Ajker Patrika

নোয়াখালীতে স্ত্রী হত্যায় স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

নোয়াখালী প্রতিনিধি
নোয়াখালীতে স্ত্রী হত্যায় স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার বাটইয়া ইউনিয়নের দয়ারামদি গ্রামের স্ত্রী নাজমা আক্তার নাজুকে হত্যার ঘটনায় স্বামী মনির হোসেন বাবুকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে আসামিকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়। আজ সোমবার বিকেলে নোয়াখালী জেলা ও দায়রা জজ সালেহ উদ্দিন আহমদ এ রায় প্রদান করেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত মনির হোসেন বাবু দয়ারামদি গ্রামের আলী আহম্মদের ছেলে। 

আদালত সূত্রে জানা গেছে, পরকীয়া প্রেমের জেরে গত ২০১৮ সালের ৩০ এপ্রিল রাতের কোন একসময় নিজের স্ত্রী নাজমা আক্তার নাজুকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে বাবু। এ ঘটনার ৪ মাস আগে তাঁদের বিয়ে হয়। পরদিন ১ মে সকালে নাজুর মৃত্যুর বিষয়টি খবর পেয়ে তাঁদের শয়ন কক্ষের খাটের ওপর থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতের গলা ও হাতে চিকন রশি দিয়ে বাঁধার চিহ্ন ছিল। পরদিন রাতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে নিজের অপরাধ স্বীকার করলে বাবুকে পুলিশে সোপর্দ করে চেয়ারম্যান। 

এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই বাদী হয়ে মনির হোসেন বাবুর বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করতে গিয়ে বিয়ের আগে স্থানীয় এক নারীর সঙ্গে বাবুর প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে তথ্য পাই। ওই সম্পর্কের জেরে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী নাজুকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে পালিয়ে যায় বাবু। তদন্তে যৌতুকের দাবিতে নয়, বরং অন্য একজন মহিলার সঙ্গে সম্পর্কের কারণে বাবু তাঁর স্ত্রী নাজুকে হত্যা করেছে মর্মে আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) প্রদান করে এবং স্ত্রী হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেন তিনি। গ্রেপ্তারের পর থেকে জেলা কারাগারে ছিলেন তিনি। 

রাষ্ট্রপক্ষের মামলা পরিচালনাকারী (পিপি) গুলজার আহমেদ জুয়েল জানান, সোমবার বিকেলে কারাগার থেকে আসামি মনির হোসেন বাবুকে আদালতে হাজির করা হয়। পরে আদালতের বিজ্ঞ বিচারক আসামি মনির হোসেন বাবুকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করেন। ইতিপূর্বে সে হাজতবাস করায় মোট সাজা থেকে তা বাদ যাবে। আসামি পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ সাহাব উল্যাহ। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সোনারগাঁয়ের মেঘনায় ২ হাজার ব্যাগ সিমেন্টসহ ট্রলারডুবি, ২ যুবক নিখোঁজ

সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
সোনারগাঁ ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল গতকাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দুই যুবককে উদ্ধারের চেষ্টা করে। ছবি: আজকের পত্রিকা
সোনারগাঁ ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল গতকাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দুই যুবককে উদ্ধারের চেষ্টা করে। ছবি: আজকের পত্রিকা

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের সোনাময়ী এলাকায় মেঘনা নদীতে ২ হাজার ব্যাগ সিমেন্টসহ ট্রলার ডুবে দুই যুবক নিখোঁজ হয়েছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলের দিকে এই ঘটনা ঘটে। নিখোঁজ দুই যুবকের নাম রানা ও শুভ। তাঁদের নাম ছাড়া বিস্তারিত পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি। সোনারগাঁ ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়ে তাঁদের খুঁজে পায়নি।

জানা যায়, বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের সোনাময়ী এলাকার আমান সিমেন্ট ফ্যাক্টরি থেকে বরিশাল যাওয়ার জন্য একটি ট্রলারে ২ হাজার ব্যাগ সিমেন্ট ভর্তি করেন রানা ও শুভ নামের দুই যুবক। এরপর মাঝনদীতে নোঙর করেন। পরে বিকেলের দিকে তলা ফেটে ট্রলারটি পানিতে তলিয়ে যায়। খবর পেয়ে সোনারগাঁ ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত উদ্ধারের চেষ্টা করে।

বৈদ্যেরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক (ইনচার্জ) মাহবুবুর রহমান জানান, সিমেন্ট ভর্তি করে ট্রলারটি মাঝনদীতে গিয়ে অবস্থানকালে পানিতে তলিয়ে যায়। ট্রলারে থাকা দুই যুবক নিখোঁজ রয়েছেন। তাঁদের সন্ধানের চেষ্টা চলছে।

সোনারগাঁ ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সিনিয়র কর্মকর্তা জাহেদুল ইসলাম বলেন, ‘আমান সিমেন্ট ফ্যাক্টরির সামনে মেঘনা নদীর মাঝখানে ট্রলারটি দুই যুবকসহ তলিয়ে যায়। ধারণা করা হচ্ছে, ট্রলারের তলা ফেটে পানি ঢুকে ডুবেছে। দুই ঘণ্টা চেষ্টা করে তাঁদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। শুক্রবার সকাল থেকে উদ্ধার তৎপরতা শুরু হবে।’

আমান সিমেন্ট কোম্পানির ম্যানেজার নাদিরুজ্জামান জানান, তাঁদের কাছ থেকে সিমেন্ট ভর্তি করে চালান নিয়ে তারা চলে যায়। বিকেলের দিকে হঠাৎ সিমেন্টসহ ট্রলারটি ডুবে যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কেঁচো সার উৎপাদনে স্বাবলম্বী ডিমলার একাদশী

ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি 
ভার্মি কম্পোস্ট তৈরিতে কাজ করছেন একাদশী রায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ভার্মি কম্পোস্ট তৈরিতে কাজ করছেন একাদশী রায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার আদর্শ পাড়া গ্রামের একাদশী রায় এখন পরিচিত ‘রায় রুপন্তী ভার্মি কম্পোস্ট’-এর সফল উদ্যোক্তা হিসেবে। স্বামীর সামান্য আয়ের ওপর নির্ভরশীলতা কাটিয়ে পরিবেশবান্ধব কেঁচো সার (ভার্মি কম্পোস্ট) উৎপাদন করে তিনি কৃষি উদ্যোক্তা হিসেবে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তাঁর এই উদ্যোগ শুধু পরিবারের জন্য আয়ের গুরুত্বপূর্ণ উৎসই তৈরি করেনি, স্থানীয় কৃষি অর্থনীতিতেও এনেছে নতুন মাত্রা।

একাদশী রায় জানান, একসময় দিনমজুর স্বামীর আয়ে সংসার চালানো কঠিন ছিল। কিন্তু গত বছর কৃষি অফিসের প্রশিক্ষণ নিয়ে তিনি কেঁচো সার উৎপাদন শুরু করেন। প্রথমে মাত্র ২টি রিং দিয়ে শুরু করলেও বর্তমানে তাঁর খামারে রয়েছে ১২টি রিং ও ৪টি বড় হাউস।

একাদশী রায় বলেন, ‘আগে অভাবে দিন কাটত। এখন প্রতি মাসে আমার খামার থেকে প্রায় ৪০ মণ সার উৎপাদিত হয়, যা বিক্রি করে মাসে প্রায় ৪০ হাজার টাকা আয় করছি। আমার কাজের মাধ্যমে পরিবেশের ক্ষতি কমানো যাচ্ছে এবং কৃষকেরাও সাশ্রয়ী ও বিষমুক্ত সার পাচ্ছেন।’

একাদশীর উৎপাদিত ভার্মি কম্পোস্ট কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। তাঁরা এটিকে সাশ্রয়ী, মাটির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধিকারী এবং ফলন সহায়ক হিসেবে দেখছেন।

স্থানীয় কৃষক অচিন্ত্য কুমার বলেন, রাসায়নিক সারের তুলনায় কেঁচো সার অনেক সাশ্রয়ী। এর ফলে ফলন ভালো হচ্ছে, এবং পরিবেশের ক্ষতিও কমে যাচ্ছে।

আরেক কৃষক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘প্রাকৃতিক সার মাটির গুণ বাড়িয়ে দেয়। আমার জমিতে বিশেষ করে বেগুন, টমেটো এবং মরিচের ফলন আগের তুলনায় অনেক ভালো হয়েছে।’

কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, ভার্মি কম্পোস্ট তৈরিতে কোনো রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার করা হয় না। ১৫ দিনের পুরোনো গোবরকে কেঁচো খেয়ে যে মল ত্যাগ করে, তা থেকেই তৈরি হয় এই সার।

ডিমলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মীর হাসান আল বান্না বলেন, ‘আমরা স্থানীয় কৃষকদের কেঁচো সার উৎপাদনে উৎসাহিত করছি। এর ফলে কৃষকেরা লাভবান হচ্ছেন, আর কৃষি ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি হচ্ছে। একাদশী রায়ের সাফল্য স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।’

উপজেলা কৃষিবিদ আবু নোমান সায়েম জানান, ভার্মি কম্পোস্ট সব ধরনের ফসলে ব্যবহার করা যায়। এটি মাটির উর্বরতা শক্তি বজায় রাখে এবং বিষমুক্ত খাদ্য উৎপাদনে সহায়ক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা আটক

রাবি প্রতিনিধি  
আটককৃত শাহাদাত হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আটককৃত শাহাদাত হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতাকে আটক করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে থেকে তাকে আটক করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মালেক।

আটককৃত সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শাহাদাত হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী। তিনি সৈয়দ আমীর আলী হল শাখা ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক কমিটির সহ-সভাপতি ছিলেন।

আটকের বিষয়ে জানতে চাইলে নগরের মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মালেক বলেন, ‘স্থানীয় বাসিন্দাদের ফোন পেয়ে আমরা তাকে আটক করেছি। সে ছাত্রলীগের রাজনীতি করতো। তার নামে মামলাও আছে। কোন নাশকতার সঙ্গে জড়িত কিনা সেটা আমরা যাচাই-বাছাই করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিচারকের স্ত্রী টাকা দেওয়া বন্ধ করায় ছেলেকে হত্যা: পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ১৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৮: ০৯
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আবদুর রহমানের স্ত্রী তাসমিন নাহার লুসীর (৪৪) কাছ থেকে টাকা নিতেন অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য লিমন মিয়া (৩৫)। টাকা দেওয়া বন্ধ করার কারণেই বিচারকের ছেলে তাওসিফ রহমান সুমনকে (১৬) খুন ও স্ত্রীকে ছুরিকাঘাত করার ঘটনা ঘটে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

পুলিশের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার লিমন মিয়ার (৩৫) সঙ্গে জজের স্ত্রীর পূর্ব পরিচয় ছিল। এর সূত্র ধরে বিভিন্ন সময় লিমন আর্থিক সহায়তা নিতেন। একপর্যায়ে টাকা দেওয়া বন্ধ করলে বিভিন্নভাবে ব্ল্যাক মেইল করা শুরু করেন। বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটার দিকে লিমন রাজশাহী নগরের ডাবতলা এলাকায় জজের ভাড়া বাসায় যান।

পুলিশ জানায়, লিমন তাসমিন নাহারের ছোট ভাই পরিচয় দিয়ে বাসায় ঢুকে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে চাকু বের করেন। তখন জজের স্ত্রী প্রাণভয়ে দৌঁড়ে রুমের ভেতর ঢুকে দরজা আটকে দেন। এ সময় লিমন দরজায় লাথি দিয়ে ভেঙে ভেতরে ঢুকলে জজের ছেলে তাওসিফও তার মাকে রক্ষা করার জন্য ঘরে ঢোকে। একপর্যায়ে লিমন জজের স্ত্রী এবং ছেলেকে ছুরিকাঘাত করেন। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে লিমনও আহত হন। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাওসিফকে মৃত ঘোষণা করেন।

পুলিশ জানিয়েছে, হামলাকারী ব্যক্তিকে পুলিশ পাহারায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বিচারকের স্ত্রীর সঙ্গে হামলাকারীর অর্থনৈতিক বিরোধের জেরেই এ ঘটনা ঘটেছে। তার বিরুদ্ধে রাজপাড়া থানায় মামলা করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত