Ajker Patrika

বিচারকের স্ত্রী টাকা দেওয়া বন্ধ করায় ছেলেকে হত্যা: পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ১৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৮: ৪৪
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আবদুর রহমানের স্ত্রী তাসমিন নাহার লুসীর (৪৪) কাছ থেকে টাকা নিতেন অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য লিমন মিয়া (৩৫)। টাকা দেওয়া বন্ধ করার কারণে বিচারকের ছেলে তাওসিফ রহমান সুমনকে (১৬) খুন ও স্ত্রীকে ছুরিকাঘাত করার ঘটনা ঘটে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার লিমন মিয়ার (৩৫) সঙ্গে জজের স্ত্রীর পূর্বপরিচয় ছিল। এর সূত্র ধরে বিভিন্ন সময় লিমন আর্থিক সহায়তা নিতেন। একপর্যায়ে টাকা দেওয়া বন্ধ করলে বিভিন্নভাবে ব্ল্যাকমেইল করা শুরু করেন তিনি। বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটার দিকে লিমন রাজশাহী নগরের ডাবতলা এলাকায় জজের ভাড়া বাসায় যান।

পুলিশ জানায়, লিমন তাসমিন নাহারের ছোট ভাই পরিচয় দিয়ে বাসায় ঢুকে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে চাকু বের করেন। তখন জজের স্ত্রী ভয়ে দৌড়ে রুমে ঢুকে দরজা আটকে দেন। এ সময় লিমন দরজায় লাথি দিয়ে ভেঙে ভেতরে ঢুকলে জজের ছেলে তাওসিফও তার মাকে রক্ষা করার জন্য ঘরে ঢোকে। একপর্যায়ে লিমন জজের স্ত্রী এবং ছেলেকে ছুরিকাঘাত করেন। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে লিমনও আহত হন। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদের উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাওসিফকে মৃত ঘোষণা করেন।

পুলিশ জানিয়েছে, হামলাকারী ব্যক্তিকে পুলিশি পাহারায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বিচারকের স্ত্রীর সঙ্গে হামলাকারীর অর্থনৈতিক বিরোধের জেরে এই ঘটনা ঘটেছে। তাঁর বিরুদ্ধে রাজপাড়া থানায় মামলা করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মানিকগঞ্জে থেমে থাকা স্কুলবাসে দুর্বৃত্তের আগুন, ঘুমন্ত চালক দগ্ধ

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
শিবালয় উপজেলায় সড়কের পাশে পার্কিং করে রাখা স্কুলবাসটিতে গতকাল মধ্যরাতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ছবি: সংগৃহীত
শিবালয় উপজেলায় সড়কের পাশে পার্কিং করে রাখা স্কুলবাসটিতে গতকাল মধ্যরাতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ছবি: সংগৃহীত

মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলায় সড়কের পাশে পার্কিং করে রাখা একটি স্কুলবাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে বাসের ভেতরে ঘুমিয়ে থাকা চালক গুরুতর দগ্ধ হয়েছেন। তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে এবং তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত মধ্যরাতে শিবালয় উপজেলার ফলসাটিয়া এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে এই ঘটনা ঘটে।

পুলিশ জানায়, দ্য হলি চাইল্ড স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থী বহনকারী বাসটি প্রতিদিনের মতো মহাসড়কের পাশে পার্কিং করে রাখা ছিল। এ সময় বাসচালক তাবেজ খান (৪৫) ভেতরে ঘুমিয়ে ছিলেন। তাবেজ মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বাড়াইভিকরা গ্রামের বাসিন্দা।

শিবালয় থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুমন চক্রবর্তী নিশ্চিত করেছেন যে রাত দেড়টার দিকে দুর্বৃত্তরা বাসটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। মুহূর্তেই আগুন পুরো বাসে ছড়িয়ে পড়লে চালক দগ্ধ হন। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে চালককে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। পরে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।

গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় চালক তাবেজ খানকে প্রথমে জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে স্থানান্তর করা হয়েছে।

এই ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছে শিবালয় থানা-পুলিশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মিরপুর বেড়িবাঁধে বাসে আগুন, ধাওয়া খেয়ে তুরাগে পড়ে তরুণের মৃত্যু

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৯: ৫৬
মিরপুরের বেড়িবাঁধ এলাকায় বাসে আগুন দেওয়ার সময় ধরা পড়া যুবক। ছবি: ডিএমপি
মিরপুরের বেড়িবাঁধ এলাকায় বাসে আগুন দেওয়ার সময় ধরা পড়া যুবক। ছবি: ডিএমপি

রাজধানীর মিরপুরের বেড়িবাঁধ এলাকায় কিরণমালা পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেওয়ার সময় ধাওয়া খেয়ে তুরাগ নদে ডুবে এক তরুণ মারা গেছেন। এই ঘটনায় একজন পালিয়ে যেতে পারলেও স্থানীয় বাসিন্দারা আরেক তরুণকে ধরে পুলিশে দিয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে মিরপুরে বেড়িবাঁধের তামান্না পার্কের সামনে এই ঘটনা ঘটে। পানিতে ডুবে নিহত তরুণের নাম সাইয়াফ (১৮) এবং ধরা পড়া তরুণের নাম রুদ্র মোহাম্মদ নাহিয়ান আমির সানি (১৮)।

এক বিজ্ঞপ্তি এসব তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ডিসি (মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশনস) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।

শাহ আলী থানার বরাত দিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক ১০টার দিকে শাহ আলী থানাধীন উত্তর নবাবেরবাগ সোহেল ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপের পশ্চিম পাশে পাকা রাস্তার ওপর দাঁড়িয়ে থাকা একটি ফাঁকা বাসে কয়েকজন যুবক প্লাস্টিকের বোতলে করে কেরোসিন ছিটিয়ে অগ্নিসংযোগ করে। এই দৃশ্য তারা মোবাইল ফোনে ভিডিও করছিল। বিষয়টি আশপাশের লোকজনের নজরে এলে তারা দুষ্কৃতকারীদের ধাওয়া করে একজনকে হাতেনাতে আটক করে। এ সময় তাদের একজন প্রাণভয়ে নিকটবর্তী তুরাগ নদীতে ঝাঁপ দেয় এবং অন্য একজন দৌড়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। সাঁতার না জানায় নদীতে ঝাঁপ দেওয়া তরুণ পানিতে ডুবে যায়। পরে উপস্থিত লোকজন মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সোনারগাঁয়ের মেঘনায় ২ হাজার ব্যাগ সিমেন্টসহ ট্রলারডুবি, ২ যুবক নিখোঁজ

সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
সোনারগাঁ ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল গতকাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দুই যুবককে উদ্ধারের চেষ্টা করে। ছবি: আজকের পত্রিকা
সোনারগাঁ ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল গতকাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দুই যুবককে উদ্ধারের চেষ্টা করে। ছবি: আজকের পত্রিকা

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের সোনাময়ী এলাকায় মেঘনা নদীতে ২ হাজার ব্যাগ সিমেন্টসহ ট্রলার ডুবে দুই যুবক নিখোঁজ হয়েছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলের দিকে এই ঘটনা ঘটে। নিখোঁজ দুই যুবকের নাম রানা ও শুভ। তাঁদের নাম ছাড়া বিস্তারিত পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি। সোনারগাঁ ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়ে তাঁদের খুঁজে পায়নি।

জানা যায়, বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের সোনাময়ী এলাকার আমান সিমেন্ট ফ্যাক্টরি থেকে বরিশাল যাওয়ার জন্য একটি ট্রলারে ২ হাজার ব্যাগ সিমেন্ট ভর্তি করেন রানা ও শুভ নামের দুই যুবক। এরপর মাঝনদীতে নোঙর করেন। পরে বিকেলের দিকে তলা ফেটে ট্রলারটি পানিতে তলিয়ে যায়। খবর পেয়ে সোনারগাঁ ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত উদ্ধারের চেষ্টা করে।

বৈদ্যেরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক (ইনচার্জ) মাহবুবুর রহমান জানান, সিমেন্ট ভর্তি করে ট্রলারটি মাঝনদীতে গিয়ে অবস্থানকালে পানিতে তলিয়ে যায়। ট্রলারে থাকা দুই যুবক নিখোঁজ রয়েছেন। তাঁদের সন্ধানের চেষ্টা চলছে।

সোনারগাঁ ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সিনিয়র কর্মকর্তা জাহেদুল ইসলাম বলেন, ‘আমান সিমেন্ট ফ্যাক্টরির সামনে মেঘনা নদীর মাঝখানে ট্রলারটি দুই যুবকসহ তলিয়ে যায়। ধারণা করা হচ্ছে, ট্রলারের তলা ফেটে পানি ঢুকে ডুবেছে। দুই ঘণ্টা চেষ্টা করে তাঁদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। শুক্রবার সকাল থেকে উদ্ধার তৎপরতা শুরু হবে।’

আমান সিমেন্ট কোম্পানির ম্যানেজার নাদিরুজ্জামান জানান, তাঁদের কাছ থেকে সিমেন্ট ভর্তি করে চালান নিয়ে তারা চলে যায়। বিকেলের দিকে হঠাৎ সিমেন্টসহ ট্রলারটি ডুবে যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কেঁচো সার উৎপাদনে স্বাবলম্বী ডিমলার একাদশী

ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি 
ভার্মি কম্পোস্ট তৈরিতে কাজ করছেন একাদশী রায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ভার্মি কম্পোস্ট তৈরিতে কাজ করছেন একাদশী রায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার আদর্শ পাড়া গ্রামের একাদশী রায় এখন পরিচিত ‘রায় রুপন্তী ভার্মি কম্পোস্ট’-এর সফল উদ্যোক্তা হিসেবে। স্বামীর সামান্য আয়ের ওপর নির্ভরশীলতা কাটিয়ে পরিবেশবান্ধব কেঁচো সার (ভার্মি কম্পোস্ট) উৎপাদন করে তিনি কৃষি উদ্যোক্তা হিসেবে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তাঁর এই উদ্যোগ শুধু পরিবারের জন্য আয়ের গুরুত্বপূর্ণ উৎসই তৈরি করেনি, স্থানীয় কৃষি অর্থনীতিতেও এনেছে নতুন মাত্রা।

একাদশী রায় জানান, একসময় দিনমজুর স্বামীর আয়ে সংসার চালানো কঠিন ছিল। কিন্তু গত বছর কৃষি অফিসের প্রশিক্ষণ নিয়ে তিনি কেঁচো সার উৎপাদন শুরু করেন। প্রথমে মাত্র ২টি রিং দিয়ে শুরু করলেও বর্তমানে তাঁর খামারে রয়েছে ১২টি রিং ও ৪টি বড় হাউস।

একাদশী রায় বলেন, ‘আগে অভাবে দিন কাটত। এখন প্রতি মাসে আমার খামার থেকে প্রায় ৪০ মণ সার উৎপাদিত হয়, যা বিক্রি করে মাসে প্রায় ৪০ হাজার টাকা আয় করছি। আমার কাজের মাধ্যমে পরিবেশের ক্ষতি কমানো যাচ্ছে এবং কৃষকেরাও সাশ্রয়ী ও বিষমুক্ত সার পাচ্ছেন।’

একাদশীর উৎপাদিত ভার্মি কম্পোস্ট কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। তাঁরা এটিকে সাশ্রয়ী, মাটির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধিকারী এবং ফলন সহায়ক হিসেবে দেখছেন।

স্থানীয় কৃষক অচিন্ত্য কুমার বলেন, রাসায়নিক সারের তুলনায় কেঁচো সার অনেক সাশ্রয়ী। এর ফলে ফলন ভালো হচ্ছে, এবং পরিবেশের ক্ষতিও কমে যাচ্ছে।

আরেক কৃষক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘প্রাকৃতিক সার মাটির গুণ বাড়িয়ে দেয়। আমার জমিতে বিশেষ করে বেগুন, টমেটো এবং মরিচের ফলন আগের তুলনায় অনেক ভালো হয়েছে।’

কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, ভার্মি কম্পোস্ট তৈরিতে কোনো রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার করা হয় না। ১৫ দিনের পুরোনো গোবরকে কেঁচো খেয়ে যে মল ত্যাগ করে, তা থেকেই তৈরি হয় এই সার।

ডিমলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মীর হাসান আল বান্না বলেন, ‘আমরা স্থানীয় কৃষকদের কেঁচো সার উৎপাদনে উৎসাহিত করছি। এর ফলে কৃষকেরা লাভবান হচ্ছেন, আর কৃষি ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি হচ্ছে। একাদশী রায়ের সাফল্য স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।’

উপজেলা কৃষিবিদ আবু নোমান সায়েম জানান, ভার্মি কম্পোস্ট সব ধরনের ফসলে ব্যবহার করা যায়। এটি মাটির উর্বরতা শক্তি বজায় রাখে এবং বিষমুক্ত খাদ্য উৎপাদনে সহায়ক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত