Ajker Patrika

স্বাস্থ্যে অর্থের যথাযথ ব্যবহারই চ্যালেঞ্জ  

নিজস্ব প্রতিবেদক
স্বাস্থ্যে অর্থের যথাযথ ব্যবহারই চ্যালেঞ্জ  

ঢাকা: কোভিড–১৯ মোকাবিলায় ২০২০–২১ অর্থবছরে ১০ হাজার কোটি টাকা থোক বরাদ্দ রাখা হয়েছিল। পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে না আসায় ও ভ্যাকসিন কার্যক্রমের বিষয়টি বিবেচনায় রেখে ২০২১–২২ অর্থবছরের বাজেটেও সরকার যে বাড়তি ব্যয়ের পরিকল্পনা নিয়েছে, তার বড় অংশজুড়েই থাকছে করোনা। এবারও ১০ হাজার কোটি টাকা থোক বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার ২০২১–২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপনকালে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এই প্রস্তাব দেন।

প্রস্তাবিত বাজেটে বলা হয়, দেশের মোট জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ মানুষকে টিকাকরণের আওতায় আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। যেখানে প্রথম পর্যায়ে ঝুঁকিপূর্ণ জনগণের টিকা নিশ্চিত করার পাশাপাশি প্রতি মাসে ২৫ লাখ ডোজ টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। চলমান এই টিকাদান কার্যক্রম ইপিআই ও সিডিসি (কম্যুনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল) এর সমন্বয়ে এ ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রম মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

কোভিড–১৯ মোকাবিলায় গৃহীত কার্যক্রমসমূহ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিবেচনায় নিয়ে তিন হাজার ৪৮৬ কোটি টাকা বাড়িয়ে ২০২১–২২ অর্থবছরে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ খাতে ৩২ হাজার ৭৩১ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী। গত অর্থবছরে ছিল ২৯ হাজার ২৪৫ হাজার কোটি টাকা।

করোনায় মহামারি থেকে জনজীবনের সুরক্ষার ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে তিন কোটি ডোজ অক্সফোর্ড–অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কিনেছে সরকার। এ ছাড়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গঠিত কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটি থেকে দেশের মোট জনসংখ্যার ২০ ভাগ, তথা তিন কোটি ৪০ লাখ মানুষের জন্য ছয় কোটি ৮০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে। এরইমধ্যে এক লাখ ৬০২ ডোজ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া চীন, রাশিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফাইজার কোম্পানি ও ফ্রান্স/বেলজিয়ামভিত্তিক সানোফি থেকে ভ্যাকসিন কেনার পরিকল্পনা রয়েছে। এর মধ্যে চীন ও রাশিয়ার টিকা কেনার পাশাপাশি উৎপাদনের লক্ষ্যে আলোচনা এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে।

ভ্যাকসিন ক্রয়ে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক হতে ৯৪০ মিলিয়ন ডলার পাওয়ার লক্ষ্যে ঋণচুক্তি চূড়ান্ত পর্যায়ে। পাশাপাশি ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক এবং এআইআইবি হতে ভ্যাকসিন কেনার জন্য সহায়তা পাওয়া যেতে পারে।

সরকার দেশের সকল নাগরিককে বিনা মূল্যে ভ্যাকসিন প্রদান নিশ্চিত করবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। এর জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক ডোজ ভ্যাকসিন সংগ্রহের জন্য যত টাকাই লাগুক না কেন, সরকার তা দেবে। সে লক্ষ্যে এ বাজেটে পর্যাপ্ত বরাদ্দ রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।

চলমান মহামারি মোকাবিলায় স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে জানিয়ে মুস্তফা কামাল বলেন, এরইমধ্যে কিছু প্রকল্পের বাস্তবায়ন চলতি অর্থ বছরে শুরু হয়েছে। আগামী অর্থবছরেও তার বাস্তবায়ন অব্যাহত থাকবে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে অর্থ ব্যয় হচ্ছে বিশ্ব ব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক ও এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি) হতে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, দ্রুততম সময়ে স্বাস্থ্য সেবা জনগণের কাছে পৌঁছানোর লক্ষ্যে চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্য কর্মী নিয়োগ ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি স্থাপনের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। উপজেলা কমপ্লেক্সসমূহে আধুনিক যন্ত্রপাতি (ইসিজি মেশিন, নেবুলাইজার মেশিন, অটোক্লেভ, আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন, ব্লাড কানেকশন মনিটর ইত্যাদি) স্থাপন করা হবে।

প্রতিটি বিভাগে একটি করে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের উদ্যোগ বাস্তবায়নে এবারও বরাদ্দ রাখা হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণ এবং সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও সকল জেলা সদর হাসপাতালে নেফ্রোলজি ইউনিট ও কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার স্থাপনে বাস্তবায়ন চলছে।

তবে স্বাস্থ্য–শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতের গবেষণা গুরুত্ব পায়নি বাজেটে। গতবারের মত এবারও ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ এ খাতে। কিন্তু বাড়ানো হয়েছে ব্যয়ের পরিধি।

অর্থ বরাদ্দ বাড়লেও কাঙ্ক্ষিত সেবা পাওয়া নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে মন্তব্য করে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে যে ব্যয় ধরা হয়েছে তাতে সবকিছু ভালোভাবেই হওয়া কথা। কিন্তু যারা চেয়ারে বসে আছেন, তাঁরা সেটি ঠিকঠাকভাবে ব্যয় করতে না পারায় মূলত সমস্যা। প্রধানমন্ত্রী যেখানে অর্থ দিচ্ছেন, তাঁরা তা মানুষের সেবায় কাজে না লাগিয়ে সরকারকে অর্থ ফেরত দিয়ে নিজেদের বড়ত্ব দেখাচ্ছে। অথচ মানুষ সরকারি হাসপাতালগুলোতে চাহিদামতো সেবা পাচ্ছে না।

মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বলেন, আমি ভেবেছিলাম স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বাড়বে কিন্তু হয়নি। চলমান মহামারি ঠেকানোর এখন একমাত্র উপায় টিকা। পৃথিবীর যেকোনো প্রান্ত থেকে সেই টিকা আনতে হবে। হাসপাতালগুলোতে অর্থ যেন শুধু কেনাকাটায় ব্যয় না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। মানুষের সেবা নিশ্চিত করতে না পারলে এত অর্থ বরাদ্দ দিয়ে কি হবে–যোগ করেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষিকা থাকেন ঢাকায়, খালিয়াজুরীতে তাঁর নামে স্বাক্ষর করেন স্নাতকপড়ুয়া

জাকির নায়েক বিতর্কে ভারতের প্রতিক্রিয়ার যে জবাব দিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

সকাল থেকে রাজধানীতে তীব্র যানজট, কারণ জানাল ডিএমপি

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের ফেসবুক প্রোফাইল ঘাঁটবেন না, মুরাদ টাকলার সঙ্গে দেখা হবে

সৌদি সরকারের দেওয়া দুম্বার মাংস: মনিরামপুরে বিতরণে ১২০ প্যাকেট হাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিকাশ ও নগদ ছাড়াই দেশে আন্তএমএফএস লেনদেন চালু

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০২ নভেম্বর ২০২৫, ১৯: ৫৩
বিকাশ ও নগদ ছাড়াই দেশে আন্তএমএফএস লেনদেন চালু

বাংলাদেশে আন্তমোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (এমএফএস) লেনদেন শুরু হলেও দেশের সবচেয়ে বড় দুই এমএফএস প্রতিষ্ঠান নগদ ও বিকাশ এখনো এতে যুক্ত হতে পারেনি। নগদের লাইসেন্সের জটিলতা ও বিকাশ নিরাপত্তার ঝুঁকি দেখিয়ে তাদের অংশগ্রহণ স্থগিত করেছে।

গতকাল প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, নগদের লাইসেন্সের জটিলতার কারণে আপাতত আন্তএমএফএস সেবায় যুক্ত করা হয়নি। গভর্নর দেশে ফিরলে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। নিরাপত্তার ঘাটতির কারণ দেখিয়ে বিকাশও আপাতত আন্তলেনদেনে অংশ নিচ্ছে না। এ জন্য প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে তিন মাস সময় চেয়েছে।

এদিকে, এখন পর্যন্ত কতগুলো প্রতিষ্ঠান এই সেবায় যুক্ত হয়েছে, তা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক পরে চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করবে।

প্রযুক্তিগত জটিলতার মধ্যেও এ উদ্যোগ কতটা যৌক্তিক—এমন প্রশ্নে মুখপাত্র বলেন, টেকনোলজি-নির্ভর লেনদেন থেকে পেছনে যাওয়ার সুযোগ নেই। বিশ্ব এখন প্রযুক্তিনির্ভর অর্থনীতির দিকে যাচ্ছে। তাই জ্ঞান ও সক্ষমতা বাড়ানো ছাড়া বিকল্প নেই।

বিকাশের হেড অব করপোরেট কমিউনিকেশনস অ্যান্ড পিআর শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম বলেন, ‘বিকাশ শুরু থেকেই আন্তলেনদেন সেবা চালুর উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত আছে। আমরা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। এই সেবা চালুর মাধ্যমে গ্রাহকদের ডিজিটাল লেনদেন আরও সহজ ও নিরাপদ হবে।’

শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম আরও বলেন, তবে এই ব্যবস্থায় অন্যান্য অংশীজনের প্রস্তুতির ওপর কার্যকারিতা নির্ভর করছে। আমরা শক্তিশালী অথেনটিকেশন ও স্তরভিত্তিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করছি, যাতে লেনদেন নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয় এবং কোনো বিরোধ দেখা দিলে তা দ্রুত সমাধান করা যায়। প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হওয়ার পর খুব শিগগিরই গ্রাহকেরা পূর্ণাঙ্গ সেবাটি ব্যবহার করতে পারবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষিকা থাকেন ঢাকায়, খালিয়াজুরীতে তাঁর নামে স্বাক্ষর করেন স্নাতকপড়ুয়া

জাকির নায়েক বিতর্কে ভারতের প্রতিক্রিয়ার যে জবাব দিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

সকাল থেকে রাজধানীতে তীব্র যানজট, কারণ জানাল ডিএমপি

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের ফেসবুক প্রোফাইল ঘাঁটবেন না, মুরাদ টাকলার সঙ্গে দেখা হবে

সৌদি সরকারের দেওয়া দুম্বার মাংস: মনিরামপুরে বিতরণে ১২০ প্যাকেট হাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক হলেন অতিরিক্ত সচিব আবদুর রহিম খান

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
এফবিসিসিআইর নতুন প্রশাসক বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আবদুর রহিম খান। ছবি: এফবিসিসিআই
এফবিসিসিআইর নতুন প্রশাসক বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আবদুর রহিম খান। ছবি: এফবিসিসিআই

দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীদের সংগঠন দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আবদুর রহিম খান। গতকাল রোববার সকালে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জারি করা এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়। তিনি সাবেক প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমানের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন।

অফিস আদেশে বলা হয়, ট্রেড অর্গানাইজেশন অ্যাক্ট, ২০২২-এর ধারা ১৭ অনুযায়ী মো. আবদুর রহিম খানকে এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

আদেশ অনুযায়ী, তিনি ১২০ দিনের মধ্যে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্পন্ন করে নির্বাচিত বোর্ডের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করবেন।

জানা গেছে, গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর এফবিসিসিআইয়ে প্রথমবারের মতো প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ পান বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সদস্য ও সাবেক অতিরিক্ত সচিব মো. হাফিজুর রহমান। তাঁকে ১২০ দিনের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্নের দায়িত্ব দেওয়া হলেও নানা কারণে তা সম্ভব হয়নি। পরে তাঁর মেয়াদ কয়েক দফা বাড়ানো হয়। গত ১০ অক্টোবর তিনি সরকারি চাকরি থেকে অবসরে গেলে নতুন প্রশাসক হিসেবে মো. আবদুর রহিম খানকে নিয়োগ দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষিকা থাকেন ঢাকায়, খালিয়াজুরীতে তাঁর নামে স্বাক্ষর করেন স্নাতকপড়ুয়া

জাকির নায়েক বিতর্কে ভারতের প্রতিক্রিয়ার যে জবাব দিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

সকাল থেকে রাজধানীতে তীব্র যানজট, কারণ জানাল ডিএমপি

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের ফেসবুক প্রোফাইল ঘাঁটবেন না, মুরাদ টাকলার সঙ্গে দেখা হবে

সৌদি সরকারের দেওয়া দুম্বার মাংস: মনিরামপুরে বিতরণে ১২০ প্যাকেট হাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অক্টোবর মাসে সর্বোচ্চ মাসিক লেনদেনের রেকর্ড নগদের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
বাংলাদেশ ডাক বিভাগের ডিজিটাল লেনদেন সেবা নগদ। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
বাংলাদেশ ডাক বিভাগের ডিজিটাল লেনদেন সেবা নগদ। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

অক্টোবর মাসে সর্বোচ্চ লেনদেনের নতুন রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ ডাক বিভাগের ডিজিটাল লেনদেন সেবা নগদ। এ মাসে ৩৪ হাজার ৭০৫ কোটি টাকার বেশি লেনদেন করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

আজ রোববার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে নগদ।

এই অসামান্য অর্জন উপলক্ষে কয়েক কোটি নিবন্ধিত গ্রাহকের বিশাল পরিবারকে শুভেচ্ছা জানিয়ে নগদ কর্তৃপক্ষ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, যাত্রা শুরুর পরপরই গ্রাহক প্রিয় মোবাইল আর্থিক সেবা হিসেবে বাজারে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে নগদ। এ সময়ে প্রতিষ্ঠানটির গ্রাহক সংখ্যা ও লেনদেন উল্লেখযোগ্যহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ মাসে প্রতিষ্ঠানটি নিজেদের ইতিহাসের সর্বোচ্চ লেনদেনের অঙ্ক পার করল।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এর আগে চলতি বছরের মার্চে একবার মাসে ৩৪ হাজার কোটি টাকার লেনদেনের অঙ্ক ছুঁয়ে যায় নগদ। তারও আগে ২০২৪ সালের জুন মাসে একবার নগদের মাধ্যমে ৩২ হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়। সব মিলে বাংলাদেশের সামগ্রিক ডিজিটাল লেনদেন নতুন উচ্চতায় তুলে আনার ক্ষেত্রে অনন্য ভূমিকা রাখছে নগদ।

নগদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, নগদ-এর রেকর্ড গড়া এই লেনদেনের ক্ষেত্রে সরকারি ভাতা বিতরণ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এই মাসে নগদের মাধ্যমে সমাজসেবা ও মহিলা অধিদপ্তরের প্রায় ৭৯ লাখ মানুষের মধ্যে ভাতা বিতরণ করেছে নগদ। তাছাড়া উল্লেখযোগ্য লেনদেনের মধ্যে ছিল—ক্যাশ ইন, ক্যাশ আউট, সেন্ড মানি, পেমেন্ট ও মোবাইল রিচার্জ। আর এসব লেনদেনের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় লেনদেনের নতুন রেকর্ড গড়েছে প্রতিষ্ঠানটি। তাই গ্রাহক পছন্দের সেরা মোবাইল আর্থিক সেবা অপারেটর হয়ে উঠেছে নগদ।

নতুন এই মাইলফলক অর্জনে সব গ্রাহক, কর্মী, উদ্যোক্তাসহ সম্পৃক্তদের অভিনন্দন জানিয়ে নগদের প্রশাসক মো. মোতাছিম বিল্লাহ বলেন, ‘সাফল্য কখনোই ঘটনাচক্রে আসে না। এটা সকলের যৌথ পরিশ্রম ও প্রচেষ্টার ফসল। তাছাড়া সবাই যখন একই লক্ষ্য ও একই মূল্যবোধ ধারণ করে কাজ করে তখন শ্রেষ্ঠত্বের জন্য লড়াই করাটাও সহজ হয়।’

মোতাছিম বিল্লাহ আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ ডাক বিভাগের ডিজিটাল লেনদেন প্রতিষ্ঠান হিসেবে বর্তমানে নগদ আরও উন্নত সেবার মাধ্যমে গ্রাহকের অর্থের অধিকতর নিশ্চয়তা দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। নগদের বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিষদের ওপরেও গ্রাহকদের আস্থা আগের চেয়ে অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। আর গ্রাহকদের আস্থার কারণেই বাড়ছে লেনদেন।’

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সর্বোচ্চ লেনদেনের এই মাসে একদিনে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ১৫ অক্টোবর। এদিন নগদের গ্রাহকেরা মোট ১ হাজার ৬৪৫ কোটি টাকার লেনদেন করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষিকা থাকেন ঢাকায়, খালিয়াজুরীতে তাঁর নামে স্বাক্ষর করেন স্নাতকপড়ুয়া

জাকির নায়েক বিতর্কে ভারতের প্রতিক্রিয়ার যে জবাব দিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

সকাল থেকে রাজধানীতে তীব্র যানজট, কারণ জানাল ডিএমপি

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের ফেসবুক প্রোফাইল ঘাঁটবেন না, মুরাদ টাকলার সঙ্গে দেখা হবে

সৌদি সরকারের দেওয়া দুম্বার মাংস: মনিরামপুরে বিতরণে ১২০ প্যাকেট হাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিনিয়োগ সমন্বয় কমিটির সিদ্ধান্ত: এসএমই নীতিতে বড় সংস্কার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০২ নভেম্বর ২০২৫, ০৯: ৩৮
বিনিয়োগ সমন্বয় কমিটির সিদ্ধান্ত: এসএমই নীতিতে বড় সংস্কার

ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে (এসএমই) আরও গতিশীল ও সক্ষম করতে নীতিমালায় বড় পরিবর্তন আনছে সরকার। এর অংশ হিসেবে রপ্তানি আদেশ থেকে প্রাপ্ত আয়ের ১০ শতাংশ ব্যাংকে জমা রাখার বাধ্যবাধকতা এসএমই উদ্যোক্তাদের ক্ষেত্রে আর প্রযোজ্য থাকবে না। পাশাপাশি নমুনা ছাড়ের প্রক্রিয়া দ্রুত ও সহজ করতে পদক্ষেপ নিচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ডিজিটাল মানিব্যাগের মাধ্যমে অর্থ গ্রহণে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের মতোই সুবিধা দিতে বাংলাদেশ ব্যাংক নীতিমালা সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে। অনলাইন বিক্রির অর্থ যেন বিলম্ব ছাড়াই উদ্যোক্তাদের ব্যাংক হিসাবে জমা হয়—সে জন্য এসএসএল কমার্স ও সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোকে বিশেষ নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। এসব পরিবর্তনের মূল লক্ষ্য, অর্থপ্রবাহকে আরও স্বচ্ছন্দ করা এবং ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ব্যবসায়িক গতি ফিরিয়ে আনা।

এসএমই খাতকে জাতীয় অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তিতে রূপান্তরের রূপরেখা নির্ধারণে উচ্চপর্যায়ের বিনিয়োগ সমন্বয় কমিটি গত কয়েক মাসে পরপর চারটি বৈঠক করেছে। এসব বৈঠকে অংশ নিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিকবিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানসহ সরকারি ও বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিরা। আলোচনায় উদ্যোক্তাদের সরাসরি অংশগ্রহণের সুযোগ বাড়ানো, নীতি প্রণয়নে তাঁদের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া এবং বাস্তব সমস্যাগুলো সমাধানে সমন্বিত দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলার ওপর জোর দেওয়া হয়।

গতকাল শনিবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বার্তায় এ বিষয়ে জানানো হয়, এসএমই খাতকে কেন্দ্র করে গঠিত এসব বৈঠকের ধারাবাহিকতা শুরু হয় ২৮ আগস্ট, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আয়োজিত প্রথম সভার মাধ্যমে। সেখানে আলোচনায় উঠে আসে এসএমই উদ্যোক্তাদের প্রধান চ্যালেঞ্জ—অর্থ প্রদানে বিলম্ব, কাস্টমসের জটিলতা, লাইসেন্সপ্রাপ্তিতে বাধা ও ঋণ পাওয়ার সীমাবদ্ধতা। পরবর্তী ধাপে, ২১ সেপ্টেম্বর এসএমই ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে আয়োজিত বৈঠকে ২ ঘণ্টাব্যাপী মুক্ত আলোচনায় উদ্যোক্তারা তাঁদের বাস্তব অভিজ্ঞতা, সমস্যা ও প্রস্তাব তুলে ধরেন। সেই আলোচনার ভিত্তিতে গৃহীত নির্দিষ্ট সুপারিশগুলো পরবর্তী সময়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সংস্থাগুলোর কাছে পাঠানো হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৮ অক্টোবর দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত উদ্যোক্তাদের নিয়ে অনলাইনে আরেকটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে মাঠপর্যায়ের মতামত ও বাস্তব চিত্র সরাসরি উপস্থাপন করা হয়। পরদিন, ৯ অক্টোবর বাংলাদেশ ব্যাংকে আয়োজিত বৈঠকে এসব প্রস্তাব পর্যালোচনা করে আরও চারটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়, যা এখন বাস্তবায়নের পথে।

বাস্তবায়নাধীন সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো উদ্যোক্তাবান্ধব নতুন আর্থিক পণ্য তৈরির উদ্যোগ। বাংলাদেশ ব্যাংক ও এসএমই ফাউন্ডেশন যৌথভাবে এ নিয়ে একটি কর্মশালার আয়োজন করেছে। একই সঙ্গে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পমাস্টার সার্কুলারের কার্যকারিতা যাচাইয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বাণিজ্য লাইসেন্স ছাড়াই ঋণ প্রদানের সম্ভাব্যতা যাচাই চলছে। ব্যাংকের পুনঃ অর্থায়ন কর্মসূচি আরও আকর্ষণীয় করতে সুদের হার পুনর্বিবেচনার বিষয়টিও আলোচনায় রয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক ইতিমধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করেছে। এখন থেকে ব্যাংক গ্যারান্টি ছাড়া আগাম অর্থ প্রদানের সীমা ১০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ২০ হাজার মার্কিন ডলার করা হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রা সংরক্ষণ (ইআরকিউ) হিসাব থেকে পরিশোধের সীমাও ২৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি স্থানীয় বিমা কোম্পানির কভারেজসহ উন্মুক্ত হিসাবের মাধ্যমে রপ্তানি লেনদেনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে, এইচএস কোড-সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনে এনবিআর নতুন নিয়ম চালু করেছে—এখন থেকে আট অঙ্কের কোডের প্রথম চার অঙ্ক মিলে গেলেই শুল্ক কর্তৃপক্ষ মূল্যায়ন সম্পন্ন করবে। এতে পণ্যছাড় প্রক্রিয়া হবে আরও দ্রুত ও সরল।

এসএমই ফাউন্ডেশন উদ্যোক্তাদের জন্য নতুন সুযোগ তৈরির উদ্যোগও নিয়েছে। প্রস্তাব করা হয়েছে, প্রতিটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের নামে বছরে ন্যূনতম তিন হাজার মার্কিন ডলারের পৃথক বৈদেশিক মুদ্রা কোটা বরাদ্দ থাকবে। পাশাপাশি বিশেষ বৈদেশিক মুদ্রা কার্ড চালুর পরিকল্পনাও রয়েছে। বিদেশি ক্রেতাদের কাছে বাংলাদেশের ক্ষুদ্রশিল্পকে আরও দৃশ্যমান করতে বৈদেশিক বাণিজ্য ইনস্টিটিউট একটি আন্তর্জাতিক প্রতিবেদন প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, ‘এই সংস্কারের লক্ষ্য অর্থনীতিতে গতি ফিরিয়ে আনা। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা আমাদের অর্থনীতির আসল মেরুদণ্ড—তাঁদের জন্য ব্যবসার প্রতিটি ধাপকে সহজ করতে হবে। অর্থায়ন, অর্থ প্রদান কিংবা সরবরাহ—সব জায়গায় সরকারকে সহায়ক ভূমিকা নিতে হবে, বাধা নয়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষিকা থাকেন ঢাকায়, খালিয়াজুরীতে তাঁর নামে স্বাক্ষর করেন স্নাতকপড়ুয়া

জাকির নায়েক বিতর্কে ভারতের প্রতিক্রিয়ার যে জবাব দিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

সকাল থেকে রাজধানীতে তীব্র যানজট, কারণ জানাল ডিএমপি

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের ফেসবুক প্রোফাইল ঘাঁটবেন না, মুরাদ টাকলার সঙ্গে দেখা হবে

সৌদি সরকারের দেওয়া দুম্বার মাংস: মনিরামপুরে বিতরণে ১২০ প্যাকেট হাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত