Ajker Patrika

চেয়ারে আঠা লাগিয়ে অপদস্থ, শিক্ষার্থীকে শাসন করায় শিক্ষককে মারধর

শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি
চেয়ারে আঠা লাগিয়ে অপদস্থ, শিক্ষার্থীকে শাসন করায় শিক্ষককে মারধর

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষে প্রধান শিক্ষকের চেয়ারে এক শিক্ষার্থী ‘সুপার গ্লু’ লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। পরে ওই চেয়ারে শিক্ষকের প্যান্ট আটকে গেলে তিনি বিব্রতকর পরিস্থিতে পরেন এবং কয়েকজন শিক্ষার্থীকে মারধর দিয়ে শাসন করেন বলে জানা গেছে। এদিকে শিক্ষার্থীদের মারধরের কারণে রাস্তায় ওই শিক্ষককে আটকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ রয়েছে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির ছেলে আলম হোসেনসহ স্থানীয় কয়েকজনের বিরুদ্ধে। 

এসব ঘটনায় পরবর্তীতে দু-পক্ষই আইনগত প্রতিকার দাবি করে শ্যামনগর থানাসহ জেলা এবং উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানা গেছে। আলোচিত এ ঘটনা ঘটেছে শ্যামনগর উপজেলার কাশিমাড়ীর ৭৪ নং গোবিন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। 

এ বিষয়ে আজ সোমবার উপজেলা প্রশাসন, প্রাথমিক শিক্ষা অফিস, এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তিরা বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করেছেন। ওই শিক্ষক এ বৈঠকে অনুপস্থিত থাকায় আগামীকাল মঙ্গলবার একই বিষয়ে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে জানিয়েছেন শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী ওয়াহিদ মোর্শেদ। 

ওই বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী, ভুক্তভোগী শিক্ষক এবং স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত বুধবার বেলা ১২টার দিকে প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেম ৫ম শ্রেণির ক্লাস নিতে শ্রেণিকক্ষে যান। ওই শিক্ষক ব্ল্যাকবোর্ডে শিক্ষা সহায়ক বিষয় লেখার সুযোগে শিক্ষার্থীদের একজন কৌশলে তাঁর চেয়ারে ‘সুপার গ্লু’ (আঠা) ঢেলে দেয়। এ সময় কয়েকজন শিক্ষার্থী কৌশলে শিক্ষক আবুল কাশেমকে ওই চেয়ারে বসার ব্যবস্থা করে। একপর্যায়ে তিনি পুনরায় ব্ল্যাকবোর্ডের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে তার পরনের প্যান্ট চেয়ারের সঙ্গে আটকে গেলে শিক্ষার্থীরা এ নিয়ে ব্যঙ্গ করে। বিষয়টি বুঝতে পেরে অসদাচরণের অভিযোগে শিক্ষক আবুল কাশেম শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত ৫ শিক্ষার্থীকে একই সময় শাসন করেন। 

জানা গেছে, শিক্ষার্থীরা বাড়িতে ফিরে প্রধান শিক্ষকের হাতে মারধরের শিকার হওয়ার বিষয়টি পরিবারের সদস্যদের জানায়। একপর্যায়ে সন্তানদের শাসনের ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে কাশিমাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির ছেলে আলম হোসেনের নেতৃত্বে স্থানীয় কয়েকজন গতকাল রোববার স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে শিক্ষক আবুল কাশেমকে বেপরোয়াভাবে মারধর করে। 

ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেম জানান, বসার চেয়ারে সুপার গ্লু আঠা লাগিয়ে তাঁকে অপদস্থ করার অপরাধে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে চড়-থাপ্পড় দেওয়া হয়। বিষয়টিকে পুঁজি করে আগে থেকে বিরোধিতাকারী আলম হোসেন লোকজন নিয়ে রাস্তায় ফেলে তাঁকে মারধর করে। আহত হয়ে দুদিন শ্যামনগর হাসপাতালে থেকে চিকিৎসা নেওয়ার পর বাড়িতে ফিরে শ্যামনগর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। 

এদিকে মারধরের শিকার শিক্ষার্থীর বাবা আলম হোসেন জানান, অন্য শ্রেণির শিক্ষার্থীরা চেয়ারে চুইংগাম ফেলে রাখে। ক্লাস নেওয়ার একপর্যায়ে চেয়ারে বসতে গিয়ে প্যান্ট আটকে যাওয়ায় শিক্ষক আবুল কাশেম তাঁর সন্তানসহ কয়েকজনকে শারীরিকভাবে মারাত্মক নির্যাতন করেছে। তাই তারা ওই শিক্ষককে চড়-থাপ্পড় মেরেছেন। তিনি জেলা ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন। 

এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার রাফিজ মিয়া জানান, ছাত্র-ছাত্রীদের অন্যায়ভাবে মারধরের অভিযোগে শিক্ষক আবুল কাশেমের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন কয়েকজন অভিভাবক। তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

এদিকে এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন, প্রাথমিক শিক্ষা অফিস, এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তিরাসহ বৈঠক করেছেন বলে জানা গেছে। 

এ বিষয়ে শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী ওয়াহিদ মোর্শেদ জানান, এ ঘটনায় উভয় পক্ষ দুটি পৃথক অভিযোগ দিয়েছে। বিষয়টি কোমলমতি শিশুদের ভবিষ্যৎ এবং একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্বার্থ সম্পর্কিত। সে কারণে উপজেলা প্রশাসন, প্রাথমিক শিক্ষা অফিস, এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তিরা বিষয়টি নিয়ে আজ (সোমবার) বৈঠক করেছেন। আগামীকাল মঙ্গলবার একই বিষয়ে বৈঠকের পর এ বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাবে।’ 

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আক্তার হোসেন বলেন, ‘অসুস্থতার কারণে সোমবারের বৈঠকে ওই শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন না। তার সঙ্গে কথা বলার পর এ বিষয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যাবে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষিকা থাকেন ঢাকায়, খালিয়াজুরীতে তাঁর নামে স্বাক্ষর করেন স্নাতকপড়ুয়া

জাকির নায়েক বিতর্কে ভারতের প্রতিক্রিয়ার যে জবাব দিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

সকাল থেকে রাজধানীতে তীব্র যানজট, কারণ জানাল ডিএমপি

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের ফেসবুক প্রোফাইল ঘাঁটবেন না, মুরাদ টাকলার সঙ্গে দেখা হবে

সৌদি সরকারের দেওয়া দুম্বার মাংস: মনিরামপুরে বিতরণে ১২০ প্যাকেট হাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গণভোটের আদেশ চুপ্পুর কাছ থেকে নেওয়া হবে জুলাই বিপ্লবের কফিনে শেষ পেরেক: হাসনাত

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
বরিশাল নগরীতে এনসিপির সমন্বয় সভায় হাসনাত আবদুল্লাহ। ছবি: আজকের পত্রিকা
বরিশাল নগরীতে এনসিপির সমন্বয় সভায় হাসনাত আবদুল্লাহ। ছবি: আজকের পত্রিকা

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, জুলাই সনদের বাস্তবায়নের প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে গণভোটের আদেশ জারি করতে হবে। অবশ্যই সেটি ড. ইউনূসকে করতে হবে। তিনি বলেন, ‘এই গণভোটের আদেশ যদি চুপ্পুর কাছ থেকে নিতে হয়, সেটা হবে জুলাই বিপ্লবের কফিনে শেষ পেরেক।

আজ রোববার বিকেলে বরিশাল নগরীতে এনসিপির বরিশাল জেলা ও মহাগর সমন্বয় সভা শুরুর আগে সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেন হাসানাত।

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘যাঁরা গণতান্ত্রিক উত্তরণ চাচ্ছেন, দীর্ঘদিন রাজপথে ফ্যাসিবাদী লড়াই করেছেন, রক্ত দিয়েছেন, নেতা-কর্মীর জীবন উৎসর্গ করেছেন, অভ্যুত্থানের জায়গা থেকে ফ্যাসিস্টের রূপকার চুপ্পুর কাছ থেকে অভ্যুত্থানের স্বীকৃতি নেওয়া কতটা যৌক্তিক ও কতটা প্রাসঙ্গিক—এটা তাঁরা বিবেচনা করবেন।’

হাসনাত আরও বলেন, ‘নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠনের প্রস্তুতি হিসেবে সারা দেশে সাংগঠনিক সফর করছেন। আগামী নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।’

বরিশাল শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এনসিপির সমন্বয় সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলার প্রধান সমন্বয়কারী আবু সাঈদ মুসা। প্রধান বক্তা ছিলেন এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব। বিশেষ অতিথি ছিলেন অ্যাডভোকেট মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মাহমুদা আলম মিতু, যুগ্ম সদস্যসচিব ফয়সাল মাহমুদ শান্ত প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষিকা থাকেন ঢাকায়, খালিয়াজুরীতে তাঁর নামে স্বাক্ষর করেন স্নাতকপড়ুয়া

জাকির নায়েক বিতর্কে ভারতের প্রতিক্রিয়ার যে জবাব দিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

সকাল থেকে রাজধানীতে তীব্র যানজট, কারণ জানাল ডিএমপি

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের ফেসবুক প্রোফাইল ঘাঁটবেন না, মুরাদ টাকলার সঙ্গে দেখা হবে

সৌদি সরকারের দেওয়া দুম্বার মাংস: মনিরামপুরে বিতরণে ১২০ প্যাকেট হাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দুর্গন্ধের উৎস খুঁজতে গিয়ে কারখানায় মিলল ৬ দিন আগে নিখোঁজ তরুণ-তরুণীর লাশ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
তিনতলা ভবনের নিচতলা থেকে লাশ দুটি উদ্ধার করা হয়। ছবি: সংগৃহীত
তিনতলা ভবনের নিচতলা থেকে লাশ দুটি উদ্ধার করা হয়। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর উত্তর বাড্ডা এলাকায় যে তরুণ-তরুণীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে তাঁরা দুজনই নিখোঁজ ছিলেন। এ ঘটনায় গত ২৭ অক্টোবর থানায় সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করা হয়েছিল।

আজ রোববার (২ নভেম্বর) দুপুরে উত্তর বাড্ডার পূর্বাঞ্চল ২ নম্বর রোডের ৫ নম্বর বাড়ি থেকে লাশ দুটি উদ্ধার করা হয়। নিহত ব্যক্তিরা হলেন সাইফুল ইসলাম (২৪) ও শাকিলা আক্তার (২০)।

তিনতলা বাড়িটির তৃতীয় তলায় ইবনে কাসীর ক্যাডেট মাদ্রাসা, দ্বিতীয় তলায় বাড়ির মালিক আতিক পরিবারসহ থাকেন। নিচতলায় পরিত্যক্ত পোশাক কারখানায় পাওয়া যায় লাশ দুটি।

নিহত সাইফুল ইসলাম ওই মাদ্রাসার কেয়ারটেকার (তত্ত্বাবধায়ক) ছিলেন। তিনি বরিশালের হিজলা উপজেলার বাসিন্দা। নিহত শাকিলা আক্তার (২০) একই মাদ্রাসায় রান্না ও পরিচ্ছন্নতার কাজ করতেন। তাঁর বাড়ি মৌলভীবাজারে।

পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, চার-পাঁচ দিন আগে তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। তবে এটি হত্যা, না আত্মহত্যা, তা তাৎক্ষণিক নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা আলিম উদ্দিন বলেন, ‘শাকিলা মাদ্রাসায় রান্না করত। আর সাইফুল কেয়ারটেকার হিসেবে কাজ করত। সব চাবি তাঁর কাছেই থাকত। ২৬ অক্টোবর সকালে মাদ্রাসা বন্ধ দেখে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা আমাদের ফোন দেয়। আমরা বিকল্প চাবি দিয়ে মাদ্রাসা খুলে পাঠদান শুরু করি। কিন্তু সাইফুলের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। তার মোবাইল ফোন খোলা থাকলেও, তা ধরেনি।’

আলিম উদ্দিন আরও বলেন, ওই দিনই সাইফুলের নিখোঁজের বিষয়ে তাঁর পরিবার ও পুলিশকে জানানো হয়। এর মধ্যে শাকিলার মা এসে জানান, মেয়েকে খুঁজে পাচ্ছেন না। দুজনের নিখোঁজের বিষয়ে ২৭ অক্টোবর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন শাকিলার মা।

বাড়ির মালিক আতিক জানান, কয়েক দিন আগে তাঁর স্ত্রী মারা যান। তিনি গ্রামের বাড়িতে ছিলেন। ঢাকায় ফিরে বাড়িতে দুর্গন্ধ পেয়ে প্রথমে মৃত ইঁদুর ভেবে পরিষ্কার করান। কিন্তু গন্ধ না কমায় নিচতলার পরিত্যক্ত কারখানায় পরিষ্কার করতে পাঠান কেয়ারটেকার সুলতান আহমেদকে। তিনিই প্রথম লাশ দুটি দেখতে পান এবং পুলিশে খবর দেন।

বাড়ির সিসি ক্যামেরাগুলো অচল থাকায় ঘটনার কোনো দৃশ্য পাওয়া যায়নি। পুলিশের ভাষ্যমতে, নিচতলার কারখানায় ‘টিপ’ তালা দেওয়া ছিল, যা ভেতর ও বাইরে—দুদিক থেকেই লাগানো যায়।

বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান বলেন, দুজনের লাশ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। লাশ গলে যাওয়ায় শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে কি না, তা বোঝা যাচ্ছে না। ময়নাতদন্তের পরই মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষিকা থাকেন ঢাকায়, খালিয়াজুরীতে তাঁর নামে স্বাক্ষর করেন স্নাতকপড়ুয়া

জাকির নায়েক বিতর্কে ভারতের প্রতিক্রিয়ার যে জবাব দিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

সকাল থেকে রাজধানীতে তীব্র যানজট, কারণ জানাল ডিএমপি

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের ফেসবুক প্রোফাইল ঘাঁটবেন না, মুরাদ টাকলার সঙ্গে দেখা হবে

সৌদি সরকারের দেওয়া দুম্বার মাংস: মনিরামপুরে বিতরণে ১২০ প্যাকেট হাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নবীনগরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষ: গুলিবিদ্ধ আরও ১ জনের মৃত্যু

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে প্রতিপক্ষের গুলিতে আহত ইয়াছিন মিয়া (২০) নামের আরও একজন মারা গেছেন। আজ রোববার ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। এ নিয়ে গুলিবিদ্ধ দুজনের মৃত্যু হয়েছে।

নিহত ইয়াছিন মিয়া উপজেলার আলমনগর গ্রামের বাসিন্দা শফিকুল ইসলামের ছেলে। তিনি স্থানীয় একটি হোটেলের কর্মচারী ছিলেন।

এর আগে সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিপন মিয়ার (৩০) মৃত্যু হয়। তাঁর বাড়ি উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের নুরজাহানপুর গ্রামে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বাকি দুজন হলেন—উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের থোল্লাকান্দি গ্রামের এমরান হোসেন (৩৮) ও উপজেলার চরলাপাং গ্রামের নুর আলম (১৮)। এমরান হোসেন উপজেলার শ্যামগ্রামের মোহিনী কিশোর স্কুল ও কলেজের শিক্ষক।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, শনিবার রাত ৯টার দিকে উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের বড়িকান্দি গণি শাহ মাজার বাজার এলাকার একটি হোটেলে কুখ্যাত ডাকাত মোন্নাফ মিয়া ওরফে মনেকের ছেলে শিপন মিয়া বসে ছিলেন। ওই সময় একদল দুর্বৃত্ত হোটেলটিতে গুলি করতে থাকে। এতে শিপন মিয়া এবং হোটেলের দুই কর্মচারী ইয়াছিন ও নূর আলম গুলিবিদ্ধ হন।

শিপন গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর তাঁর গ্রাম নূরজাহানপুরে ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্ধ লোকজন গণি শাহ মাজারের অদূরে তালতলায় গিয়ে স্থানীয় এমরান হোসেন মাস্টারের অফিসে হামলা চালায়। এ সময় দুর্বৃত্তের ছোড়া গুলিতে এমরান মাস্টার গুলিবিদ্ধ হন। খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে যায়।

আহত এমরান মাস্টার ঢাকায় পুলিশের উপকমিশনার (ডিসি) বিল্লাল হোসেনের ছোট ভাই। তিনি পার্শ্ববর্তী শ্যামগ্রাম মোহিনী কিশোর উচ্চবিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। পরে বিক্ষুব্ধরা থোল্লাকান্দি গ্রামে হামলা চালিয়ে একাধিক বাড়িঘর ভাঙচুর করে।

এদিকে গুলিবিদ্ধ চারজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। এর মধ্যে শিপন রোববার সকালে মারা যায়।

এলাকার একাধিক সূত্র জানায়, এলাকায় একক আধিপত্য বিস্তার নিয়ে মোন্নাফ মিয়া ও তাঁর ছেলে শিপনের সঙ্গে থোল্লাকান্দি গ্রামের আরাফাতের লোকজনের দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছিল। আরাফাত থোল্লাকান্দি গ্রামের এমরান হোসেন মাস্টারের জ্ঞাতিগোষ্ঠীর একজন। এই আধিপত্যের দ্বন্দ্বই পাল্টাপাল্টি হামলার মূল কারণ বলে স্থানীয় বাসিন্দারা মনে করছেন।

এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পিয়াস বসাক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঘটনাস্থলে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হচ্ছে, কোনো ডাকাতির ভাগাভাগি নিয়ে এই ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাটির তদন্ত চলছে। তিনি আরও বলেন, গুলিবিদ্ধ হয়ে এখন পর্যন্ত দুজনের মৃত্যু হয়েছে। শিপন সকালে ও হোটেল কর্মচারী ইয়াছিন বিকেলে মারা যান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষিকা থাকেন ঢাকায়, খালিয়াজুরীতে তাঁর নামে স্বাক্ষর করেন স্নাতকপড়ুয়া

জাকির নায়েক বিতর্কে ভারতের প্রতিক্রিয়ার যে জবাব দিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

সকাল থেকে রাজধানীতে তীব্র যানজট, কারণ জানাল ডিএমপি

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের ফেসবুক প্রোফাইল ঘাঁটবেন না, মুরাদ টাকলার সঙ্গে দেখা হবে

সৌদি সরকারের দেওয়া দুম্বার মাংস: মনিরামপুরে বিতরণে ১২০ প্যাকেট হাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জামায়াতের এমপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে শিবির নেতার পদত্যাগ

নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি 
আনোয়ারুল ইসলাম চাঁন। ছবি: সংগৃহীত
আনোয়ারুল ইসলাম চাঁন। ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহ-৯ নান্দাইল আসনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী-সমর্থিত এমপি প্রার্থী আনোয়ারুল ইসলাম চাঁনের বিরুদ্ধে অন্যায় বিচার করা ও চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে পদত্যাগ করেছেন উপজেলা শিবিবের দপ্তর ও অর্থ সম্পাদক মিনহাজুল হক উসমানি।

মিনহাজুল এর আগে নান্দাইল উপজেলা পশ্চিম ও পূর্ব থানার সভাপতি ছিলেন।

গতকাল শনিবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে মিনহাজুল হক উসমানি পদত্যাগের বিষয়টি জানান। ফেসবুক পোস্টে তিনি বলেন, ‘ছাত্রশিবিরের উপজেলা সভাপতি থাকাকালীন, আমার বাবার সাথে নান্দাইল উপজেলা জামায়াতের এমপি প্রার্থী অন্যায় বিচার ও চাঁদাবাজি করল। আজ আবার সেই বিচারকে পুরো উপজেলা জামায়াত ও শিবিরের জেলা ও থানার নেতৃবৃন্দ সঠিক বলায় (শিবিরের সকল দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করছি) ! কোন কাগজ ও কথা না শুনেও নাকি মুখ দেখে ন্যায় বিচার করা যায়...কি আজব বিচার!! মহান রব সবাইকে সঠিক বুঝ দান করুক-আমিন।’

মিনহাজুল হক উসমানি। ছবি: সংগৃহীত
মিনহাজুল হক উসমানি। ছবি: সংগৃহীত

এ বিষয়ে মিনহাজুল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘২০২২ সালের দিকে আমার বাবার টেন্ডারের গাছ আওয়ামী লীগের নেতারা লুট করে নেয়। সরকার পতনের পরে সেগুলো উদ্ধার করি। আনোয়ার নামের একজনকে শেয়ারে নিয়েছিল, যিনি ২৪ হাজার টাকা পাবেন। কিন্তু তাঁর পক্ষ দেড় লাখ টাকা দাবি করে। এটি নিয়ে উপজেলা জামায়াতের নেতারা ও এমপি প্রার্থীর কাছে গেলে তিনি ফয়সালা না করে বরং ২ লাখ ৬১ হাজার টাকা দাবি করেন। সঠিক বিচার না করায় এবং চাঁদাবাজি করায় আমি পদত্যাগ করেছি।’

জামায়াত-সমর্থিত প্রার্থী আনোয়ারুল ইসলাম চাঁন বলেন, ‘অভিযোগ করেছে তার তো প্রমাণ দিতে হবে। উসমানির বাবার কাছে নান্দাইল বাজারের ব্যবসায়ী টাকা পাইত। সেটি সমাধানের জন্য আমার কাছে এসেছিল। পরে সেটি দেড় লাখ টাকায় সমাধান করে দিয়েছি। এখন সেখান থেকে বের হয়ে সে এমন পোস্ট দিয়েছে। আসলে নির্বাচনের আগে কেউ হয়তো তাকে দিয়ে এসব করাচ্ছে।’

উপজেলা জামায়াতের আমির কাজী শামসুদ্দিন বলেন, ‘গাছ বেচাকেনা নিয়ে ঝামেলা হয়েছে। আমরা ন্যায়বিচার পাইয়ে দিয়েছি। তারপরেও যদি এমন বলে, তা তো ঠিক না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষিকা থাকেন ঢাকায়, খালিয়াজুরীতে তাঁর নামে স্বাক্ষর করেন স্নাতকপড়ুয়া

জাকির নায়েক বিতর্কে ভারতের প্রতিক্রিয়ার যে জবাব দিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

সকাল থেকে রাজধানীতে তীব্র যানজট, কারণ জানাল ডিএমপি

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের ফেসবুক প্রোফাইল ঘাঁটবেন না, মুরাদ টাকলার সঙ্গে দেখা হবে

সৌদি সরকারের দেওয়া দুম্বার মাংস: মনিরামপুরে বিতরণে ১২০ প্যাকেট হাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত