Ajker Patrika

জি কে শামীম ও তাঁর ৭ দেহরক্ষীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা
আপডেট : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৪: ১৩
জি কে শামীম ও তাঁর ৭ দেহরক্ষীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

রাজধানীর গুলশান থানায় অস্ত্র আইনে করা মামলায় আলোচিত ঠিকাদার জি কে শামীম ও তাঁর সাত দেহরক্ষীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে। আজ রোববার ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত ও বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-৪-এর বিচারক শেখ ছামিদুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন।

কারাদণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামিরা হলেন মো. জাহিদুল ইসলাম, মো. শহিদুল ইসলাম, মো. কামাল হোসেন, মো. সামসাদ হোসেন, মো. আমিনুল ইসলাম, মো. দেলোয়ার হোসেন ও মো. মুরাদ হোসেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সহকারী সরকারি কৌঁসুলি সালাউদ্দিন হাওলাদার ও সাবিনা আক্তার দীপা আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

রায় ঘোষণার আগে আসামিদের কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। রায় ঘোষণা শেষে আবার সাজা পরোয়ানাসহ আসামিদের কারাগারে ফেরত পাঠানো হয়। আদালত রায়ে বলেছেন, সাজা প্রাপ্ত আসামিদের ইতিমধ্যে কারাগারে থাকার সময় সাজার মেয়াদ থেকে বাদ যাবে।

এর আগে রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে গত ২৮ আগস্ট আদালত রায়ের তারিখ ধার্য করেন।

২০১৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর গুলশানের নিজ কার্যালয়ে সাত দেহরক্ষীসহ গ্রেপ্তার হন জি কে শামীম। পরে তাঁর বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক ও অর্থ পাচার আইনে তিনটি মামলা হয়। মামলার এজাহারে শামীমকে চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ, অবৈধ মাদক ও জুয়ার ব্যবসায়ী বলে উল্লেখ করা হয়।

একই বছরের ২৭ অক্টোবর আদালতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা র‍্যাব-১-এর উপপরিদর্শক শেখর চন্দ্র মল্লিক অস্ত্র মামলায় চার্জশিট জমা দেন।

২০২০ সালের ২৮ জানুয়ারি আদালত আসামিদের অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। এ মামলায় ১০ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামি আমিনুল ইসলাম জামালপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে লাইসেন্সপ্রাপ্ত হয়েছেন মর্মে ডকুমেন্ট দেখালেও তা যাচাইয়ে এর সঠিকতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরে ওই অস্ত্রের নকল কাগজপত্র নিয়ে ২০১৭ সালে প্রথমে এসএম বিল্ডার্স কোম্পানিতে যোগদান করেন। পরে ২০১৯ সালের মাঝামাঝি আসামি জি কে শামীমের দেহরক্ষী হিসেবে যোগদান করে কাজ করে আসছিলেন। তিনি মূলত অবৈধ অস্ত্রটি ৭০ হাজার টাকায় কিনে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে কাগজপত্র তৈরি করেন।

এ ছাড়া অন্যান্য আসামি নিরাপত্তার অযুহাতে অস্ত্রের লাইসেন্সপ্রাপ্ত হলেও তারা শর্ত ভঙ্গ করে অস্ত্র প্রকাশ্যে বহন, প্রদর্শন ও ব্যবহার করে লোকজনের মধ্যে ভয়ভীতি সৃষ্টির মাধ্যমে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, মাদক ও জুয়ার ব্যবসা করে স্বনামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করেছেন।

শামীম নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার সন্মানদী ইউনিয়নের দক্ষিণপাড়া গ্রামের মৃত মো. আফসার উদ্দিন মাস্টারের ছেলে। প্রাইমারি স্কুল ও হাইস্কুল পাস করার পর শামীম ঢাকার বাসাবো আর সবুজবাগ এলাকায় বেড়ে ওঠেন। ক্ষমতার দাপট ছিল আকাশসমান। সবুজবাগ, বাসাবো, মতিঝিলসহ বিভিন্ন এলাকায় জি কে শামীম প্রভাবশালী ঠিকাদার হিসেবে পরিচিত। গণপূর্ত ভবনের বেশির ভাগ ঠিকাদারি কাজই জি কে শামীম নিয়ন্ত্রণ করেন। বিএনপি-জামায়াত শাসনামলেও গণপূর্তে তিনি ছিলেন ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণকারী ব্যক্তি। বাংলাদেশের সব ঠিকাদারকে গণপূর্তে কাজ করতে হলে তাঁকে বলে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশের প্রথম সারির সব ঠিকাদার তাঁর বাইরে ভয়ে কথা বলার সাহস পেতেন না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মাদারীপুরে নতুন বাস টার্মিনালে ককটেল বিস্ফোরণ

মাদারীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ০০: ৩৪
ককটেল বিস্ফোরণ। ছবি: সংগৃহীত
ককটেল বিস্ফোরণ। ছবি: সংগৃহীত

মাদারীপুরের পৌর বাস টার্মিনালে দুটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে দুর্বৃত্তরা।

বুধবার (১২ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মাদারীপুর শহরের নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকার পৌর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার রাতে বাস টার্মিনালে দুর্বৃত্তরা পর পর দুটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। তবে এই ঘটনায় কোনো হতাহত বা ক্ষতি হয়নি। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। এ ছাড়া ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তা ছাড়া, এই ঘটনা যারা ঘটিয়েছে, তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ফেনীতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বাসে আগুন

ফেনী প্রতিনিধি
আপডেট : ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ০০: ৩৮
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

ফেনীর মহিপালে দাঁড়িয়ে থাকা একটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে বাসের ভেতরের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বুধবার (১২ নভেম্বর) রাত ১০টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মহিপাল পল্লী বিদ্যুৎসংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মহিপাল ফ্লাইওভারের দক্ষিণাংশে পল্লী বিদ্যুৎসংলগ্ন এলাকায় মহাসড়কের ঢাকামুখী লেনে দাঁড়িয়ে থাকা ফেনী-চট্টগ্রাম সড়কে চলাচলরত রনি-রানা পরিবহনের একটি বাসে হঠাৎ কে বা কারা আগুন ধরিয়ে দেয়। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

মোজাম্মেল হোসেন নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘এখানে প্রতিদিন সন্ধ্যায় সড়কের পাশে গাড়িগুলো পার্ক করে চালকেরা বাড়িতে চলে যান। রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে আকস্মিক আশপাশের মানুষের চিৎকারে বাড়ি থেকে বের হয়ে গাড়িতে আগুন জ্বলতে দেখি। পরে সবার চেষ্টায় পানি এনে আগুন নেভানো হয়। গাড়ির চালকের বসার স্থানসহ সামনের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’ 

ফেনী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আবদুল মজিদ বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই স্থানীয়রা আগুন নিভিয়েছে। আগুনে বাসের ভেতরে সামনের অংশ পুড়ে গেছে। এটি নাশকতা হতে পারে।’

ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সামসুজ্জামান বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে যায়। এটি নাশকতার অংশ কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নারায়ণগঞ্জে চলন্ত অটোরিকশায় আগুন দিল দুর্বৃত্তরা

সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ০০: ৩২
অটোরিকশায় আগুন দুর্বৃত্তদের। ছবি: সংগৃহীত
অটোরিকশায় আগুন দুর্বৃত্তদের। ছবি: সংগৃহীত

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) ৯ নম্বর ওয়ার্ডে একটি চলন্ত অটোরিকশায় আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।

বুধবার (১২ নভেম্বর) রাতে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়িতে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের অফিসের সামনে এই অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। 

জানা গেছে, জালকুড়ি যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের অফিসের সামনে অজ্ঞাতনামা দুজন মোটরসাইকেল আরোহী একটি চলন্ত সিএনজিচালিত অটোরিকশায় অগ্নিসংযোগ করে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। ফলে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের নাম-পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি। 

এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহিনূর আলম বলেন, ‘আগুন দেওয়া ব্যক্তিদের পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি। সিএনজিচালকও বলতে পারেননি। আমরা তদন্ত করে আইন অনুসারে পদক্ষেপ নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘আয়নাঘর থেকে নির্বাচনী মাঠে ফেরা আমার নতুন জীবন’

নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি 
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগ‌ঞ্জ উপ‌জেলার সোহাগী ইউনিয়নে বিএনপির কর্মী সম্মেলনে দলের এমপি প্রার্থী প্রকৌশলী লুৎফুল্লাহেল মাজেদ বাবু। ছবি: আজকের পত্রিকা
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগ‌ঞ্জ উপ‌জেলার সোহাগী ইউনিয়নে বিএনপির কর্মী সম্মেলনে দলের এমপি প্রার্থী প্রকৌশলী লুৎফুল্লাহেল মাজেদ বাবু। ছবি: আজকের পত্রিকা

আসন্ন সংসদ নির্বাচনে ময়মনসিংহ-৮ (ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা) আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী প্রকৌশলী লুৎফুল্লাহেল মাজেদ বাবু বলেছেন, ‘যতবার এই দেশ স্বৈরাচারের কবলে পড়েছে, যতবার এই দেশের মানুষ বিপদগ্রস্ত হয়েছে; একজন মানুষ মমতা দিয়ে এই দেশকে আগলে রেখেছেন—তিনি হলেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। আমরা তাঁর দল করি। ১৭ বছর প্রবাসে থেকে যিনি তৃণমূলকে সংগঠিত করে এই দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন, আপনারা তাঁর দল করেন, দেশনায়ক তারেক রহমানের দল করেন।’

বুধবার (১২ নভেম্বর) বিকেলে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগ‌ঞ্জ উপ‌জেলার সোহাগী ইউনিয়নের ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির কর্মী সম্মেলনে এসব কথা বলেন মাজেদ বাবু।

ধানের শীষ প্রতীকে ভোট চেয়ে মাজেদ বলেন, ‘আমি রাজনীতিতে এসেছি আপনাদের সঙ্গে নিয়ে মানুষকে আলো জ্বালাতে। দল আমার ওপর আস্থা রেখেছে। সেই আস্থার প্রতিদানস্বরূপ আমরা একটি ঝোড়ো বাতাসের মোমবাতি হতে চাই, যে মোমবাতি আস্তে আস্তে জ্বালিয়ে একটি শিক্ষিত মূল্যবোধের প্রজন্ম তৈরি করতে চাই।’

মাজেদ বাবু আরও বলেন, ‘আয়নাঘর থেকে নির্বাচনী মাঠে ফেরা আমার নতুন জীবন। মামলা, হামলা ও আয়নাঘরে নির্যাতিত হয়েও শহীদ জিয়ার আদর্শ থেকে কখনো বিচ্যুত হইনি। রাজনীতি করে আমার নেওয়ার কিছু নেই। আমার লক্ষ্য একটি শিক্ষিত সমাজ গড়ে ঈশ্বরগঞ্জকে আধুনিক ও সমৃদ্ধশালী উপজেলা হিসেবে গড়ে তোলা।’

উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব আমিরুল ইসলাম ভূঁইয়া মনির সঞ্চালনায় কর্মী সম্মেলনে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত