Ajker Patrika

গোপালগঞ্জে কারফিউর পর ১৪৪ ধারা জারি, জনমনে আতঙ্ক

টুঙ্গিপাড়া (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি 
আপডেট : ২০ জুলাই ২০২৫, ১৪: ১০
শহরে যানবাহন ও মানুষের চলাচল বৃদ্ধি পেয়েছে। সিমীত পরিসরে খুলেছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ছবি: আজকের পত্রিকা
শহরে যানবাহন ও মানুষের চলাচল বৃদ্ধি পেয়েছে। সিমীত পরিসরে খুলেছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ছবি: আজকের পত্রিকা

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশকে কেন্দ্র করে সহিংসতার ঘটনায় তিন দিন কারফিউ জারির পর আবারও ১৪৪ ধারা জারি করেছে জেলা প্রশাসন। শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এতথ্য জানান গোপালগঞ্জ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামান।

তিনি বলেন, গোপালগঞ্জের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিবেচনায় জনশৃঙ্খলা ও শান্তি বজায় রাখা এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তার জন্য আজ রোববার সকাল ছয়টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। গোপালগঞ্জের সার্বিক পরিস্থিতি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে পরীক্ষার্থী, শিক্ষার্থী, জরুরী সেবা সমূহ ও সরকারি অফিস আদালত ১৪৪ ধারার বাইরে থাকবে।

এর আগে গতকাল শনিবার রাত আটটা থেকে আজ রোববার সকাল ছয়টা পর্যন্ত কারফিউ বলবৎ ছিল। গতকাল সকাল ছয়টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত কারফিউ সাময়িক শিথিল করা হয়েছিল।

গত বুধবার এনসিপির সমাবেশ ঘিরে শহরের বিভিন্ন এলাকায় দফায় দফায় সহিংসতা, ককটেল বিস্ফোরণ, অগ্নিসংযোগ ও হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর জেলা ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম দফায় ১৪৪ ধারা জারি করেন। পরে পরিস্থিতির অবনতি হলে ওই দিন সন্ধ্যা ছয়টা থেকে কারফিউ জারি করা হয়। এঘটনায় পুলিশ ৩ হাজার আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীকে আসামি করে পৃথক ৪টি মামলা করেছে। আর গ্রেপ্তার করা হয়েছে ২৭৭ জনকে। এরমধ্যে আইন শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

গোপালগঞ্জ শহরে দেখা যায়, জেলার সব কেন্দ্রে একযোগে এইচএসসি পরীক্ষা চলছে, খুলেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও অফিস আদালত। শহরে যানবাহন ও মানুষের চলাচল বৃদ্ধি পেয়েছে। সিমীত পরিসরে খুলেছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। কিন্তু জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। কারণ শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে মোতায়েন রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

শহরে যানবাহন ও মানুষের চলাচল বৃদ্ধি পেয়েছে। সিমীত পরিসরে খুলেছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ছবি: আজকের পত্রিকা
শহরে যানবাহন ও মানুষের চলাচল বৃদ্ধি পেয়েছে। সিমীত পরিসরে খুলেছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ছবি: আজকের পত্রিকা

জেলা শহরের লঞ্চঘাট এলাকায় লিমন হোসেন নামে এক যুবক বলেন, `জরুরি কাজে শহরে এসেছিলাম। কিছু দোকানপাট খুললেও অনেক দোকানপাটই বন্ধ। কারণ এখনো জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। না জানি কাকে কখন গ্রেপ্তার করে। এছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় রাতে যৌথবাহিনীর অভিযান পরিচালনা করায় সাধারণ মানুষ অনেকেই ঘরবাড়ি ছাড়া।’

বিসিক এলাকায় বাজার করতে আসা আমেনা বেগম নামে এক বৃদ্ধা বলেন, `কারফিউ নাই জেনে বাজার করতে আসছি। তবে শহরে লোকজনের আনাগোনা বেশ কম। বাজার করছি কিন্তু ভেতরে একটু আতঙ্ক বিরাজ করছে।’

শহরে মাহমুদ নামে এক ইজিবাইক চালক বলেন, `এনসিপির সমাবেশের পর পেটের তাগিদে ঝুঁকি নিয়ে ঘর থেকে বের হইছি। তবে রোজগার নাই। কারফিউ আর ১৪৪ ধারায় আমাদের সাধারণ মানুষের রোজগার কমে গেছে। পরিবার পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকাই দায় হয়ে যাচ্ছে।’

গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ড. রুহুল আমিন সরকার বলেন, `পরিস্থিতি এখন অনেকটাই স্বাভাবিক। কারফিউ নাই যার কারনে সাধারণ মানুষ অনেকেই ঘর থেকে বের হচ্ছে। আমরা অভিযানও পরিচালনা করছি। তবে অভিযানে যেন নিরপরাধ কেউ আটক না হয় সে বিষয়ে খেয়াল রেখেই কাজ করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত