চলছে। আম, আলু, কাঁঠাল, টমেটো ও সুগন্ধি চাল—এই পাঁচ পণ্যে ভ্যালুচেইন প্রমোশনাল বডি গঠনের কাঠামো ও নীতিমালা তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যে ৪২৬টি ম্যাপস ও ৬৬টি উপজেলা সংগঠন গঠিত হয়েছে। এসব কাঠামো উৎপাদক থেকে বাজার পর্যন্ত শক্তিশালী সংযোগ স্থাপন করবে এবং রপ্তানি সম্ভাবনা বাড়াবে।
বিএজেএফের ২৫ বছরপূর্তি উপলক্ষে ঢাকা ট্রিবিউনের সম্পাদক ও বিএজেএফের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য রিয়াজ আহমেদ; কৃষি ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব এবং বিএজেএফের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য রেজাউল করিম সিদ্দিক, বিএজেএফের সাবেক সভাপতি এবং ঢাকা স্ট্রিমের প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশক গোলাম ইফতেখার মাহমুদ এবং বর্তমান সভাপতি সাহানোয়ার সাঈদ শাহীনের হাতে সম্মাননা তুলে দেওয়া হয়।

চীন বাংলাদেশের পাটশিল্পে বড় পরিসরে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। আজ শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে চার দিনব্যাপী ‘কৃষি ও খাদ্যে রাজনৈতিক অঙ্গীকার’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের তৃতীয় দিনের প্রথম অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
অধিবেশনের বিষয় ছিল ‘কৃষি ও খাদ্যে বিনিয়োগ: মানসম্পন্ন কৃষি উপকরণ ও প্রক্রিয়াজাত পণ্য এবং কৃষির বাণিজ্যিকীকরণে ভ্যালুচেইন গঠন’। বাংলাদেশ কৃষি সাংবাদিক ফোরাম (বিএজেএফ) এই সম্মেলনের আয়োজন করেছে।
বিএজেএফের সাধারণ সম্পাদক আবু খালিদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি সাহানোয়ার সাইদ শাহীন।
শফিকুল আলম বলেন, ‘পাটশিল্পে বৃহৎ পরিসরে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে চীন। বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ও সম্ভাবনাময় এ খাতকে কেন্দ্র করে চীনা উদ্যোক্তারা কাঁচাপাট থেকে শুরু করে প্রস্তুত পাটপণ্যসহ সব ক্ষেত্রেই যৌথ উদ্যোগ, প্রযুক্তি স্থানান্তর ও আধুনিক উৎপাদন সুবিধা গড়তে চাচ্ছেন। আমরা আশা করছি, এই আগ্রহ বাস্তবায়িত হলে দেশের পাটশিল্পে নতুন কর্মসংস্থান, রপ্তানি আয় এবং সামগ্রিক অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য গতি আসবে।’
শফিকুল আলম বলেন, ‘জুট ডাইভারসিফিকেশন (পাটপণ্য বৈচিত্র্যকরণ) নিয়ে আমরা যতই কথা বলি না কেন, বাস্তবে তেমন অগ্রগতি নেই। কারণ, পাট পচানোর মতো কাজ এখন আর কেউ করতে চান না। পুরোনো কষ্টকর পদ্ধতি মানুষের আগ্রহ কমিয়ে দিয়েছে। কিন্তু চীনা বিনিয়োগকারীরা আধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে বাংলাদেশে এক মিলিয়ন টন পাট প্রক্রিয়াকরণ, বায়োফার্টিলাইজার, এনার্জি ও সাশ্রয়ী প্লাস্টিকের বিকল্প তৈরি করতে আগ্রহী। সঠিক প্রযুক্তি যুক্ত হলে জুট আবারও বৃহৎ বৈশ্বিক বাজার দখল করতে পারে। কারণ, বাংলাদেশের গতিপথ, ভবিষ্যৎ এবং রাষ্ট্র হিসেবে আমাদের যাত্রা সবকিছুই বড় পরিমাণে নির্ধারণ করে কৃষি খাত। কৃষি শুধু খাদ্যনিরাপত্তা নয়, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, বৈদেশিক সম্পর্ক, এমনকি অর্থনৈতিক সক্ষমতাকেও গভীরভাবে প্রভাবিত করে।’
১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের প্রসঙ্গ তুলে শফিকুল আলম বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫৪ বছরের ইতিহাসে বাংলাদেশের সবচেয়ে ভয়াবহ বছর ছিল ১৯৭৪।’ ড. নাওমি হোসেনের সাম্প্রতিক প্রকাশিত গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, ‘গবেষকের হিসাবে সেই দুর্ভিক্ষে প্রায় ১৫ লাখ মানুষ মারা গিয়েছিল।’
শফিকুল আলম আরও বলেন, ‘তৎকালীন সরকারের অদক্ষতা, দুর্বল রিজার্ভ, বৈশ্বিক কৃষিপণ্যের রাজনীতি এবং বাজারব্যবস্থার ব্যর্থতা দুর্ভিক্ষকে তীব্রতর করেছিল। একই সঙ্গে খাদ্য মজুতদারি ও অস্থিতিশীল বাজার পরিস্থিতি সংকটকে আরও বাড়িয়ে দেয়।’
শফিকুল আলম যোগ করেন, ১৯৭৪ সালের সেই অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের পরবর্তী প্রতিটি সরকারের নীতিনির্ধারণে গভীর প্রভাব ফেলেছে। তা ছাড়া খাদ্য আমদানিনির্ভর দেশগুলোর জন্য যেকোনো বৈশ্বিক টানাপোড়েনে পরিস্থিতি দ্রুত সংকটে গড়াতে পারে।
শফিকুল আলম আরও বলেন, বর্তমানে ছয় থেকে আট মিলিয়ন টন খাদ্যঘাটতি পূরণে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বাজারের ওপর নির্ভরশীল। অথচ ইউক্রেন যুদ্ধ, মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা বা কোনো দেশের হঠাৎ রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা এসবের কারণে খাদ্য আমদানি কঠিন হয়ে ওঠে। তাই খাদ্যনিরাপত্তার জন্য শক্তিশালী রিজার্ভ, পর্যাপ্ত স্টক এবং দ্রুত আমদানির সক্ষমতা অপরিহার্য।
কৃষিতে বর্তমান সরকারের অগ্রাধিকারের কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ইউনূস স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, বাংলাদেশকে নেদারল্যান্ডসের মতো কৃষিতে প্রযুক্তিনির্ভর উৎপাদন বাড়াতে হবে। নেদারল্যান্ডস ছোট দেশ হয়েও বছরে ১৩৩ বিলিয়ন ডলারের কৃষিপণ্য রপ্তানি করে। বাংলাদেশেরও সীমিত জমিতে উৎপাদন দ্বিগুণ-তিন গুণ বাড়ানো সম্ভব। কিন্তু শুধু উৎপাদন বাড়লেই হবে না—ক্ষুদ্র কৃষকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাও জরুরি।
প্রেস সচিব বলেন, হঠাৎ বড় আকারে ফসল উঠলে দাম পড়ে যায় এবং কৃষক ন্যায্যমূল্য পান না। তাই প্রতিটি গ্রামে ছোট আকারে কোল্ড স্টোরেজ, আধুনিক সংরক্ষণব্যবস্থা, নতুন বাজার এবং রপ্তানির সুযোগ তৈরি করা প্রয়োজন। কৃষি, রাজনীতি ও বৈশ্বিক বাণিজ্য একে অন্যের সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত। যেমন—চীন-যুক্তরাষ্ট্রের সয়াবিন সংকটের সময়ে বাংলাদেশ সয়াবিন আমদানি করে যুক্তরাষ্ট্রের একটি শক্তিশালী ফার্ম লবিকে বাংলাদেশের অনুকূলে এনেছে। এটি নতুন ধরনের ফরেন পলিসি অ্যাপ্রোচ।
স্টোরেজ সক্ষমতা বাড়ানোর প্রসঙ্গে প্রেস সচিব বলেন, বর্তমানে ২০ লাখ টন শস্য সংরক্ষণ করা হয় ৷ এটি বাড়িয়ে ৫০ লাখ টনে নেওয়া উচিত। যাতে বৈশ্বিক সংকটের সময়ে বাজার স্থিতিশীল রাখা যায়। একই সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে লবণাক্ততার বিস্তার, জমির ব্যবহার কমে আসাসহ বিভিন্ন বিষয় মাথায় রেখে নতুন জাত, নতুন প্রযুক্তি এবং খাতভিত্তিক গবেষণা জোরদার করার আহ্বান জানান তিনি।
আবাসন বিস্তার করে কৃষিজমি নষ্ট করার প্রবণতার কঠোর সমালোচনা করে শফিকুল আলম বলেন, গ্রামের বাড়িঘর ফাঁকা পড়ে থাকা, কিন্তু কৃষিজমি ক্রমাগত কমে যাওয়া—এই বাস্তবতা মোকাবিলায় পরিকল্পিত গ্রাম উন্নয়ন জরুরি।
বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ কৃষির বাইরে নয়, উল্লেখ করে প্রেস সচিব আরও বলেন, ‘যে সরকার আসবে, যারাই নীতিনির্ধারক হোক, সবারই লক্ষ্য হওয়া উচিত খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা, উদ্বৃত্ত উৎপাদন এবং কৃষিজমি ও কৃষককে সুরক্ষা দেওয়া। আমরা হয়তো নেদারল্যান্ডস হব না, কিন্তু লক্ষ্য রেখে ১০ বছর কাজ করলে অনেকটাই এগোনো সম্ভব।’
সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পার্টনার প্রোগ্রামের এজেন্সি প্রোগ্রাম ডিরেক্টর ও উপসচিব ড. মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল ফারুক বলেন, ‘বাংলাদেশে কৃষি উৎপাদন উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়লেও বাজার সংযোগ দুর্বল এবং বিপণনব্যবস্থার সীমাবদ্ধতার কারণে কৃষক ন্যায্যমূল্য পান না। পার্টনার প্রজেক্টের ১০টি ডিএলআই বাস্তবায়নে সাতটি সরকারি সংস্থা যুক্ত হলেও সমন্বয় ঘাটতি রয়েছে। গ্যাপভিত্তিক নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন, ভ্যালুচেইন প্রমোশনাল বডি গঠন এবং বাজারব্যবস্থা শক্তিশালী করার মাধ্যমে কৃষকের প্রকৃত লাভ নিশ্চিত করা এখন জরুরি।’
এক্সপোর্ট অ্যান্ড প্রাইভেট সেক্টর কনসালট্যান্ট ড. মো. মাহবুবুল আলম বলেন, পার্টনার কর্মসূচির মাধ্যমে সারা দেশে ২০ হাজার কৃষি উদ্যোক্তা গড়ে তোলা হচ্ছে। উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ, ইনকিউবেশন সাপোর্ট, সার্টিফিকেশন সহায়তা এবং যন্ত্রপাতি কেনায় ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে। নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে আসনের ৬০ শতাংশ সংরক্ষিত। আটটি বিষয়ে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ এবং ১৯টি প্রতিষ্ঠানকে যুক্ত করে উদ্যোক্তাদের ভ্যালুচেইনে প্রবেশ সহজ করা হচ্ছে। উৎপাদিত পণ্যের মাত্র পাঁচ ভাগ প্রক্রিয়াজাত হওয়ায় খাদ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্পে বড় সম্ভাবনার কথাও তিনি উল্লেখ করেন।
অধিবেশনে প্রবন্ধ উপস্থাপনে পার্টনার প্রকল্পের (ডিএএম উইং) সিনিয়র মনিটরিং অফিসার মো. বায়েজিদ বোস্তামী বলেন, কৃষি ব্যবসায় যুবক ও নারীদের সম্পৃক্ত করে ২০ হাজার উদ্যোক্তা তৈরি এবং পাঁচটি প্রধান কৃষিপণ্যের ভ্যালুচেইন শক্তিশালী করার কাজ চলছে। আম, আলু, কাঁঠাল, টমেটো ও সুগন্ধি চাল—এই পাঁচ পণ্যে ভ্যালুচেইন প্রমোশনাল বডি গঠনের কাঠামো ও নীতিমালা তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যে ৪২৬টি ম্যাপস ও ৬৬টি উপজেলা সংগঠন গঠিত হয়েছে। এসব কাঠামো উৎপাদক থেকে বাজার পর্যন্ত শক্তিশালী সংযোগ স্থাপন করবে এবং রপ্তানি সম্ভাবনা বাড়াবে।
বিএজেএফের ২৫ বছরপূর্তি উপলক্ষে ঢাকা ট্রিবিউনের সম্পাদক ও বিএজেএফের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য রিয়াজ আহমেদ; কৃষি ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব এবং বিএজেএফের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য রেজাউল করিম সিদ্দিক, বিএজেএফের সাবেক সভাপতি এবং ঢাকা স্ট্রিমের প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশক গোলাম ইফতেখার মাহমুদ এবং বর্তমান সভাপতি সাহানোয়ার সাঈদ শাহীনের হাতে সম্মাননা তুলে দেওয়া হয়।

বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতে নতুন মাইলফলক তৈরি হয়েছে। রামপালে মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্ট (এমএসটিপিপি) গত নভেম্বর মাসে এককভাবে ৭০০ মিলিয়ন (৭০ কোটি) ইউনিট (এমইউ) বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছে।
৩৫ মিনিট আগে
দুই মাসের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার দিকে এগোতে গিয়ে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ জানিয়েছেন, নির্বাচনের সময় কোনো প্রার্থীর পক্ষে এলাকায় প্রভাব ফেলবে, এমন কোনো প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, রাজনৈতিক প্রার্থীরা নানা প্রকল্পের অনুমোদনের চেষ্টা-তদবির করছেন, তবে সরকা
৮ ঘণ্টা আগে
দেশের অর্থনীতিতে ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়ানোর সংকেত দেখা গেলেও সামনে রয়েছে পাঁচ চ্যালেঞ্জ। চ্যালেঞ্জগুলো হলো বিনিয়োগে স্থবিরতা, রাজস্ব সংগ্রহে বড় ঘাটতি, আমদানি-রপ্তানিতে অস্থিরতা, টাকার ক্রয়ক্ষমতা বাড়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে ঝুঁকি, সরকারি ঋণনির্ভরতা।
৮ ঘণ্টা আগে
দেশে বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা হচ্ছে প্রচুর, কিন্তু বাস্তবে এ উন্নয়নের সঙ্গে কথিত অগ্রগতির মিল কম। উৎপাদনক্ষমতা বেড়েছে, কিন্তু যথাযথ ব্যবহার না হওয়ায় বড় অপচয় হয়। বিদ্যুতের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ থেকে শুরু করে উৎপাদন পর্যন্ত এই অপচয় কমানো জরুরি।
১১ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতে নতুন মাইলফলক তৈরি হয়েছে। রামপালে মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্ট (এমএসটিপিপি) গত নভেম্বর মাসে এককভাবে ৭০০ মিলিয়ন (৭০ কোটি) ইউনিট (এমইউ) বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছে।
ভারতের ন্যাশনাল থার্মাল পাওয়ার কর্পোরেশন লিমিটেড (এনটিপিসি) এবং বাংলাদেশের পিডিবি-এর যৌথ উদ্যোগে গঠিত বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (বিআইএফপিসিএল) বাগেরহাটের রামপালে স্থাপিত এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট। গত নভেম্বরে এটি বাংলাদেশের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর মধ্যে এক মাসে সর্বোচ্চ উৎপাদনের নতুন রেকর্ড করেছে।
গতকাল সোমবার বিআইএফপিসিএল-এর পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিবৃতির তথ্যানুসারে, নভেম্বর মাস জুড়ে এমএসটিপিপি জাতীয় গ্রিডে নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছে। এই পরিমাণ বিদ্যুৎ দেশের মোট বিদ্যুৎ চাহিদার প্রায় ১১ দশমিক ৫ শতাংশ। এটি এখন দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী কেন্দ্র। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত এই প্ল্যান্টটি গ্রিডের স্থিতিশীলতা রক্ষায় অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রাখছে।
বিআইএফপিসিএল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই ঐতিহাসিক অর্জন বিদ্যুৎকেন্দ্রটির অসাধারণ কার্যকারিতা এবং উচ্চ লোড ফ্যাক্টরে নিরবচ্ছিন্ন সক্ষমতার প্রতীক। এই মাইলফলকটি অর্জন সম্ভব হয়েছে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির উন্নত শিল্প সক্ষমতা, উচ্চমানের দক্ষ কয়লা ও সম্পদ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে।
উল্লেখ্য, এমএসটিপিপি নিয়মিতভাবে ৬০০ মিলিয়ন (৬০ কোটি) ইউনিটের বেশি বিদ্যুৎ সরবরাহ করে আসছে, যা জাতীয় চাহিদার প্রায় ৮ শতাংশ। নির্ভরযোগ্যতার মাধ্যমে এমএসটিপিপি বাংলাদেশের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির জ্বালানি নিরাপত্তার অন্যতম প্রধান স্তম্ভ হিসেবে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতে নতুন মাইলফলক তৈরি হয়েছে। রামপালে মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্ট (এমএসটিপিপি) গত নভেম্বর মাসে এককভাবে ৭০০ মিলিয়ন (৭০ কোটি) ইউনিট (এমইউ) বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছে।
ভারতের ন্যাশনাল থার্মাল পাওয়ার কর্পোরেশন লিমিটেড (এনটিপিসি) এবং বাংলাদেশের পিডিবি-এর যৌথ উদ্যোগে গঠিত বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (বিআইএফপিসিএল) বাগেরহাটের রামপালে স্থাপিত এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট। গত নভেম্বরে এটি বাংলাদেশের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর মধ্যে এক মাসে সর্বোচ্চ উৎপাদনের নতুন রেকর্ড করেছে।
গতকাল সোমবার বিআইএফপিসিএল-এর পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিবৃতির তথ্যানুসারে, নভেম্বর মাস জুড়ে এমএসটিপিপি জাতীয় গ্রিডে নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছে। এই পরিমাণ বিদ্যুৎ দেশের মোট বিদ্যুৎ চাহিদার প্রায় ১১ দশমিক ৫ শতাংশ। এটি এখন দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী কেন্দ্র। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত এই প্ল্যান্টটি গ্রিডের স্থিতিশীলতা রক্ষায় অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রাখছে।
বিআইএফপিসিএল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই ঐতিহাসিক অর্জন বিদ্যুৎকেন্দ্রটির অসাধারণ কার্যকারিতা এবং উচ্চ লোড ফ্যাক্টরে নিরবচ্ছিন্ন সক্ষমতার প্রতীক। এই মাইলফলকটি অর্জন সম্ভব হয়েছে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির উন্নত শিল্প সক্ষমতা, উচ্চমানের দক্ষ কয়লা ও সম্পদ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে।
উল্লেখ্য, এমএসটিপিপি নিয়মিতভাবে ৬০০ মিলিয়ন (৬০ কোটি) ইউনিটের বেশি বিদ্যুৎ সরবরাহ করে আসছে, যা জাতীয় চাহিদার প্রায় ৮ শতাংশ। নির্ভরযোগ্যতার মাধ্যমে এমএসটিপিপি বাংলাদেশের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির জ্বালানি নিরাপত্তার অন্যতম প্রধান স্তম্ভ হিসেবে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

চীন বাংলাদেশের পাটশিল্পে বড় পরিসরে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। আজ শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে চার দিনব্যাপী ‘কৃষি ও খাদ্যে রাজনৈতিক অঙ্গীকার’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের তৃতীয় দিনের প্রথম অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
৩ দিন আগে
দুই মাসের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার দিকে এগোতে গিয়ে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ জানিয়েছেন, নির্বাচনের সময় কোনো প্রার্থীর পক্ষে এলাকায় প্রভাব ফেলবে, এমন কোনো প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, রাজনৈতিক প্রার্থীরা নানা প্রকল্পের অনুমোদনের চেষ্টা-তদবির করছেন, তবে সরকা
৮ ঘণ্টা আগে
দেশের অর্থনীতিতে ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়ানোর সংকেত দেখা গেলেও সামনে রয়েছে পাঁচ চ্যালেঞ্জ। চ্যালেঞ্জগুলো হলো বিনিয়োগে স্থবিরতা, রাজস্ব সংগ্রহে বড় ঘাটতি, আমদানি-রপ্তানিতে অস্থিরতা, টাকার ক্রয়ক্ষমতা বাড়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে ঝুঁকি, সরকারি ঋণনির্ভরতা।
৮ ঘণ্টা আগে
দেশে বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা হচ্ছে প্রচুর, কিন্তু বাস্তবে এ উন্নয়নের সঙ্গে কথিত অগ্রগতির মিল কম। উৎপাদনক্ষমতা বেড়েছে, কিন্তু যথাযথ ব্যবহার না হওয়ায় বড় অপচয় হয়। বিদ্যুতের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ থেকে শুরু করে উৎপাদন পর্যন্ত এই অপচয় কমানো জরুরি।
১১ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দুই মাসের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার দিকে এগোতে গিয়ে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ জানিয়েছেন, নির্বাচনের সময় কোনো প্রার্থীর পক্ষে এলাকায় প্রভাব ফেলবে, এমন কোনো প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, রাজনৈতিক প্রার্থীরা নানা প্রকল্পের অনুমোদনের চেষ্টা-তদবির করছেন, তবে সরকার তাঁদের চাওয়া প্রকল্পে কোনোভাবেই সায় দেবে না।
গতকাল শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনা উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে এই ষষ্ঠ একনেক সভায় ১২টি নতুন, পাঁচটি সংশোধিতসহ মোট ১৭টি প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে, যার বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫ হাজার ৩৮৩ কোটি ৫১ লাখ টাকা। এতে সরকারি অর্থায়ন নির্ধারণ করা হয়েছে ৯ হাজার ৪৫১ কোটি ৮৪ লাখ টাকা, বৈদেশিক ঋণ ৫ হাজার ৬০৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৩৭৯ কোটি ৩১ লাখ টাকা। এই সভায় সচিবালয়ে নতুন ২১ তলা অফিস ভবন এবং হেলথ অ্যান্ড নিউট্রিশন সার্ভিসেস ইমপ্রুভমেন্ট অ্যান্ড সিস্টেম স্ট্রেনদেনিং প্রকল্প বাতিল করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার যে সংস্কার শুরু করেছে, তার কিছু অংশ পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের জন্য বাস্তবায়ন কঠিন হতে পারে, তবে পুরোটা না হলেও এই সংস্কারের মূল নির্যাস নির্বাচিত সরকারকে গ্রহণ করতেই হবে। কারণ, ভবিষ্যতে জনগণের চাহিদার সঙ্গে মিল রেখে তাদের কাজ করতে হবে।
বিচার বিভাগের স্বাধীনতার প্রসঙ্গে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, কতটুকু দেওয়া হয়েছে, তা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করলে বোঝা যাবে, বিষয়টি নতুন সরকারের জন্য অস্বস্তিকর হতে পারে। কারণ, বিচার বিভাগ স্বাধীন হয়ে গেছে। এ বিভাগকে সম্পূর্ণ স্বাধীন করার মানে হলো, আইন মন্ত্রণালয়ের হাতে অনেক কিছু থাকছে না। নতুন সরকার অবশ্যই বিষয়গুলো পুনর্বিবেচনা করবে।
সভায় অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়ের টেকসই কৃষি উন্নয়ন ও মানসম্পন্ন আলু উৎপাদন ও বিতরণ প্রকল্প। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের তিনটি অনুসন্ধান কূপ এবং ২২০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের চারটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে মিরপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত বা শহীদ পরিবারদের জন্য আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণে দুটি পৃথক প্রকল্প এবং সচিবালয় ও আবাসিক এলাকায় অগ্নিনিরাপত্তা আধুনিকায়ন।

সেতু মন্ত্রণালয়ের অধীনে ঢাকা এমআরটি লাইন-৬-এর তৃতীয় সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প এবং সিরাজগঞ্জ-রায়গঞ্জ (চান্দাইকোনা) সড়ক চার লেনে উন্নীত করার প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে। স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতায় অনুমোদিত হয়েছে নারায়ণগঞ্জ গ্রিন অ্যান্ড রেজিলিয়েন্ট আরবান ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অটিজম ও এনডিডি সেবাদান কেন্দ্র প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধন এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের জাপান হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট স্কলারশিপ অনুমোদিত হয়েছে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের ডিজিটাল উদ্যোক্তা ও উদ্ভাবন ইকো-সিস্টেম উন্নয়ন প্রকল্পের প্রথম সংশোধনও অনুমোদিত হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতায় নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় একাডেমিক, কেন্দ্রীয় গবেষণাগারসহ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্প সম্পন্ন করার অনুমোদন দেওয়া হয়।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তিনটি প্রকল্প ক্লাইমেট রেসপন্স রিপ্রোডাকটিভ হেলথ অ্যান্ড পপুলেশন সার্ভিস ইমপ্রুভমেন্ট এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর এবং কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের অত্যাবশ্যক কার্যক্রম বাস্তবায়ন প্রকল্প সভায় অনুমোদন পেয়েছে।

দুই মাসের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার দিকে এগোতে গিয়ে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ জানিয়েছেন, নির্বাচনের সময় কোনো প্রার্থীর পক্ষে এলাকায় প্রভাব ফেলবে, এমন কোনো প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, রাজনৈতিক প্রার্থীরা নানা প্রকল্পের অনুমোদনের চেষ্টা-তদবির করছেন, তবে সরকার তাঁদের চাওয়া প্রকল্পে কোনোভাবেই সায় দেবে না।
গতকাল শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনা উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে এই ষষ্ঠ একনেক সভায় ১২টি নতুন, পাঁচটি সংশোধিতসহ মোট ১৭টি প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে, যার বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫ হাজার ৩৮৩ কোটি ৫১ লাখ টাকা। এতে সরকারি অর্থায়ন নির্ধারণ করা হয়েছে ৯ হাজার ৪৫১ কোটি ৮৪ লাখ টাকা, বৈদেশিক ঋণ ৫ হাজার ৬০৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৩৭৯ কোটি ৩১ লাখ টাকা। এই সভায় সচিবালয়ে নতুন ২১ তলা অফিস ভবন এবং হেলথ অ্যান্ড নিউট্রিশন সার্ভিসেস ইমপ্রুভমেন্ট অ্যান্ড সিস্টেম স্ট্রেনদেনিং প্রকল্প বাতিল করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার যে সংস্কার শুরু করেছে, তার কিছু অংশ পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের জন্য বাস্তবায়ন কঠিন হতে পারে, তবে পুরোটা না হলেও এই সংস্কারের মূল নির্যাস নির্বাচিত সরকারকে গ্রহণ করতেই হবে। কারণ, ভবিষ্যতে জনগণের চাহিদার সঙ্গে মিল রেখে তাদের কাজ করতে হবে।
বিচার বিভাগের স্বাধীনতার প্রসঙ্গে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, কতটুকু দেওয়া হয়েছে, তা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করলে বোঝা যাবে, বিষয়টি নতুন সরকারের জন্য অস্বস্তিকর হতে পারে। কারণ, বিচার বিভাগ স্বাধীন হয়ে গেছে। এ বিভাগকে সম্পূর্ণ স্বাধীন করার মানে হলো, আইন মন্ত্রণালয়ের হাতে অনেক কিছু থাকছে না। নতুন সরকার অবশ্যই বিষয়গুলো পুনর্বিবেচনা করবে।
সভায় অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়ের টেকসই কৃষি উন্নয়ন ও মানসম্পন্ন আলু উৎপাদন ও বিতরণ প্রকল্প। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের তিনটি অনুসন্ধান কূপ এবং ২২০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের চারটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে মিরপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত বা শহীদ পরিবারদের জন্য আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণে দুটি পৃথক প্রকল্প এবং সচিবালয় ও আবাসিক এলাকায় অগ্নিনিরাপত্তা আধুনিকায়ন।

সেতু মন্ত্রণালয়ের অধীনে ঢাকা এমআরটি লাইন-৬-এর তৃতীয় সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প এবং সিরাজগঞ্জ-রায়গঞ্জ (চান্দাইকোনা) সড়ক চার লেনে উন্নীত করার প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে। স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতায় অনুমোদিত হয়েছে নারায়ণগঞ্জ গ্রিন অ্যান্ড রেজিলিয়েন্ট আরবান ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অটিজম ও এনডিডি সেবাদান কেন্দ্র প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধন এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের জাপান হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট স্কলারশিপ অনুমোদিত হয়েছে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের ডিজিটাল উদ্যোক্তা ও উদ্ভাবন ইকো-সিস্টেম উন্নয়ন প্রকল্পের প্রথম সংশোধনও অনুমোদিত হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতায় নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় একাডেমিক, কেন্দ্রীয় গবেষণাগারসহ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্প সম্পন্ন করার অনুমোদন দেওয়া হয়।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তিনটি প্রকল্প ক্লাইমেট রেসপন্স রিপ্রোডাকটিভ হেলথ অ্যান্ড পপুলেশন সার্ভিস ইমপ্রুভমেন্ট এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর এবং কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের অত্যাবশ্যক কার্যক্রম বাস্তবায়ন প্রকল্প সভায় অনুমোদন পেয়েছে।

চীন বাংলাদেশের পাটশিল্পে বড় পরিসরে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। আজ শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে চার দিনব্যাপী ‘কৃষি ও খাদ্যে রাজনৈতিক অঙ্গীকার’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের তৃতীয় দিনের প্রথম অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
৩ দিন আগে
বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতে নতুন মাইলফলক তৈরি হয়েছে। রামপালে মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্ট (এমএসটিপিপি) গত নভেম্বর মাসে এককভাবে ৭০০ মিলিয়ন (৭০ কোটি) ইউনিট (এমইউ) বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছে।
৩৫ মিনিট আগে
দেশের অর্থনীতিতে ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়ানোর সংকেত দেখা গেলেও সামনে রয়েছে পাঁচ চ্যালেঞ্জ। চ্যালেঞ্জগুলো হলো বিনিয়োগে স্থবিরতা, রাজস্ব সংগ্রহে বড় ঘাটতি, আমদানি-রপ্তানিতে অস্থিরতা, টাকার ক্রয়ক্ষমতা বাড়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে ঝুঁকি, সরকারি ঋণনির্ভরতা।
৮ ঘণ্টা আগে
দেশে বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা হচ্ছে প্রচুর, কিন্তু বাস্তবে এ উন্নয়নের সঙ্গে কথিত অগ্রগতির মিল কম। উৎপাদনক্ষমতা বেড়েছে, কিন্তু যথাযথ ব্যবহার না হওয়ায় বড় অপচয় হয়। বিদ্যুতের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ থেকে শুরু করে উৎপাদন পর্যন্ত এই অপচয় কমানো জরুরি।
১১ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশের অর্থনীতিতে ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়ানোর সংকেত দেখা গেলেও সামনে রয়েছে পাঁচ চ্যালেঞ্জ। চ্যালেঞ্জগুলো হলো বিনিয়োগে স্থবিরতা, রাজস্ব সংগ্রহে বড় ঘাটতি, আমদানি-রপ্তানিতে অস্থিরতা, টাকার ক্রয়ক্ষমতা বাড়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে ঝুঁকি, সরকারি ঋণনির্ভরতা।
পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সর্বশেষ অর্থনৈতিক হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে। প্রতিবেদনটি গতকাল সোমবার প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনের তথ্যমতে, খাদ্যপণ্যের দাম কমায় সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি এক বছর আগের তুলনায় নেমে এসেছে ১ অঙ্কে। গত অক্টোবরে সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি নেমে এসেছে ৮ দশমিক ১৭ শতাংশে, যা অক্টোবর ২০২৪-এর ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশ থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে কম। চালের সরবরাহ বাড়ায় ধীরে ধীরে কমেছে দাম। নতুন আমন মৌসুম, সরকারি ক্রয় ও আমদানি—সব মিলিয়ে চালের দাম কমে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি নামিয়ে এনেছে ৭ দশমিক ০৮ শতাংশে। তবে নন-ফুড খাতে (বাসস্থান, পরিবহন, স্বাস্থ্যসেবা) চাপ কিছুটা বেড়েছে, সেখানে মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ১৩ শতাংশ।
অক্টোবরে খাদ্যে মূল্যস্ফীতিতে সবচেয়ে বেশি অবদান চালের, ৪৭ শতাংশ। মাছ-মাংস মিলিয়ে আরও বড় অংশ জুড়ে রয়েছে। বিপরীতে মৌসুমি সবজির সরবরাহ বেশি থাকায় সে খাতে মূল্যস্ফীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। আলু, পেঁয়াজের দাম কমে সামগ্রিক চাপ কিছুটা হালকা করেছে।
মূল্যস্ফীতি স্বস্তি দিলেও ব্যাংকঋণের প্রবাহ স্থবির, রাজস্ব আদায় লক্ষ্যমাত্রার অনেক পেছনে এবং রপ্তানি আয়ে ওঠানামা থাকায় অর্থনীতি শক্ত ভিত পাচ্ছে না।
ব্যাংকে আমানত বাড়ছে নীরবে। আগস্টে জমা বেড়েছিল প্রায় ১০ শতাংশ, সেপ্টেম্বরে ছিল ৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ। আবার ব্যক্তি খাতে ঋণের গতি থমথমে। সেপ্টেম্বরে প্রবৃদ্ধি নেমেছে ৬ দশমিক ২৯ শতাংশে, যা চার বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। উচ্চ সুদহার, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও ব্যবসায়িক ঝুঁকি বেড়ে যাওয়াই এর বড় কারণ। বিপরীতে সরকারি খাতে ঋণ বেড়েছে ২৪ শতাংশের বেশি, যা ব্যক্তি খাতে ঋণচাপ কমায়।
বিদেশি ব্যাংকের সুদহার ব্যবধান স্থানীয় ব্যাংকের তুলনায় অনেক বেশি—প্রায় ৯ শতাংশের কাছাকাছি। রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাংকের স্প্রেড স্থিতিশীল থাকলেও উচ্চ নন-পারফর্মিং লোন ও পরিচালন ব্যয় বিনিয়োগে বাধা সৃষ্টি করছে।
অক্টোবর মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ২৮ হাজার ৪৬৯ কোটি টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৮ হাজার ৩২৪ কোটি টাকা কম। অর্জনের হার মাত্র ৭৭ শতাংশ। আমদানি-রপ্তানি, ভ্যাট, আয়কর—সব খাতেই কমতি দেখা গেছে। যদিও গত বছরের একই সময়ের তুলনায় সামান্য বৃদ্ধি রয়েছে (মাত্র ২ দশমিক ২ শতাংশ), তবুও বিশেষজ্ঞদের ভাষায় এই হারে রাজস্ব কাঠামো টেকসই নয়।
চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে উন্নয়ন ব্যয় (এডিপি) বাস্তবায়ন হয়েছে ৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ, যা গত বছরের ৭ দশমিক ৯০ শতাংশ থেকে সামান্য বেশি। তবে মোট বরাদ্দ কমে যাওয়ায় এই অগ্রগতি বাস্তব উন্নতির ইঙ্গিত দেয় না—এমন মত অর্থনীতিবিদদের।
বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভে ধীরে ধীরে উন্নতি দেখা যাচ্ছে। অক্টোবর ২০২৫-এ মোট রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩২ দশমিক ৩৪ বিলিয়ন ডলার, যা বছরের সর্বোচ্চ।
রেমিট্যান্সপ্রবাহও শক্তিশালী। জুলাই-অক্টোবর সময়কালে প্রতিটি মাসে গত বছরের তুলনায় বেশি রেমিট্যান্স এসেছে সেপ্টেম্বরে প্রায় ২ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় অনেক বেশি।
রপ্তানি আয় বছরের বিভিন্ন সময়ে বড় ধরনের ওঠানামার মধ্য দিয়ে গেছে। এপ্রিল ও জুনে বড় পতন হলেও জুলাইয়ে রপ্তানি পৌঁছায় ৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলারে। অক্টোবর শেষে আয় কিছুটা পুনরুদ্ধার হলেও, গতি খুব শক্তিশালী নয়।

দেশের অর্থনীতিতে ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়ানোর সংকেত দেখা গেলেও সামনে রয়েছে পাঁচ চ্যালেঞ্জ। চ্যালেঞ্জগুলো হলো বিনিয়োগে স্থবিরতা, রাজস্ব সংগ্রহে বড় ঘাটতি, আমদানি-রপ্তানিতে অস্থিরতা, টাকার ক্রয়ক্ষমতা বাড়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে ঝুঁকি, সরকারি ঋণনির্ভরতা।
পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সর্বশেষ অর্থনৈতিক হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে। প্রতিবেদনটি গতকাল সোমবার প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনের তথ্যমতে, খাদ্যপণ্যের দাম কমায় সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি এক বছর আগের তুলনায় নেমে এসেছে ১ অঙ্কে। গত অক্টোবরে সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি নেমে এসেছে ৮ দশমিক ১৭ শতাংশে, যা অক্টোবর ২০২৪-এর ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশ থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে কম। চালের সরবরাহ বাড়ায় ধীরে ধীরে কমেছে দাম। নতুন আমন মৌসুম, সরকারি ক্রয় ও আমদানি—সব মিলিয়ে চালের দাম কমে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি নামিয়ে এনেছে ৭ দশমিক ০৮ শতাংশে। তবে নন-ফুড খাতে (বাসস্থান, পরিবহন, স্বাস্থ্যসেবা) চাপ কিছুটা বেড়েছে, সেখানে মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ১৩ শতাংশ।
অক্টোবরে খাদ্যে মূল্যস্ফীতিতে সবচেয়ে বেশি অবদান চালের, ৪৭ শতাংশ। মাছ-মাংস মিলিয়ে আরও বড় অংশ জুড়ে রয়েছে। বিপরীতে মৌসুমি সবজির সরবরাহ বেশি থাকায় সে খাতে মূল্যস্ফীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। আলু, পেঁয়াজের দাম কমে সামগ্রিক চাপ কিছুটা হালকা করেছে।
মূল্যস্ফীতি স্বস্তি দিলেও ব্যাংকঋণের প্রবাহ স্থবির, রাজস্ব আদায় লক্ষ্যমাত্রার অনেক পেছনে এবং রপ্তানি আয়ে ওঠানামা থাকায় অর্থনীতি শক্ত ভিত পাচ্ছে না।
ব্যাংকে আমানত বাড়ছে নীরবে। আগস্টে জমা বেড়েছিল প্রায় ১০ শতাংশ, সেপ্টেম্বরে ছিল ৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ। আবার ব্যক্তি খাতে ঋণের গতি থমথমে। সেপ্টেম্বরে প্রবৃদ্ধি নেমেছে ৬ দশমিক ২৯ শতাংশে, যা চার বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। উচ্চ সুদহার, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও ব্যবসায়িক ঝুঁকি বেড়ে যাওয়াই এর বড় কারণ। বিপরীতে সরকারি খাতে ঋণ বেড়েছে ২৪ শতাংশের বেশি, যা ব্যক্তি খাতে ঋণচাপ কমায়।
বিদেশি ব্যাংকের সুদহার ব্যবধান স্থানীয় ব্যাংকের তুলনায় অনেক বেশি—প্রায় ৯ শতাংশের কাছাকাছি। রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাংকের স্প্রেড স্থিতিশীল থাকলেও উচ্চ নন-পারফর্মিং লোন ও পরিচালন ব্যয় বিনিয়োগে বাধা সৃষ্টি করছে।
অক্টোবর মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ২৮ হাজার ৪৬৯ কোটি টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৮ হাজার ৩২৪ কোটি টাকা কম। অর্জনের হার মাত্র ৭৭ শতাংশ। আমদানি-রপ্তানি, ভ্যাট, আয়কর—সব খাতেই কমতি দেখা গেছে। যদিও গত বছরের একই সময়ের তুলনায় সামান্য বৃদ্ধি রয়েছে (মাত্র ২ দশমিক ২ শতাংশ), তবুও বিশেষজ্ঞদের ভাষায় এই হারে রাজস্ব কাঠামো টেকসই নয়।
চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে উন্নয়ন ব্যয় (এডিপি) বাস্তবায়ন হয়েছে ৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ, যা গত বছরের ৭ দশমিক ৯০ শতাংশ থেকে সামান্য বেশি। তবে মোট বরাদ্দ কমে যাওয়ায় এই অগ্রগতি বাস্তব উন্নতির ইঙ্গিত দেয় না—এমন মত অর্থনীতিবিদদের।
বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভে ধীরে ধীরে উন্নতি দেখা যাচ্ছে। অক্টোবর ২০২৫-এ মোট রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩২ দশমিক ৩৪ বিলিয়ন ডলার, যা বছরের সর্বোচ্চ।
রেমিট্যান্সপ্রবাহও শক্তিশালী। জুলাই-অক্টোবর সময়কালে প্রতিটি মাসে গত বছরের তুলনায় বেশি রেমিট্যান্স এসেছে সেপ্টেম্বরে প্রায় ২ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় অনেক বেশি।
রপ্তানি আয় বছরের বিভিন্ন সময়ে বড় ধরনের ওঠানামার মধ্য দিয়ে গেছে। এপ্রিল ও জুনে বড় পতন হলেও জুলাইয়ে রপ্তানি পৌঁছায় ৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলারে। অক্টোবর শেষে আয় কিছুটা পুনরুদ্ধার হলেও, গতি খুব শক্তিশালী নয়।

চীন বাংলাদেশের পাটশিল্পে বড় পরিসরে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। আজ শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে চার দিনব্যাপী ‘কৃষি ও খাদ্যে রাজনৈতিক অঙ্গীকার’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের তৃতীয় দিনের প্রথম অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
৩ দিন আগে
বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতে নতুন মাইলফলক তৈরি হয়েছে। রামপালে মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্ট (এমএসটিপিপি) গত নভেম্বর মাসে এককভাবে ৭০০ মিলিয়ন (৭০ কোটি) ইউনিট (এমইউ) বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছে।
৩৫ মিনিট আগে
দুই মাসের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার দিকে এগোতে গিয়ে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ জানিয়েছেন, নির্বাচনের সময় কোনো প্রার্থীর পক্ষে এলাকায় প্রভাব ফেলবে, এমন কোনো প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, রাজনৈতিক প্রার্থীরা নানা প্রকল্পের অনুমোদনের চেষ্টা-তদবির করছেন, তবে সরকা
৮ ঘণ্টা আগে
দেশে বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা হচ্ছে প্রচুর, কিন্তু বাস্তবে এ উন্নয়নের সঙ্গে কথিত অগ্রগতির মিল কম। উৎপাদনক্ষমতা বেড়েছে, কিন্তু যথাযথ ব্যবহার না হওয়ায় বড় অপচয় হয়। বিদ্যুতের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ থেকে শুরু করে উৎপাদন পর্যন্ত এই অপচয় কমানো জরুরি।
১১ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশে বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা হচ্ছে প্রচুর, কিন্তু বাস্তবে এ উন্নয়নের সঙ্গে কথিত অগ্রগতির মিল কম। উৎপাদনক্ষমতা বেড়েছে, কিন্তু যথাযথ ব্যবহার না হওয়ায় বড় অপচয় হয়। বিদ্যুতের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ থেকে শুরু করে উৎপাদন পর্যন্ত এই অপচয় কমানো জরুরি।
আজ সোমবার রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক ইন সেন্টারে সিপিডি আয়োজিত ‘রিসেন্ট প্রকিউরমেন্ট ইনিশিয়েটিভ অব রিনিউয়েবল এনার্জি আন্ডার দ্য পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অ্যাক্ট অ্যান্ড রুলস’ শীর্ষক ডায়ালগে এসব বিষয় উঠে আসে।
সিপিডির গবেষণা পরিচালক খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, দেশে এখন বিদ্যুৎ উৎপাদনে খরচ বেশি। কেনাকাটায় অনেক বেশি ব্যয় হয়। সরকারের কাছে বেসরকারি উদ্যোক্তারা পাওয়ার প্ল্যান্টের পরিত্যক্ত অংশে বায়ুবিদ্যুৎ উৎপাদনের অনুমতি চাইলে তা মেলে না। মূলত আইনি জটিলতায় বেড়ে যাচ্ছে খরচ। ক্ষতি হচ্ছে বিদ্যুৎ ব্যবসায়ীদের। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের লোকসান দিন দিন বাড়ছে। ভবিষ্যতে আরও বাড়তে পারে। বিপিসি বছরের শুরুতে লোকসান দেখায়। কিন্তু বছর শেষে লাভ করে। সংস্থাটির আর্থিক হিসাব-নিকাশ প্রশ্নবিদ্ধ।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘সারা বিশ্বে সৌরবিদ্যুৎ তথা নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়ছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎস বাড়াতে কাজ করছে সরকার। নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়াতে পারলে আমাদের বিদ্যুতের ওপর থেকে চাপ কমে আসবে। বিদ্যুৎ উৎপাদন নীতিমালা নিয়ে কাজ চলছে। উৎপাদনকারী ও ব্যবহারকারী সবার সুযোগ-সুবিধা বিবেচনা করা হবে।’
পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম রেজওয়ান খান বলেন, দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং ক্রয়নীতিমালা যুগোপযোগী করতে হবে। ক্রয়ের সময় বাজার মনিটরিং করতে হবে। বিশেষ করে জমি অধিগ্রহণ এবং পাওয়ার জেনারেশনে দক্ষতা বাড়াতে হবে। ক্রয়াদেশ প্রদানে উপযুক্ত ইপিসি ঠিকাদার নির্বাচন করতে হবে।
মূল প্রবন্ধে সিপিডির রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট আতিকুজ্জামান শাহজীদ বলেন, বাংলাদেশে টেকসই বিদ্যুৎ খাত গড়ে তুলতে আগামী দুই দশকে বিপুল বিনিয়োগ প্রয়োজন হবে। বর্তমানে ১৬ হাজার ৬৫৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রয়োজন ১৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০৩৫ সালে ১২ হাজার ৮৩২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে লাগবে ১৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ২০৪১ সালে ১১ হাজার ১২৪ মেগাওয়াট উৎপাদনে প্রয়োজন হবে ১১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। সর্বমোট ৩২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ৩০টি বৈশ্বিক জলবায়ু তহবিল থেকে সংগ্রহ করা সম্ভব। আর নবায়নযোগ্য জ্বালানির সম্ভাবনা কাজে লাগাতে না পারলে জলবায়ু অভিযোজন ও নির্গমন হ্রাসের লক্ষ্য অর্জন কঠিন হয়ে যাবে।

দেশে বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা হচ্ছে প্রচুর, কিন্তু বাস্তবে এ উন্নয়নের সঙ্গে কথিত অগ্রগতির মিল কম। উৎপাদনক্ষমতা বেড়েছে, কিন্তু যথাযথ ব্যবহার না হওয়ায় বড় অপচয় হয়। বিদ্যুতের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ থেকে শুরু করে উৎপাদন পর্যন্ত এই অপচয় কমানো জরুরি।
আজ সোমবার রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক ইন সেন্টারে সিপিডি আয়োজিত ‘রিসেন্ট প্রকিউরমেন্ট ইনিশিয়েটিভ অব রিনিউয়েবল এনার্জি আন্ডার দ্য পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অ্যাক্ট অ্যান্ড রুলস’ শীর্ষক ডায়ালগে এসব বিষয় উঠে আসে।
সিপিডির গবেষণা পরিচালক খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, দেশে এখন বিদ্যুৎ উৎপাদনে খরচ বেশি। কেনাকাটায় অনেক বেশি ব্যয় হয়। সরকারের কাছে বেসরকারি উদ্যোক্তারা পাওয়ার প্ল্যান্টের পরিত্যক্ত অংশে বায়ুবিদ্যুৎ উৎপাদনের অনুমতি চাইলে তা মেলে না। মূলত আইনি জটিলতায় বেড়ে যাচ্ছে খরচ। ক্ষতি হচ্ছে বিদ্যুৎ ব্যবসায়ীদের। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের লোকসান দিন দিন বাড়ছে। ভবিষ্যতে আরও বাড়তে পারে। বিপিসি বছরের শুরুতে লোকসান দেখায়। কিন্তু বছর শেষে লাভ করে। সংস্থাটির আর্থিক হিসাব-নিকাশ প্রশ্নবিদ্ধ।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘সারা বিশ্বে সৌরবিদ্যুৎ তথা নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়ছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎস বাড়াতে কাজ করছে সরকার। নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়াতে পারলে আমাদের বিদ্যুতের ওপর থেকে চাপ কমে আসবে। বিদ্যুৎ উৎপাদন নীতিমালা নিয়ে কাজ চলছে। উৎপাদনকারী ও ব্যবহারকারী সবার সুযোগ-সুবিধা বিবেচনা করা হবে।’
পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম রেজওয়ান খান বলেন, দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং ক্রয়নীতিমালা যুগোপযোগী করতে হবে। ক্রয়ের সময় বাজার মনিটরিং করতে হবে। বিশেষ করে জমি অধিগ্রহণ এবং পাওয়ার জেনারেশনে দক্ষতা বাড়াতে হবে। ক্রয়াদেশ প্রদানে উপযুক্ত ইপিসি ঠিকাদার নির্বাচন করতে হবে।
মূল প্রবন্ধে সিপিডির রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট আতিকুজ্জামান শাহজীদ বলেন, বাংলাদেশে টেকসই বিদ্যুৎ খাত গড়ে তুলতে আগামী দুই দশকে বিপুল বিনিয়োগ প্রয়োজন হবে। বর্তমানে ১৬ হাজার ৬৫৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রয়োজন ১৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০৩৫ সালে ১২ হাজার ৮৩২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে লাগবে ১৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ২০৪১ সালে ১১ হাজার ১২৪ মেগাওয়াট উৎপাদনে প্রয়োজন হবে ১১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। সর্বমোট ৩২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ৩০টি বৈশ্বিক জলবায়ু তহবিল থেকে সংগ্রহ করা সম্ভব। আর নবায়নযোগ্য জ্বালানির সম্ভাবনা কাজে লাগাতে না পারলে জলবায়ু অভিযোজন ও নির্গমন হ্রাসের লক্ষ্য অর্জন কঠিন হয়ে যাবে।

চীন বাংলাদেশের পাটশিল্পে বড় পরিসরে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। আজ শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে চার দিনব্যাপী ‘কৃষি ও খাদ্যে রাজনৈতিক অঙ্গীকার’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের তৃতীয় দিনের প্রথম অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
৩ দিন আগে
বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতে নতুন মাইলফলক তৈরি হয়েছে। রামপালে মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্ট (এমএসটিপিপি) গত নভেম্বর মাসে এককভাবে ৭০০ মিলিয়ন (৭০ কোটি) ইউনিট (এমইউ) বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছে।
৩৫ মিনিট আগে
দুই মাসের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার দিকে এগোতে গিয়ে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ জানিয়েছেন, নির্বাচনের সময় কোনো প্রার্থীর পক্ষে এলাকায় প্রভাব ফেলবে, এমন কোনো প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, রাজনৈতিক প্রার্থীরা নানা প্রকল্পের অনুমোদনের চেষ্টা-তদবির করছেন, তবে সরকা
৮ ঘণ্টা আগে
দেশের অর্থনীতিতে ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়ানোর সংকেত দেখা গেলেও সামনে রয়েছে পাঁচ চ্যালেঞ্জ। চ্যালেঞ্জগুলো হলো বিনিয়োগে স্থবিরতা, রাজস্ব সংগ্রহে বড় ঘাটতি, আমদানি-রপ্তানিতে অস্থিরতা, টাকার ক্রয়ক্ষমতা বাড়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে ঝুঁকি, সরকারি ঋণনির্ভরতা।
৮ ঘণ্টা আগে