Ajker Patrika

গোপালগঞ্জে ‘গণগ্রেপ্তার’ বন্ধে প্রধান উপদেষ্টাকে খোলা চিঠি

টুঙ্গিপাড়া (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি 
প্রধান উপদেষ্টাকে খোলা চিঠি। ছবি: সংগৃহীত
প্রধান উপদেষ্টাকে খোলা চিঠি। ছবি: সংগৃহীত

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশকে কেন্দ্র করে সহিংসতার ঘটনায় গণগ্রেপ্তার বন্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টাকে খোলা চিঠি দিয়েছেন হাবিবুর রহমান হাবিব নামের এক আইনজীবী। আজ শনিবার গোপালগঞ্জ জজকোর্টের এই আইনজীবী তাঁর ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বরাবর এ খোলা চিঠি পোস্ট করেন।

জেলার সাধারণ মানুষের পক্ষ থেকে উল্লেখ করে খোলা চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘গোপালগঞ্জ জেলা বাংলাদেশের মানচিত্রের একটি অংশ। গোপালগঞ্জ জেলার সর্বসাধারণ মানুষ স্বাধীন সার্বভৌমত্বের দেশ আমাদের এই প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশের নাগরিক। ১৯৫২, ৫৪, ৫৮, ৬৬, ৭৯, ৭০-এর শোষণ-নির্যাতন আর বঞ্চনা উপেক্ষা করে বাংলাদেশের মানুষ দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ্যমে পশ্চিম পাকিস্তানের হানাদার বাহিনী থেকে নিজেদের বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন সার্বভৌমত্ব দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।

‘সেই রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের সর্বাধিনায়ক ছিলেন ঊনবিংশ শতাব্দীর অন্যতম মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এই জাতীয় নেতার জন্ম স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম জেলা আমাদের এই গোপালগঞ্জ। এ ছাড়া ঊনবিংশ শতাব্দীর ইসলামি রেনেসাঁ এশিয়া মহাদেশের শ্রেষ্ঠ আলেমে দ্বীন মোজাহেদে আজম আল্লামা শামচুল হক ছদর সাহেব হুজুর (র.)-এর জন্ম আমাদের এই গোপালগঞ্জ।’

আইনজীবী হাবিব লেখেন, ‘বাংলাদেশ একটি বহুদলীয় গণতান্ত্রিক দেশ। এখানে বহু দল থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। একটি গণতান্ত্রিক দল তার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করবে, এটা তার সাংবিধানিক মৌলিক অধিকার। এ অধিকার ক্ষুণ্ন করার ক্ষমতা রাষ্ট্র কাউকে দেয় নাই।

‘গোপালগঞ্জে এনসিপির পথসভাকে কেন্দ্র করে যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে, নিঃসন্দেহে বলা যায় একটি অপরাধ। আর এ অপরাধের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের চিন্তিত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া প্রতিটি স্বাধীনতাকামী মানুষের কাম্য। গোপালগঞ্জ জেলার সর্বসাধারণ এই ঘটনার সহিত জড়িত প্রকৃত অপরাধীর বিচার প্রত্যাশা করে।

‘কিন্তু আমরা খুবই উদ্বেগ প্রকাশ করছি যে গত ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পথসভাকে কেন্দ্র করে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় জেলার বিভিন্ন জায়গায় থেকে পুলিশ অনেক নিরপরাধ সাধারণ মানুষকে গণগ্রেপ্তার করছে, যাহা খুবই উদ্বেগ ও আতঙ্কের বিষয়।

‘প্রত্যেকটি অপরাধের সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত অপরাধীর বিচার গোপালগঞ্জ জেলার সর্বসাধারণ মানুষ প্রত্যাশা করে। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা কারওই কাম্য নয়। জেলার সর্বসাধারণকে গণগ্রেপ্তার করা হচ্ছে, যাহা সত্যিই অমানবিক নিষ্ঠুর নির্যাতনের শামিল।’

তিনি আরও লেখেন, ‘মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা মহোদয় গোপালগঞ্জ জেলার নিরপরাধ সর্বসাধারণ মানুষ বর্তমান সময়ে গণগ্রেপ্তারে আতঙ্কিত হয়ে অতি মানবেতর জীবন যাপন করছে। এমতাবস্থায় আপনার সমীপে আরজি এনসিপির পথসভাকে কেন্দ্র করে যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে, তাহা নিরপেক্ষ তদন্ত করে প্রকৃত অপরাধীকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দেওয়া হোক।

‘একই সঙ্গে নিরপরাধ সাধারণ মানুষকে গণগ্রেপ্তারের আতঙ্ক থেকে পরিত্রাণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য বিনয়ের সহিত অনুরোধ করছি।’

জানতে চাইলে হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, ‘গোপালগঞ্জের সব সাধারণ মানুষ তো এই সহিংসতায় জড়িত নয়। বর্তমানে কারফিউ আর গণগ্রেপ্তারে প্রতিটি মানুষ আতঙ্কিত। তাই সাধারণ জনগণের পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর খোলা চিঠি পোস্ট করেছি।’

এ বিষয়ে কথা বলতে গোপালগঞ্জের সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির মোহাম্মদ সাজেদুর রহমানকে মোবাইলে কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গাড়ি কেনার টাকা না দেওয়ায় স্ত্রীকে মারধর, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের বিরুদ্ধে মামলা

মুক্তি পেয়ে আ.লীগ নেতার ভিডিও বার্তা, বেআইনি বলল বিএনপি

ভারতের সঙ্গে আফগানিস্তান-শ্রীলঙ্কাও ঢাকায় এসিসির সভা বর্জন করল

যুদ্ধবিমানের ২৫০ ইঞ্জিন কিনছে ভারত, ফ্রান্সের সঙ্গে ৬১ হাজার কোটি রুপির চুক্তি

সালাহউদ্দিনকে নিয়ে বিষোদ্‌গার: চকরিয়ায় এনসিপির পথসভার মঞ্চে বিএনপির হামলা-ভাঙচুর

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত