Ajker Patrika

সড়কে ঝরল দুই বন্ধুর প্রাণ

নরসিংদী প্রতিনিধি
সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত দুই বন্ধু। ছবি: সংগৃহীত
সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত দুই বন্ধু। ছবি: সংগৃহীত

নরসিংদীর শিবপুরে সিএনজিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে সংঘর্ষে দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় অটোরিকশার চালকসহ আরও দুজন আহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার (১ ডিসেম্বর) রাতে উপজেলার পচার বাড়ি এলাকায় শিবপুর-মনোহরদী আঞ্চলিক সড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন শিবপুরের বাঘাব ইউনিয়নের উত্তর জয়মঙ্গল গ্রামের মোক্তার হোসেনের ছেলে মাহমুদুল হাসান রাজ (২২) এবং গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার সনমানিয়া গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে শফিক (২১)।

পুলিশ ও নিহত ব্যক্তিদের স্বজনেরা জানান, ব্যবসার কাজ শেষে মনোহরদী থেকে মোটরসাইকেলে শিবপুরে ফিরছিলেন দুই বন্ধু রাজ ও শফিক। পচার বাড়ি এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা যাত্রীবাহী অটোরিকশার সঙ্গে তাঁদের মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই রাজ নিহত হন। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে শফিকও মারা যান। এই ঘটনায় আহত অটোরিকশার চালক ও যাত্রীকে শিবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

শিবপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফজাল হোসাইন বলেন, লাশ উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। পরবর্তী আইনগত প্রক্রিয়া চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শিশুদের বিনা মূল্যের টিকা কার্ড নিতে হচ্ছে টাকা দিয়ে

চাঁদপুর প্রতিনিধি
চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ছবি: আজকের পত্রিকা
চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ছবি: আজকের পত্রিকা

চাঁদপুরে নবজাতকদের বিনা মূল্যের টিকা কার্ড অভিভাবকেরা টাকা দিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছেন বলে জানা গেছে। অভিযোগ উঠেছে, চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিকা কেন্দ্রের ইনচার্জ বিল্লাল হোসেন টিকা কার্ড তৈরি করার বিনিমিয়ে অভিভাবকদের কাছ থেকে ১০০ থেকে ২০০ টাকা করে নিচ্ছেন।

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যায়, বিল্লাল হোসেন অভিভাবকদের কাছ থেকে টাকা গ্রহণ করছেন। ভিডিওটি নজরে আসে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। তারা বিল্লাল হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দিয়েছে। নোটিশে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে এবং কেন তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, সে বিষয়ে জবাব দিতে বলা হয়েছে।

বিল্লাল হোসেন। ছবি: সংগৃহীত
বিল্লাল হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

এই বিষয়ে জানতে চাইলে বিল্লাল হোসেন নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন।

হাইমচর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা কে এম আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘টিকা কার্ড দিতে অর্থ নেওয়া সম্পূর্ণভাবে নিয়মবহির্ভূত। অভিযোগটি অত্যন্ত গুরুতর এবং এর সত্যতা যাচাই করা হচ্ছে। ভিডিওটি আমাদের নজরে আসার পরই আমরা তাৎক্ষণিক অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে শোকজ করেছি। জবাব পাওয়ার পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পঞ্চগড়ে মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
আপডেট : ০২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৩৩
ভোরবেলায় হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে বাস। ছবি: আজকের পত্রিকা
ভোরবেলায় হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে বাস। ছবি: আজকের পত্রিকা

উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে আজ মঙ্গলবার সকাল ৬টায় তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারে মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৭৯ শতাংশ।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত ঠান্ডার আমেজ বেশি থাকলেও রোদ উঠলেই চারপাশ ধীরে ধীরে উষ্ণ হয়। গতকাল দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিস জানায়, গত সপ্তাহে জেলার তাপমাত্রা ১২ থেকে ১৩ ডিগ্রির আশপাশে ঘোরাফেরা করেছে। সোমবার ১৩ দশমিক ৩, রোববার ১৩ দশমিক ১, শনিবার ১৩ দশমিক ১, শুক্রবার ১৩ দশমিক ৫, বৃহস্পতিবার ১৩ দশমিক ২, বুধবার ১২ দশমিক ৯, মঙ্গলবার ১২ দশমিক ৮, সোমবার ১৩ দশমিক ৪ এবং রোববার ১২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়।

জেলা ঘুরে দেখা গেছে, ফসলি জমি ও ঘাসের ডগায় শিশির জমে আছে এবং সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বইছে হিমেল হাওয়া। বিকেল গড়ালেই তাপমাত্রা কমতে থাকে এবং মধ্যরাতের পর শীতের তীব্রতা বেড়ে যায়। ঘন কুয়াশার কারণে ভোরবেলায় যানবাহনগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।

দরজিপাড়া এলাকার ভ্যানচালক কুদ্দুস আলী বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে হালকা কুয়াশা পড়লে আজ একটু কুয়াশা ও শীতের মাত্রা বেড়েছে। ভ্যান চালালেই পুরো গা ভিজে যাচ্ছে। যাত্রীও নাই। মনে হচ্ছে পুরোদমে শীত পড়া শুরু হলো।’ এক পথচারী রাকিব হাসান বলেন, ‘সকালে প্রতিদিনের মতো হাঁটতে বেরিয়েছি। মনে হচ্ছে, আজ থেকে শীত বাড়বে। অন্যদিনের তুলনায় আজকে খুবই ঠান্ডা।’

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, শীত ধীরে ধীরে নামছে। আজ ১১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে। সামনে শীত আরও তীব্র হতে পারে। শৈত্যপ্রবাহ শুরু হতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাবুবাজার সেতুর যানজটে ভোগান্তিতে লাখো মানুষ

  • ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান প্রবেশপথ এই সেতু।
  • আধা মিনিটের রাস্তা পার হতে লাগছে ৩-৪ ঘণ্টা।
  • উল্টো পথে অটো-ভ্যান, সেতুর ওপর অস্থায়ী বাজার।
কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) সংবাদদাতা
আপডেট : ০২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৪০
বাবুবাজার সেতুর ওপর যানবাহনের সারি। দীর্ঘ যানজটে ভোগান্তিতে পড়ছে যাত্রীরা। সম্প্রতি সেতুর জিঞ্জিরা পয়েন্টে। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাবুবাজার সেতুর ওপর যানবাহনের সারি। দীর্ঘ যানজটে ভোগান্তিতে পড়ছে যাত্রীরা। সম্প্রতি সেতুর জিঞ্জিরা পয়েন্টে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকার বাবুবাজার এলাকায় বুড়িগঙ্গা নদীর ওপর নির্মিত বাবুবাজার সেতু সাধারণ মানুষের জন্য এখন যেন গলার কাঁটা। রাজধানীর সঙ্গে মাওয়া, মুন্সিগঞ্জ এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোর সড়ক যোগাযোগের প্রধান প্রবেশদ্বার এটি। ১৯৯৪ সালে নির্মাণকাজ শুরু হওয়া সেতুটি ২০০২ সালের মে মাসে যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এটির দৈর্ঘ্য ৭৫০ মিটার, প্রস্থ ১৭ দশমিক ৫ মিটার। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মানুষের চাপ বেড়ে যাওয়ায় এই সেতুকে কেন্দ্র করে বেড়েছে যানজট। এটি পরিণত হয়েছে লাখো মানুষের দুর্ভোগের স্থানে।

এ বিষয়ে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা ও যানজট নিয়ে আমাদের পরিকল্পনা আছে। বাবুবাজার সেতুর যানজট নিয়ে দ্রুত কাজ শুরু করব। কোনো অসাধু কর্মকর্তা অবৈধ স্টেশনসংক্রান্ত সুবিধা নিলে তা কঠোরভাবে দমন করা হবে।’

কেরানীগঞ্জ, নবাবগঞ্জ, দোহার, সিরাজদিখান, লৌহজংসহ দক্ষিণাঞ্চলের অসংখ্য মানুষ প্রতিদিন এই সেতু দিয়ে ঢাকায় প্রবেশ করে। মিটফোর্ড হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগী আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রেও এটি ব্যবহার করতে হয় তাদের। অথচ যানজটের কারণে মাত্র আধা মিনিটের রাস্তা পার হতে সময় লাগে তিন থেকে চার ঘণ্টা পর্যন্ত।

এতে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি ছাড়াও জরুরি চিকিৎসাসেবা বাধাগ্রস্ত হয় অনেকের। যানজটে যথাসময়ে হাসপাতালে পৌঁছাতে না পেরে মাঝপথে রোগীর অবস্থা আরও সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে।

ভুক্তভোগীরা জানান, উল্টো পথে অটোরিকশা ও ভ্যানের বিশৃঙ্খলা, সেতুর ওপর অস্থায়ী বাজার, দুই পাশে অবৈধ সিএনজি, ট্রাক ও বাসস্টেশন গড়ে ওঠা, সড়কে স্থায়ীভাবে পার্ক করা গাড়ি; সব মিলিয়ে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত যানজট লেগে থাকে। একদিকে প্রশাসনিক তদারকির অভাব, অন্যদিকে নিয়মনীতি না মানার প্রবণতায় পুরো এলাকায় দেখা যায় গাড়ির দীর্ঘ সারি।

সাইফুল করিম নামের একজন পথচারী বলেন, অবিলম্বে এই সমস্যার সমাধান না হলে সাধারণ মানুষের রক্ষা নেই। মুমূর্ষু রোগীদের বহনকারী গাড়ি ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকে। এতে ঢাকার হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে, অথচ প্রশাসন নীরব। পান্না নামের একজন গৃহবধূ বলেন, ‘ব্রিজে এমন যানজট যে চিনকুটিয়া চৌরাস্তা থেকে গুলিস্তান পর্যন্ত একটানা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। বাচ্চাদের স্কুলে আনা-নেওয়াতেও অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে আমাদের।’

কদমতলী চৌরাস্তার আরিফ খান বলেন, লাখো মানুষের যাতায়াতের সুবিধা হলেও বাবুবাজার সেতু

এখন নিত্যদিনের দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী নতুন সেতু নির্মাণ, অবৈধ দখল উচ্ছেদসহ কার্যকর তদারকি না হলে এই ভোগান্তি আরও বাড়বে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, সেতুতে ২০০-২৫০ অটো-ভ্যান চলাচল করে। এগুলোর প্রতিটি থেকে মাসে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা ওঠানো হয়; যা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের পকেটে ঢোকে। এটা বন্ধ করতে না পারলে যানজট কমবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজশাহীর ৬টি আসন: বিএনপির কাঁটা বঞ্চিতরা, ঐক্যবদ্ধ জামায়াত

  • তিন আসনে বিএনপির মনোনয়নবঞ্চিত নেতাদের সমর্থকেরা বিক্ষোভ করছেন।
  • ঐক্যবদ্ধভাবে ভোটের মাঠে রয়েছেন জামায়াতের নেতারা।
  • তিনটি আসনে প্রার্থী দিতে চায় জাতীয় নাগরিক পার্টি।
 রিমন রহমান, রাজশাহী
আপডেট : ০২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬: ৫৬
শরীফ উদ্দিন, মিজানুর রহমান মিনু, মুজিবুর রহমান, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, শফিকুল হক মিলন, আবু সাঈদ চাঁদ, জিয়াউর রহমান, আব্দুল বারী ও নুরুজ্জামান লিটন। ছবি: সংগৃহীত
শরীফ উদ্দিন, মিজানুর রহমান মিনু, মুজিবুর রহমান, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, শফিকুল হক মিলন, আবু সাঈদ চাঁদ, জিয়াউর রহমান, আব্দুল বারী ও নুরুজ্জামান লিটন। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন ঘোষণার পর অস্থিরতা দেখা দিয়েছে রাজশাহীর তিনটি সংসদীয় আসনে। ছয়টি আসনের মধ্যে এই তিন আসনে মনোনয়নবঞ্চিত নেতাদের অনুসারীরা প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে নানা কর্মসূচি পালন করছেন। প্রার্থী ঘোষণার পর বিএনপিতে এমন সংকট দেখা দিলেও ভিন্ন চিত্র তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী জামায়াতে ইসলামী। সব আসনে ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নেমেছেন দলটির নেতারা।

এ ছাড়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ছয়টি, খেলাফত মজলিস পাঁচটি, বাসদ তিনটি, গণসংহতি আন্দোলন দুটি, গণঅধিকার পরিষদ একটি, এবি পার্টি তিনটি, বিজেপি একটিসহ কয়েকটি দলের প্রার্থীরা ভোটের মাঠে নেমেছেন। জাতীয় নাগরিক পার্টিও (এনসিপি) অন্তত তিনটি আসনে প্রার্থী দিতে চায়। সব মিলিয়ে নির্বাচনমুখী এসব দলের কার্যক্রমে এলাকায় ভোটের আবহ তৈরি হয়েছে।

রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) শরীফ উদ্দিন। তাঁর ভাই ব্যারিস্টার আমিনুল হক এই আসনের তিনবারের এমপি ও মন্ত্রী ছিলেন। আরেক ভাই এম এনামুল হকও একবার দলীয় মনোনয়ন পেয়েছিলেন। সেই ধারাবাহিকতায় দল বেছে নিয়েছে শরীফকে। স্বাধীনতার পর থেকে এই আসনে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ পাঁচবার করে, জামায়াতে ইসলামী একবার ও একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী একবার জয়ী হয়েছেন। আওয়ামী লীগের পাঁচবারের মধ্যে ২০১৪ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত তিনটি নির্বাচন নিয়ে রয়েছে বিতর্ক। বিএনপির ‘ঘাঁটি’ হিসেবে পরিচিত এই আসন পুনরুদ্ধারে প্রার্থী করা হয়েছে শরীফ উদ্দিনকে।

তবে তাঁর বিরোধিতা করে মাঠে নেমেছেন আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী সুলতানুল ইসলাম তারেকের অনুসারীরা। তাঁরা বিক্ষোভ ও মহাসড়ক অবরোধের মতো কর্মসূচি পালন করছেন। তারেক অনুসারীদের আশা, শেষ পর্যন্ত এখানে প্রার্থী বদল করা হবে।

রাজশাহী-১ আসনে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির মুজিবুর রহমান দলের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে মাঠে আছেন। এ ছাড়া গণঅধিকার পরিষদের মীর মো. শাহজাহান, এবি পার্টির মুহাম্মাদ আব্দুর রহমান মুহসেনী, বাসদের আফজাল হোসেন ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আরিফুল ইসলাম এই আসনে দলের মনোনীত প্রার্থী। এনসিপির মহানগরের সদস্যসচিব আতিকুর রহমানও এই আসনে প্রার্থী হতে পারেন।

রাজশাহী সিটি করপোরেশন এলাকা নিয়ে গঠিত রাজশাহী-২ (সদর) আসন। ১৯৮৬ সালের নির্বাচনের আগে সীমানা পুনর্গঠিত হয় এই আসনে। আসনটিতে বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন পেয়েছেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু। মনোনয়ন ঘোষণার আগে নগর বিএনপির একটি অংশ তাঁর বিরোধিতা করে আসছিল। তাঁরা এখানে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে প্রার্থী চাচ্ছিলেন। মনোনয়ন ঘোষণার পর রিজভী এসে সবাইকে এক কাতারে এনেছেন। তাই এই আসনে বিএনপির কোনো দ্বন্দ্ব-বিভেদ নেই। আসনটিতে জামায়াতের প্রার্থী মোহাম্মদ জাহাঙ্গীরও নেতা-কর্মীদের নিয়ে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন মহানগর এনসিপির আহ্বায়ক মোবাশ্বের আলীও।

রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনেরও সীমানা পুনর্গঠন করা হয় ১৯৮৬ সালের নির্বাচনের আগে। এরপর বিএনপি তিনবার, আওয়ামী লীগ চারবার, জাতীয় পার্টি দুবার ও বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ একবার জয়ী হয়েছে। এই আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রাণ ও পুনর্বাসনবিষয়ক সহসম্পাদক শফিকুল হক মিলন। তাঁকে ‘বহিরাগত’ উল্লেখ করে প্রার্থী বদলের দাবিতে মাঠে আছেন দুই মনোনয়নপ্রত্যাশী রায়হানুল আলম রায়হান ও নাসির হোসেনের অনুসারীরা। এই আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ ভোটের মাঠে আছেন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ থেকে ফজলুর রহমান, এবি পার্টি থেকে আফজাল হোসেন, খেলাফত মজলিস থেকে গোলাম মোস্তফা, গণসংহতি আন্দোলন থেকে জুয়েল রানা ও গণতন্ত্র মঞ্চ থেকে শফিকুর রহমান বাবর মনোনয়ন পেয়েছেন। তবে তাঁদের ভোটের মাঠে দেখা যায় না।

রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের সীমানা পুনর্গঠনের পর বিএনপি তিনবার, আওয়ামী লীগ পাঁচবার ও জাতীয় পার্টি এবং বাংলাদেশ মুসলিম লীগ একবার করে জয় পেয়েছে। এই আসনে বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন পেয়েছেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ডি এম জিয়াউর রহমান জিয়া। তাঁকে নিয়ে নেতা-কর্মীদের চরম অসন্তোষ। এখানে বিক্ষোভ-সমাবেশের মতো কর্মসূচি পালিত না হলেও মনোনয়ন ঘোষণার পরও নেতা-কর্মীদের বড় অংশই জিয়ার কাছে যাচ্ছে না। অনেকটা কর্মী সংকটে পড়েছেন জিয়া। সম্প্রতি প্রার্থী বদলের দাবিতে উপজেলা বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের ৩৭ জন নেতা লিখিতভাবে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করেছেন।

এই আসনে জামায়াতের প্রার্থী ডা. আবদুল বারী সরদার। এ ছাড়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ থেকে আবু মুসা, বাসদ থেকে ফিরোজ আলম, খেলাফত মজলিস থেকে ফেরদাউসুর রহমান ও গণতন্ত্র মঞ্চ থেকে ভাসানী জনশক্তি পার্টির আবু ইউসুফ সেলিম মনোনয়ন পেয়েছেন। এনসিপি থেকে মীর ফারুক হোসেন, জাতীয় পার্টির ফারুক হোসেন ছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারেন আবু হেনা মোস্তফা কামাল।

রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসন পুনর্গঠনের পর জাতীয় পার্টি একবার, বিএনপি চারবার এবং আওয়ামী লীগ ছয়বার জয় পেয়েছে। এর মধ্যে সর্বশেষ তিনটি বিতর্কিত নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা জয় পান। এই আসনে এবার বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন নজরুল ইসলাম মণ্ডল। তাঁকেও বদলের জন্য দুই উপজেলায় বিক্ষোভ-সমাবেশ ও মহাসড়ক অবরোধ হচ্ছে। মনোনয়নপ্রত্যাশী আবু বকর সিদ্দিক, ইশফা খায়রুল হক ও নাঈম মোস্তফার সমর্থকেরা এসব কর্মসূচি পালন করে আসছেন। এই আসনে জামায়াতের প্রার্থী নুরুজ্জামান লিটন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের রুহুল আমিন, খেলাফত মজলিসের মুফতি আব্দুল হামিদ ও এলডিপির জহুরা শারমিন মাঠে আছেন।

রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনে স্বাধীনতার পর জাতীয় পার্টি দুবার, বিএনপি চারবার ও আওয়ামী লীগ পাঁচবার জয় পায়। এই আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন দলের জেলা আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ। আসনটিতে জামায়াতের প্রার্থী নাজমুল হক, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমিনুল ইসলাম ও খেলাফত মজলিসের তোফায়েল আহমেদ ভোটের মাঠে আছেন। এ ছাড়া আসনটিতে প্রার্থী হতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন এনসিপির বিভাগীয় সংগঠক ইমরান ইমন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত